somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসাধারণ ও সরল একটা সাইকোলজিকাল টেস্ট। পাঁচ মিনিটে দেখে নিন, আপনার বর্তমান মানসিক সেটিঙে আজীবন কাজ ও সাফল্য কেমন হবে।

০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

টেস্টটার সরল রূপ দেখেছিলাম একটা অতি পুরনো বাংলা চলচ্চিত্রে। পরে ত্রিশবারের বেশি টেস্ট করে নিয়ে অনেক এক্সটেন্ড করেছি। যেভাবে অংশ নেবেন,

যে কোন জায়গায় জবাবগুলো লিখে নিন। মন্তব্যে দিতে হবে না। কিন্তু অবশ্যই একটা প্রশ্ন দেখার সাথে সাথে জবাব দেবেন। সেটা লিখে নিয়ে অবশ্যই তার পর পরের প্রশ্ন দেখবেন, আগে নয়।এজন্য স্ক্রল করার পর প্রশ্ন আসার পরই স্ক্রল করা বন্ধ করুন। জবাব মাত্র এক শব্দে। প্রথমে মনে যেটা আসে সেটাই। নিজের টেস্টটা তখনি সফল হবে যখন নিয়মটা মানবেন।

প্রশ্নের সংখ্যা মোট ১৪ টি। বিস্তারিত জবাব থাকবে পোস্টের শেষে, কিছুটা সাইকোলজিক্যাল অ্যানালাইসিস থাকবে, হয়ত আজীবনের জন্য নিজের মেন্টাল স্ট্যান্ড পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে এ টেস্ট। হয়ত কিছুটা হলেও নিজেকে চিনতে সহায়তা করবে। বা বর্তমান অবস্থানে থাকতে উদ্বুদ্ধ করবে।

আগে কখনো এই টেস্টের কোনটা নিয়ে থাকলে এবং তার জবাব জানা থাকলেও টেস্টে অংশ নিতে পারেন, তবে অ্যাসেসমেন্ট পারফেক্ট হবে না।
প্রিয় সহব্লগার. তবে শুরু হোক?









১. একটুও না ভেবে দ্রুত একটা ফুলের নাম বলুন।










২. একটুও না ভেবে দ্রুত ১ থেকে ৫ এর মধ্যে যে কোন একটা সংখ্যা বলুন।









৩. একটুও না ভেবে দ্রুত ১ থেকে ১০ এর মধ্যে একটা সংখ্যা বলুন।










৪. একটুও না ভেবে দ্রুত একটা রঙের নাম বলুন।










৫.গোলাপ ছাড়া দ্রুত একটা ফুলের নাম বলুন।









৬. ১ থেকে ৫ এর মধ্যে ৩ ছাড়া একটি সংখ্যা বলুন।










৭. ১-১০ এর মধ্যে ৭ ছাড়া একটা সংখ্যা বলুন।










৮. আপনি ছেলে হয়ে থাকলে- সবুজ আর লাল ছাড়া একটা রঙের নাম বলুন।
মেয়ে হয়ে থাকলে নীল ও গোলাপি ছাড়া একটা রঙের নাম বলুন।











৯. ক্রিয়েটিভ হয়ে থাকলে (ছেলে মেয়ের টেস্টে অংশ নেয়ার পর) নীলের যে কোন শেড এবং সবুজের যে কোন শেড ছাড়া একটা রঙের নাম বলুন।










১০. ১ থেকে ৫ এর মধ্যে ২ ও ৩ ছাড়া যে কোন সংখ্যা বলুন।











১১. ১ থেকে ১০ এর মধ্যে ৭, ৫ ছাড়া যে কোন সংখ্যা বলুন।










১২. ছেলে হয়ে থাকলে গোলাপ, শাপলা, রজনীগন্ধা ছাড়া একটা ফুলের নাম বলুন।
মেয়ে হয়ে থাকলে গোলাপ, বেলী, রজনীগন্ধা ছাড়া একটা ফুলের নাম বলুন।










১৩. গোলাপ, শাপলা, রজনীগন্ধা, কদম, গাঁদা, বেলী, জবা, অরকিড ছাড়া একটা ফুলের নাম বলুন।











১৪. টেস্টটা নিতে প্রথমে কেমন লাগল? মাঝামাঝিতে? শেষে এসে? পুরো টেস্টে? (একটা করে শব্দ/বাক্যাংশ)।


জবাব,

১ নং প্রশ্ন.

