somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আনমনে...(৯)

২১ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কিছুদিন পর মনে হল ঢাকায় থাকা আর সম্ভব হবে না! পাবনাই হতে পারে একমাত্র ঠিকানা! কুইজ
অ্যাসাইমেন্টের ভিড়ে আমি প্রায় শেষের পথে! তার উপর অফিসের চাপ! বাবা আছেন বলে কেউ কিছু
বলতে সাহস পায় না। না থাকলে, যে তালগোল পাকাচ্ছি আমি! বলার বাইরে।
অফিসে বসে আছি। নতুন একটা প্রোজেক্ট এসেছে। এনালাইসিস টিমের কাছে কি রিপোর্ট দিব তা ঠিক করছি। এক ট্যাবে গুগল আরেক ট্যাবে ফেসবুক ওপেন করা… আয়েশ করে কফি খাচ্ছি তখন শোভন ফোন দিল!
কই রে তুই!
কই আবার অফিসে! আমার প্রক্সি দিসিস?
প্রক্সি তো দিয়েই যাচ্ছি! কিন্তু কিছু আর পাইলাম কই! ওপাশ থেকে তিক্ত কন্ঠ ঝড়ে পরল।
মানে?
মানে খাওয়াবি কবে? হুম! আজকে আমরা সবাই ফ্রী আছি! আজকে তোর পার্টি দিতেই হবে!
আজকে! আকাশ থেকে পড়লাম!
হু! তোমার জন্য সারপ্রাইজ! বনানি চলে আয় এখুনি! তোর নামে আমরা একটা চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ভাড়া করে নিয়েছি! হাহাহা! যেন দিক বিজয় করে ফেলেছে, এমন ভাবে হাসতে থাকল শোভন!

কি করেছিস?! মাথা ঘুরালো আমার!
হাহা ঠিকই শুনেছো বাছা! এখন লক্ষি ছেলের মত চলে আসো! দেখো কি সারপ্রাইজ ওয়েট করছে!
ফোন কেটে গেল।
এতো রীতিমত ব্ল্যাকমেইল! গোটা কয়েক গালি দিয়ে উঠে দাড়ালাম! আজ কাজ করা শিকোয় গেছে!
রাসেল ভাইয়ের কাছে গেলাম। খুলে বলতেই প্রান খুলে হাসতে থাকল। বাহ! ভালো তো! নাইস! কতদিন পার্টিতে যাই না! এক কাজ করি, আমাদের কলিগদেরও বলে দেই কি বলো! স্যারের ছেলের পার্টি হচ্ছে তারা যাবে না! তোমার ফ্রেন্ডদের সাথেও দেখা হবে। ইভেন তোমার স্পেশাল ওয়ানের সাথেও! চোখ টিপল।
অনেক দিন পর আজ বুঝতে পারলাম। দুনিয়াটা বড্ড নিষ্ঠুর!
কিন্তু রাসেল ভাইয়ের কথাটা মনে ধরল! স্পেশাল ওয়ান? তানিয়াকে আনার প্ল্যানটা মাথায় ছিল না বাট থ্যাংস টু হিম!

ঠিক আছে! দু হাত মাথার উপর তুললাম। সব ঘানি আমার কাধের উপরেই পরবে মানলাম! কিন্তু আমাকে একটা জিনিস ম্যানেজ করে দিতে হবে!
কি?
একটা গাড়ি!
কী???

আসার পথে আব্বুর রুমে ঢু মারলাম।
আব্বু একটা কাজ করে দিতে পারবে?
কি কাজ? এক গাদা কাগজের মাঝ দিয়ে তাকালেন তিনি।
তোমার কাছে কিছু টাকা হবে?
দেখতে দেখতে আব্বুর চোখের ভুরু তিন হাত উপরে উঠে গেল!
কী???

