somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তৃতীয় সহস্রাব্দের জ্ঞানযুগ ও তাসাউউফের স্বরূপ ১ : বোধযুগ

২৮ শে জুলাই, ২০১২ রাত ৯:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক নজরে সুফিজম এ স্পষ্ট হয়, তাসাউউফ বা সুফিজম বা সুফিবাদ বলতে আলাদা কোন বিশেষ কিছু নেই। এটা অন্তর্চেতনার এক বহি:রূপ।



যদিও জ্ঞানযুগে প্রবেশ করেছি আমরা, কিন্তু তা বোধযুগে পড়েনি। বরঙ অবাক হয়ে দেখতে হয়, বোধযুগ চলে গেছে যুগে যুগে। বোধযুগ চলে গেছে মহামহিম নবী ইব্রাহিম আ.’র সময়। তারপর বোধযুগের আগমন মূসা আ., ঈসা আ., মহামতি গৌতম বুদ্ধ, মহামতি মহাবীর, দয়াময় রাসূল দ., তাঁর চার খলিফা রা. বা গাউসে জিলানী রা.’র সময়।

বোধযুগ তাকেই আমরা বলতে পারি, যে সময়টায় মানুষের মস্তিষ্কে তথ্যের সাথে সাথে উপলব্ধির প্রবেশ ঘটে। যখন উপলব্ধির প্রবেশ ঘটে, তখনি বদলে যায় আমূল, সবকিছু। বদলে যায় কল্যাণের দিকে। বোধের উন্মেষ ঘটায় সার্বিক-সামগ্রিক অনুভবের যোগফলের সমন্বয়। আর সার্বিক-সামগ্রিক অনুভব আসার একটা পূর্বশর্ত ওই, যাকে আমরা গালভরে কেরামতি নাম দেই।

বিশ্বের প্রতিটা তথ্য এখন বলাচলে কোন না কোনভাবে সাতশো কোটি মানুষের আঙুলের ডগায়। এই জ্ঞানযুগের কথা মানুষ কোনভাবে ভাবতেই পারত না দেড়শো বছর আগেও। আজ আর কোন প্রবাহক্ষম জ্ঞান গুপ্ত নেই। তথ্য ও উপাত্ত আজ ডালপালা ছড়িয়েছে চিরহরিৎবৃক্ষের মিথিক মহাপাখির মত।

এ যুগের সবচে বড় প্রাপ্তি, আমরা যা জানতে চাই, তাই জানতে পারি। সবচে বড় অপ্রাপ্তি, আমাদের তৃতীয় নয়ন-ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়-অলৌকিক ক্ষমতা-টেলিপ্যাথি বা ইলহাম নেমে এসেছে সর্বনিম্ন স্তরে।

একেই বোধহয় বলে, আয়রনি।
হাজারো বছর ধরে আমরা যে সাধরণ অতিচেতনার ধারক ছিলাম, সেই সাধারণ অতিচেতনাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়াতে সবচে বড় জ্ঞানযুগে প্রবেশ করেও বোধযুগের প্রশান্তিময় স্থিরতা থেকে আছি যোজন যোজন দূরে।

আমরা আজকে বিশ্বাস করি- মানুষ সাইকেল চালাতে পারে, মানুষ পানিতে সাঁতার কাটতে পারে। কিন্তু এটা বিশ্বাস করি না- মানুষ তথাকথিত অলৌকিক ক্ষমতার এতবড় স্বভাবজাত ও সহজাত ধারক-বাহক, যে, অলৌকিক শব্দটাই আসলে অলীক। ওই অলৌকিকতা মানুষের জন্মগত। স্বভাবগত। স্থান, কাল, পাত্র, জাতি, বর্ণ নির্বিশেষে সেটাই এক চিরায়ত সত্য।



অথচ, যুগ বোধযুগে তখনি প্রবেশ করে, যখন একটা সমাজের বেশিরভাগ মানুষ এই চেতনার ধারক ও বাহক হয়। তা-ই আমরা দেখি মহামতি গৌতম বুদ্ধের সময়কালে সব অনুসারীর মধ্যে। কিছু না কিছু অতিক্ষমতা। দেখি ঈসা আ.’র অঙুলিতে শিফায়ে কুল, সেইসাথে তাঁর অনুসারীদেরও অসম্ভব অবাস্তব সক্ষমতা। আমরা তখন সেটাকে হেসে মিথিক প্রক্রিয়ায় ফেলে দেই। আমরা মুসা আ.’র কম্যুনিটিতে দেখি সেই প্রোজ্জ্বল্য। দেখি, রাসূল দ.’র অনুসারী সাহাবী রা.’র হুকুমে বাঘ উল্টে দৌড় দেয়, দুর্গের দ্বার খুলে ঢাল বানান তাঁরা, বা সেই বিখ্যাত, উক্তি, মদিনা থেকে দূরের পাহাড়ে যুদ্ধনির্দেশ পৌছানো, ইয়া সারিয়া! আল জাবাল!
সারিয়া! পাহাড়ের দিক থেকে শত্রু আসছে!
দেখি, গাউসে জিলানী রা.’র সময়কালে ও কাছাকাছি সময়ের মধ্যে প্রায় পাঁচজন ইমামুত তরিক্বতের আগমন ও অধিলৌকিকতার ছড়াছড়ি বাগদাদের পথে প্রান্তরে। দেখি, হাসান আজমিরি রা. যার দিকে তাকান তারই সত্যদর্শন হয়ে যায়, ভারতের এক কোটি মানুষের।



বোধযুগ কি পুরোপুরি তিরোহিত?
এখনো আছে, কোথাও ব্যক্তিভিত্তিক, কোথাও কাল্টভিত্তিক, কোথাওবা কম্যুনিটিভিত্তিক। কিন্তু বিস্তৃত কম্যুনিটিতে আজ আর বোধযুগের দেখা পাই না। পৃথিবীর প্রতিটা তথ্য-উপাত্ত-জ্ঞান-বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ যখন আঙুলের ডগায়, তখন আমরাই এই বোধযুগকে মিথযুগে ঠেলে দিয়েছি। অথচ বোধযুগ উল্টো আমাদের ভিতরে প্রবেশ করার কথা ছিল।

যদি বলি, সুফিবাদে কিছু একটা গুপ্ত আছে, এই সেই গোপন বিষয়। যাকে আমরা চলতি ভাষায় বলি অলৌকিকতা, তাই।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১:০৬
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×