somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রন্থালোচনা: মাহবুব ময়ূখ রিশাদের দিকশূন্যপুর

১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ৮:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দিকশূন্যপুর মাহবুব ময়ূখ রিশাদের তৃতীয় গল্পগ্রন্থ। এর আগে প্রকাশিত হয়েছিলো "সান্ধ্যকালীন ট্রেনে গোপন যাতায়াত" এবং "নির্জনতার জ্যামিতিক বিষণ্ণতা"। নিজস্ব ধারার লেখনী এবং বৈচিত্রময় কাহিনীর গুণে সমাদৃত হয়েছেন একটি নির্দিষ্ট পাঠকশ্রেণীর কাছে। অবশ্য কাহিনী বলতে আমরা সচরাচর যা বুঝে বা বুঝিয়ে থাকি রিশাদের গল্পে তা পাওয়া যাবে না সেভাবে। দিকশূন্যপুর বইয়ের দ্বিতীয় গল্প দোতারায় আমরা যেমন দেখি; বিষাদগ্রস্ত, ঝড়ে এলোমেলো দাম্পত্য জীবনের কথকতা। কাহিনীটা এমন, একজন মাঝবয়েসী ব্যক্তি তার স্ত্রীর ওপরে বীতশ্রদ্ধ, ভালোবাসাহীনতার আবদ্ধ চৌখুপিতে হাঁসফাঁস করতে করতে সে দ্বারস্থ হয় তার ফেলে আসা প্রেমিকার। পাঠক, আপনি খুব জমজমাট একটা কাহিনীর প্রত্যাশা করছেন? আপনার ভাবনায় কি কি আছে বলুন তো? একটা জমজমাট পরকীয়া প্রেম? কিছু নির্জনতা, চুম্বন, আর শারীরিক ঘনিষ্ঠতা? দুঃখের বিষয় এসবের কিছুই নেই গল্পটিতে। আর রিশাদ এভাবেই বারেবার আপনাকে হতাশ করতে থাকবে এই গল্পটিতে যেমন, তেমন বাকি গল্পগুলিতেও।
এক সকালে ঘুম থেকে উঠে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র অনুভব করে যে সে তার স্ত্রীর প্রতি কোন আকর্ষণ বোধ করছে না। একদমই না। তার স্ত্রীর নাম এশা। বহুল চর্চিত একঘেয়ে দাম্পত্য জীবন তাকে রূপান্তরিত করেছে নির্বিকার, নির্লিপ্ত, শীতল এক রমণীতে। তাদের দাম্পত্যজীবন ভঙ্গুরও নয়, মজবুতও নয়। অপ্রত্যাগামী এক প্রক্রিয়া যেন তা, ফিরে যাওয়ার কোনো উপায় নেই। বিস্কুটের ইট দিয়ে তৈরি দীর্ঘ সিঁড়ির একদম সর্বোচ্চ তলায় উঠে গেছে তারা। সেখান থেকে নামতে তাদের ভয় করে। বিস্কুটের ইট, খুব একটু শক্ত-পোক্ত ভারবাহী দ্রব্য হিসেবে পরিচিত হতে পারে নি কখনই। চারিপাশে ছড়িয়ে আছে অজস্র দাঁতালো ইঁদুর। কাটবে কুটকুট। একসময় এই অবশ্যম্ভাবী ভাঙ্গনচিহ্ন প্রকট হয়ে উঠলে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্রটি দীর্ঘ পনের বছরের অভ্যাসকে বিদায় জানিয়ে সানজির কাছে চলে যাবার তীব্র আকুলতা পোষণ করে। সানজি, তার প্রাক্তন প্রেমিকা।
সেই সকালে, তার সন্দিগ্ধ, কেঁচোমন বারবার অহেতুক ভয়ে জবুথবু হতে থাকে। নিঃশ্বাস ছাড়তে গিয়ে তার ভয় হয়। এশা কি বুঝতে পারবে কিছু? দীর্ঘশ্বাসটা সাইক্লোন হয়ে তার ঘর ভেঙে দেবে? তার মুখে কি সানজির ছায়া? এই পর্যায়ে একটা ডার্ক হিউমারাস সিচুয়েশন তৈরি হয়। এশা ব্যাগ গোছাতে শুরু করে। তবে কি এশা চলে যাচ্ছে তাকে ফেলে? এই সামান্য দীর্ঘশ্বাস আর মুখের পিঁচুটিপনার কারণে? এত সহজেই চলে যাওয়া যায়? হায় ঘোরগ্রস্ত, সন্দেহবাদী, ভীতু, ভাবনাখেকো স্বামী! সে ভুলেই গিয়েছিলো যে এশার যাওয়ার কথা তার বড়ভাইয়ের কাছে, সম্প্রতি যে বিদেশ থেকে ফিরেছে।
এশার এই চলে যাওয়া সুবিধেই করে দেয় তার। সে এখন সহজেই সানজির কাছে যেতে পারবে। কিন্তু চাইলেই কি আর যাওয়া যায়? যাওয়ার জন্যে উত্তম বাহন সে কোথায় পাবে? সাধারণ বাস-ট্রাক-রিকশায় করে সে কি পৌঁছুতে পারবে সানজির কাছে? সময়ের সুকঠিন গ্রাসে সে বন্দী, করছে ছটফট। সানজি কি আর সেই আগের মত আছে? তার বিয়ে হয়ে যায় নি? সন্তান ধারণ করে নি? আর তার স্বামীই বা কেমন আচরণ করবে তার সাথে?
