somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দীপক চোপড়ার মুহাম্মাদ: আ স্টোরি অভ দ্য লাস্ট প্রফেট ও ঝিম ধরানো বিশ্লেষণ-২

২৭ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথা হচ্ছিল নিউইয়র্ক টাইমস বেস্টসেলার বইটির লেখক দীপক চোপড়ার সাথে অ্যালেন স্টেইনফিল্ডের। ছোট্ট এই আলাপটা যেন দৃশ্য-অদৃশ্যমানতার ভিতরে মানবতার মহান মেলবন্ধন করার যোগ্যতা রাখে।

মেডিটেশনে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়ে ওই সময়ের চরিত্রদের সজ্ঞানতার ভিতর দিয়ে প্রকাশিত করেন?

পৃথিবীটাকে দেখতে চাই তাঁদের চোখ দিয়ে। হাঁটতে চাই তাঁদের মত। আর এসবের আগে অবশ্যই, তাঁদের নিয়ে পড়ালেখা করতে হয়। পুরোটাই সক্ষমতার বিষয়, মানের বিষয়। কাউকে অনুভব করার কাজটা ওইসব ব্যক্তির সক্ষমতা ও মান। কারো সক্ষমতা মাতৃত্বে। কারোটা বোকা বানানোয়। জানেন তো, ভিক্ষুকের মূল কাজ বোকা বানানো। তো মুসলিমদের এই এক-জাতি হয়ে ওঠা, এক ঈশ্বরের দিকে তাকানো, আত্ববিশ্বাসকে ধারণ করার অতুল উপাখ্যান- খুব মজার।

সাহিত্যকর্ম হিসাবে বইয়ের অনুভূতিটাও ধর্তব্য। সেখানে একই সাথে ধারণ করছেন বিশাল সমুদ্রের মত মরুর অনুভূতি, পাশাপাশি একজাতি হয়ে ওঠা আরবের অনুভূতি।আর মুহাম্মাদ দ. আসলে যা করেছেন, তা হল, তাদেরকে একত্র করেছেন, একটা শক্তি হিসাবে।

একটা শক্তি হিসাবে... আমরা এখনো সেই শক্তির সাথে যুঝছি।

আচ্ছা, কেন? কেন তিনি এই কাজটা করলেন? হিন্দুদের আছে ভগবত গীতা, ইহুদিদের বুক অভ কিঙ ডেভিড- আর সবকিছুতেই জয় আসবে যুদ্ধ করে...

শুরুতেই একটা কথা ভুললে চলবে না। তারা ছিলেন দলিত। ঠিক ইহুদিদের মতই। মক্কা থেকে যখন যান, মাত্র বারোজন ছিলেন। তাদের শুরুর ইতিহাস, দমনের ইতিহাস। তারপর এলো প্রতিরোধের সময়। প্রতিরোধের পর যুদ্ধ। যুদ্ধের পর বিজয়। মুহাম্মাদ দ. একটা কথা বলতেন-

প্রথমে ওরা তোমার অবমূল্যায়ন করবে,
তারপর শুনবে কথা,
তারপর যোগ দেবে তোমার পক্ষে।

কী মনে হয় জানেন? ক্বাবা খুব আধ্যাতিক পবিত্র জায়গা...

ক্বাবা শব্দটার সাথে মূলের দিকে কিউব শব্দের মিল আছে। কিউব। চৌকোণা। ইতিহাসের দিক দিয়ে, মিথোলজিক্যাল দিক দিয়ে বলা হয়, এই ক্বাবার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন ইব্রাহিম আ. । তাঁর দুই স্ত্রীর বিষয়ে দুটা মত প্রচলিত। ইহুদিদের মতে, সারা নতুন স্ত্রী হাজেরাকে পছন্দ করতে পারেননি। তাই তাকে বের করে দিয়েছিলেন দূরে। আমি সচেতন সাবধানতায় দুপাশের বক্তব্যই নিয়েছি। কিন্তু মুসলিমের মতে, এ হল ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ। ঈশ্বর বলেছেন, হাজেরা ও তার ছেলে ইসমাঈল আ. কে ক্বাবার দিকে পা বাড়াতে। এখানেই পাবে পবিত্র নদী, এখানেই আমার জাতিকে প্রস্ফুটিত করবে। আরবরা শুধু ইব্রাহিম আ. এর প্রতিই অসাধারণ শ্রদ্ধা রাখে না, পরম ভক্তি করে এমনকি সারা’র প্রতিও।

