somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্টোমাক ওয়াশ

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


(১)
একবার সবুজ সুন্দর এক দেশে খুব গোলোযোগ শুরু হলো। নির্বাচনের সঠিক এবং সর্বজনীন কাঠামো ঠিক করতে গিয়ে দু পক্ষের নেতারা নিজেদের মতে অটল থেকে গোঁয়ার্তুমির চরম অবস্থানে গিয়ে দেশে এক অরাজক পরিবেশের সৃষ্টি করলেন। দেশটি তৃতীয় বিশ্বের এক উন্নয়নশীল দেশ। জনসংখ্যার আধিক্য আর সন্ত্রাসের বিপুল আগ্রাসনে জনগণ পর্যুদস্ত। সরকার গঠনের এক বছর পর বিরোধী দলের ঘোষিত কার্যক্রমে সারা দেশে অবরোধ সৃষ্টি হয়। কেউ কাউকে ছাড়বে না, কঠিন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞা। সারাদেশে বিরোধী দলের পেট্রোল বোমা আর ককটেল বিস্ফোরণে কত মানুষের যে প্রাণ গেল, আহত হলো, তার লেখাজোখা নেই। তবে সরকারী দলও বিজ্ঞ এবং ধূর্ত ভীষণ। তারা নিজেদের ছাত্র সংস্থাকে লাগিয়ে দেয় পেট্রোল বোমা ছুড়ে মারতে, যেন দোষটা প্রতিপক্ষের গায়ে লাগে। সব মিলিয়ে দুই দলের ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ আর সহিংসতায় দেশের মানুষ পড়ে গেলো মহা বিপদে। কিন্তু বড় দুই দলের দুই নেতা এসব আমলে নিলে তো! বিরোধী দলের নেতা খালেদ মিয়া আর সরকারী দলের শাইখ হাসান নিজেদের সুরম্য ভবনে আয়েশের সাথে থেকে টিভি অনুষ্ঠান দেখতেই নিমগ্ন রইলেন। সব মিলিয়ে দুইজনের দিন বেশ ভালোই কাটছিলো। একজন অবরোধ ডেকে গৃহবন্দিনী অবস্থায় সুরারসে মগ্ন থাকেন আরেকজন বার্ন ইউনিটে গিয়ে পোড়া রুগীদের দেখে কুম্ভিরাশ্রূ ফেলেন। কোটি কোটি মানুষের দেশে তারাই ছিলো সবচেয়ে নির্ভার এবং শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে প্রফুল্ল।

বেশ কাটছিলো এভাবে দিন। একদিন খালেদ মিয়া তার অনুচরদের ডেকে পাঠান,
-অবরোধ কেমন চলছে?
-খুবই ভালো স্যার। সারাদেশে আমাদের ছেলেরা জ্বালাও পোড়াও শুরু করেছে। হাইওয়ে থেকে চিপাগলি কিছুই বাদ নাই।
-খুব ভালো। মানুষ মারা যাচ্ছে কেমন?
-বেশ ভালো। প্রতিদিনই তো দু-চারজন মরছেই
-আমাদের দলীয় পত্রিকায় ভালো উঠে এসেছে তো ব্যাপারটা?
-একদম! মৃত, দগ্ধ, আধপোড়া মানুষের ছবি দেখিয়ে বলা হচ্ছে এগুলো সরকারী দলের কাজ। পাবলিক সেন্টিমেন্ট আশা করি দ্রুতই পরিবর্তিত হবে।
-ভালো। এখন যাওতো আমার হুইস্কির বোতলটা নিয়ে এসো।
-নিশ্চয়ই স্যার!

আজকে মন বেশ প্রফুল্ল খালেদ মিয়ার। পেট্রোল বোম জিনিসটা আসলেই দারুণ। স্বল্প খরচে বিশাল আউটপুট দেয়। হুইস্কি খেতে খেতে হঠাৎ করে তার মনে হয় তার পেটে আর জায়গা নেই। আজকে কি খুব বেশি খাওয়া হয়ে গেছে? না তো! বোতলের অর্ধেকটা তো এখনও বাকি আছে। হলো কী তবে?। বুক ধরফর করছে, গলার কাছে কী যেন শক্ত হয়ে এঁটে বসে আছে। তিনি অসুস্থ বোধ করেন। ক্ষীন গলায় ডাকতে থাকেন তার পিএস কে,

-এই নীলু, নীলু!