এক ঘন্টা পর। ২০১২ মডেলের টয়োটা এক্সিয়ো হাকিয়ে ঢাকা শহর মাতিয়ে বেড়াচ্ছি আমি! হ্যা মানছি খুব একটা গাড়ি চালাই না এবং বাসে করেই ভার্সিটি যেতে হয়, কিন্তু আমার ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে! রিয়ারভিউ মিররে তাকিয়ে চুলগুলো ঠিক করে নিলাম! সানগ্লাসটা ঠিকঠাক মত আছে কিনা চেক করে আবার গ্যাস পেডল চেপে ধরলাম। নতুন গাড়ি বিনা প্রতিবাদে ছুটে চলল রাস্তা ধরে। রাস্তা ফাকাই বলা যায়। কিছুক্ষণের মাঝেই পৌছে গেলাম ভার্সিটির কাছের বাস স্ট্যান্ডে!

কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তার দেখা মিলল। দূর থেকে তাকে দেখেই মনটা কেমন জানি খুশিতে ভরে উঠল। প্রতিবার তাকে দেখলেই মনটা কেমন যেন করে উঠে। হৃদপিন্ডের স্বাভাবিকের তুলনায় একটু বেশি গতিতে ছুটোছুটি শুরু করে দেয়।
সামনে দাঁড়িয়ে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে। কাউকে খুজছে বোধহয়।
মনে হয় আমাকে খুজছে, এই দিনে তানিয়া আর আমার ক্লাশ এক সাথেই শেষ হয়! মুচকি হাসলাম, তারপর হর্ণ চেপে ধরলাম!
হঠাৎ শব্দে ভয় পেয়ে পিছিয়ে গেল সে! ভয়ার্ত চোখে আমার দিকে তাকালো। আমি হেসে ফেললাম।
বেশি ভয় পেয়েছো? সরিইইই!

তুমি! গ্লাসে আলতো করে কিল বসালো। মেরেই ফেলেছিলে প্রায়! এত ভয় দেখাও কেন তুমি! হালকা অভিমান ঝরল তার গলায়।
কি করব বল! তোমাকে যে কি কিউট দেখায় তখন!
চোখ বড় বড় হয়ে গেল তার। সামলে নিয়ে বলল, কি ব্যাপার আজ হঠাৎ গাড়িতে?
উঠে বসো, সব বলছি।
উঠবো? অনিশ্চয়তা দেখা গেল তার মাঝে।

হ্যা ওঠো! দড়জা খুলে দিলাম। আটোসাটো হয়ে বসে থাকল তানিয়া। তাকাচ্ছে না কোন দিকে। সহানুভূতির হাসি দিয়ে সিট বেল্ট আটকে দিলাম তার। গাড়ি উলটো দিকে ঘুরালাম।
কোথায় যাচ্ছি আমরা? বাসা তো ওই দিকে!
হ্যা কিন্তু আমরা তো বাসায় যাচ্ছি না!
বাসায় যাচ্ছি না? তোতলাতে থাকল সে। তাহলে কো…কোথায়?
সময় হলেই দেখতে পাবে। শয়তানি হাসি দিলাম!
সাগর! সত্যিই ভয় পেয়ে গেল মেয়েটা!

আরে বোকা এত ভয় পাও কেন? আমি তো আছি, ভয় কিসের হু? রিল্যাক্স হয়ে বসে থাকো লক্ষী মেয়ের মতো। সিডি প্লেয়ারে হালকা টোনের গান ছাড়লাম।

আড়চোখে দেখলাম তানিয়াকে, দু গালে হাত দিয়ে আদুরে ভঙ্গিতে বসে আছে। দু চোখে রাজ্যের দুঃচিন্তা! তার গালগুলো টিপতে ভীষণ ইচ্ছে করল আমার!
আগের পর্ব
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিসের সনদের মান নির্ধারণ করা শয়তানী কাজ

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪০



সূরাঃ ৯ তাওবা, ১০১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০১। মরুবাসীদের মধ্যে যারা তোমাদের আশেপাশে আছে তাদের কেউ কেউ মুনাফিক। মদীনাবাসীদের মধ্যেও কেউ কেউ মোনাফেকী রোগে আক্রান্ত। তুমি তাদের সম্পর্কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×