অবাক ব্যাপার দেখুন, আরবরা ধর্মের পুরো ইতিহাসে যে দুজন নারীকে সবচে পূণ্যবতীও সবচে মহিয়সী হিসাবে সম্মান করে, তাদের একজন হলেন সারা আর একজন ভার্জিন মেরি।

আর তারা বলে, এই দুই জাতি তৈরি করা ছিল ঈশ্বরের ইচ্ছা। প্রত্যাদেশ। আরব আর ইহুদি দুজনেই কিন্ত সেমাইট। আমরা অ্যান্টি সেমিটিক বলতে সাধারণত ইহুদি জাতির দিকে শত্রুভাবাপণ্নদের বোঝাই।

ঠিক কীভাবে আমরা এই দুই গোত্র, মুহাম্মাদ দ., ইসলাম, ইহুদি, খ্রিস্টীয় ধর্ম- এই সবকিছুকে একটা সাম্যে এনে নতুন বিশ্ব তৈরি করতে পারি? পৃথিবীতে অনুভবের ওই মাত্রা পেরিয়ে গেছে। সচেতনতার নতুন মাত্রা এসেছে। তাই একে নতুন অবস্থানে নিয়ে যাওয়া যাক... বলুন।

পারিবারিক যুদ্ধ। ইহুদি-আরব বিষয়টায় পারিবারিক যুদ্ধের সব উপাদানই আছে। জানেন তো, একই বিষয় নিয়ে জিইয়ে রাখা ঝগড়া চালানো। বাবারা মরে যাচ্ছে, দলিল দস্তাবেজের মত সন্তানরা ওয়ারিশ সূত্রে ঝগড়ার মালিকানা বুঝে নিচ্ছে। অথচ, আরব আর ইহুদিদের মধ্যে যত মিল আছে, পৃথিবীতে আর কোন দুই গোত্রে এত সাযূজ্য আপনি পাবেন না। এই আরব, খ্রিস্টান আর ইহুদিরা পিপল অভ দ্য বুক নামে পরিচিত। তারা সবাই ওল্ড টেস্টামেন্টে বিশ্বাস রাখে। আর আরবরাতো নউ টেস্টামেন্টও বিশ্বাস করে।

জিসাসকে অসংখ্যবার উদ্ধৃত করা হয়েছে। ওল্ড টেস্টামেন্ট থেকে পঁচিশজন প্রফেটের বর্ণনা পাওয়া যায় কুরানে... আর তিনি বলেন, আসলে আছেন একশো পঁচিশ। এত বেশি আছেন, আরো অনেক আছেন, যাদের কথা কুরআনে নেই। আর সেই ধারাবাহিকতায় আমিই সর্বশেষ।

তো, তাদের মধ্যে এতকিছু মিলে যায়, আমাদের দেখা দরকার, কী কী মিল আছে সেখানে! এখন, আমার ধারণা, এই সমস্যা উতরে যাবার জন্য একটা যুগ এসেছে। চেতনার উচ্চতর স্তরে যাবার সময় এসেছে।

সমস্যার বাইরে যেতে পারি কীভাবে? এ হল তোমার ভূমি। আর ওটা আমার। কীভাবে উতরে যাব?

ডাউন ব্যাক আর স্পাইরাল ডাইন্যামিক্স। ঠিক কোন স্তরের চেতনা কাজ করে এই লড়াইতে। চেতনার ঠিক যে শেষ স্তরটায় এই লড়াই, তার ঊর্দ্ধে উঠতে হবে। আরব আর ইহুদি নয়, বলার সময় চলুন বলি সেমাইট। কাজিন। চলুন বলি, একই পিতা থেকে। সেই মহাজাগতিক নীতিতে বলা হোক, এক স্তর থেকে আরেক স্তরে যাওয়ার সময় এটাই। সবশেষে, আপনাদের সবাইকে যেতে হবে জাতীয়, গোত্রীয়, অঞ্চলভিত্তিক সীমারেখার বাইরে। আপনি নিজেকে শুধু ইহুদি ভাববেন আর আমি ভাবব মুসলিম নিজেকে। আমাদের দুজনের মধ্যে সমস্যা থাকবেই।

আমার ধারণা, এই নন-লোকাল অ্যাওয়ার্নেসে আপনি একজন লিডিঙ স্পোকসম্যান।

পরিচয়। আমি কি আমার গোত্রের নাগরিক? আমি কি আমার দেশের নাগরিক? এই গ্রহের? নাকি আমি মহাজাগতিক নাগরিক? অহম ব্রহ্মা। আমাকে ওই স্তরে যেতে হবে। আমি কসমসের নাগরিক।

এই স্তরেই পুরো গ্রহকে উন্নীত করতে হবে।
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×