somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বইয়ের মলাটে ছবি দেখে প্রেমঃজাফলং ও একটি ব্যাস্ত শহর সিলেট

২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শ্রীমঙ্গল থেকে শেষ বিকেল এ সিলেট এর বাসে উঠেছিলাম ৷ সন্ধ্যায় সিলেট এসে হোটেল ঠিক করে সেদিনকার মতো ঘুম ৷ তারপর দিন শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা তাই শহরের আশে পাশে ঘুরেই দিনটা কাটিয়ে দিলাম ৷ ঘুরেছি শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস,শাহজালাল(রহঃ) এর মাজার ৷ রাতে মাজার থেকে বের হওয়ার সময় কলেজের আরও দুইটা ফ্রেন্ডের সাথে দেখা হলো ৷
যোগ হওয়া বন্ধু দুজনের নাম হলো সাদিক(বস) আর সম্রাট ৷ সিদ্ধান্ত নিলাম আগামীকাল ভোরে রওনা দিবো জাফলং এর পথে ৷ সেই জাফলং যেই জাফলং এর ছবি ছোট বোনের বইয়ের মলাটে দেখে শুধু আফসোস হতো ৷ জীবনে কখনো হয়তো এই যায়গাটিতে যেতে পারবো না ৷
স্বপ্নের সেই জাফলং ঘুরার অপেক্ষায় রাতটা পলকেই কেটে গেলো ৷ কিন্ত ঘুম পাগল কানন ভাই তো আছেই,তার জন্যে হোটেল ছাড়তে ছাড়তে প্রায় সকাল ৯ টা ৷ পরে জাফলং বাস স্ট্যান্ড থেকে পাঁচ বন্ধু মিলে বাসে উঠলাম ৷ তবে বাসে নেই সিট,যেতে হবে দাড়িয়ে ৷ চলতে শুরু করলো একে একে শহর ছাড়িয়ে বিস্তর খোলা প্রান্তরের মাঝে এক পথে,অসাধারণ একটা পথ ৷ পথে পরলো জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্ট,গোয়াইনহাট,তামাবিল ৷ দুপুর ১২ টা নাগাদ পৌছালাম মামার বাজারে ৷ সেখান থেকে কাঁচা,ধুলোময় রাস্তা ধরে জাফলং এর পিয়াইন নদী আরেকটু সামনে ৷ হাটতে হাটতে পিয়াইন নদীর পারে, অসংখ্য শ্রমীকেরা পাথর উঠাচ্ছে নদী থেকে ৷ নদীতে পানি বুক সমান,নদীর অপর পারে চা বাগানের সন্ধান পেয়ে সবায় নেমে গেলাম নদীতে ,হেটেই পার হবো পুরো নদী ৷ নদীর পানি এতটাই স্বচ্ছ যে নিচের প্রতিটা পাথর কনা দেখা যাচ্ছে ৷ প্রচন্ড স্রোত যে স্থির হয়ে দাড়ানোর কোনো উপায় নেই ৷ নদী পার হয়ে উঠলাম ভ্যান গাড়ীতে , ভ্যান গাড়ীর গন্তব্য খাসিয়াদের চা বাগান ৷ চা বাগানের পথে পরলো জাফলং সীমান্তের শেষ গ্রামটি,আর খাসিয়া রানীর বাড়ি টা তো আছেই ৷ চা বাগান ঘুরে এসে আবারও হেটে নদী পার হলাম,নদীতে লাফালাফি করে গোসল এর কাজ ও শেষ ৷ তারপর হোটেল এ গিয়ে দুপুরের খাবার সারলাম,কিন্তু দাম হলো গলা কাটা ৷ এবার গন্তব্য সেই মলাটের ছবির ব্রীজটার কাছে,অর্থাৎ জাফলং জিরো পয়েন্ট ৷ পাহাড়ের উপরের রাস্তা ধরে কিছুটা হেটে পৌছালাম জিরো পয়েন্ট এ,সময় তখন প্রায় মধ্য বিকেল ৷ পানির স্রোত আর অপরুপ পাথরের মৌহ তে হারিয়ে গেছিলাম ৷ ফটাফট সবায় মিলে ছবি তোলা শুরু ৷ দেখতে দেখতে বিকেল শেষ হয়ে সন্ধ্যা ৷ কিন্তু এখন আমাদের ফিরে আসতে বিন্দুমাত্র ইচ্ছে করছে না ৷ কিন্তু শহরে তো ফিরতেই হবে,কারন রাতের বাসে ঢাকা ফিরার টিকেট আগে থেকেই কাটা ৷ হেটে আসলাম আবার সেই মামার বাজার,সেখান থেকে বাসে উঠে আবার শহরের পথে রওনা,এবার সবায় সিট পেলেও আমার আসতে হলো দাড়িয়েই ৷
শহরে এসে আমি ঘটালাম এক মজার কাহিনী,কদমতলীর এক দোকানে বসে দুই প্লেট বুট-বিরানী আর ছয় কাপ চা এক বসাতে সাবাড়!!
বিঃদ্রঃ আমার জীবনের প্রথম দুরপাল্লার ভ্রমন এই সিলেট, মাত্র এক বছর আগের ঘটনাই ৷ আর এখন আমার ভ্রমন গন্তব্যের সীমানা নেই,চলছে আর চলবেই ৷
কিছু ছবিঃ
১)এই সেই ব্রীজ


২)খাসিয়াদের চা বাগান এ কানন


৩)সিলেট সার্কিট হাউজ


৪)কোলাহলমুক্ত ক্বীন ব্রীজ


৫)আমি আর সাদিক


৬)জাফলং জিরো পয়েন্ট


৭)পাহাড় থেকে পিয়াইন নদী


৮)হাফ প্যান্ট পরে নদী পার


৯)সিড়ি গুলো বেয়ে উপরে উঠলেই শাহজালাল (রহঃ) এর মাজার


১০)জালালী কবুতর


১১)শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর অডিটোরিয়াম


১২)জাফলং এ গোধূলি


১৩)জিরো পয়েন্টে আমার শ্রেষ্ঠ মুহুর্ত


১৪)ভারতের পাহাড়ে ঘর-বাড়ী



বিঃদ্রঃ নভেম্বর ২০১৪ তে ঘুরেছি,এতদিন পর সৃতিকাতর হয়ে লেখা
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ ভোর ৬:৩৫
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×