আসলে কিছু ঘটনা, শুধু আমাদের কিছু প্রশ্নই রেখে যায়, আমরা কি আজো সঠিক বিবেকের মানুষ হতে পেরেছি ?
আমরা কি পেরেছি,পাশের বোন,ভাই,মা,বাবা,অবুঝ সদ্য শিশুটির জন্য নিরাপদ নিশ্চিত বসবাসের জন্য নিশ্চয়তা দিতে ?
যে সন্তানের জন্য বাবা মা তার শেষ সম্বলটুকুও শেষ করে দেন !
সেই সন্তান বড় হয়ে কারনে অকারনে বাবা মা কে চিৎকার করে বলে ,
আপনারা বেশী বুঝেন না আমি বুঝি, আপনারা জীবনে কি করেছেন, আমি আজ গ্রেজুয়েট,আমি এই বিশ্বটা ঘুরে দেখেছি।
প্রতিটি মানুষ কতটা স্মার্ট চলাফেরা করে, আরাম আয়েশের জন্য কি করে আর আপনারা পরে আছে সেই অজ পাড়া গায়ে।
আর ভাল লাগে না আপনাদের সাথে থাকতে ! সব এখনো ক্ষেতের মতই আছে !
কিন্তু সে কি ভেবেছে যাদের সঙ্গে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে দাম্ভিকতা দেখাচ্ছে সেই মানুষ গুলিই তার জন্মদাতা পিতা মাতা।
তাদের জনই আজ সে এতো বড় গ্রেজুয়েট, এত দেশ বিদেশ ঘুরছে,ক্যারিয়ার বিল্ডাপ করে যাচ্ছে ।
আর সেই গর্ভজাত সন্তান খুব সুখে দিন যাপন করে যাচ্ছে, ঘুরছে ফিরিছে আরাম আয়েশে,
মা বাবার সামান্য কষ্টেও তাকে পাশে পাওয়া যায় না,
সেই সন্তান তার নিশ্চিত সুখের জন্য,আধুনিকতার নস্টালজিয়ায় ভুগে ভুগে তার জন্মদাতা পিতা মাতাকে
আজ বৃধাশ্রমে ফেলে আসতেও তার বিবেক কাপেনি ।
তবু আমরা প্রতি নিয়ত বলে যায়,আমি ভাল আছি,আমরা ভাল আছি,বলি আমরা সুখী !
নিজেকে প্রশ্ন করেন তো ? কিভাবে আপনি ভাল,কিভাবে সুখী ?
আপনি কি পেরেছেন ড্রেনের নর্দমা,ময়লার স্তুপ থেকে আজো
সেই সব দুঃখী অসহায় মানুষের খাবার খোঁজে বেড়ানোর দৃশ্য দূর করতে ।
আপনি কি পেরেছেন ঘরের কাজের মানুষটির গরম কুন্তির দাগের যন্ত্রনার চিৎকার না শোনে থাকতে ।
তবে কিভাবে সুখী হলেন, কিভাবে ভাল থাকলেন ।
একটি সুন্দর বাড়ি,একটি সুন্দর গাড়ি আর সুন্দর জামা কাপড় পড়ে লং ড্রাইভে গেলেই কি মানুষ সুখী হয়।
আপনার ডাইনিং টেবিলে পোলাও রোস্ট পরিবেশন করছেন,
কিন্তু পাশের বস্তির শিশুটি না খেয়ে ক্ষুধার জ্বালার চিৎকারের আকাশ ভারী করছে তবু আপনি শুনছেন না ।
আপনি হাজার হাজার টাকায় জামা কাপড় কিনে পড়ছেন,
কিন্তু পাশের মানুষটি শীতের অসহ্য ঠান্ডায় মারা যাচ্ছে ,তবু আপনার ব্রুকেপ নেই ।
আমরা আসলে এমনই, নিজের পেট ভরে গেল তো মনে হয় সবার পেট ভরে গেছে ,
নিজের দেহটা মকমলের চাদরে ডেকে গেছে, তো মনে হয় সবাই আরামে আছে ।
আমরা কি একটু চোখ তুলে আশে পাশে থাকায়,দেখছি কি চোখ মেলে অসহায় মানুষদের কষ্টের ছটফটানি ।
শোনছি কি অসহায় অবহেলিত মানুষদের বেচে থাকার ক্ষিন সেই অস্পষ্ট গোঙানি।
আর শুনবই বা কেন ! শুনলে তো কিছু করতে হবে তার চেয়ে না শোনাই ভাল। তবু বলি আমরা ভাল আছি ।
আমরা খুব ভাল আছি, খুব সুখে আছি ,
তা হলে সমাজের রন্ধ্রে রন্দ্রে আজ আধুনিকতার হাওয়ায় দুলছে,
পাশের ছেলে মেয়েটির আধুনিক মেলামেশায় প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে একেকটি জীবন ,
আর যেটি বেচে আছে সেটি হয়ে যাচ্ছে জারজ,এই ঠিকানাহীন জীবন গুলি দিয়ে ভরছি সুন্দর এই পৃথিবী তবু আমরা সুখী।
কারন যৌবনের কামনার মোহে কুকুরের মত লালসার মিলনে তৃপ্ত তো হতে পেরেছি ।
হউক না জারজ সন্তান তাতে কি ।
আমাদের পাশের মানুষটির কারনে অকারনে যেখানে সেখানে লাশ হয়ে পড়ে আছে যার দায় বাড় কেউ নিচ্ছে না ।
তার কি দোষ কিংবা সে কি নির্দোষ তাও কেউ দেখছেনা । তবু সে আজ লাশ ।
নিজেকে প্রশ্ন করেন এবার ? আপনি কত টুকু সুখী ? কত টুকু ভাল ?
একটি মানুষ খারাপ হলে, তার পরিবারে প্রভাব পরে , একটা পরিবার খারাপ হলে সমাযে তার প্রভাব পরে, সমাজ খারাপ হলে একটা দেশে তার প্রভাব পরে ,আর দেশ খারাপ হলে,তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর প্রভাব পরে !!
আজ আমরা কোন দিকে যাচ্ছি ? আজ আমরা কি শিখছি ? কিংবা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভাল কি রেখে যাচ্ছি ?
প্রশ্ন গুলি আপনার আমার সবার ! এর সুষ্ঠ সুন্দর উত্তর খুজে বের করুন তারপর গলা ছেড়ে বলুন
আপনি সুখী না দুঃখী ??
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩৩