somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিচ্ছিন্ন গ্রামাচ্ছন্নতা

০৯ ই জুন, ২০১০ সকাল ৮:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

*
আমার ইচ্ছে ছিলো দুপুরে গিয়ে কাজ সেরে সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা। কিন্তু ঢিমেতালে চলা এই মফঃস্বলের অফিসগুলোর কথা আর কি বলব! বন্ধ থাকার আর দিন পেলোনা! জমি নিবন্ধীকরণ সংক্রান্ত কাজটি পিছিয়ে যাওয়াতে এবং এই টিমটিমে আলোর নির্জীব শহরে আরো গোটা একটা দিন থাকতে হবে ভাবতেই বিরক্তি লাগছিলো। আমার বিরক্তি বুঝতে পারে সম্ভবত আমার সাথে রেজিস্ট্রি অফিসে আসা মনসুর কাকা। সে'ই আমাকে এই জমিটির সন্ধান দিয়েছিলো যা নাকি ভবিষ্যতে বিপুল অংকে বিক্রয় করা যাবে। জমিজমা বিষয়ক এহেন জবরদস্ত দুঁদে লোক কিনা আমাকে এই অকারণ বিপত্তিতে ফেললো! নিবন্ধীকরণ অফিসের সাপ্তাহিক সময়সূচি ভুল জানানোর অপরাধে সে বিস্তর হাত ঘঁসাঘঁষি, একটি আধা গলা খাঁকরি এবং এসব প্রস্তুতির পরে একটা মেঠো হাসি দিয়ে অবশেষে আমাকে প্রস্তাবটি দেয়ার আত্নবিশ্বাস অর্জন করে।
"আইজকে তো আর হলোনা ভাতিজা, আরেকটা দিন থাকতিই হচ্চে। তা আমি বলি কি এতদিন পরে হেনে আইলা, গিরামটা ঘুইরেই যাও। ভালোই লাগবেনি"
"তা অবশ্য যাওয়া যায়" প্রস্তাবটা আমার মনে ধরে। যদিও বসুন্ধরার একখন্ড মাটিকে টাকা এবং অন্যান্য কাগজপত্রাদি দিয়ে নিজের দাস করে নেয়ার অদম্য লোভটার কথা ভুলতে পারিনা। তারপরেও,
"গিরামে গেলি পরে দেখবা কত সুন্দর হয়েচে। ম্যালা পাকা বাড়ি উটিচে।"
পাকা বাড়ি দেখার লোভে গ্রামে যাওয়াটা নেহায়েৎ হাস্যকর বৈ কি! কিন্তু হঠাৎ করে আমার পাকা ধানের রঙ দেখতে ইচ্ছা করে। সরিষার ক্ষেতের ঘ্রাণ নিতে ইচ্ছা করে। একটুখানি সবুজ দেখতে ইচ্ছা করে। এমন না যে আমি সবুজ কখনও দেখিনি, আমার গোপন প্রেমিকা সেদিনই তো সবুজ শাড়ী আর সবুজ টিপ পরে এসেছিলো। কিন্তু আমি জানি সে ঘরে গিয়ে কাপড় পাল্টাবে, খুলে নিবে টিপ, শুধু রেখে দেবে স্পর্শের ওম। যার রঙ একান্তই শহুরে।
আমার হঠাৎ খুব সবুজ দেখতে ইচ্ছে করে, গ্রাম দেখতে ইচ্ছে করে।
"চলেন যাই!"