গোলাপ হয়ে থাকলে আপনি সবচে কমন একজন মানুষ। পরিবেশ ও পরিস্থিতি আপনার উপর সবচে বেশি প্রভাব ফেলে। আপনি ৬৫%+ মানুষের সাথে একই শ্রেণীতে পড়েন। সমাজে তিনজনের মধ্যে অন্তত দুজনই আপনার মত।আপনি-আমি যে সমাজেই যেতাম/জন্মাতাম সেটাকেই গ্রহণ করতাম। সেটার মোটামুটি সবকিছু সহ। আপনার-আমার উপরে কান-নাক-চোখের প্রভাব অত্যন্ত প্রখর। বিশ্লেষণের বা পূর্ণ ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রভাব একটু কম। মোদ্দা কথা, হঠাৎ করে স্বতন্ত্র্য একজন মানুষ হিসাবে না ভেবে আমরা সমাজের প্রভাবে সামাজিক একজন মানুষ হিসেবে বা সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে রিআক্ট করি। অবশ্যই, এ ধারা সব সময় এভারেজ সাফল্য নিয়ে আসবে, কিন্তু আমরা দুজনে সমাজের/সভ্যতার/পরিবারের উপর বিশেষ কোন চিরস্মরণীয় প্রভাব রাখতে পারব না।
মন্দ নয়, কিন্তু যদি আপগ্রেড চান, তো বিশেষ কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ভাবনার উপর যে প্রভাব সমাজ/সভ্যতা/পরিবার ও পরিবেশ ফেলেছে, সেই প্রভাবের আয়না না হয়ে একজন ‘প্রায়-অসীম-সম্ভাবনাময়’ মানুষ হতে হলে আপনাকে আমাকে নিজের ভিতরে ডুব দিতে হবে। এজন্য সাইকোএনালাইসিস সহায়তা করতে পারে। সবচে বেশি সহায়তা করতে পারে সঠিক পদ্ধতিতে আত্ম-বিশ্লেষণ বা ধ্যান ও ধ্যানবিদ্যার প্রয়োগসমূহ।

যদি গোলাপ না হয়ে (পুরুষ) শাপলা বা রজনীগন্ধা, (নারী) বেলী বা রজনীগন্ধা হয়ে থাকে, তাহলে অ্যাভারেজ এর চেয়ে সামান্য এগিয়ে আছেন। চার বছর বয়সের আগে থেকেই সামান্য একটু ভিন্নভাবে ভাবতে শিখেছেন। তবে সমাজের প্রভাব পুরোই আছে।

যদি ১ নম্বর প্রশ্নের জবাব হয়ে থাকে ১৩ নম্বর প্রশ্নের বাকি ফুলগুলোর একটা, তাহলে আরো এক ডিগ্রি উপরে আছেন। তবে অসাধারণ নয়। যদি তের নম্বর প্রশ্নের কোন অপশনের সাথেই মিল না থাকে ১ নম্বরে, আপনি নি:সন্দেহে অসাধারণ। কংগ্রাচুলেশন্স, আপনার মেন্টাল সেটিঙ পাল্টানো লাগবে না। প্রয়োজনে নিজেকে শাণিত করুন, কারণ আপনার এই মানবজাতিকে কিছু দেয়ার আছে।

যদি গাঁদা-কদম-শাপলা হয়ে থাকে, আপনার মধ্যে একটু এক্সট্রাঅরডিনারি দেশপ্রেম আছে।সম্ভবত আপনি ছেলে। কদম-শাপলা হয়ে থাকলে প্রাকৃতিক পরিবেশ/ পানির প্রতি মমতা আছে। আপনি ক্রিয়েটিভ। গাঁদা বা কদম হয়ে থাকলে আপনার মধ্যে বাড়তি রয়্যালটি আছে। তবে, কমনার। অরকিড/টিউলিপ বা এ জাতীয় কোন পশ্চিমা জনপ্রিয় ফুল হয়ে থাকলে, আপনার পরিবারের আরথিক/সামাজিক অবস্থা সম্পদশালী/সম্মানময়, অথবা আপনি মাইগ্রেশনের কথা ভাবছেন অথবা অনেকটা আর্থসামাজিক উন্নয়নের ইচ্ছা আছে। মেয়ের ক্ষেত্রে তিনি রোমান্টিক। এমনো হতে পারে, আপনি পড়ালেখা অনেক বেশি করেন অথবা মুভি টুভি অনেক বেশি দেখেন। রজনীগন্ধা-বেলী-জবার মধ্যে রোমান্টিকতা আছে। মেয়েরা এদিকে এগিয়ে।

২ নং প্রশ্ন.

