somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে আসি মেঘালয়

০৪ ঠা জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


ছবিটি আমাদের মেঘালয়া ভ্রমনের সময় ওয়াহ রাশি ফলস এর।

বাংলাদেশ থেকে খুব বেশী দুরে নয় ভারতের মেঘালয় রাজ্য ৷ সিলেট থেকে ৫৪ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত তামাবিল-ডাউকি বর্ডার দিয়ে প্রবেশ করতে হয় মেঘালয় রাজ্যে ৷

ভিসাঃ ভারতের ভিসা পাওয়া এখন খুবই সহজ, শুধু মনে রাখবেন ভিসা তে যেনো পোর্ট বাই রোড ডাউকি সিলেক্ট করা থাকে ৷ নতুন নিয়ম হিসেবে আপনার পাসপোর্ট এ ডাউকি পোর্ট থাকলেও তা দিয়ে আপনি বাই রোড হরিদাসপুর-বাই রেল গেদে দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন ৷
ভিসা চার্জঃ ৬০০ টাকা
ইটোকেন করলে চার্জঃ ৫০০-৮০০ টাকা
শ্যামলি-BRTC ভিসা+বাস চার্জঃ৫১০০ টাকা
ইমিগ্রেশনঃ
*বাংলাদেশ পর্ব
সকাল ৯ টায় বাংলাদেশের ইমিগ্রেশন কার্যকলাপ শুরু হয়, তবে এবারের ইদে ৭ টার সময় খোলা হয়েছে ৷ ইমিগ্রেশন এ যাওয়ার আগে অবশ্যই ঢাকার দিলকুশা/নিউমার্কে সোনালী ব্যাংক এর শাখা থেকে ৫০০ টাকা ট্রাভেল ট্যাক্স দিয়ে যাবেন ৷ না দিয়ে গেলে বর্ডার এ তা আপনার কাছ থেকে ৮০০-১০০০ টাকা নিয়ে করে দিবে ৷
তামাবিল পৌছে সবার আগে চলে যাবেন হাতের ডান পাশের পুলিশ স্টেশন এ/দালালির আখড়া তে! এখানেই সবার প্রথম পাসপোর্ট জমা নিবে ৷ একা পাসপোর্ট জমা দিলে টাকা না দিয়ে বেচেঁ যেতে পারেন,তবে একসাথে অনেকজন মিলে পাসপোর্ট জমা দিলে প্রতি পাসপোর্ট এ ৫০-১০০ টাকা করে রেখে দিবে!! (পুলিশ ইনচার্জ ই দালালি করে, এরকম বিরল দৃষ্টান্ত হয়তো শুধু বাংলাদেশ এ দেখা যেতে পারে) ৷ আমি প্রথম বর্ডার পার করি তাই, ৭ জনের জন্য ৫০০ দিতে হয়েছিলো ৷ ফিরতি পথে আলাদা আলাদা যাওয়ায় টাকা নিতে পারেনি ৷
তারপর আপনার কাজ হলো হাতের বাম পাশের কাস্টমস অফিসে যাওয়া ৷ সেখানেই মূলত ব্যাগ খুলে দেখে,তবে বেশিরভাগ সময়ই তা করেনা ৷ শুধু মাত্র একটা সাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয় ৷
তারপর বাংলাদেশ প্রান্তের শেষে বিজিবির খাতায় একটি সাক্ষর দিবেন, এভাবেই বাংলাদেশ পর্ব শেষ হয় ৷

*ভারত পর্ব
নো ম্যান্স ল্যান্ড এর করিডর পার করে,ওয়েলকাম টু মেঘালয়ার সাথে একটা সেল্ফি তুলে ফেলুন ৷
প্রবেশ এর শুরুতেই বিএসএফ আপনার পাসপোর্ট এর সাথে আপনার চেহারা টা একটু মিলিয়ে দেখে ছেড়ে দিবে ৷
তারপর বামের রাস্তা ধরে ২ মিনিট হাটলেই বাম পাশে পরবে ইমিগ্রেশন অফিস ৷ সেখানে গিয়ে পাসপোর্ট জমা দিবেন, অফিসার তা এন্ট্রি করে আপনার একটি সাক্ষর নিবে এবং এন্ট্রি সিল লাগিয়ে দিবে আপনার ভিসায় ৷ অফিসিয়ালি ভারতে আপনার প্রবেশ হয়ে গিয়েছে ৷