আমার সম্মতিতে মনসুর কাকা শশব্যস্ত হয়ে ওঠে।
"এ রিকশা যাবু? চকদুবলিয়া। কি কলি? ১৫ টেকা? মাইরে পুস্টারে লিহে দিবো! দশ টাকায় গেলি চল"
তরুণ রিকশাচালক ভাঙা রাস্তা, ফিরতি ক্ষ্যাপ না পাওয়ার আশঙ্কা ইত্যাদি প্রসঙ্গ তুলে ধরলে পারস্পরিক সমঝোতায় ১২ টাকা রফা হয়।
"গিরামে তুমার আব্বা কলু শেখের রাস্তার পাশের জমিটা কিনতি চাতিসে। রাস্তার পাশের জমি। ঘটনা বুঝতি পারতিসো? গিরামের সেরা জমি হবি এডা"
আমি আব্বার দূরদর্শীতার কথা ভালোই জানি। এ জমিটার কথাও শুনেছিলাম। সবকিছু বেশ ভালোই গুছিয়ে নেয়া হচ্ছে।
"কিন্তু সে কি বেচতে রাজী হবে? এরকম পয়মন্ত একটা জমি!"
"রাজী হবিনা মানি! হতি বাইদ্য! সোজা আঙুলে ঘি উটপেনা এতো জানা কতাই। আঙুলটা ব্যাকা করার নিয়ম জানা আছে। চিন্তা কৈরেনা!"
সোজা আঙুল এবং ঘি বিষয়ক তত্ত্ব আমিও অল্পবিস্তর জানি। তাই মৃদু হাসি দিয়ে তার কথায় সায় দেই।
সেসময় একটা দূর্ঘটনা ঘটে হঠাৎ। একটা পাখি তার বর্জ্য পদার্থগুলো নিস্কাশনের উপযুক্ত জায়গা হিসেবে আমার মাথাকে বেছে নেয়। তরুণ রিকশাচালক ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে, হাসে ফ্যাকফ্যাক করে, মনসুর কাকাও হয়তোবা হাসতো বা সহমর্মিতা প্রকাশ করতো, কিন্তু একজন সম্ভাব্য অর্থনৈতিক উৎসের বিব্রত অবস্থায় নিম্মস্তরের একজন মানুষের সহমর্মিতা প্রকাশ না করার কারণে সে হাসি সামলিয়ে নিয়ে তাকে খুব একচোট ধমকিয়ে আমাকে সাহায্য করার প্রয়াসে ব্রতী হয়।
" এ ছেমরা, রিকশাটা একটু থামা দিনি। ভাতিজা তো পুরো মাইখে মুখে গেসে। পানি টানি দিয়া লাগবে"
মাঝপথে আমরা রিকশা থামাই। মনসুর চাচা আমার মাথায়, শার্টে পানি দেয়। মাথায়, গলায় পানির সুশীতল স্পর্শ পেতে পেতে আমার শহুরে শীতলতার কথা মনে পড়ে। নাহ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র বা আইসক্রিম না। ডিপফ্রিজ অথবা কোল্ডকফি না।
অথবা এসব কিছুই বা কোন কিছুইনা! আরো কি যেন বাকি থেকে যায়। আমি মনে করতে পারিনা কোনমতেই।
আমাকে যখন শুস্ক এবং পরিচ্ছন্ন করে তোলা হয়, তখন মনসুর কাকা, হয়তোবা আমাকে বিমর্ষ ভেবে ভিন্ন প্রসঙ্গ তোলেন।
"ছোডবেলায় ইয়ারগান দিয়ে এসব পাখি কত মারিছি!"