অবশেষে সে একটি বাহন খুঁজে পায়। একটি অদ্ভুত বাসে করে সময় পরিভ্রমণে ব্রত হয় সে। গাছের পাতার আড়ালে দেখতে পায় নিজের অতীত। তার ছেলে হিমেলের জন্মের দিনটা, সে ছুটোছুটি করতে থাকে আনন্দে, প্রচুর মিষ্টি কিনে আপ্যায়নে ব্যস্ত...সে কোথায় যাচ্ছে আসলে?
"আমরা আত্মার কাছে যাচ্ছি, একেবারে নিজের ভেতর লুকিয়ে থাকা আত্মা"। বিজ্ঞ ড্রাইভার তাকে জানায়।
সানজির বাসায় গিয়ে অবিকল তার মত দেখতে একজন লোকের দেখা পেয়ে যায় সে। সে সানজির স্বামী। সানজি তাহলে কার সাথে দিন কাটাচ্ছে? অবিকল তার মত দেখতে লোকটার সাথে, নাকি তার সাথেই? নাকি আয়নাঘরের ভুলভুলাইয়ায় সবার চেহারা এবং পরিণতি একই রকম? আমাদের এই আল্ট্রামডার্ন আরবান লাইফে প্রেম, ভালোবাসা, নিরাপত্তা, বিশ্বস্ততা, সবকিছু মিলিয়ে যে আইরিশ স্ট্যু বানানো হয়, তা সহজপাচ্য নয় মোটেও, তবুও সবাই তা খায়, এবং নিজেদের শক্তিশালী ভাবে। অথচ তাদের "কোথাও যাওয়ার নেই, কিচ্ছু করার নেই"।
দূর থেকে ভেসে আসে মন ব্যাকুল করা দোতারার সুর। সেই সুরে আপ্লুত হয় তারা। অতঃপর...

?
গল্পটিতে মেটাফরের ব্যবহার যথার্থ। আর সেই সাথে রয়েছে কিছু অসাধারণ কাব্যিক লাইন যেমন- "তুমি চলে যাচ্ছ? কথাটা এতটাই আস্তে বলা, আমি না-শোনার ভান করে চলে যেতে থাকি, আর অন্যদের ঝিনুক কুড়োনো সময়ের দীর্ঘশ্বাসে ভাসতে থাকি-কালবৈশাখীতে পাখি হয়ে যাওয়া পাতার মতো..." এবং এপিগ্রাম, যেমন "মানুষ নিজের জীবন ছেড়ে কোথাও পালাতে পারে না"।
সব মিলিয়ে বলা যায় বইটির অন্যতম সেরা গল্প এটি।

ঝড়ের যাদুকর গল্পটিতেও রিশাদ তার স্বকীয় লেখনী বজায় রেখেছেন। শুরুটা কাব্যিক, কিছুটা ডার্ক এটমোসফিয়ার, এবং পরবর্তীতে তা মোড় নেয় জাদুবাস্তবতার দিকে। এই গল্পটি দুই বন্ধুকে নিয়ে। জামিল এবং রাজীব। এক ঝড়ের রাতে সিগারেট কিনতে গিয়ে দুজনার দেখা হয়ে যায়। এই রাতের নির্জনতায় রাজীবকে পেয়ে বেশ প্রগলভ হয়ে ওঠে জামিল। সহাস্যে সেই পরিচিত সম্বোধনে আলাপ চালিয়ে যেতে থাকে, "আরে তুই!"।
রাজীবের ভেতর অবশ্য সেই চাঞ্চল্য দেখা যায় না। পরিমিত এবং শীতল আচরণ তার। তাদের আলাপচারিতায় স্বাভাবিকভাবেই প্রসঙ্গ উঠে আসে, কে কী করছে। রাজীবের জবাবটি ছিলো চমকপ্রদ। "জাদুঘর বানাচ্ছি"।