জবাব ৩ হয়ে থাকলে, সমাজের এই প্রভাবটা এবার পাল্টাতে হবে। আপনি-আমি বারবার দেখেছি, খুব বড় কিছু আশা করে কখনো পাইনি। ছেলেবেলায় হয়ত ফুটবলার-ক্রিকেটার-অভিনেতা-গায়ক-লেখক হতে চেয়েছি। হয়ত ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতে চেয়েছি। দু একবার হয়ত চেয়েছি ক্লাসে প্রথম হতে, বা নাচ-বিতরক-প্রতিযোগে প্রথম হতে। কখনো হয়ত পারিনি। বা দু একবার সাফল্য... আস্তে আস্তে মনের উপর একটা ভয়ানক প্রভাব পড়েছে। সবচে বেশি সফল কখনো হতে পারব না- এই বিশ্বাস আপনার আমার দৃঢ়।পর্যবেক্ষণের উপর ভর করে গড়ে ওঠা এই বিশ্বাসের মূলে আঘাত করুন। এই বিশ্বাস একটা জীবনকে নিরাপদে টেনে নিয়ে যেতে সহায়তা করবে, কিন্তু এই কি জীবন?
জবাব ২ হয়ে থাকলে অ্যাভারেজেই আছেন। হয় অ্যাভারেজ থেকে একটু বেশি সাফল্য পাবেন সারা জীবন, কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অ্যাভারেজ থেকে কম সাফল্য পাবেন। বদলানোর সময় সমাগত।
জবাব ৪ হয়ে থাকলে অ্যাভারেজ থেকে একটু বেশি। এই মানুষগুলো মাঝে মাঝে সবচে বেশি সফল হয়, কারণ তারা ঝুঁকি নেয় ক্যালকুলেশনে। সফলতা গুণে গুণে, কিন্তু বিফলতা খুবই কম।

১ হয়ে থাকলে একাকীত্বের লক্ষণ আছে। আপন করুন কাউকে কাউকে। আর আপনি চাইলে প্রথম হওয়া কে ঠেকায়? শুধু চাইতে থাকুন।

৫ হয়ে থাকলে, পারবেন, সাফল্যের সংখ্যা বা অরথ/প্রতিপত্তি অগণন আসবে।

৩ নং প্রশ্ন.

জবাব ১, ১০ হয়ে থাকলে আগের প্রশ্নের ১ ও ৫ এর মূল্যায়ন। জবাব ৮,৯,২ হলে আগের প্রশ্নের ৪ দ্রষ্টব্য। জবাব ৭ হয়ে থাকলে আগের প্রশ্নের ৩ কঠিনভাবে দ্রষ্টব্য। ৫ বা ৬ হয়ে থাকলে আগের প্রশ্নের ৩ দ্রষ্টব্য, তবে হালকাভাবে। জবাব ৪ হলে আগের প্রশ্নের ২। জবাব ৩ হয়ে থাকলে, সরি, আপনাকে কোন ক্লাসে ফেলতে পারছি না। আনপ্রেডিক্টেবল।

যার জবাব উভয় প্রশ্নে ৩ ও ৭- সময় কি আসেনি নিজেকে বদলাবার ভাই? আমরা আর কতদিন সুপার অ্যাভারেজ হয়ে থাকব? যার জবাব ২ নম্বর প্রশ্নে ১ এবং তিন নম্বরে ১ বা ২, সাফল্য আপনারই। অসাধারণ সাফল্য। শুরু করে দিন যে কোন পর্যায় থেকে। জবাব ২ নম্বরে ৫ এবং ৩ এ ১০? প্রাচুর্য্য আপনার। তবে রিস্ক বেশি নেবেন না।

৪ নং প্রশ্ন.