বড়বেলায় আমাদের সবার অস্ত্র এবং শিকার পরিবর্তিত হয়। আমি ভাবি।
আমরা গন্তব্যের কাছাকাছি এসে গেছি প্রায়।
"মাদারতলায় নাববেবনা?" তরুণ রিকশাচালকের জিজ্ঞাসা।
"হয়, হেনেই নাবায় দে"
কতদিন পরে গ্রামের বাড়িতে আসলাম! কত কি'ই না পরিবর্তন হয়েছে। আমাকে চিনতে পারবে কি কেউ? পারার অবশ্য কথা না! না চিনতে পারলেও ক্ষতি নেই। আমি তো আর এখানে তাদের সাথে খোশগল্প করতে আসিনি। একটু আকটু প্রকৃতি চাখবো আর জমিজমাগুলোর হাল হকিকত জানবো। এইতো।
"তালি পরে তুমি ঘুইরে বেড়াও, আমি একটু সলিম মাস্টরের কাছে যাই। একঘন্টার মদ্যিই আবার টাউনে যাবো। নাকি কও? কাইলকে আবার ম্যালা কাজ"
এক ঘন্টা সময়, যথেষ্ঠ। আমি হলুদ সাগরের মত উত্তাল সরিষা ক্ষেতের সামনে দাঁড়াই, আমি নাম না জানা ফুলের ছবি তুলি, আর চড়ে বেড়ানো গৃহপালিত প্রাণীগুলোকে উত্যক্ত করি।
হঠাৎ আমার ছেলের কথা মনে পড়ে। আমরা তার জন্যে চমৎকার একটা আবাসস্থল তৈরী করেছি। সন্ধ্যার পরে সে ঘরে ফেরে। আমরা তার যত্ন নেই। হরলিক্স খাওয়াই। এবং গাদাগাদা বই ঠেসে দেই তার টেবিলে।
এই মুহুর্তে একটি বাছুরকে গাদাগাদা আমপাতা খাওয়াচ্ছি আমি সস্নেহে। আনমনে বাসার কথা মনে পড়লই।
"আরে এ কিডা! ফয়েজ না! চিনতি পারিসো আমারে?'
একটা বিস্ময়বোধক এবং আন্তরিক কন্ঠে আমার প্রকৃতিবিলাসে ছেদ পড়ে।
"হ্যাঁ, আমিই। কেমন আছেন?"
"তুমি মোনে অয় আমারে চিনবের পারোনি। আরে আমি তুমার জামাল কাকা। ছোটবেলায় তুমাক কত সুপার বিস্কুট খাওয়ায়েসি, ভুইলে গেসো সব?"
এবার মনে পড়ে আমার।
"তো, কাকা, খবর টবর কি? সব ভালো"
"ভালো খারাপ পরে বুঝা যাবেনি। আগে আসোতো আমার বাড়িত। তুমাক দেখলে তুমার চাচী কত খুশী হবেনে!"
আমি বুঝিনা বিশ বছর পরে আসা প্রায় অনাত্মীয় হয়ে যাওয়া এবং কোনরকম স্বার্থ সংশ্লিষ্টতা না থাকা একজনের আগমনে এত আনন্দিত হবার কি থাকতে পারে!
চাচী আমার জন্যে সুস্বাদু গ্রাম্য পিঠা বানিয়ে দেয়। খেতে খেতে আমাদের অনেক কথা হয়। তার মারফৎ জানতে পারি যে গ্রামের একটি বিশেষ এলাকায় প্রায়ই একজন বিশিষ্ট জ্বীন তসরিফ রাখেন! সাঁঝ হয়ে এসেছে। এসময় এসব গালগল্প শুনতে নেহায়েত মন্দ লাগেনা কিন্তু। তবে আমার যাবার সময়ও হয়ে এলো। কিন্তু মনসুর কাকা আসছেনা কেন? আমি জামাল কাকার সাথে বের হয়ে আসার সময় চাচীর চোখে জল চিকচিক করতে দেখি।
"আবার আইসে বাজান। আগের থে জানা থাকলি কত সমাদর কইরতে পারতাম। তা তো আর হলোনা"
"আসপোনি চাচী। সময় যুযোগ পালেই চইলে আসপো"
এ ভাষাটা সহজ। আমার রপ্ত করতে খুব একটু অসুবিধে হয়না।
"এ ভাষাটা সহজ" আমি জামাল কাকাকে বলি।
"কি কইলে?"
