somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আত্মপরিচয়

১০ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদেরকে মহান ইংরেজ সাহেব সমাজ ব্লাডি বেঙ্গলিজ অভিহিত করে এসেছে। আমরাই ঠগির জাত, আমরাই ডাকুইত। আমাদের ভিতর থেকে ঠগ বাছতে গা উজাড় হয়। ইবন বতুতা অভিহিত করেছেন গর্ভিনীগামী ও সময়-অসময়ে সবুজ পাতার ভিতর গোল বাদাম পুরে খেতে থাকা ধীবরের কালোজাত হিসাবে। কারো কাছে, শুধুই গোলামের জাত। এর পা-চাটা থেকে তার পা-চাটা।

ওর অধীন থেকে তার অধীন। আমরাই অযোদ্ধার জাত। ভূ-ভারতে এহেন অযোদ্ধা নিরামিষ জাতি আর নাই। আমাদের বর্মি এসে লুটে যায়, চিত্রাঙ্কন করি। মুঘল-ব্রিটন-ভারত-পাকি লোটে, লুটপাট চলে অন্দর-বাহিরে। আমরা কালোমুখে আকর্ণবিস্তৃত হাসি দেই।



আমাদের, যে, যা খুশি ডেকেছে। মূর্খতম। গরিব; তস্য গরিব, তস্য তস্য গরিবস্য গরিব। মাছির বিচরণক্ষেত্র। এমন এক দেশ, যেখানে শ্বাস নিলেও প্রেগনেন্সির সম্ভাবনা আছে। কারো কাছে আমরা-

মালাউনকা বাচ্চা, কাভি নেহি আচ্ছা,
যো হ্যায় আচ্ছা, ও ভি শুয়ার কা বাচ্চা।



হ্যা, আমরা হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান নির্বিশেষে মালাউন কা বাচ্চা। কারণ, আমাদের পূর্বপুরুষ ও পূর্বনারীরা ব্রহ্মার পূজা করেছেন। আমরা তাদেরই বংশধর। আমরা কালো, গায়ে খাটো, দুর্বল চাষীর জাত।

আবার কারো কাছে বটমলেস বাস্কেট। কউবা আমাদের আট মাথা খসিয়ে দিয়ে তলোয়ারের ধারপরীক্ষা করে। কউ দেয় কাঁটাতার থেকে ঝুলিয়ে।

আমরা চোরের জাত, তাই আমাদের কাছে ব্রিজ বানাতে টাকা দিবে না। এমনকি বিনিয়োগও করবে না। আমাদেরকে বিদেশিরা বলে চোর, আমাদেরকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেন চোর, বিরোধী নেত্রীও বলেন চোর। আমাদের রিকশাওয়ালা চোর বলে গালি দেয় যাত্রিকে, যাত্রি রিকশাওয়ালাকে। হ্যা, আমরা নিশ্চই চোর। নাহলে শিক্ষিত, পরিশ্রমি আমরা যখন যাই, তখন আমাদের বন্ধুসুলভ নিয়োগকর্তাও কেন বলেন, আই নো ইউ আর বাংলা অ্যান্ড আই হ্যাভ নো প্রব্লেম উইদ দ্যাট। বাট ইন পাবলিক, ইউ শুড সে দ্যাট ইউ আর অ্যান ইন্ডিয়ান।

স্ট্যাব য়ু! আই অ্যাইন্ট ইন্ডিয়ান অর এলস!
পৃথিবী থেকে বাঙালি যা নিয়েছে তারচে বহুগুণ দিয়েছে। এই নীল-সবুজ গ্রহটায় দু-পেয়ে মানুষের বিকাশে আমরা দিয়েছি বহুধাবিভক্ত মূলসঞ্জীবনী।



আমরাই সর্ব্বোচ্চ! পৃথিবীর চূড়া মাথায় নিয়ে আমাদের ভূমির যাত্রা শুরু। আর, যার মাথা যত উচু, সে তত বেশি দিয়ে যায়। হিমের আলয় ধুয়ে ধুয়ে চুয়ে চুয়ে যে মাটি নেমে আসে, সেখানে ছুঁড়ে দিয়েছি আমরা যে, কোনকিছু। আর তা তরতরিয়ে, লিকলিকিয়ে উঠেছে বেড়ে।

তাই, তোমরা ভুবনের সবচে স্বাদ-গন্ধওয়ালা যে মূলখাবারটা খাও, সেটা আমাদের অবদান। যব-গম-ভূ্ট্টা-আলুর চেয়ে, যে কোন মেইন ফুডের চেয়ে আমাদের বাসমতির স্বাদ এগিয়ে। এবং, দ্বিধা নেই, আমরা নিতে জানি। আর নিয়ে তা বহুগুণে ফেরত দিতে জানি। তোমাদের বেয়গন বা টোমাটো, আলু-চা-মরিচ-আনারস এসেছিল একটা দুটা বীজ আকারে। অযুত-নিযুত-কোটি-অক্ষৌহিনী গুণে ফেরত দিয়েছে আমাদের ভূমি। এক মনোভোলা আমের স্বাদ আমরা আড়াইশো জাত থেকে দেই।