স্যারের অবস্থাটা আঁচ করে নীলু তৎক্ষনাত ব্যবস্থা নেয় । তাকে শহরের এক অভিজাত হাসপাতালে নিয়ে যায়। সমস্যাটা কী কারণে হয়েছে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করতে গিয়ে সে শোনে খালিদ মিয়ার নাকি মদ এর ওভারডোজ হয়ে গেছে। এখন স্টোমাক ওয়াশ করতে হবে।
-কিন্তু তিনি তো প্রায়শই মদ্যপান করেন, আগে তো এরকম কিছু দেখিনি।
-আসলে বয়স হয়েছে তো, আগের দিন কি আর আছে? এখন সংযম দরকার, সংযম।
-তো এই মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী?
-আগেই বলেছি, স্টোমাক ওয়াশ করতে হবে।
-ঠিক আছে করেন, তবে বাইরের কোন লোক যেন এর সম্পর্কে কোন রকম খবর না পায়?
-আপনি নিশ্চিত থাকুন। আমাদের হাসপাতালের একটা এথিকস আছে। কেউ জানবে না।
জবাব শুনে ঠিক পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারলো না নীলু। ইতস্তত ঘুরে বেড়াতে থাকলো।
স্টোমাক ওয়াশের কার্যকালাপ এই শুরু হলো বলে! ব্যাপারটা খুবই কষ্টকর, বিশেষ করে রোগীর এই বয়সে। রোগীর বয়স কত হবে? সত্তরের ওপর তো বটেই! এই বৃদ্ধ বয়েসেও তার তেজ দেখে মুগ্ধ হলেন ডাক্তার।
রোগীকে শোয়ান হলো। তারপর একটি নল ঢুকিয়ে দেয়া হলো তার গলার ভেতর। এরপর কলের পানির পাইপ থেকে সজোরে পানির ধারা প্রবিষ্ট হলো বিরোধী দলের প্রধান নেতা খালেদ মিয়ার ভেতরে।
আশ্চর্য! এমন কাণ্ড ডাক্তার তার ইহজীবনে দেখে নি। পুরোদমে স্টোমাক ওয়াশ করা হচ্ছে, কিন্তু তরল তেমন বেরুচ্ছে না। কিছু একটাতে যেন আটকে গেছে। কী সেটা? ডাক্তার সাহেব আরো কিছু যন্ত্রপাতি এনে রোগীর শরীরে প্রবিষ্ট করলেন। কিন্তু কিছুতেই সেই আটকে থাকা পুরু জিনিসটার খোঁজ পেলেন না। তারা খুঁটিনাটি আরো কিছু পরীক্ষা করে পানির ফ্লো আরো বাড়িয়ে দিলেন। এইবার কাজ হয়েছে! ঐতো বেরিয়ে আসছে একটি কাগজের মত কী যেন! ওটা আসলে কী? তারা ভীষণ আগ্রহে জিনিসটা হস্তগত করে এর রহস্যটা উদঘাটনে শশব্যস্ত, এই সময় খালেদ মিয়া দ্রুত বিছানা থেকে উঠে ডাক্তারদের কাছ থেকে বস্তুটি হস্তগত করলেন। এবং আবার মুখে পুড়ে নিয়ে পেটের ভেতর চালান করে দিলেন। ডাক্তারদের হাজার নিষেধ অগ্রাহ্য করে খালেদ মিয়ার সাথের লোকজন তাকে নিয়ে চলে গেলেন হাসপাতালটি থেকে। বিমর্ষ মনে বসে রইলো চিকিৎসকগণ। তারা দারুণ একটা কিছুর আভাস পাচ্ছিলো। কাগজটি কিসের হতে পারে? কেন তিনি সেটাকে এতটা গুরুত্ব দিলেন? আর এত বড় কাগজটি তার পেটের মধ্যে ঢুকলোই বা কেমন করে?