বলেন তো, আপনি নীলের বিভিন্ন শেড অথবা সবুজের বিভিন্ন শেড এর যে কোনটা পছন্দ করে থাকলে কেন করলেন? কারণ, এই বিশ্ব প্রকৃতিতে এই দুটা রঙই সবচে সহজলভ্য। আমাদের গুহাবাসী অতি প্রাচীণ পূর্বপুরুষরা শুধু এই দুটা রঙ সবচে বেশি দেখতেন। তাঁরা এই দু রঙের সাথে এমনভাবে মানিয়ে গেছেন যে, তাঁদের চোখের জিন বদলাতে বদলাতে আমাদের কাছে আসা পর্যন্ত সবুজ ও নীল এ সবচে মানিয়ে গেছে। হা, গড়পড়তা হতে পারি আমরা, তবে সেইসাথে প্রাকৃতিকও।
সাদা বা কালো হয়ে থাকলে তো কথাই নাই, আপনি এক্সট্রাঅরডিনারি। নিজেকে ব্যবহার করুন। আবেগ আপনার অসাধারণ প্রাপ্তিকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। সাদা মানে আপনার আছে শুদ্ধতা, কালো মানে, আপনার আছে ভাবনার বিশালতা।

বাকি প্রশ্ন.

আশা করি ১-৪ এর বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে বাকি প্রশ্নগুলোর জবাবে আপনি নিজেই নিজেকে পরিপূরণভাবে চিনতে পারবেন। বাকি প্রশ্নগুলোর যে জবাব আপনার এসেছে, সেটাকে একটু ঠান্ডা মাথায় এই বিশ্লেষণের আলোকে ভাবুন। আরো অনেক অনেক বেশি স্পষ্ট হবেন নিজের কাছে। বাকিগুলো লিখতে গেলে এমন আরো একটা পোস্ট তো লাগবেই!

১৪ নং প্রশ্ন.

এই প্রশ্নের জবাবগুলো যদি একটু নেগেটিভের দিকে যায়, তাহলে হয় আপনি নিজের মুখোমুখি হতে ভয় পান, যা অত্যন্ত অত্যন্ত খারাপ নিজের জন্যই, অথবা আপনি সুপার কনফিডেন্ট। এই দুটার মধ্যে কোনটা, একটু ভাবলেই বের করতে পারবেন, এবং জীবনটাকে অসাধারণভাবে সাজাতে পারবেন।

আর যদি জবাবগুলো পজেটিভের দিকে যায়, আপনি এখনো খোলামন। সাবধান, এই বস্তুতান্ত্রিক সমাজ আপনাকেও বদ্ধমন করে দিতে চায়। নিজেকে খোলা রাখুন। দরজা যত বড় হবে, প্রাপ্তি ততো বেশি হবে।

আমরা যারা গোলাপ, তিন আর সাতের দলে, তারা সোসাইটির প্রোডাক্ট। এইসব মানুষ প্রশ্ন করতে জানে সবচে কম। তাদের কানের সামনে যা বাজানো হয়, তাই মনে বাজে। মগজে স্থায়ী হয়। চট করে আগে সামনে চলে আসে। তাই আমাদেরই নিরধারণ করতে হবে, আমাদের কানের সামনে কী বাজবে আর কী বাজবে না। আমাদের মত মানুষই মিয়ানমারে মুসলমানদের ঘরবাড়ি জ্বালায়, গোধরায় সবরমতি একসপ্রেসে আগুন দেয়, বাবরি মসজিদ ভাঙে, কখনো মাজারে তো কখনো মসজিদে বোমা মারে, যে কোনভাবে পিতৃভূমি ইজরায়েলকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় নীলনদ থেকে দজলা-ফোরাত পর্যন্ত, ইরাক-আফগান-লিবিয়া-সিরিয়ার যুদ্ধকে স্বাভাবিকভাবে সমরথন করে। আমাদের মত মানুষই বোকার বাকশো টেলিভিশনকে স্বাভাবিক মনে করে, আমাদের মত মানুষরাই দাস প্রথাকে চিরকালীন স্বাভাবিক ভাবতো, কালোর ভোটাধিকার নেই তা ভাবতো বা ইহুদি/ আরিয়ান/ সাদা’ কে শ্রেষ্ঠ জাতি ভাবতো, এখনো ভাবে।
আমাদের মতো গোলাপ, তিন, সাতের দলের মানুষরাই খুব সহজে মেনে নিয়েছে, আমি যা শুনেছি তাই ঠিক। এমন মানুষই বলে আসছে, আমার পিতামাতা এবং পূরবপুরুষের কাজ কি ভুল ছিল? কেন ঠিক, তা কখনো খোলামনে ভেবে দেখেনি।
এমন মানুষই প্রথমে শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চে যায়, তারপর আবার যোগ দেয় হেফাজতের আন্দোলনে। এমন মানুষই অন্ধভাবে রাজনৈতিক দলকে সমরথন করে, কেন করছে, তা ভেবে দেখে না।
আমাদের মত মানুষের জন্যই পৃথিবীতে স্বাভাবিক আর অস্বাভাবিকের মধ্যে কোন তফাত নেই।ঘুষ খাই বা না খাই, খাওয়াকে মেনে নিই আমরাই। নকল করি বা না করি, করাকে মেনে নিই আমরাই। আমাদের উপর পরিবার যা খুশি প্রভাব রাখতে পারে, তারপর প্রভাব রাখতে পারে আমাদের বন্ধুবান্ধব, তারপরে প্রভাব রাখতে পারে আমাদের আদরশ।
আমরা পরিবার, সমাজ, ধরম বা আমাদের গোষ্ঠীগত নেতৃত্বকে কখনো প্রশ্নতো করিই না, বরং বিনাপ্রশ্নে তাকে ডিফেন্ড করাই আমার সারকরম হয়।