তস্কর বণিকের জাত! খবরদার! আমরা ভুখা নাঙা অভাবী নই- শুধু একটা খাদ্য যে পরিমাণ ফলাই, তা সম্বৎসর সবাই খেয়ে তিনগুণ রফতানির মত উৎপাদন এখনো করি আমরাই। হ্যা, আমরা হিসাবী নই। কারণ, বণিকের জাত নই, আবেগি মানুষের জাত। আমরা যখন তোমাদেরই খাবার আলু ফলাই, বহু-বহুগুণ এম্নি ফেলে দিই। ধান ফলাই, ধান ফেলেছড়িয়ে দেই, খাবার উপায় থাকে না। আনারস ফলাই, খাবার মানুষ থাকে না, একমুদ্রা করেও কেনা হয় না, নদীতে যায় তোমাদের আনা বেয়গুন বা টোমাটো। আমাদের আম আজো গাছ থেকে পড়ে পচে যায়। তোমরা জানো না। যদি হিসেবি হতাম, সারা বছর খেয়ে ফেলে ছড়িয়েও তোমাদের কাছে বিকিয়ে দিতে পারতাম।



সামনে এসে দাঁড়াও এবং বুক চিতিয়ে একবার বল, তোমাদের কারো ভূমি আমাদের বাংলাদেশটার মত উর্বরা! নেই। তোমাদের আরবি খেজুর, পামফল, স্ট্রবেরি আমরা ফলাই এবং ভবিষ্যতে চাইলে সেটা তোমাদের কাছে বিকাতে পারি। এখনো যদি কিছু বাকি থেকে থাকে, এনে ছুড়ে ফেলে দিব আমাদের মাটিতে। আর সে মাটি তা বহুগুণে তোমাদের কাছে ফেরত দেয়ার সামর্থ্য রাখে। কারণ, আমাদের মাটিই সেরা। আমাদের ভূমিই সেরা।

স্রোতিনী-তটিনী-দুকূলনাশা, শত নাম আছে আমাদের এক নদীর। কারণ, বিশ্বে আর কোথাও আমাদের মত অগুণতি শিরা-উপশিরা নেই। সারা দুনিয়াটা চষে ফেলো, এমনভাবে ছড়ানো স্বাদুপানি আর কোত্থাও পাবে না। সবার আগে যা দরকার, সেই পানি আমরা এখনো, আজো পার হেড হিসাবে সবচে বেশি ব্যবহার করি।



আর এই পানিতে, যে কোন বীজ এনে ছড়িয়ে দাও। চাইলে শুধু নদী দিয়ে সারা দুনিয়ার সবচে বেশি মাছের চাহিদা আমরা আজো পূর্ণ করতে পারি। তোমাদের নীলনদের তিলাপিয়া বা সাংহাইয়ের কার্পিও আমরা ফলাই। আমাদের হাজারো মাছের জাত, তোমাদের একেক দেশে কয়টা করে?

আমাদের সাগরের মত মাছ দুনিয়ার খুব কম জায়গাতেই হয়। আমাদের মাছচোর ঠেকানোর জন্য অষ্টপ্রহর সৈনিক নিয়োগ করে রাখতে হয়- নাহলে ভারত-বার্মা-লঙ্কা-থাই থেকে জেলে চলে আসে আমাদের জলে। আর লঙ্কাকে কর্ষিতভূমি তো করলাম আমরাই।



ম্যানহাটানের অকর্ষিতপূর্ব জঙ্গলে যখন জাগুয়ারের বসত, সারা দুনিয়ার মানুষ যখন নাঙা না থাকলে গাছের ছাল জড়ায়, তা না হলে পশুর চামড়া বা নামকা ওয়াস্তে কাপড়, টেক্সাসের ধূ ধূ প্রান্তরে শুধু বাইসন আর বাইসন, সিডনির নদীতে অ্যালিগেটর-ভূমিতে ক্যাঙারু, স্যাক্সনরা অ্যাঙলোদের সাথে কামড়াকামড়িতে ব্যস্ত, কাঁচা মাংস খায় দশদিনের বাসী করে নরম করে, নর্মানরা সাগরে কোন পোত নামাতে পারেনি যখনো, আরিয়ানরা নিজের দেশে খাবার না পেয়ে ক্ষুৎপিপাসায় দেশ ছাড়ছে, আফ্রিকান-জাভানিজরা উলুলুলু করে একজন আরেকজনকে কেটে খায়, চীনারা জাতি তো দূরের কথা- গোত্রও একত্র হতে পারেনি, আরিস্ততল-প্লেতো যখন হাজার বছর পরের স্বপ্ন- গ্রিকরা ব্যস্ত শিশু ও ভেড়া মৈথুনে, নিপ্পনি-কোরিয়ানদের শুধু সাগরজল শুকানো নুন আর কাঁচামাছই সম্বল খাবার হিসাবে, ইনকা-মায়া-অ্যাজটেক মহাসাম্রাজ্য অথবা মিসরের ফারাওরাজত্ব অনাচার ও পেষণে ক্ষয় হতে হতে তলানিতে, ভারত জাতপাতগোত্রযজ্ঞে ছিন্নভিন্ন-