(২)
শাইখ হাসান বেশ উৎফুল্ল হয়ে তার অফিসে বসে আছেন। প্রতিযোগী দলটাকে এক বিন্দুও ছাড় দিতে চান না তিনি। দেখতে দেখতে এক বছর পেরিয়ে গেলো তাদের শাসনকার্য্যের। বাকি চারটা বছরও সেভাবেই কাটিয়ে দেয়া যাবে। খোস মেজাজে তিনি তার উপদেষ্টার সাথে কথা বলছিলেন।
-দেশ কেমন চলছে মনে হয়, বলোতো?
-খুবই ভালো স্যার। আন্দোলনকারীদের মোরাল ব্রেকডাউন হয়ে গেছে। এখন সন্ত্রাস আর গোলযোগ অনেক কমে গিয়েছে। মানুষ পুড়ছে না তেমন একটা।
-আচ্ছা সেদিন যে আমি একজন অগ্নিদগ্ধ শিশুকে দেখতে গিয়ে কেঁদেছিলাম সেটা কি খুব আর্টিফিসিয়াল মনে হয়েছে?
-প্রশ্নই ওঠেনা স্যার। আপনি অনেক সুন্দর অভিনয়... স্যরি ইয়ে মানে অনুভব করেছিলেন। দেশবাসী এই ক্রন্দন দেখে আপ্লুত হয়েছে।
-খুব ভালো!
প্রসন্ন চিত্তে হাসলেন তিনি।
-সবকিছু তাহলে চলছে ঠিকঠাক?
-একদম! এই হরতাল অবরোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে সবাই যার যার কাজ করছে।
-ক্রসফায়ার ঠিক মতো চলছেতো?
-খুব ভালো ভাবেই চলছে স্যার। প্রতিপক্ষের কর্মীদের প্রতিদিনই গ্রেপ্তার করে চলেছে আমাদের দক্ষ বাহিনীর লোকজন।
-খালেদ মিয়া নাকি অসুস্থ্য তুমি শুনেছো?
-জ্বী স্যার অবশ্যই। নেশা ভাং করে কি না কি হয়েছে এখন স্টোমাক ওয়াশ চলছে। অদ্ভুত ব্যাপারটা হলো, তার স্টোমাক ওয়াশের সময় একটা কাগজ নাকি ছিটকে বের হয়ে এসেছিলো। অদ্ভুত ব্যাপার। সবাই হতচকিত হয়ে গিয়েছিলো।
-কী জিনিস সেটা জানো?
-জানিনা স্যার। জানার আর কোনো উপায়ও নেই। তিনি...

(৩)

খালেদ মিয়া বিছানা থেকে ধাঁই করে উঠে কাগজটি উঠিয়ে নিয়ে গিলে ফেলে নিজের উদরস্থ করলেন। ডাক্তাররা নিষেধ করেছিলো, বৃথাই এসব! তার মতো ভিভিআইপি পারসনের ওপর কথা বলবে এমন সাধ্য কার? তবু এক গোঁয়ার ডাক্তার তার কাছে জিজ্ঞেস করতে গেলো,
-ওটা কী স্যার? আপনার পেটে গেলে সমস্যা হতে পারে।
-চোপ বেয়াদব! খালি বড় বড় কথা!