*ডলার বিড়ম্বনাঃ
ডাউকি তে আপনি কোনোমতেই ডলার ভাঙতে পারবেন না,তার জন্যে আপনাকে অবশ্যই শিলং এ যেতে হবে ৷ স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া,শিলং এ আপনি পাসপোর্ট নিয়ে গেলে এক্সচেঞ্জ করে দিবে তবে সময় লাগবে ১ ঘন্টার মতো ৷ এছাড়াও পুলিশ বাজার কেএফসি ভবন এর নিচ তলায় পাবেন এক্সচেন্জ ৷
১ ডলার=৬০-৬৩ রুপী
১০০ টাকা= ৭২-৭৫ রুপী
১০০ রুপী= ১২০-১৩০ টাকা

ভ্রমন প্লানঃ
মেঘালয় এ ৩/৪ জনের মারুতি ও ৭-৮ জনের টাটা সুমো ট্রাভেলার দের জন্য সবচেয়ে বেশী পাওয়া যায় ৷

ডাউকি থেকে শিলংঃ(ড্রপ)
১৫০০-২০০০ রুপী (মারুতি)
২০০০-৩৫০০ রুপী (সুমো)
*পথে ঘুরিয়ে নিয়ে যেতে বলবেন মাওলিনং, নাওহেত লিভিং রুট ব্রিজ ও বড়হিল ঝর্না।
১২০ রুপী প্রতিজন(লোকাল সুমো)
৮০ রুপী প্রতিজন(বাস)


ডাউকি থেকে চেরাপুন্জিঃ
১৫০০-২৫০০ রুপী (মারুতি) (ড্রপ)
৩০০০-৩৫০০ রুপী (সুমো) (ড্রপ)
২৫০০-৩৫০০ রুপী (মারুতি)(ড্রপ+ঘুরা)
৪০০০-৫০০০ রুপী (সুমো) (ড্রপ+ঘুরা)

ডাউকি থেকে শিলং হয়ে চেরাপুন্জিঃ(ড্রপ)
২৫০০-৩০০০ রুপী (মারুতি)
৪৫০০-৫০০০ রুপী (সুমো)

ডাউকি/চেরাপুন্জি থেকে সিনতুং-লাইতলুম হয়ে শিলংঃ
৪৫০০-৬০০০ রুপী (সুমো)
৩০০০-৩৫০০ রুপী(মারুতি)

ডাউকি থেকে আমলারেম হয়ে শ্নোনেংপেডেংঃ
২৫০০-৩২০০ রুপী (সুমো)
১৫০০-২২০০ রুপী (মারুতি)


চেরাপুন্জি ঘুরাঃ
থাংকারাং পার্ক,সেভেন সিস্টার ফলস টপ,সেভেন সিস্টার ফলস ভিউ,নোহকালিকাই ফলস,লাইপাতেং ফলস, মওসমাই কেভ,তৃর্না, উমশিয়াং ডাবল ডেকার লিভিং রুট ব্রীজ ইত্যাদি ৷
সুমোঃ ৩০০০-৪০০০ রুপী
মারুতিঃ ১২০০-১৫০০ টাকা

শিলং ঘুরাঃ
বারাপানি লেক(উমিয়াম),ডন ভস্কো মিউজিয়াম,ক্যাথেড্রাল চার্চ, ওয়ার্ডস লেক,এলিফেন্ট ফলস,শিলং পিক, লেডী হায়দারী পার্ক ৷
সুমোঃ ২০০০-২৮০০ রুপী
মারুতিঃ ৮০০-১৫০০ রুপী

এন্ট্রি টিকেটঃ
থাংকারাং পার্কঃ ১০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ২০ রুপী, পার্কিং ২০ রুপী মারুতি, ৪০ রুপী সুমো ৷