আমরা, তখন, উয়ারী-বটেশ্বর-ময়নামতি আর উত্তর বাংলায় একের পর এক খুলছি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম মহাবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে আমরা, এই বাংলাকে করেছি বিশ্বের জ্ঞানমাতা।

বাংলা সর্বধারীনী, বাংলা সবাইকে আশ্রয় দিয়েছে। সবাইকে ধারণ করেছে। বাংলা শূণ্যধারিণী, মহামহিম অতলান্ত শূণ্যের অনুভূতি ধারণ করার সক্ষমতা ছিল বলেই এ বাংলা থেকে শূণ্য সংখ্যাটার ধারণা পূর্ণতা পেয়েছে। হায়রে, যে মায়া সভ্যতার হাজার গুণতে লাখো ধরনের সংখ্যা বোঝাতে হত, পাঁচ হাজারের বেশি গুণতে গেলে গণিত হয়ে পড়ত অসার, সেখানে আমরা গণিতে শূণ্যকে প্রচলিত করে যে কোন সংখ্যা হিসাব করার ধারণার জন্ম দিলাম। এই শূণ্য ছাড়া গণিত শূণ্য। গণিত ছাড়া বিজ্ঞান অচল। আরবরা নিয়ে গেল আমাদের কাছ থেকে। ইউরোপিয়ানরা ছড়াল সারা দুনিয়ায়। আমাদের থেকে নিয়ে নিয়েই ওরা সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে আরো অনেক কিছু।



তাইতো পোশাকের মূল ধারণা আমরাই ছড়িয়েছি সারা বিশ্বে। বুননশিল্প? জননী বাংলা। মসলিন, সূতী, রেশমী- সভ্য পোশাকের আর কোনও ধারণা আছে এই তিনের বাইরে? পোশাক ছাড়া মানুষ কীভাবে মানুষ হয়? মানুষ নামের দু পেয়ে পশু সমাজে সত্যিকার পোশাক পরিয়েছি প্রথম, আমরাই।

তাই, বুদ্ধিবৃত্তির চর্চায় থেমে থাকিনি খাদ্য-পোশাক-জ্ঞান ও গণিতে। দাবার ছকে নউরনিক ঝড় তুলেছি প্রথম। এই, পাঁচশ বছর আগেও, অ্যাবাকাসের মত দুয়েকটা ধারণা বিনে সারা দুনিয়া জানতই না, যে দাবা ছাড়া আর কোন খেলা খেলে বুদ্ধি বাড়ানো যায়। খেলতে খেলতে যে পশু থেকে মানুষ হয়ে ওঠা যায়, তা বাঙালির অবদান।



তোমরা ক্রেডল অভ সিভিলাইজেশনের নাম দাও মেসোপটেমিয়া, মিসর, মেডিটেরেনিয়ান, মায়া, চৈনিক ভারতীয়তে।
আমরা জাহান্নামের আগুনে বসিয়া হাসি পুষ্পের হাসি।



কই, আমাদের মত উচ্চারণবৈচিত্র্য আর সংক্ষিপ্ত বর্ণমালা নিয়ে আর কোন ভাষা তো দাঁড়ায়নি পৃথিবীর বুকে? আমাদের ভাষার মত আর কোন ভাষা তো সারা পৃথিবীর শব্দগুলোকে আপন করে নেয়নি! এত সমার্থবোধক শব্দের ঝোলা কার বুলিতে আছে? মুখের কথা দিয়েই তো মানবজাতির মানুষ হয়ে ওঠা।

ধর্ম? সেতো এই জলে শুদ্ধ হল।

নামের অর্থ সিদ্ধ হয়েছিল সিদ্ধার্থের, তাই কালাতিক্রমী বোধকে ধারণ করে তিনি হয়েছেন বুদ্ধ। এই আসমুদ্রহিমাচল বাংলার বুকে, লুম্বিনী রাজগৃহ ছেড়ে তিনি চন্দ্রাহত হয়েছিলেন।



