somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মহীনদের জোরপূর্বক/অনিচ্ছাকৃত তওবা করানো ইসলামের চরম লঙ্ঘন; এটা চিরদিন বাজে ইতিহাস হয়ে রইবে

০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পড়িনি। শুনলাম শুধু। ধর্মহীন কিছু মানুষকে পদ্ধতিগতভাবে তওবা করানোর বিষয়ে আলোচনা চলছে।
পড়িনি, কারণ পড়ার রুচি হয়নি।

আমি,
দৃঢ়কন্ঠে প্রতিবাদ করতে বাধ্য হই,
কারণ এই তওবা হবে দুই দিক দিয়ে অবমাননা-

১. ইসলাম ধর্মের অবমূল্যায়ন।
২. একজন মানুষের ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে অবমূল্যায়ন।

তওবা, এক মহান পদ্ধতি

তওবা হল এক মহান পদ্ধতি। আমাদের প্রিয়তম রাসূল দ. প্রতিদিন ৭০ বার তওবা করতেন শুধু আমাদের শিক্ষা দেয়ার জন্য (বুখারী ও মুসলিম শরীফের সাইয়িদুনা উমার রা.'র সাথে হাদিস দ্রষ্টব্য।)

বলা হচ্ছে,
মানুষ যতবার আন্তরিকভাবে তওবা করে, মহান রাব্বুল ইজ্জাত সেই তওবা ততবারই কবুল করে নেন।

এখন প্রশ্ন হল,
১. তওবা আন্তরিক তথা অন্তরের অন্তস্থল থেকে হতে হবে। কারণ স্বয়ং আল্লাহ (যদি তাঁকে বিশ্বাস করে থাকেন তওবাকারী) ঠিক ঠিক জানেন,
অন্তরে কী রয়েছে।

২. পরে তওবা করে নিব, এই ভাবনায় পাপ করলে সেটার ক্ষমা পাবার সুযোগ প্রায় নেইই।

৩. তওবা করলেও অন্যের অধিকার নষ্ট হলে সেটা আল্লাহ ক্ষমা করেন না, যতক্ষণ না যে ব্যক্তির অধিকার নষ্ট হয়েছে তিনি ক্ষমা করছেন অথবা ক্ষতিপূরণ নিচ্ছেন এই জগতে বা ওই জগতে।

তওবা এমনি এক মহান পদ্ধতি,
যার মাধ্যমে-

১, পাপী পাপমুক্তি পাবেন।
২, নিষ্পাপ পাপ থেকে সব সময় সাবধানতার অটোসাজেশন দিতে পারবেন।
৩, নিষ্পাপ এর মর্যাদা (সওয়াব...) বৃদ্ধি পাবে।
৪, তওবার মাধ্যমে আল্লাহর যিকর (স্মরণ) এবং তাঁর রাসূল দ.'র সুন্নাত পালন করা হবে।



তওবা কাকে করানো যায়?


যিনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল দ. এবং নির্ধারিত ধর্মে বিশ্বাসী, শুধুমাত্র তাঁকে তওবা পড়ানো যায়। অন্য কাউকে নয়।

দ্বিতীয়ত যিনি জেনেশুনে ইসলাম গ্রহণ করে সেটা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন, এবং অনুতপ্ত হয়েছেন নিজেই আন্তরিকভাবে ও ইসলামে ফিরে আসতে চান তাঁর জন্য তওবা প্রযোজ্য।

কিন্তু একজন মানুষ যদি জন্মগতভাবে একটা ধর্মীয় বিশ্বাসে আবদ্ধ থেকে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে, মুরতাদের কথা তার ক্ষেত্রে কতটা প্রযোজ্য তা আমাদের বিবেক দিয়ে ভাবার সময় এসেছে। তিনি তখন কি মুরতাদ হবেন, (কারণ তিনি ধর্ম গ্রহণের সময় সচেতন ছিলেন না, বাবা মায়ের কথামত পালন করেছেন) নাকি নাস্তিক বা অন্য ধর্মাবলম্বীতে পরিণত হবেন?



তওবা করানোর ফলাফল কী হতে পারে?

একবার কল্পনা করুন তো...
সাতসো বা আটশো বছর আগে আমাদেরই কোন এক পূর্বপুরুষের কথা, যিনি জেনেশুনে, সজ্ঞানে সনাতন ধর্ম ছেড়ে ইসলাম কবুল করেছিলেন।

তারপর তাঁর সমাজ তাঁকে সেই পরিস্থিতিতে না থাকতে বাধ্য করছে। খেয়াল করুন, তাঁর নিজস্ব বিশ্বাসে না চলতে সমাজ বাধ্য করছে।

এরপর সেই ধর্মান্তরিত মুসলিম পূর্বপুরুষ,
আমার বা আপনার,
সেই পূর্বপুরুষের ইচ্ছা বা অনিচ্ছার ধার না ধেরে-

সমাজ তাঁকে গোবর এবং গোমূত্র পানে বাধ্য করলে (ইসলামে এমন কোন পদ্ধতি নেই, ইসলামের সাথে তুলনা করছি না। তবে খাৎনা আছে।)
অথবা মূর্তিপূজায় বাধ্য করলে তার প্রতিক্রিয়া কতটা তীব্র হতে পারে?

তাঁরা জনম জনম এই বিদ্বেষ পুতে রাখবেন মাটির তলায়। সে মাটি থেকে চারা গজাবে। নতুন, নতুন।

এবার এই নাস্তিক মানুষগুলো, যাঁদেরকে তওবা করানোর মত অতি ভঙ্গুর এবং ভয়ানক একটা সিদ্ধান্তের প্রতি এগিয়ে যাবার কথা বলছেন আলিম সমাজের কিয়দংশ,

একবার ভাবুন তো,
এই মানুষগুলো মনে করবে,

এ টা ই
বু ঝি
রা সূ ল দ.'র
প দ্ধ তি!

নো, ম্যান! এটা ইসলামও নয়, রাসূল দ.'র পদ্ধতি নয়।
আমার রাসূল দ. কে আর বিতর্কিত করবেন না আপনাদের নিমজ্ঞান দিয়ে।


এখন মধ্যযুগ নয়

এখন মধ্যযুগ নয়। যে হোলি ওঅটর ছিটিয়ে দেবেন। ধরে বেঁধে তওবা করিয়ে দেবেন। অথবা গোমূত্র পান করিয়ে দেবেন।

মাত্র একজন নাস্তিককেও যদি সামাজিক চাপে তওবা করানো হয়,
হিতে বিপরীত হবে।
ভবিষ্যতে এক হাজার নাস্তিকের জন্ম হবে।

এজন্য দায়ী থাকবেন আপনারা।
এবং নিশ্চিত জেনে রাখুন,
যিনি এই প্রস্তাবনা করছেন এবং যিনি এটা বাস্তবায়ন করবেন,
আপনার সন্তান বা অনাগত বংশধর আপনার চোখের সামনে নাস্তিক্য গ্রহণ করবে।
কারণ আল্লাহ বড় বিচিত্র পদ্ধতিতে শাস্তি দেন।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:০৪
৬৭টি মন্তব্য ৬৮টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×