somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সূর্যোদয়ের সেই ১৬ই ডিসেম্বর

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজ মহান বিজয় দিবস। এ দিনটি জাতির জন্য পরম গৌরবের।১৯৭১ সালের এই দিনে নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধ শেষে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আত্মসমর্পণ করেছিল পাক হানাদার বাহিনী।চূড়ান্ত বিজয়ের মধ্য দিয়ে অভ্যুদয় ঘটে বাঙালির স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের। বিজয়ের
অনুভূতি সবসময়ই আনন্দের।তবে একই সঙ্গে
দিনটি বেদনারও।অগণিত মানুষের আত্মত্যাগের ফসল আমাদের স্বাধীনতা। আমরা গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের; যেসব নারী ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন,তাদের। এদিনে
আমরা স্মরণ করব ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা আত্মত্যাগ করেছেন,তাদেরও।এদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও
রাজনৈতিক অধিকার তথা স্বাধীন রাষ্ট্র
প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সফল নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।কোটি কোটি মানুষকে তিনি স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুলেছিলেন।তার সঙ্গে ছিলেন একই লক্ষ্যে অবিচল একদল রাজনৈতিক নেতা।স্বাতন্ত্র্যমণ্ডিত
সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমেও আমাদের
জাতীয়তাবোধকে শাণিত করে তোলা হয়েছিল।একটি চাপিয়ে দেয়া যুদ্ধের মাধ্যমে এ
জাতিকে স্তব্ধ করে দেয়া ছিল অসম্ভব। আজ থেকে ৪৪ বছর আগে একরাশ স্বপ্ন বুকে নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয়েছিল। চার দশকের বেশি সময়ের এ পথপরিক্রমায় সে স্বপ্নের কতটা পূরণ হয়েছে, আজ সে হিসাব মেলাতে চাইবে সবাই। এর মধ্যে আমাদের অনেক চড়াই-উৎরাই
মোকাবেলা করতে হয়েছে।রাজনীতি এগিয়েছে
অমসৃণ পথে।গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বারবার
ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায়।
জনবহুল ও সীমিত সম্পদের এ দেশকে স্বয়ম্ভর করে তোলার কাজও সহজ ছিল না। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনের কঠিন দিনগুলোয় রাষ্ট্রের প্রশাসনযন্ত্র চালু করতে হয়েছিল।স্বাধীন দেশের উপযোগী একটি সংবিধানও প্রণয়ন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে
প্রয়োজন ছিল গণতান্ত্রিক ও মুক্ত পরিবেশে নিরবচ্ছিন্ন যাত্রার।সদ্যস্বাধীন দেশের নেতৃত্বের এ বিষয়ে অঙ্গীকারের অভাব ছিল না।দুর্ভাগ্যজনক যে, পরে এক্ষেত্রে মারাত্মক বিচ্যুতি ঘটে এবং তার খেসারত দিতে হয় জাতিকে।শিক্ষা,স্বাস্থ্যের মতো মানবসম্পদ সূচকে আজও বিশ্বসমাজের পেছনের সারিতে আমাদের অবস্থান।অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দারিদ্র্য এখনও প্রকট। নতুন করে জনসংখ্যার ঊর্ধ্বগতি এ সমস্যা বাড়িয়ে তুলছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পেলেও সুশাসন যেন সোনার হরিণ।সাংবিধানিক সংস্থা শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা এখানে আজও দুর্বল।অব্যাহত সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সর্বস্তরে পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে অঙ্গীকারের অভাব পীড়াদায়ক।
রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর বিভক্তি; এর
পাশাপাশি জাতীয় প্রশ্নে অনৈক্য আমাদের
এগিয়ে যাওয়ার পথে বড় বাধা হয়ে রয়েছে।
দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এখনও তৎপর।যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে।
কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডও কার্যকর করা হয়েছে বিজয় দিবসের আগেই।সমগ্র বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে তা এ ধরনের
অপশক্তির তৎপরতা রোধে সহায়ক হবে, আশা করা যায়। এতে আইনের শাসন জোরদার করার পথও সুগম হবে। অর্থনৈতিকভাবেও আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত মূল্যবোধ রক্ষায় হতে হবে যত্নবান।তবেই বিজয় হয়ে উঠবে অর্থবহ।যে কোনো
জাতির শক্তির প্রধান উৎস ঐক্য। প্রায় সব
ক্ষেত্রেই অগ্রগতির জন্য প্রয়োজন এটি।
মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের পেছনে কাজ
করেছিল মত-পথ-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবার এ যুদ্ধে অংশগ্রহণ। এজন্যই সম্ভব হয়েছিল আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত শক্তিশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে মাত্র নয় মাসে পরাজিত করা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে স্বাধীনতার পর আমরা সে
ঐক্য ধরে রাখতে পারিনি।গুরুত্বহীন বিষয়েও
রাজনৈতিক বিভক্তি দেশে গণতন্ত্রের ভিত সুদৃঢ় করার পথে বড় অন্তরায় হয়ে রয়েছে।এ থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের নেতৃত্বকে।সেই সঙ্গে জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোয় অভিন্ন নীতি অনুসরণ অপরিহার্য।আমাদের সামনে সম্ভাবনা অসীম।জাতীয় ঐক্য ছাড়া তা যথার্থভাবে কাজে লাগানো যাবে না।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ থেকে শিক্ষা নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে সব সমস্যা মোকাবেলায় সচেষ্ট হলে আমাদের অগ্রগতি ঘটবে দ্রুত।বিভেদ ভুলে আমরা সে পথেই অগ্রসর হব- এইহোক আমাদের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৫৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা শহর ইতিমধ্যে পচে গেছে।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



স্থান: গুলিস্থান, ঢাকা।

ঢাকার মধ্যে গুলিস্থান কোন লেভেলের নোংড়া সেটার বিবরন আপনাদের দেয়া লাগবে না। সেটা আপনারা জানেন। যেখানে সেখানে প্রসাবের গন্ধ। কোথাও কোথাও গু/পায়খানার গন্ধ। ড্রেন থেকে আসছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×