আমরাই বলতে পেরেছি, পারছি, পারব,

সর্ব্বে সত্ত্বা সুখীতা ভবন্তু!
ভুবনের সকল সত্ত্বা সুখী হোক!
সালামুন আলাল আলামীন!
লেট দেয়ার বি লাইট-

হ্যা, সিদ্ধার্থ গৌতম বাংলার। আবার, এই বাংলাতেই তার মঠের রাজত্ব। এখানেই গোড়া গেড়েছিল এই বিশ্বের চার বড় ধর্মের একটা- যা পৃথিবীকে আদল দিয়েছে। বদলে দিয়েছে খোল-নলচে। আবার এখান থেকেই বিক্রমপুরের বজ্রযোগীনীতে অতীশ রওনা দেন হিমের আলয়ের দিকে। ফলশ্রুতিতে আলোকিত করেন ভারত, চীন, জাভা, নিপ্পন, বার্মা থেকে শুরু করে পুরো পূর্ব গোলার্ধের উত্তর-দক্ষিণ সবটুকু!

পূর্ব দিগন্তে সূর্য আজ ওঠেনি, একাত্তরে ওঠেনি, সূর্য সব সময়েই পূর্ব দিগন্তে ওঠে।



শরীরচর্চা, শারীরিক সুস্থতা, আত্মরক্ষা- জনক কে? মহান চতুর্বিংশতিতম বুদ্ধ, বোধিধর্মা। একজন বাঙালি বৌদ্ধ ধর্মযাজক, যার হাত দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় শাওলিন টেম্পল। আজকের কারা-তে, কুঙফু বা সব মার্শাল আর্টের শিল্পটাও বাংলার থেকে যাত্রা শুরু করেছিল।

সেই লেট দেয়ার বি লাইট-
আলোকের ধারণা, আলোকিত করার ধারণা বৌদ্ধিকতাময়। বৌদ্ধিকতা তীব্রভাবে আলোকমুখী। আর এই ধারণা মহান মমতাময় চোখের ধারক যীশু পূর্ণ করেন এই বাংলার অবদান থেকেই। দ্য লস্ট ইয়ার্স অভ যিসাস ক্রাইস্ট। হ্যা, তিনি বাংলার দ্বারা আলোকিত জনপদ তিব্বতে এসেছিলেন। ধর্মশিক্ষা, আলোশিক্ষা পূর্ণ হয়েছে এখানে লম্বা সময় থাকার মাধ্যমে। তিব্বতের বৌদ্ধ মন্দিরে আজো লেখা আছে, এখানে এসেছিলেন এক নবী, নামটা ঠিক ঈসা লেখা ছিল।



তারপর?
যীশু গেলেন ফিরে নিজের জনপদে। সেখানে শুধু সেমেটিকদের মধ্যে তার ধর্মপ্রচার সীমাবদ্ধ ছিল। তাঁরপর পিতর ও পল পরিণত হলেন রোমীয়তে। পাগান যউসমুখী লাখো গডের ধারণায় ছিন্নভিন্ন য়ুরোপ এই প্রথম এক পতাকার নিচে ও এক ধারণার নিচে একীভূত হবার প্রেরণা পেল। এই শুরু হল য়ুরোপের একত্র উত্থান।
পূর্ব দিগন্তের সূর্য কালাবর্তে পৌছল পশ্চিমে।
নৌকা ভাসাল য়ূরোপ। কর্ষিত হল অস্ট্রেলিয়া, উত্তর আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকা।
বহু ঘাতপ্রতিঘাতের পর, প্রতিটা জনপদে একটা ইউনিফর্ম হউম্যান সিভিলাইজেশনের গোড়াপত্তন হল শুরু।
অথচ, সে নৌকা ভেসেছিল এই ভূখন্ডের উদ্দেশে!

হিন্দু ধর্মের অন্যতম মূল ধারকও এই বাংলা। সনাতন হিন্দুধর্ম চিরদিনই অঞ্চলভিত্তিক। কোন অঞ্চলে শিব প্রধান তো কোন অঞ্চলে রাম, কোথাও কৃষ্ণ তো কোথাও দূর্গা এমনকি দক্ষিণ ভারতে রাবণও দেবতা। সাংস্কৃতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে, দূর্গাপূজার মত এত বিশাল, ব্যাপক ও অবাক করা ধরণ নিয়ে ধর্মাচার আর কোথাও হয় না।



আর বৈদিক ধর্ম তো কালক্রমে পরিবর্তিত হয়েছেই। কিছুটা ভিন্নতা এসেছে। যেমন, বেদের নিরাকার একেশ্বরবাদী অমূর্ত ঈশ্বরের ধারণা হয়েছে পরিবর্তিত। বেদে যা ছিল অবংশগত, শুধু যোগ্যতানির্ভর শ্রেণীবিভাগ, সেই ব্রাহ্মন-ক্ষত্রিয়-শুদ্র-বৈশ্য পরিণত হয়েছিল বংশভিত্তিক, জাতিভিত্তিক শ্রেণীবিভাজনে।