বন্ধুত্বের উষ্ণতায় আপ্লুত জামিল অবশ্য এই বক্তব্যের ভেতর কোন অস্বাভাবিকতা খুঁজে পায় নি। গল্পের এক পর্যায়ে যখন রাজীব জামিলকে তার জাদুঘর দেখতে আমন্ত্রণ জানায় তখন থেকেই গল্পটি বাস্তবের আঙিনা থেকে চুপিচুপি বের হয়ে এসে ম্যাজিক রিয়েলিজমের অচেনা, অনিশ্চিতময় জগতে হাঁটা শুরু করে।
অদ্ভুত সেই জাদুঘর। তীব্র আলোর অনলে নক্ষত্রিত। ধাতস্থ হয়ে জামিল অতীতের জানালা দিয়ে কী দেখতে পায়? ধীরে ধীরে বের হয়ে আসে পুরোনো বঞ্চনা, পাপ আর বেঈমানির ইতিহাস।
গল্পের শেষটা বেশ টুইস্টেড, তবে কাহিনীটা কিছুটা সিনেমাটিক লাগতে পারে, ওল্ড স্কুল রিভেঞ্জ। এটা একইসাথে গল্পটির ধনাত্মক এবং ঋণাত্মক মানদণ্ড প্রকাশ করে। এত সাধারণ একটা কাহিনী নিয়েও যে সুপাঠ্য একটা গল্প বানানো যায় এটি নিঃসন্দেহে লেখকের কৃতিত্ব। তবে পাঠক যদি চেয়ে থাকেন যে আরো একটু বিমূর্ততা, জটিলতা থাকতে পারতো, সে দাবীর কথা লেখক গভীরভাবে ভেবে দেখতে পারেন।

সাধারণত বইয়ের শিরোনামের গল্পটির প্রতি পাঠক বিশেষভাবে আগ্রহী হয়ে থাকেন। ঠিক তেমনটি ঘটে প্রথম গল্পটির ক্ষেত্রেও। "দিকশূন্যপুর" একে তো শিরোনামের গল্প তায় গ্রন্থটির প্রথম গল্পও বটে। তাই বিশেষ আগ্রহ নিয়ে গল্পটি পড়েছি।
গল্পের চরিত্র মূলত দুটো। নাহোল-একজন একাকী কিশোর, আর তার পাড়াতো বড়আপা নীরা। নাহোলের জগৎটা আর দশটি কিশোরের মত নয়। সে গভীর ভাবনায় ডুবে থাকতে পছন্দ করে। একাকী বসে ভাবে দিকশূন্যপুর নামক এক কল্পিত রাজ্যের কথা, যেখানে সে রাজপুত্র, তার চার চারটে ঘোড়ার গাড়ি। দৈনন্দিন পঙ্কিল জীবন থেকে মুক্তি পায় দিকশূন্যপুরের পাহাড়ের পাদদেশে প্রেমঝর্ণায় ভিজে। তার জন্যে অপেক্ষা করে থাকে বৃষ্টিতে ভেজা স্নিগ্ধ ঘাসফুলদল। সে বৃষ্টির গন্ধ পায়, জোছনার আলিঙ্গন অনুভব করে, ধারণ করে সমস্ত সবুজ এবং সতেজতাকে। নাহোলের কল্পনার জগৎ নিঃসন্দেহে চমৎকার ভাবে চিত্রিত করেছেন রিশাদ। কিন্তু গল্পটিতে নতুনত্ব কিছু নেই। অসম বয়সের প্রেমাকাঙ্খা নিয়ে কম গল্প লেখা হয় নি। হ্যাঁ, এই গল্পেও নাহোল নীরার প্রতি আকৃষ্ট থাকে প্রবলভাবে। কিন্তু একে তো সে বয়সে ছোট, তার ওপর বিশাল একটি খুঁত আছে তার। তাই অন্যান্য সব গল্পের মত এখানেও ব্যর্থ পরিণতি।