বেচারা ডাক্তার মিইয়ে গেলেন।

ওদিকে খালেদ মিয়ার বাড়িতে সবার মধ্যে চলছে প্রচণ্ড টেনশন। নেতা আবার কী অসুখ বাঁধিয়ে ফেললেন কে জানে! খালেদ মিয়াকে দেখাচ্ছে অন্তস্বত্তা মহিলার মতো। পেটের ভেতরের পুরু কাগজটাকে তিনি পুত্রবৎ আদর করেন। এই জিনিসটা তার বিদেশে থাকা দুই ছেলেকেও দিতে হবে। ছেলেরা থাকে লন্ডন আর মালয়েশিয়ায়। তারা দেশে যে পরিমাণ দুর্নীতি করে ধনসম্পত্তি করেছে, তাতে তারাও একসময় কাগজটার মালিকানা পেয়েই যাবে। কাগজটা যেন খালেদ মিয়ার হৃৎপিণ্ডের মতো। আমরা চর্ব-চোষ্য কত কিছুই না খাই সবকিছুই শরীরে পুষ্টি যোগায়, আবার পরিপাককর্মের বিটকেলে কার্য্যক্রমে তা অপসারিত হয়ে যায়। কিন্তু এই কাগজটা ওসব পরিপাকতন্ত্রের ধার ধারে না। গ্যাঁট হয়ে বসে থাকে পেটের কোন এক জায়গায়। এটা একটা বিশেষ ধরণের কাগজ। এটা শরীরবৃত্মিক কোন কাজেই আসবে না। দুঃখী কাগজ। বসে থাকবে চুপচাপ। আর টুপটাপ করে তার চোখ থেকে জলনিসৃত হবে।

(৪)
শাইখ হাসানের পেটে গোলমাল দেখা দিয়েছে। দিনে ৫-৬ বার বাথরুমে ছুটতে হয়। পেট খারাপ হওয়াকে সে ভয় পায় না, ভয় হচ্ছে, মলের সাথে যদি সেই কাগজটি বের হয়ে আসে! বিতিকিচ্ছিরি কাণ্ড হবে একটা। তার সন্দেহ শঙ্কায় রূপ নিলো যখন মলত্যাগ করার সময় পায়ূপথে একটা খসখসে অনুভব হলো। অতি সাবধানীতেও শেষ রক্ষা হলো না। শেষ পর্যন্ত এটা মলের সাথে বের হয়েই আসলো। তাও ভালো, এটা এখনও কমোডে ভাসছে। শক্ত আর্ট পেপারে আঁকা কাগজ। সহজে বের হতে চায় না। বেচারা শাইখ হাসানের পায়ূপথে কি ঝঞ্ঝাটাই না গেলো। শাইখ হাসান মূল্যবান কাগজটিকে ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে আবার গলা দিয়ে সেঁধিয়ে দিলেন। যদিও তা ছিলো নোংরা, পুরিষের গন্ধমাখা, তবুও শাইখ হাসানের একটুও কষ্ট হলো না গলাধঃকরণ করতে। রাজনীতির উচ্চশিখরে পৌঁছে গেলে কত রকম এটা-ওটা করতে হয়, আর এটাতো মামুলি ব্যাপার! কাগজের অর্ধেকটা তার কাছে আছে, বাকিটুকু খালেদ মিয়া উদরস্ত করে ফেলেছে। শাইখ হাসান মনে মনে ভাবলেন, তার কাছ থেকে যে করেই হোক কাগজের বাকি অংশটা উদ্ধার করতে হবেই। তারপর সে হবে পুরো দেশের একমাত্র কর্ণধর। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেয়া প্রয়োজন খালেদ মিয়াকে কীভাবে আটক করে তার উদর থেকে বাকি অংশটুকু বের করে আনা যায়। এই মহামূল্য জিনিসটা পেলে আগামী পঞ্চাশটা বছর তাদেরকে আর কেউ ক্ষমতা থেকে নামাতে পারবে না।

(৫)
নিয়ামতপূর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে "পরিবেশ পরিচিতি-সমাজ পড়ানো হচ্ছে "। পিএসসি পরীক্ষায় পাশ করতে হলে বাংলাদেশের ম্যাপ আঁকা ছাড়া কোন উপায় নেই। তরুণী শিক্ষিকা উপস্থিত ছাত্রবৃন্দকে শ্রেণীর কাজ দিলেন।
-সবাই বাংলাদেশের একটা ম্যাপ আঁকোতো!
শ্রেণীর মেধাবী ছাত্ররা অনুরোধ করলো যেন না দেখে আঁকতে বলা না হয়। তারা তখনও অতটা পটু হয়ে ওঠে নি। তাদের অনুরোধে শিক্ষিকা দেখে আঁকার অনুমতি দিলেন।