"না, বলছিলাম কি, একটু সলিম মাস্টারের বাসায় খোঁজ লাগানতো। মনসুর কাকার আসার কথা এতক্ষণে, এখনও আসছেনা"
"তা আমি এখনি পাঠাচ্ছি। কোন চিন্তা কৈরেনা"
অবশ্য মনসুর কাকা আসলেই বা কি! এখানে তার বেঁধে দেওয়া সময় পর্যন্তই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। আমার ভালো লাগছে গ্রাম। আরো কিছু কাকা, ফুফু, চাচীদের সাথে দেখা হয়ে গেল। তারা কোন অলৌকিক স্মৃতিবলে প্রথম দেখাতেই আমাকে চিনে ফেলে সবাই।

মনসুর কাকার খোঁজ পাওয়া যায়না। আমি গ্রামের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়াই। কুদ্দুস কাকার চায়ের দোকানে বসি। এই বৃদ্ধ লোকটিকে মনে আছে আমার। ছোটবেলায় গ্রামে আসলে সে আমাকে বিনামূল্যে একধরণের সস্তা ছোট্ট গোল বিস্কুট খেতে দিতো, যা আমার কাছে অমৃতসমান মনে হত। প্রাথমিক উচ্ছসিত ভাববিনিময় শেষে তার সাথে আমার বেশ গল্প জমে যায়। সেও ইনিয়ে বিনিয়ে সে'ই জ্বীনের কথাই বলে। গ্রামে মনে হয় দর্শনীয় বস্তু তেমন নেই আর।
"কাকা চলেন জ্বীন দেইখে আসি" আমি চায়ের কাপে তৃপ্তির চুমুক দিয়ে ফূর্তির ভঙ্গিমায় বলি।
"ওরে বাবা না রে না! এই জ্বীন দেখতি গেলে তুমাক আর শহরে ফেরা লাগবিনানে। ফিট খাইয়ে পইরে যাবা। মারাও যাতি পারো"

হঠাৎ করে একটা হৈ হৈ রৈ রৈ শব্দ ভেসে আসে। মানুষের চিৎকার। কেউ একজন মারা গেছে বা আহত হয়েছে ভীষণ। গ্রামের পরিবেশ হয়তোবা আমাকে তরল করে দিয়েছে। তাই আমি ছুটে যাই। শহর হলে কক্ষণও ভ্রুক্ষেপ করতামনা। আমার সামনে কত পকেটমারের চোখ উপড়ে ফেলা হল, পাশের ফ্ল্যাটের অধিবাসীরা ডাকাতের আক্রমণে ভীত হয়ে চিৎকার করল, রিকশাওলাকে ধরে পেটানো হল, কিছুই মনে হয়নি।
**
ভীড়ের কাছাকাছি এসে আমি দেখতে পাই মনসুর কাকাকে। আমি তার সামনে এগিয়ে আসি।
"কিভাবে হল কাকা?" তার দেহ রক্তাক্ত।
"সলিম মাস্টারের লোক আমাক ছুড়ি মারিছে"
"কেন তার ফসলী জমি কেড়ে নয়ার কূটকৌশল করেছিলেন বলে?"
"এসব কি কচ্ছ ভাতিজা? কূটকৌশল করব কিজন্যি। আমি তো.........."
আমি মনসুর কাকাকে ছেড়ে চলে আসি। দূর থেকে তার আর্তনাদ শোনা যায়। আমি গ্রাম দেখতে বেড়ুই। এখনও অনেক দেখার বাকি।
চারিপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা আমার স্নেহশীলা ফুফু-চাচী, রসিক চায়ের দোকানদার, শ্রদ্ধেয় কাকা-মামা, সবার সাথে খুনসুটি করি।
***
শুধু মনসুর কাকার সাথে দেখা হয়ে গেলে এড়িয়ে যাই। তার ক্ষত তেমন মারাত্নক কিছুনা। সে আমাকে দেখলেই সম্ভাবনাময় নতুন জমির কথা বয়ান করে। আমি দৌড়ে পালাই। মনসুর কাকার ক্ষত সেরে গেছে। সেও দৌড়োয় আমার পেছন পেছন। রাত গভীর হতে থাকে। শুনশান নীরবতা। এর মধ্যে এক ভয়াল এবং প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ দৌড়ের প্রতিযোগীতা চলছে। আমি প্রাণপনে দৌড়োই। আমাকে জিততেই হবে।