রিশাদ সাধারণত যেভাবে লিখে থাকেন, এই গল্পটি সেই ধারার নয়। গল্পটিতে পাঠকের আবেগ নিয়ে খেলে মন খারাপ করতে বাধ্য করার অভিপ্রায় লক্ষ্য করা যায়। পাঠককে কিছুটা রিলিফ দিতে এমন সরলরৈখিক গল্প তিনি লিখতেই পারেন, কিন্তু বইয়ের নামকরণ এবং গ্রন্থের প্রথম গল্প হিসেবে এ গল্পটিকে বেছে নেয়া ঠিক হয়েছে কি না এই প্রশ্নের জবাব তাকে কারো কারো কাছে দিতে হতে পারে, বিশেষ করে যারা তার পুরোনো পাঠক। এটা নিয়ে উচ্চভাবনা থাকায় গল্পটি পড়ে হতাশ হয়েছি। তবে শুনেছি গল্পটি পাঠকেরা বেশ পছন্দ করেছেন, এটাই বড় ব্যাপার, "হয়তো বা"।
মৃত্যুস্পর্শী রোদ গল্পটিতে আমরা লেখকের পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জ্ঞাত হই। রিশাদ একজন চিকিৎসক। এটা এক দিক দিয়ে একটা বিরাট সুবিধে। হাসপাতালের ওয়ার্ডে, কেবিনে কতশত গল্প রচিত হয়ে যায় প্রতি দিন, প্রতি রাতে! এক আশ্চর্য নিষ্ঠুর জগৎ। হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে নতুনভাবে রচিত হয় জীবন আখ্যান, মানবিক সম্পর্কের জটিলতা, মুখোশ খসে পড়ে, মৃত্যুতীরবর্তী অসংলগ্ন ভাবনার বিভ্রান্ত মানুষেরা নিজের অজান্তেই প্রিয়জনদের বন্ধক দেয় আজরাঈল অথবা ফ্লোরেন্স নাইটেঙ্গেলের কাছে। গল্পটিতে দেখতে পাই পা পচিয়ে নিয়ে আসা একজন বাবাকে, জীবন বাঁচাতে হলে অপারেশন প্রয়োজন। কিন্তু সে কাটা পা নিয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করতে চায় না। তার ছেলেটি সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। অপারেশন না করলে কিছু টাকা বেঁচে যায়; আবার বাবাকে এভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়াও মেনে নিতে পারে না। আমরা দেখি নাড়িভুড়ি ছিড়ে যাওয়া এক মেয়েকে। স্বামীর ভয়াল অত্যাচারে যে মৃত্যপথযাত্রী। কিন্তু তার ভাই অপারেশন করিয়ে তাকে সুস্থ করে তুলতে চায় না। কেন? সুস্থ হলে আবার স্বামীর কাছে ফিরতে হবে। আবার অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হবে। ভাবা যায়! অপারেশন না করায় অবশ্য মূল চরিত্রটির সুবিধেই হয়। সে বাড়ি ফিরতে পারবে তাড়াতাড়ি। একটা ভালো সিনেমা দেখতে পারবে, অথবা শুনবে নতুন কিছু গান। এরকম আরো কিছু দ্বান্দ্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গড়ে ওঠে অত্যন্ত সংবেদনশীল এই গল্পটি। গল্পটির ব্যপ্তি ছোট হলেও গভীরতা অতল। রিশাদের কাছ থেকে এমন থিম নিয়ে একটি উপন্যাস কি আমরা আশা করতে পারি?