আহা, এমন মানব জনম আর কি হবে? এই মানবজীবনের অরথ কেউ কউ করেন, শোনহে অরবাচীণ, জীবন অরথহীন! আমরা তাই মেনে নিই। আমাদের শেখানো হয়, যা খুশি করো, নামাজ পড়লেই হল। অথবা, তুমি যত খারাপই হও, মুসলমান হলেই হল। তাই মেনে নিই। আমরা পথে যাওয়া একটু উত্তেজক পোশাকের মেয়ের দিকে আঙুল তুলি, কিন্তু নিজের যে দ্বিতীয়বার তাকানোর প্রশ্নই ওঠে না, সেটা ভুলে যাই।

আমরা, এই এভারেজ মানুষরা যে শুধু নিজের জীবনে বিফল, তাই না! আমাদের জন্যই পৃথিবীতে অস্বাভাবিক প্রতিটা বিবেকহীন কাজ স্বাভাবিকতা পায়। সমরথন পায়। তাই পৃথিবীর জন্য সবচে বড় বিপদ এই আমরাই।

অথচ বিবেককে, নিজের ভাবনাকে জাগ্রত করা কত সহজ!

সবশেষে, এখানে তো লুকোচুরি নেই। ধ্যানের দিকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছি আপনার-আমার-এই দেশটার উন্নয়নের জন্যই। শুধু একটা বিষয় নিশ্চিত থাকুন, পথপ্রদরশক ছাড়া ধ্যান কক্ষনো কক্ষনো নেই। অসম্ভব। তাই ধ্যানের জন্য সরল ভাষায় বলছি, আমি যে দুটা নিরাপদ পদ্ধতি পেয়েছি, তার যে কোনটা গ্রহণ করতে পারেন। (আমি ভাই সুফিবাদী, তাই বলে যে আপনাকেও কোন পীরের মুরিদ হতে বলব, সেটা বলছি না। তাই পীরের/গুরুর কাছে ধ্যান শিখতে স্পষ্টতই বলছি না। কারণ আমি জানি, অনেক পীর/গুরু আছেন, যাঁরা বিখ্যাতও, ধ্যানও ভাল শেখান, কিন্তু নিজে ‘পূরণ শুদ্ধ’ বা ভাল নন। এখন, ধ্যানবিদ্যায় আপনি খুজেই শুদ্ধ গুরু পেয়ে যাবেন, তা তো হবে না। এক যুগের নিরবচ্ছিন্ন অনুসন্ধানের বিষয়। যে শুদ্ধমনে একযুগ ধরে খুজতে পারে, সে তো পাবেই। কিন্তু তাকে সংস্কারমুক্ত থাকতে হবে। গুরুর মাঝে নৈতিক অশুদ্ধতা বা ধারমিক অশুদ্ধতা থাকলে সেটা রোগ আকারে আপনাকে দুষ্ট করবে। সেই গুরু পীর আকারে ধরমগুরু হোক, বা শিক্ষক আকারে শিক্ষাগুরু, বা বড় হিসাবে মুরুব্বি, বা রাজনৈতিক নেতা হিসাবে অনুসরণীয়…) ১. কোরস করে বা না করে কোয়ান্টাম মেথড ফলো করুন বই আর অডিও দিয়ে। (কোয়ান্টামে আমি মুরিদ নই, আপনাকেও মুরিদ হতে হবে এমন কোন কথা নেই।) অথবা ২. কাজীদা’র বিদ্যুৎ মিত্র ছদ্মনামে লেখা আত্মউন্নয়নমূলক বইগুলো আজীবন চরচা করুন। সবগুলো পড়ার পর শুধু আত্মউন্নয়ন শিরোনামের বইটি আকড়ে থাকুন। জীবন হবে পল্লবিত। পুষ্পপল্লবিত।