এই বাংলায় জৈনরা ছিলেন, মহাবীরের অনুসারী। আছেন শিখরা, ও প্রকৃতি পূজারীর দল। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীতে অন্যান্য মিশ্রধর্মও লক্ষ্য করা যায়।




আবার অবাক করা বিষয়, এই বঙ্গতেই আছে মসজিদের শহর। প্রতি গলিতে নয়, প্রতি মোড়ে মোড়ে একাধিক মসজিদ ঢাকাতে। শুধু ঢাকাতে যে পরিমাণ মসজিদ, আরবের অনেক দেশ তার চারভাগের একভাগ মসজিদ কল্পনা করতে পারে না। তাই বিশ্বমানচিত্রে মুসলিমপ্রধান অঞ্চল আমরা দেখি উত্তর আফ্রিকা থেকে মধ্য এশিয়া পর্যন্ত, আবার ওদিকে মালয়েশিয়া-ইন্দোনেশিয়ার একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। অথচ মাঝখানে বাংলাদেশ, অনেকটা ইসলাম বলয় থেকে দূরেই, মুসলিম অধ্যূষিত একটা অঞ্চল। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিমপ্রধান দেশ।



বাংলার মানুষ কতটা খোলাপ্রাণ হলে নিজের অঞ্চলনির্ভর ধর্ম হিন্দু থেকে বৌদ্ধতে রূপান্তরিত হতে পারে এবং তাতে কোন দাঙা হাঙামায় সব চূর্ণ হবার সম্ভাবনা দেখা যায় না! কতটা মানবতা বাংলায় থাকলে খ্রিস্টধর্ম প্রচার করতে পারেন মিশনারীরা এবং তাতে তাদের দিকে বক্রদৃষ্টি তো দূরের কথা, সব সময় সম্মান জানানোই হয়েছে! বাংলায় মুসলিমরা এসেছেন। কউ সাম্রাজ্য বিস্তারে। কউবা ধর্মপ্রচারে। আর তাদের কথা, ধর্ম গ্রহণীয় মনে হল বাঙালির কাছে। বাঙালি তা আবারো উদারমনে গ্রহণ করল। যারা যাই গ্রহণ করল না, কিন্তু পাশে স্থান দিল। দিল যথাযথ সম্মান ও সহনশীলতা। ফরাসি জাত বোরখার উপর ব্যান দিয়ে নিজেদের কসমোপলিটান দাবি করে, বাংলার মত কসমোপলিটান জনপদ পুরো পৃথিবীতে প্রকৃতার্থে আর পাওয়া যাবে না। তাইতো বাংলাতে ধর্মের নতুন নতুন রূপ পরিগ্রহণে বাঁধা নেই।

এজন্যই এখানে রাজা রামমোহন রায় তোহফাতুল মুওয়াহিদীন জারি করতে পারেন। উপহার পাঠাতে পারেন একেশ্বরবাদীর নতুন তত্ত্বে। ব্রাহ্মসমাজ ঢাকাতে আজো আছেন।

আমাদের জাতপাতের দোষে দুষ্ট করা হয়, অথচ আমরাই বলেছি,
আসবার কালে কী জাত ছিলে,
এসে তুমি কী জাত হলে,
কী জাত হবে যাবার কালে- সে কথা ভেবে বলোনা!



আমাদের ধর্মীয় উন্মত্ততায় সহিংস হবার দোষ দেয়া হয়। শুধু এরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে বিশাল ফলাও করে সারা দুনিয়া তামাম করা হয়। অথচ আমাদের সনাতনরা আজো শাহ আলী মাজার বা শাহ পরাণ মাজারে গিয়ে আর্তি জানিয়ে আসেন। পূজার ঢাকে উন্মাতাল হয়ে ওঠে আশপাশ। একই সময়ে মুসলিমদের ওয়াজ মাহফিল চলে একই এলাকায়। এমনকি ভুল করে ওয়াজের আলিমের গাড়ি ঢুকে পড়ে পূজার জায়গাতে, তাতে কোন রোষকষায়িত লোচন দেখা যায় না। কোন নানকে পোশাক নিয়ে বিদ্রুপ করা হয় না যদিও ইউরোপের পথে কোন ধার্মিক মুসলিম নারীর চলতে কষ্ট হয় আর ভারতের স্বয়ং রাষ্ট্রদূতকে শাড়ী পরার অপরাধে মার্কিন বিমানবন্দরে আটকে রাখা হয়!