লাঠি গল্পটি সদ্য পাশ করা ডাক্তারদের চালচুলোহীন জীবন নিয়ে লেখা। তারা চায়ের দোকানে বসে গল্পগুজব করছে, ঠাট্টা-তামাশা করছে। বেশ সুখ এবং সৌহার্দের সময়, বলা যায়। এসময় তাদের এক ডাঁটে চলা বন্ধু দৌড়ে হাঁপাতে হাঁপাতে তাদের কাছে এলো। ব্যাপার তেমন কিছুই না, সে তার প্রেম প্রতিদ্বন্দ্বীর কাছ থেকে মার খেয়ে ফিরছে। অক্ষম ক্রোধে ফুঁসতে থাকে তার বন্ধুগণ। কিন্তু তাদের আর কী'ই বা করার আছে? একসময়কার ক্যাম্পাসে প্রতাপ দেখানো তরুণেরা ভেজা বেড়াল হয়ে তিন/চারটি সিগারেট বেশি খায়। এই তো! এ পর্যন্ত ঠিকই ছিলো। অকস্মাৎ এক বুড়োর আগমন ঘটে। কেন, কীভাবে এর সন্তোষজনক কোন কারণ বের করতে পারি নি। বুড়ো কিছু ফিলোসফিক্যাল কথা বলে তাদেরকে স্তব্ধ করে দিয়ে যায়। এই গল্প থেকে ভালো লাগার কোনো উপকরণ খুঁজে পাই নি। বইয়ের সবচেয়ে দুর্বল গল্প।
রক্তাক্ত শহরে, এবং কাঁটাচামচের ভুল যাত্রা-এই দুটো গল্পের থিম একই। মুক্তচিন্তাকে ব্যহত করতে, নিশ্চিহ্ন করতে প্রস্তুত 'জিহাদী'দের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে ওঠা নিধর্মী, এবং সুশীল-মডারেট সমাজের এ সংক্রান্ত নিশ্চুপ সমর্থন গল্পদুটির আলেখ্য বিষয়।
প্রথম গল্পটিতে শাহেদ নামক একজন ব্যক্তির উদ্ধত অবিশ্বাসী জীবনবোধ এবং দর্শন কীভাবে অবশ্যম্ভাবী মৃত্যুকে নিয়ে আসে তারই বয়ান। আমাদের সমাজ ভিন্নচিন্তার ব্যক্তিদের প্রতি কেমন প্রতিকূল হয়ে ওঠে তারই এক মেলানকোলিক রূপ। শুরুর লাইনটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ- "এক বছর ধরে আমরা শাহেদের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছিলাম"।
অর্থাৎ, যখন থেকে শাহেদের বন্ধুরা জানতে পারলো তার এই ভিন্ন দর্শনের কথা, তখন থেকেই তার গায়ে মৃত মানুষের সিল লাগিয়ে দেয়া হলো। সে একজন জীবন্মৃত মানুষে পরিণত হলো। তার পরিচিত মানুষদের কিছুই করার ছিলো না অপেক্ষা করা ছাড়া। আর তাই, যা হবার কথা ছিলো, যেন উঠোনে ছড়ানো চাল পোয়াতী মুরগী কিচকিচ করতে করতে খেয়ে নিলো, ঠিক তেমনই আলগোছে তাকে হত্যা করে রাস্তার ধারে ফেলে রাখা হলো। এই গল্প এক বেদনাবিধূর পরাজয়ের গল্প, ব্যর্থতার গল্প, আত্মসমর্পণের গল্প। গল্পটি ভালো লেগেছে, তবে কীভাবে আরো ভালো করা যেতো সে ব্যাপারে কিছুটা আক্ষেপ রয়ে গেছে। রিশাদের গল্পে জাদুবাস্তবতার ব্যবহার বেশ কুশলতার সাথেই সম্পাদিত হয়ে থাকে, এই গল্পটি তেমন কিছু ডিমান্ড করছিলো। তা না করে এভাবে ফ্ল্যাট কাহিনী বলে যাওয়াটা কিছুটা আশাহত করেছে। সেই এক বছরে শাহেদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কিছু বলা হয় নি, কীভাবে সে দ্রুত নিশ্চিত মৃত্যুর মাঝামাঝি সময়টায় বহুবার মারা গেলো, দূরে সরে গেলো, এসবের বিস্তারিত বিবরণ থাকলে ভালো হতো।
কাঁটাচামচের ভুল যাত্রা গল্পটির শুরুটাও দারুণ। পাঠক রীতিমত নড়ে চড়ে বসবেন। "কাঁটাচামচ দিয়ে একজনের চোখ গেলে দেয়ার ক্রিটিক্যাল মুহূর্তে আমার বেশ কিছুদিন আগের একটি অনুভূতির কথা মনে পড়ে যাবে এবং প্রতিবেশীর বদলে নিজেকেই মেরে ফেলতে ইচ্ছে হবে, মনে হবে আমিই তো চেয়েছিলাম, এরা উৎসব নিয়ে আসুক, দুএকটা ভালো-মন্দ কথা বলুক-এখন এই আক্রোশের কোনো মানে নেই..."