কিন্তু এ কী! কোন বইয়েই দেশের মানচিত্র নেই। ঐ অংশটা নিখুঁতভাবে কাটা। কে কাটলো? বিড়াল? ইঁদুর? কোন একজনের বই থেকে হয়তো বা পাতা ছিড়ে নেয়া হতে পারে, কিন্তু তাই বলে সবগুলোতেই? কারা নিলো এসব? কারা এসব উদরস্থ করছে? বিমুঢ় হয়ে বসে থাকে ক্লাশের সবাই।

(৬)
মানচি্ত্রগুলো উড়ছে। উড়ে উড়ে পেরিয়ে যাচ্ছে সবুজ ঘাস, কঙক্রিট নগর, মেঠোপথ, টংয়ের দোকান, বালিকার হাসি, বালকের দুরন্তপনা। মানচিত্রগুলোকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। কোন মুদী দোকান বা লাইব্রেরি, সুপারশপ, ফুটপাথ সর্বস্তর থেকে মানচিত্র স্রেফ অদৃশ্য হয়ে গেছে। মানচিত্রগুলো একসাথে উড়ছে দুটি নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে। যেখানে গেলে তারা দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উদরে ঠাঁই পাবে পালাক্রমে। তারপর তাদের পেটের কোনো এক কোণে কোনমতে জায়গা করে নেবে। পুরোনো হয়ে গেলে ব্যাক আপ তো থাকছেই।

(৭)
মানচিত্রখেকো খালেদ মিয়া আর শাইখ হাসান একে অপরের কাছ থেকে তা ছিনিয়ে নেয়ার জন্যে যুদ্ধে লিপ্ত হয়। কিন্তু কেউ কারো সাথে পেরে ওঠে না। তাই তারা মানচিত্রটাকে দুই ভাগ করে ফেলার গোপন শর্তে একমত হয়। অবশ্য তাদের মধ্যে কোনো কথাবার্তা হয় না, তবুও তারা নীরব সন্ধিতে দেশটাকে দুইভাগ করে নেন। মানচিত্র তথা দেশকে গিলে ফেলার মত এমন শক্ত মানুষ আর কোথায় পাওয়া যাবে? লোহার তৈরি পাকস্থলী তাদের। সেখানে জমেছে কত মেদ, ঘাম, রক্ত, কান্না ইত্যাদি। মাঝেমধ্যে অবশ্য তরুণ সমাজ বিদ্রোহ শুরু করলে মানচিত্রটা তাদের গলায় এবং পেটে বেশ করে সেঁটে যায়। তখন বেশ হাঁসফাঁস লাগে। এটা অবশ্য তেমন কোনো সমস্যা নয়। তাদের প্রাজ্ঞ ডাক্তার তো আছেই! স্টোমাক ওয়াশ করে সবকিছু উগলে দিয়ে নতুন একটা মানচিত্রের অর্ধাংশ গিলে তারা বেশ আমোদেই থাকেন। মানচিত্র; তথা দেশকে পেটের মধ্যে পুরে রাখলে মাঝেমাঝে বদহজম হয় বটে, তবে স্টোমাক ওয়াশ করে তা বের করে নিয়ে আরেকটি মানচিত্র গলাধঃকরণ করা কোন ব্যাপার নাকি!
দুই নেতার উদরস্থ হয়ে মানচিত্রগুলো নতুন এক দেশের সন্ধান পায়, যেখানে সবুজ নেই, কৃষাণীর হাসি নেই, ঝুম বৃষ্টি নেই শুধু আছে শুধু লোভী দুই নেতার হুকুমে মৃত মানুষদের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ঠিক যেন দেশটার মতোই।

ক্ষতবিক্ষত।


সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:২২
৬৬টি মন্তব্য ৫৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×