আমরা সবচে সহনশীল, উদার আর পরমতসহিষ্ণু ছিলাম না, এখনো আছি। এখনো ধর্মের এই সহাবস্থান আর কোত্থাও নেই। তাইতো আমাদের শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংস বলেন, যত মত তত পথ।

বলেন, জ্ঞানসমুদ্রয় সূর্য উদিত হলে ভগবান নিরাকার। আর যখন তবপ্রেমে আত্মহারা আমি, তখন প্রেমান্ধের জগতে সূর্য অস্তমিত হয়। নেমে আসে ঘোর শীতকাল। জমে যায় সেই জ্ঞানসমুদ্র, জমাট বরফ নিয়ে আমি খেলি- আর হয়ে পড়ি সাকারের পূজারী।

এই বাংলা ছাড়া আর কোথায় রমেশ শীল গাইতে পারেন, মাইজভান্ডারে উইঠাছে তৌহিদের নিশানা! ঘুমায়োনা মায়া ঘুমে আখির জমানা!

তবপদ সরোজ মকর অন্ধ আশেক,
রমেশ বিহঙ্গী বেশে কাটায় সারাবেলা।
গাউসুল আজম বাবা নূরে আলম,
তুমি ইসমে আজম জগত ত্বরানেওয়ালা।



এখানে রাজার ছেলে শুধু চন্দ্রগ্রস্ত হয়ে ঘর ছাড়েন না, বিশাল জমিদারের ছেলে হন কঠিন সাধনা করা মহাঋষি, আর তাঁর ছেলে হন বিশ্বজয়ী বিশ্বকবি, তারপর ইসলামের নবীর গুণগান গাইতে তাঁর বাঁধে না।



এখানেই, একই মুখে একই কলমে নজরুল ধরেন মদীনাওয়ালার বিরহব্যথার পাশাপাশি ভজনসঙ্গীত। বাউল পারে ননীর জন্য কষ্ট পাওয়া নীলশিশু কৃষ্ণের ব্যথায় জর্জরিত হয়েও বলতে, যে নূরে নূর নবী আমার, তাহে আলসবাড়ী। অজান খবর না জানিলে, কীসের ফকিরি!



বাঙালির মমতাকে কউ কোনদিন বুঝতেও পারেনি। এই ভালবাসা ও প্রেমের সংজ্ঞা কউ কোনদিন ধারণ করতে পারেনি। তাইতো দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান বাটারফ্লাই আসলে ফুরফুর করে ওড়ে বাংলার পথেপ্রান্তরে। সুখপাখি শুধু বাংলার ডালে ডালে কুহু কুহু করে ডেকে যায়।

যে কোন বিচারে, বারবার করা পরিসংখ্যানে এখনো সারা পৃথিবীতে সবচে সুখী রাষ্ট্র বাংলাদেশ। মানুষ বিজ্ঞান-ধর্ম-অর্থ-খ্যাতি-ক্ষমতা-সম্মান-প্রতিপত্তি চায় শুধুমাত্র একটা কারণে, তা হল, ভাল থাকা। ভাল থাকতে চায় শুধু একটা কারণে, সুখের জন্য। আর সবচে সুখী মানুষ আমরাই।

আমাদেরই পরিবার সবচে দৃঢ়, আমাদেরই পারিবারিক মূল্যবোধ সবচে বেশি। আমরাই নিজের পরিবারকে এত ভালবাসার পরও অন্যদের সাথে লাগলে মুখচোরার মত লজ্জা পেয়ে যাই। পাকিস্তানীদের মত পরিবারকে বেশি ভালবেসে কন্যা হত্যাও করি না, আবার ভারতীয়দের মত ফ্যামিলি ফিউডে জড়িত হয়ে যাই না। এই প্রতিটা বিষয়ের ভিতরেই নিহিত আছে সুখের চাবিকাঠি।



এই এক আজব দেশ যেখানে দেশের জন্মদাতা আধ্যাত্ম্যসাধনায় দীক্ষিত, আবার তার রাজনৈতিক গুরুও আধ্যাত্ম্যসাধক, এমনকি এই দেশের রাজনীতিক শেরে বাংলাও একই ধরনের। এই দেশে কবিরা আধ্যাত্ব্যবিদ, সাহিত্যিকরা আধ্যাত্ব্যবিদ, বহুভাষাবিদ শিক্ষাবিদরাও তাই তিন হাজার বছর ধরেই।



তাই এখানেই সবচে বেশি মাজার। সবচে বেশি মুসলিম আধ্যাত্ম্যসাধক। এখানেই, হিমালয় থেকে সুন্দরবনে পাশাপাশি আত্মআবিষ্কারে বসে থাকতে পারেন বৌদ্ধ-ঋষি-মুনী-আউলিয়া। বরফে বা পানিতে, কাদায় বা গাছের ডালে। পাথরে। ঘন্টা-দিন-হপ্তা-মাস-বছরজুড়ে আজব সাধনায় রত থাকতে। এই বাংলা সর্বধারীনী।