পূর্বে উল্লেখিত গলল্পটির সাথে এটার পার্থক্য হলো এখানে পাল্টা আক্রমণের কথা ভাবা হয়েছে। আগের গল্পটির নিরাপদ বাতাবরণ থেকে বেরিয়ে এসে; বলা যায় সেট হয়ে আসা ব্যাটসম্যান যেমন ডান্সিং ডাউন দ্যা উইকেটে এসে ছক্কা মারার চেষ্টা করেন তেমনটা অনেকাংশেই। এখানেও রয়েছে মৃত্যু, কার তা অবশ্য বিস্তারিত বলা হয় নি। কোন একটা ছেলে, যে রক্তাক্ত শহরের শাহেদের মত নাস্তিক, তার মৃত্যু নিয়ে আবর্তিত। এই গল্পটি মূলত আক্রমণ করেছে তথাকথিত প্রগতিশীল, সুশীল মডারেট সমাজকে; যারা এমনতর মৃত্যুকে নিশ্চুপ অভ্যর্থনা জানায়। তাদের খুশিতে ঝিকমিক চোখে একটা কাঁটাচামচ বিঁধিয়ে দেয়ার প্রবল ইচ্ছে শেষতক ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়। এমনটাই হয়ে থাকে, হয়ে আসছে, এবং এটাই হয়তো বা সাম্প্রতিক ট্রেন্ড!
কাছাকাছি থিমের লেখা দুটি গল্পের মধ্যে এটিই শ্রেয়তর, এবং নিঃসন্দেহে সাহসী একটা লেখা। এভাবেই তো লেখকদের এগিয়ে আসা দরকার তাদের সোশ্যাল কমিটমেন্ট থেকে। বব ডিলানের কালজয়ী গান ব্লোয়িং ইন দ্যা উইন্ড থেকে সুধোই তাদের,
"Yes, how many deaths will it take till he knows
That too many people have died ?"
কবীর সুমনের অনুবাদে,
"কত হাজার মরলে তবে মানবে তুমি শেষে?
বড্ড বেশি মানুষ গেছে বানের জলে ভেসে?"

কেবিন নাম্বার এগার গল্পটিতে আবারও আমরা পাই চিকিৎসক রেশাদকে। মৃত্যুস্পর্শী রোদ গল্পটির মত এখানে অবশ্য এতসব দম আঁটকানো দৃশ্যের সমাহার নেই। একজন মধ্যবয়েসী মৃত্যপথযাত্রী ব্যক্তির জীবনের শেষ দিনগুলোর কথা বিবৃত হয়েছে এখানে। নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে যেতে সে তার চিকিৎসককে একটি মর্মস্পর্শী চিঠি লেখে। যেন তাকে সময়ের আগেই মেরে ফেলা হয়। একজন স্নেহময়ী পিতা, প্রেমময় স্বামী কেন এমটা চাইছেন? তিনি তার দুর্ভাগ্যকে টেক্কা দিতে এবং পরিবারকে একটু আগেভাগেই মৃত্যপরবর্তী শোক সামলিয়ে গুছিয়ে নেয়ার জন্যে তার এই বিষাদী চাওয়া। চিঠি পেয়ে চিকিৎসকটি আপ্লুত হন। হয়তো বা বয়স কম বলেই, হয়তো বা মৃত্যু নিয়ে তার রোমান্টিসিজমের কারণে, বয়েস বাড়ার সাথে সাথে সে নিশ্চয়ই এসব অনুভূতির জঞ্জাল ছুড়ে ফেলার জন্যে একটি ভাগাড় খুঁজে নিতে পারবেন!
নন্দিনী, নন্দিনী গল্পটি এই গ্রন্থের দ্বিতীয় ভালোবাসার গল্প, এবং অবশ্যই তা রিশাদের স্বকীয়তায় ভাস্বর। মূল চরিত্রটি জীবনের প্রথম 'জলযোগে'র পর এক অভূতপূর্ব অনুভূতির সম্মুখীন হয়। সারাক্ষণ কে যেন ডেকে চলে তার অতল গহীনে, "নন্দিনী, নন্দিনী!"। কোথায় উৎপত্তি এই কুহকডাকের? কেন, কে ডাকছে তাকে? কী তার উদ্দেশ্য? তার নেশার ঘোর কি এখনও কাটে নি? আশেপাশের কোন বাসায় নন্দিনী নামক কোন মহিলা এসেছে, তার স্বামী তাকে এই নামে ডেকে চলে? নির্ঘুম রাত, বন্ধুদের মশকরা, আর মায়ের উদ্বিগ্নতায় ক্রমশ আর জবুথবু হয়ে পড়ে সে। সে কি নন্দিনীকে খুঁজে পাবে? কোথায়, কীভাবে?