মওসমাই কেভঃ ২০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ২০ রুপী, পার্কিং ২০ রুপী মারুতি, ৪০ রুপী সুমো ৷

সেভেন সিস্টার টপ/ইকো পার্কঃ ১০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ২০ রুপী, পার্কিং ২০ রুপী মারুতি, ৪০ রুপী সুমো ৷

সেভেন সিস্টার ভিউঃ ১০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ২০ রুপী, পার্কিং ২০ রুপী মারুতি, ৪০ রুপী সুমো ৷

নোহকালিকাই ফলসঃ ১০ রুপী মানুষ ৷

ক্রাং সুরি ফলসঃ ২০ রুপী মানুষ ৷

বারাপানি লেকঃ ৫০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ১০০ রুপী, পার্কিং ২৫০ রুপী মারুতি, ৭৫০ রুপী সুমো ৷

উমশিয়াং ডাবল ডেকার লিভিং রুট ব্রীজঃ ২০ রুপী মানুষ ,ক্যামেরা ২০ রুপী ৷

ওয়াহ রাশি ফলসঃ ১০০ রুপী মানুষ(ফরেইন), পার্কিং ২০ রুপী মারুতি, ৪০ রুপী সুমো ৷

মাওলিনং গ্রামঃ গাড়ী প্রতি ৫০ রুপী ৷

নাওহেত লিভিং রুট ব্রীজঃ ১০ রুপী মানুষ ৷

তাবুঃ
তাবু পিচ করার অনুমতি পাবেন শুধুমাত্র শ্নোনেংপেডেং ও নংরিয়াত এ ৷ তবে দুটো যায়গাতেই আপনাকে তাবু পিচ করার জন্যে ২০০ রুপী করে দিতে হবে ৷

হোটেলঃ
শ্নোনেংপেডেং এঃ
ব্রাইট স্টার হোটেল প্রতি রুম ১৫০০ রুপী(চারজন)
তাবু+বেডশিট+পিলো ৭০০ রুপী(তিন-চার জন)

চেরাপুন্জিতেঃ
কর সংরিয়া ২৫০০ রুপী(ট্রিপল বেড)
অনেক ধরনের কটেজ ৩৫০০-৫০০০ রুপী (ট্রিপল বেড)

শিলং এঃ
পুলিশ বাজারের দিকে ৩০০০-৭০০০ রুপী (ট্রিপল বেড)
মফরান এর দিকে ১০০০-২৫০০ (ট্রিপল বেড)

নংরিয়াত এঃ
সিরিন হোমস্টে, প্রতিজন ৩০০ রুপী ৷

খাবারঃ
* ডাউকি তে খাবার তেমন ভালো না ৷
*চেরাপুন্জি তে
*জেমিস ইন্ডিয়ান ক্যুজিন
* 7 ট্রেপ রেস্টুরেন্ট
* অরেন্জ রুটস রেস্টুরেন্ট
*সিরিন হোমস্টে

*শিলং এঃ
*পারওয়াজ হোটেল(মুসলিম)(মফরান)

*আমলারেম,সিনতুং এ খাওয়ার মতো তেমন কিছু নেই ৷
*জেমিস এর আলু পরাটা, 7 ট্রেপ এর চিকেন কারী, পারওয়াজ এর গরুর মাংস, সিরিন এর শসা ভর্তা ও অরেন্জ রুট্স এ পুরি সাবজি ৷


শিলং থেকে বাস/ট্যাক্সি/সুমোঃ
*গোয়াহাটি(পুলিশ বাজার)
*বারাপানি লেক,ডন ভস্কো মিউজিয়াম,ক্যাথেড্রাল চার্চ(গিরিখানা রোড)
*ডাউকি,জোয়াই(এনজেলি স্ট্যান্ড)
*চেরাপুন্জি,পোলো,মাউকিনরো,মাউসিনরাম(মফরান)

*** খরচপাতি অফ সিজন এ ২৫-৫০% হারে কমবে। ( নভেম্বার- এপ্রিল)
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০১৭ রাত ৮:৪৬
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×