সর্বধারিনীর বুকে আরিয়ানরা বামুন হয়ে শেষে বাঙালিতে লীন হন। ইংরেজ এসে গোরা বা অ্যাংলো হয়ে বাঙালিতে মিশে যান। না মিশলেও তার সম্মান কিছু কমে না। পর্তুগীজ-ওলন্দাজ-ডাচ এসে হয়ে যান বরিশাইল্যা পোলা। আরব এসে পরিণত হন দয়াল বাবায়। হিন্দুস্তানী এসে গুরুতে। মুগল ঘোড়সওয়ার সেনা তা আরবি-ফারসি-তুর্কি-আফগান-পাঞ্জাবি-দিল্লিওয়ালা হোন না কেন, পরিণত হন ঢাকাইয়াতে। তাইতো আমাদের প্রাচীণ বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার সেই বিহারি-উড়েরা এসে চল্লিশ বছর পাকিস্তানী পরিচয়েও থাকতে দোষ হয় না, আবার তাদের বাঙাল মুলকের মানুষ করে নিতেও আমাদের বাধে না। আমরা ‘গরিব’ হয়েও স্থান দিই বাঙাল-উর্দুভাষি-মগের মিশ্রজাত রোহিঙ্গাদের। আমাদের পাশে পাশে পার্বত্য জাতিগোষ্ঠী শত শত বছর ধরে বসবাস করছেন, আলাদা দেয়াল তুলে দিতে হচ্ছে না পরস্পরের মধ্যে। স্বয়ং বাঙালি জাতিটাও হাজারো জাতের অপূর্ব মিশ্রণ। আমেরিকা নিজেকে মেল্টিঙ পট হিসেবে দাবি করে। অথচ জাত বিজাতের গলনপাত্র তো আমরা।



আর পাত্রকররা এখানটাতেই ছিলেন হাজারো বছর ধরে। মনুষ যখন দুনিয়াজুড়ে মাটি-পাথর-কাঠ বা পাতাখড় দিয়ে থাকার জায়গা বানায়, তখন আমাদের আশপাশেই বিচ্ছুরিত হয় ইটের ধারণা। তাই পাত্র তৈরিতে পৃথিবীর সামান্য কয়েকটা সভ্যতার পাশাপাশি আমাদের হেঁটেচলা। তাই, তখন আমরা বানাই দালানকোঠা করিয়া রঙিন।



আবার আমরাই বলি, আর কতদিন থাকবায়রে হাসন, রাজা লক্বব ফাড়িরে আমি না লইলাম আল্লাজির নামরে। আমি না করলাম তাঁর কাম...

বাঙালি কী, তা আর দেখার সময় নেই। বাঙালি কী না, তা ভাবার সময় এসেছে। বাঙালি পাইলট আরব-ইজরায়েল যুদ্ধে শ্রেষ্ঠ ডগফাইট দেন। ব্রিটিশের সাগর ইংলিশ চ্যানেল প্রথম সাতড়ে পাড়ি দেন বাঙালি, এমনকি পরে পা-বিহীন বাঙালিও। জগদীশ চন্দ্র বসু’র গাছের প্রাণ থাকার প্রমাণ আবিষ্কার করা যে কত বড় অবদান, সেটা ভুলতে পারলে আমরা বাঁচি। যেন গাছের প্রাণ থাকাটা খুব একটা বড় বিষয় নয়। যেন, রেডিও মানব সভ্যতাকে একটা সুপার হাইওয়েতে নিয়ে যায়নি।




বাঙালি পদার্থবিদ আইনস্তাইনের থিওরি অভ রিলেটিভিটিতে শুধু শোধন আনেন না, তিনি আধুনিক কোয়ান্টাম ফিজিক্সকে দেন পূর্ণরূপ। যে কোয়ান্টাম ফিজিক্সের উপর দাঁড়িয়ে আছে পুরো বিজ্ঞান। জীবনের গূঢ় রহস্য আবিষ্কার করেন বাঙালির বিজ্ঞানী। ফিস জিনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, জগতে পুরুষের অপরিহার্যতা নেই। এই আবিষ্কারের জন্য আবার অন্যজন পুরষ্কৃত হন।



ইউটউব গড়ে ওঠে বাঙালির হাত ধরে- সারা পৃথিবীতে ভিজ্যুয়াল শেয়ার অ্যান্ড কম্যুনিকেশনে যে বিবর্তন সাধিত হয় তা আগামী সহস্র বছর পরও মানুষ ভুলতে পারবে না। বাঙালি বিজ্ঞান শেখান সারা পৃথিবীকে। শেখান গণিত, হিসাব বিজ্ঞান। সব ইউনিভার্সিটি মানুষের উপযোগী করে বিজ্ঞানের প্রচার করতে ব্যর্থ যেখানে, সেখানে মাত্র একজন করেন এই লাখো মানুষের কাজ।