শেষটায় বেশ একটা শকিং চমক আছে, যা পাঠককে ভাবাবে নিশ্চয়ই।
মানুষ মাত্রই অতীতচারী। সাইকেলের ডানা গল্পে লেখককে নস্টালজিক হতে দেখি। চট্টগ্রামের ছয় বছর, হোস্টেল লাইফ, ময়মনসিংহের নিস্তরঙ্গ জীবন, সাইকেলে করে শহর ভ্রমণ, দশ টাকা বাজির ক্রিকেট খেলা, বাবা-মার সরকারী চাকুরীর সুবাদে নানুর কাছে বড় হওয়া, অতঃপর ইট পাথরের ধানমন্ডিতে ঘাঁটি গেড়ে বসা। অতীতচারিতার সাথে কিছু বিষাদ জমা হয় তার মনে। কিছু আক্ষেপ, ক্যাম্পাস থেকে একটা সনদ পেলো মাত্র, তার লেখক জীবন, অথবা বন্ধুটির মুকাভিনয় প্রতিভা কিছুই মুল্যায়িত হলো না, এসব নিয়ে হতাশা, অতঃপর আবার ফিরে আসা দৈনন্দিনে। সাদামাঠা, স্পষ্ট গল্প। অনেকেরই মনের কথা বিবৃত হয়েছে এখানে।

সর্বশেষ গল্প, ডেলফিনার কবুতর। গল্পটি ভালো না খারাপ এই মতামতটির আদৌ কোন গুরুত্ব নেই। কারণ, গল্পটি অন্যরকম। এক হাজার বিষাদী, প্রেমময়, নস্টালজিক ভালো গল্পের চেয়ে একটা আনকোরা 'খারাপ' গল্প ভাবনার জগতে প্রবল আলোড়ন তোলে, এবং রিশাদের কাছ থেকে সেটাই প্রার্থিত। তবে এটাও ঠিক, সব গল্পেই এমন নিরীক্ষা চালালে তা সহজপাচ্য হয়ে ওঠে না, কিছুটা ক্লান্তিকর হয়ে যায় ব্যাপারটা। তাই, এমন গল্প দু-তিনটে রাখাই ভালো বোধহয়। লেখক এবং তার বন্ধু অর্পার ফেসবুক চ্যাটিং থেকে গল্পটার উৎপত্তি। অর্পার সাথে লেখকের সম্পর্কটা ঠিক স্পষ্ট নয়। তারা বন্ধু। শুধুই কি বন্ধু? গল্পে উদ্ধৃত আছে যে লেখক বিবাহিত। আর তাই অর্পা প্রশ্রয়ের সাথে জিজ্ঞাসা করে, "তোমার বউ কোথায়? এত রাতে আমার সাথে টাংকি মারছ কেন বসে বসে?"।
তারা একটি নতুন গল্প তৈরি করতে চায়। অর্পাই শুরু করে। সে প্রস্তাব দেয় ডেলফিনা নামক একটি মেয়েকে নিয়ে গল্প বানাতে। ডেলফিনা। ভালো ছবি আঁকে। ডেলফিনা খ্রিস্টান। সে পালিয়ে বিয়ে করেছে মাহিদ নামের একজন মুসলমান ছেলেকে। ধীরে ধীরে তারা ডেলফিনা এবং মাহিদের জটিলতাময় জীবনে ঢুকতে শুরু করে, অথবা বৃথাই জটিল করতে শুরু করে তাদের জীবন। ডেলফিনা কবুতর পুষতো। হঠাৎ একদিন কী মনে করে সে তিনটে কবুতর জবাই করে খেয়ে ফেলে। কবুতরগুলো তার কাছে আশ্রয় চেয়েছিলো। পৃথিবীটা দিনকে দিন কবুতরদের জন্যে বসবাস অযোগ্য হয়ে উঠছিলো। কিন্তু ডেলফিনা তাদের অনুনয় শোনে নি। গল্প তৈরির সাথে সাথে অর্পা এবং লেখকের চ্যাটিংও চলতে থাকে। লেখকের মতে ডেলফিনা সেক্সুয়াল ফ্রাস্টেশনে ভুগছে। অর্পা ব্যাপারটি নিয়ে লেখককে বেশ একটা টিপ্পনি কাটে মওকা পেয়ে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের শিশ্নমস্তকতা নিয়ে বিদ্রুপ থাকে সেখানে। ধীরে ধীরে চরিত্রদুটি জীবন্ত হয়ে ওঠে। স্রেফ একটা গল্পের চরিত্র হয়ে থাকে না আর। ডেলফিনা আর মাহিদ যখন হানিমুনে যায়, গল্প বের করে আনার অভিপ্রায়ে তাদের হোটেলরুমে চোখ গলিয়ে দিয়ে ট্রেসপাস করার অপরাধে দুজনকেই বিচলিত হতে দেখা যায়। ডেলফিনার চরিত্র আরো দুর্বোধ্য হতে থাকে ক্রমান্বয়ে। চিত্র প্রদর্শনীর প্রসঙ্গ উঠলে সে মাহদের কাছে তার কুমারীত্বের রক্ত নিয়ে আসে, অবিকল তার মত দেখতে একজন ছায়ামানবীর সাথে কথা বলে। যাপিত জীবনকে আরো স্পাইসি করতে দুজনেই পরকীয়া করবে কি না মাহিদকে প্রস্তাব দেয়।
কেন এমন হচ্ছে? এমনটাই কি হওয়ার কথা ছিলো? বিয়ের আগের সম্পর্ক উত্তাপ আর ওম হারিয়ে এমন শীতল উন্মাদনায় মেতে ওঠাই কি নিয়তি?