সেই উদ্দীষ্ট এলাকায় আমরা পৌঁছোই অবশেষে। যেখানে নাকি জ্বীন দেখা যায়। আমরা সাফল্যের সাথে একটা দশহাত লম্বা আলখাল্লা পরা জ্বীন দেখতে পাই, এবং থমকে দাঁড়াই।
জ্বীনটা আমাদের তিনটে ইচ্ছে পূর্ণ করতে সক্ষম বলে জানায়, কিন্তু যেকোন একজনের। মনসুর কাকা এবার বেশ খুশী হয়। সে জমি-জমা এবং টাকা পয়সা সংক্রান্ত তিনটে ইচ্ছের কথা জানায়। কিন্তু এতে আমার ভীষণ রাগ হয়। আমি তার পশ্চাদ্দেশে কষে একটা লাত্থি মেরে অনেক দূরে পাঠিয়ে দেই। এরমধ্যে আবার জামাল কাকা, এবং আরো অন্যান্য চাচা-ফুফুরা এসে উপস্থিত হয়েছে এখানে। দীর্ঘক্ষণ আমার দেখা না পেয়ে উদ্বীগ্ন তারা।
"জ্বীন দেখতে এসেছি" আমি গর্বিত হাসি হেসে বলি।
"আপনারা কেউ দেখতে পাচ্ছেন না"
তারা মাথা নেড়ে অসম্মতি জানায়। কেউ একজন বলে,
"জ্বীন তো সবসময় দেহা যায়না বাবা, আর এত মানুষের মইদ্যে জ্বীন আসপেনানে"
কিন্তু আমি যে পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি! ইচ্ছাপূরণ জ্বীন।
"আপনাদের কারও কাছে শিশি বা বোতল আছে?" আমি চিৎকার করে বলি।
একজন একটা আতরের শিশি এগিয়ে দেয়।
আমি জ্বীনটির কাছে গিয়ে বলি,
"চলবে এতে?"
জ্বীন, অথবা আলাদীনের দৈত্য, যা হোকনা কেন সে নির্দ্বিধায় ঢুকে যায়।
"কতদিন কারও ইচ্ছাপূরণ করিনা!" সে আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলে।
"কতদিন কোন ইচ্ছা করিনা!" আমিও আবেগ প্রকাশ করি।
"কার লগে কতা কতিছো ভাইস্তে?" জামাল চাচা জিজ্ঞেস করে।
জামাল চাচা বা চাচী, দোকানদার কুদ্দুস কাকা, রাখাল শামসু মিয়া কেউ দেখতে পারেনা। আমি জ্বীনের কাছে প্রথম ইচ্ছাটা করি, "জমির দলিল, দস্তাবেজ এগুলো সব পুড়িয়ে ফেলো"
কড়িৎকর্মা দৈত্য বা জ্বীন তৎক্ষণাৎ তা সম্পন্ন করে। দূর থেকে মনসুর কাকার বিকট আর্তনাদ শোনা যায়। আগুনের লেলিহান শিখা জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে অগ্নিগ্রস্থ কীটের মত মনসুর কাকা ঝাঁপ দেয় দলিলগুলো শেষ রক্ষা করার জন্যে। কিন্তু কোন লাভ হয়না। সে পুড়ে মরে।
হঠাৎ আমার কি মনে হল, আমিও সেই অগ্নিকুন্ডের অভিমুখে প্রাণপন দৌড়ুতে লাগলাম। আমি ঝাঁপ দিলাম সেখানে। ফেলে দিলাম শিশিভূতকে। অতঃপর একটি আরামদায়ক, উষ্ণ, এবং ওম জাগানো আগ্নেয় পরিবেশে দেখা হল আমার সাথে মনসুর কাকার। সে ভালোই আছে। একটা জাল দলিল বানাতে ব্যস্ত এখন।
"তাহলে কাকা, কালকে সকালের মধ্যেই রেজিস্ট্রি অফিসে যাচ্ছি? ঢাকায় ফেরা দরকার দ্রুত, অনেক কাজ জমে আছে"
ফেরা দরকার দ্রুত, এই অনুধাবনের জন্যে আমি নিজেকেই নিজে বাহবা দিই!
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:২৫
২০৪টি মন্তব্য ২০৪টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×