ইলেক্ট্রনিক ভোটিঙ মেশিন থেকে শুরু করে হেন ক্ষেত্র নেই, যেখানে নেই আমাদের বিচরণ। বিশ্বের অর্থনীতির মূলনীতি আমরা আমূল বদলে দিয়েছি পরপর দু্বার- খাদ্যসঙ্কটকাল ও ম্যাস দারিদ্র্যক্ষেত্রে ঋণের বহুগামিতার বিষয়ে। আমরা রাসায়নিক সার প্রয়োগের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছি পরপর দুবার, দুবার পাল্টে দিয়েছি শরীরে তরলের সঙ্কট হলে স্যালাইন নেয়ার সংজ্ঞা। এবং এই তালিকা শেষ হবার নয়। আমাদের ছাড়া নাসা চলে না, মাইক্রোসফট বা অ্যাপল চলে না।

আমাদের শ্রেষ্ঠত্বের অনুভূতি কউ ধারণ করতে পারবে না বলেই আমাদের এত এত কবি। কউ শক্তহৃদয়ের নন, কোমলতায় পরিপূর্ণ। আমাদের সুখ অনন্ত বলেই আমরা যখন তখন নানাভাবে গেয়ে উঠি নানা সুরে।

আবার এই আমাদের প্রলয়ঙ্করী পদ্মারূপ বিশ্ব কল্পনাও করতে পারে না।



সারা বিশ্ব একবার মরতে জানে না, আমরা পারি ভাষার জন্য দুবার মরতে। অ্যালেক্সান্ডার আমাদের পাড়ে এসে আমাদের মগধ হাতি বাহিনীর দুর্ধর্ষতার কথা শুনে পালিয়ে বেড়ায়। তাইতো সিল্ক রুট গেছে আমাদের বুক চিরে। মশলা আমাদের এখান থেকে বণিকরা হাজারো বছর ধরে নিয়েছে। করেছে নিজেদের খাবার সুস্বাদু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের মূল দুই শাখার একটা, আয়ূর্বেদিক উদ্ভব ও বিকাশ এখান থেকেই। আমরা সোনারগাঁয় মুঘলকে রুখে দিতে পারি বুদ্ধি দিয়ে, মগকে রুখতে পারি তাড়া দিয়ে, পলাশীতে বণিকদলের বিশ্বাসঘাতকতায় পরাজিত হতে পারি, কিন্তু সশস্ত্র বিদ্রোহ আবার শুরু করতে পারি আমাদের এখানেই! তাই সারা ভারত অহিংসতায় যখন প্রস্তুত, আমরা তখন সশস্ত্র বিদ্রোহে নেতৃত্ব দিতে পারি সংগঠিতভাবে। আমরা বারবার বলতে পারি, বিশ্ব জাগলে ভারতউপমহাদেশ, আর সেটা জাগলে বাংলা জাগবে না। বরং, বাংলা জাগলে ভারত উপমহাদেশ জাগবে, উপমহাদেশ জাগলে বিশ্ব জাগবে।



আমাদের ভীরুর জাতি বলা হয়েছে বারবার, কিন্তু এতবার এত বিচিত্রভাবে শত্রুর মুখোমুখি আর কউ হয়নি। আমরা খুন্তি কোদাল দিয়ে আকাশে ওড়া পাকিদের মাটিতে নামিয়েছি, এমনধারা সশস্ত্র সংগ্রামের কথা পৃথিবী শোনেনি। আজো বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর বীরত্বকে সারা দুনিয়া মনে করে অকল্পনীয় ঝুঁকি নেয়া। আমাদের একজন সীমান্তরক্ষীর বিপরীতে পাঁচজন দাঁড়িয়ে থাকে, তার পরও তারা খোঁচা দেয়ার সাহস রাখে না।



হ্যা, আমরা একটা দিক দিয়ে পিছিয়ে আছি। আমরা ভুলে যেতে বসেছি আত্মপরিচয়। আর যে জাতি আত্মপরিচয় ভুলে বসে থাকে, তার পরিবর্তন ঈশ্বরও করেন না। তবে নিজের নামটা আবার মনে পড়ে গেলে বাঙালি পৃথিবীর বুকে অনন্যতার সাক্ষ্য রাখবে আবোরো। বাঙালি যদি বীরের জাতি না হয়, তাহলে আর কউ এই পৃথিবীতে নেই।



কারণ, এই বাংলার প্রতি পাঁচ বর্গমিটার মাটির নিচে শুয়ে আছেন একজন করে শহীদ। আমাদের মাটি এত পবিত্র, এখানে পা রাখার মত জায়গাও নেই।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:০৩
৪৮টি মন্তব্য ৪৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×