ডেলফিনা মাহিদের কাছে একটি নাইলনের দড়ি আব্দার করে বসে ফাঁস নেয়ার জন্যে। সেসময় মাহিদ তার কলিগ রিতার সাথে ফ্লার্ট করছিলো।
অতঃপর? ডেলফিনার গোপন বাক্সে আরো কিছু কবুতর যুক্ত হয়। তারা কোথা থেকে এলো? তারা কি আসলেই নিরীহ প্রাণী, নাকি ডেলফিনার জীবনকে ছাড়খাড় করে দেয়া নিরামিষ, পানসে ব্যক্তিরা? কবুতরগুলি কি তার বাবা, ছায়াবন্ধু এবং মাহিদ? ডেলফিনা কী করবে কবুতরগুলোকে নিয়ে?
গল্প শেষ হয় কি হয় না, অর্পা আর লেখক বিদায় নেয় পরষ্পরের কাছ থেকে। ডেলফিনা এবং তার কবুতরগুলোকে সৃষ্টি তো করা হলো, এবার সামাল দেবে কীভাবে? এক অলঙ্ঘনীয় দ্যোতনায় পেণ্ডুলামের মত দুলতে থাকে লেখক। আসলে কে সত্যি, প্রেমময় ডেলফিনা? নিম্ফ ডেলফিনা? ক্রেইজি ডেলফিনা? লেখকের সামনে আর ভাবনার খোলা প্রান্তর থাকে না। তবে কি সেও ডেলফিনার জাদুর বাক্সের একজন বন্দি? এগুলো লেখা নেই গল্পে, তবে আমার কাছে প্রশ্নগুলি এমনভাবেই এসেছে। অন্য পাঠক হয়তো ভিন্নভাবে দেখবে গল্পটি। তার সাথে লেখকের চিন্তা নাও মিলতে পারে, আর সেটাই এই গল্পের বহুমাত্রিকতার গুণ।

তো এই হলো সংক্ষেপে রিশাদের দিকশূন্যপুরে ভ্রমণ। কিছু ব্যাপারে লেখকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। প্রথমত, প্রায় সবগুলো গল্পই নামপুরুষে লেখা। এটি একঘেয়েমি এনে দেয়। গল্প নির্বাচনের ক্ষেত্রে আরো বৈচিত্র আনয়ন প্রয়োজন। যেমন, মুক্তচিন্তার মৃত্যুকে নিয়ে দুটো গল্প রয়েছে, একটি রাখলেই ভালো হতো। হাসপাতাল নিয়েও একই কথা। এছাড়া লেখক নিজেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সদ্য মেডিক্যাল থেকে পাস করা গ্রাজুয়েট হিসেবে দেখিয়েছেন। কেমন হতো যদি তিনি একজন মৃত্যুপথযাত্রীর বেশ ধরে একটি গল্প লিখতেন? অথবা নিজেকে নারী চরিত্র হিসেবে উপস্থাপন করতেন? এছাড়া বেশ কিছু গল্পের শুরুটা একইরকম। ঝড়জল এবং বৃষ্টির পর প্লাবিত অন্ধকার শহর নিয়ে।
বৈচিত্র সুন্দর। রিশাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা আরো বেশি, এবং তিনি লেখালেখির ক্ষেত্রে সিরিয়াসলি ভাবছেন। তাই একজন সহযাত্রী হিসেবে এ কথাগুলো বলা।

শুভপাঠ।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২৭
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×