আর মাত্র একটা কথা, জীবনে পথচলার বিজ্ঞানে অনেক কিছু শেখার দরকার নেই। মাত্র একটা ‘সঠিক’ শিক্ষার, তা মাত্র একটা বাক্যও হতে পারে, মূল নিরযাস আপনাকে অতুল উচ্চতায় নিয়ে যাবে। প্রতিদিন শুধু সেই বাক্যে চলতে হবে।

যেমন? স্টিভ জবস মাত্র একটা বাক্যে আত্মসমরপিত ছিলেন। প্রতিদিন, সকালে উঠেই তিনি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে বলতেন, আজকে তোমার শেষদিন হয়ে থাকলে কী করতে? তাই করো। (তাই করতেন, শেষদিনে মানুষ সবার সাথে সবচে ভাল ব্যবহার করে, সবগুলো কাজ শেষ করার চেষ্টা করে, সব দেনা পাওনা শেষ করে, সবচে ভালভাবে মনোযোগ দিয়ে কাজ করে, সবাইকে ক্ষমা করে। তিনি এই পৃথিবীর সবচে সফল এক মানুষ। এম্নি এম্নি হননি।)
অথবা, মাদার তেরেসা, ঈশ্বরকে আর কোন কাজে খোজেননি। আহা! কী মানুষ! তিনি বিশ্বাস করেছেন, ধরমান্তর নয়, শুধু প্রারথণা নয়, তিনি ঈশ্বরকে পাবেন শুধুই সেবা দিয়ে। হায়রে সেবা! সেই সেবা করতে গিয়ে বাচ্চা একটা মেয়ে আর কোনদিন মা-বোনের দেখা পেল না। এমনকি বৃদ্ধা হবার আগেও যিনি তাঁর জীবনে সবচে বেশি আরাধ্য সেই হোলি পাপা, পোপকে দেখতে যাবার সময় পাননি। তিনি ঈশ্বরকে কীসে খুজেছিলেন? তিনি শুধু জেনেছেন, সেবাতেই ঈশ্বর। হায়, মানুষ মহান হয় কী করে!

অথবা, আপনি মুসলিম হয়ে থাকলে শুদ্ধতার জন্য শুধু নামাজ পড়তে পারেন। শুধুই নামাজ। আর কিছু নয়। কিন্তু প্রতি বেলায় নিজেকে জিগ্যেস করুন, আমিতো মহান প্রভুর সাথে মিলিত হচ্ছি, সেই সচেতনতা আমার মনে আছে তো? মহান প্রভুকে বলছি, মালিক! আমাদের সরল পথে স্থির রাখো। যে পথে তোমার প্রিয়জন থেকেছিলেন। আমি যখন বলছি, প্রভু হে, তুমি সালাত বরষণ করো আমার প্রিয় রাসূল দ.’র উপর এবং তাঁর পূরবপুরুষ ও বংশধরগণের উপর, এবং শান্তি হোক যারা ভাল কাজ করে তাদের উপর- এই মহাবাক্য বলার সময় এর উপলব্ধি আমার ভিতরে রইল তো? ব্যস, আপনি একটা জীবন অকল্পনীয় সুন্দরভাবে কাটিয়ে দিতে পারবেন। কিসসু লাগবে না।

প্রিয় বন্ধু, নেট নেই। কম্পোজ করে তুলে দিয়েছি, তাই মন্তব্যের জবাব দিতে বেশ কিছু সময় লাগবে। আপনার কথাগুলো আনন্দের বরষণ হয়ে আসবে আমার জীবনে। হিন্দি গান থেকেই দুটা লাইন তুলে দিই,
নেহি রাহনেওয়ালে ইয়ে মুশকিলে
কে হ্যায় আগলে মোড় পে মানজিলে,
মেরে বাত কা তু ইয়াকিন কার,
না উদাস হো, মেরে হামসাফার।

ইয়ে সাফার বহত হ্যায় কঠিন মাগার,
না উদাস হো, মেরে হামসাফার।

মানুষ যত উপকৃত হবে, তত শুভতা জমবে আমাদের জীবনে। জীবন কখন জীবন থেকে মহাজীবনে উত্তীর্ণ হবে, আমরা জানতেও পারব না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:৪৯
১১২টি মন্তব্য ১০৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×