somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব-৪

০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



নিজের সুইভেল চেয়ারটাতে আলতো দুলছে লিও। যথারীতি সামনের ডেস্কের উপর ট্রিনিটি তার হলোগ্রাফিক ইমেজ দিয়ে নরমেন্ডির বিভিন্ন আপডেট দেখাচ্ছে। গ্লাস উইন্ডোটা খোলা রাখা আছে। সোলারিস রেড ডুয়ার্ফ স্টারটা থেকে আসা হালকা হলুদাভ আলো লিওর রুমের একাংশে পরছে। এই তারকাটাই তাদের সবচেয়ে কাছের কোন সোলার সিস্টেম। মাত্র ২,৫ এস্ট্রনমিকাল ইউনিট দূরে।

মাথায় অনেক ভাবনা ঘুরে বেড়াচ্ছে লিওর। কাজটা নেহাতই সহজ ভেবেছিল। জেনা মেয়েটা হঠাৎ করে সব উলটে দিল। যদি সত্যিই বিজ্ঞান একাডেমি সিগনাল না পেয়ে থাকে তাহলে তাদের এখানে ডাকল কেন? নাকি তারা ভুল জায়গায় তাদের পাঠিয়ে দিয়েছে? কিন্তু তৃতীয় মাত্রার একটা সংকেত পেলে কেন তারা যাচাই না করেই ভুল জায়গায় অভিযান চালাবে? আরো অবাক ব্যপার হচ্ছে এই স্টেশনটি সম্পর্কে কোন খোজ করার জন্যে হাইপার ওয়েভে যোগ দিতে না দেওয়াটা। জেনা যখন বলেছিল সে ডেটাবেস থেকে বীকনটা ট্রেস করতে পারছে না, লিও নিজে সেটা চেষ্টা করে দেখেছিল। অথচ তার এক্সেসও ডিনাইড দেখাচ্ছে। একজন দলনেতার হাইপার ওয়েভ রেস্ট্রিকটেড করে রেখেছে বিজ্ঞান একাডেমি কোন কারণ ছাড়া এমনটা কখনো আগে সে দেখেনি।

লিও আসব? হাল্কা একটা গলা ভেসে এলো দরজার কাছে থেকে। চোখ তুলে তাকালো লিও। ইরা সেখানে দাঁড়িয়ে। হাতে তার মনোপড।

হ্যা আসো। কিছু বলবে।

ইতস্তত মাথা ঝাকালো ইরা। তার সামনে এসে টেবিলটার উলটো দিকে বসল।

কি হয়েছে?

তেমন কিছু না। সিলিং এর দিকে তাকিয়ে থাকলো কিছুক্ষণ ইরা। লিও তাকে বলবার জন্যে সময় দিল।

তুমি জানো আমি একজন জীব বিজ্ঞানী হিসেবে এখানে এসেছি। একটু থামল সে। আমি ভাইরাসের ইনফোগ্রাফিক প্লেট দেখে খুব সহজেই ধরতে পারি ভাইরাসটার মোটিভ কি আর কি উদ্দেশ্যে ডিজাইনটা করা হয়েছে।

ভ্রূ কুচকে তার দিকে তাকিয়ে আছে লিও। বুঝতে পারছে না সে কোন দিকে যাচ্ছে।

কিরু২ ভুল বলেছে। লিওর দিকে তাকালো ইরা। এখানে জীবের অস্তিত্ব আছে। বলা ভালো অনুজীবের।

ও! কি বলবে বুঝতে পারল না লিও। এটা কি ভালো না খারাপ বুঝল না।

লিও। সরাসরি তার দিকে তাকালো ইরা। আমি স্পেসস্টেশনটার মাঝে বসানো সেন্সরগুলো পর্যবেক্ষণ করছিলাম। স্কাউটশীপটা যখন স্ক্যান করার জন্যে গিয়েছিল তখন মনিটর করার জন্যে বেশ কিছু সেন্সর আর আল্ট্রা ভায়োলেট প্রোব বসিয়ে এসেছিল। আমার জন্যে রূটিন চেকআপ করার জন্যে। একটু আগে হঠাৎ মনে হলো ইনফোগ্রাফিক প্লেটটা চেক করে দেখি। দেখলাম এক ধরণের ভাইরাসের সিগনেচার ধরা পরেছে।

কি ধরণের ভাইরাস?

নির্দিষ্ট করে ডিজাইন করা… এরা কসমিক রেডিয়েশন থেকে শক্তি যোগাচ্ছে। কিরু২ বলল ডিফেন্সিভ শীল্ডটা ভেঙ্গে গেছে স্পেসস্টেশনটার। তাই এই ভাইরাসগুলো সহজেই ছড়িয়ে পরছে।

আমি একটু আগে আবার চেক করে দেখেছি… আগের চেয়ে প্রায় দ্বিগুন হারে বেড়ে গেছে ভাইরাসগুলো।

এটা কি কোন ধরণের ক্ষতিকারক কিছু…

জানি না। সেম্পল টেস্ট করে দেখতে হবে। তাকে বাধা দিল ইরা। কিন্তু… অদ্ভুত একটা মিল পাচ্ছি…

কি বলছো তুমি কিছুই ঠিক বুঝতে পারছি না। কিছুটা বিরক্ত হলো লিও।
তুমি জানো আমি ই৫৫ ভাইরাস জিনোম আবিষ্কার করেছি। তুমি কি জানো যে এটা মানুষের ডিকোড করা কোন সৃষ্ট ভাইরাস নয়? সেলাস্টিয়াল বিংদের তৈরি করা একটা ভাইরাস ছিল এটা। মুহুর্তের মাঝে মিলিওন মিলিওন মানুষকে ধ্বংস করে দিতে পারে। আর এই ভাইরাসটা যতদূর দেখছি তাতে তার সিগনেচার মানব সৃষ্ট কোন ভাইরাসের সাথে মিল খুজে পাচ্ছি না। এটি অনেক আধুনিক। অনেক কমপ্লেক্স আর্কিটেকচার এর… যেন…

যেন কি?

যেন ইচ্ছে করে এখানে ছড়িয়ে রাখা হয়েছে। দীর্ঘশ্বাঃস ফেলল ইরা। হয়তো কিছুই না এসব। পরীক্ষা করলে দেখা যাবে সাধারণ অভিযোজিত কোন অর্গানিজম। আমার একটু খটকা লাগলো তাই জানালাম। শুনেছি ওখানে আমরা যাবো পরীক্ষা করার জন্যে, জানালাটা দিয়ে দূরের স্পেসস্টেশনটাকে দেখালো ইরা। তাই আগে সাবধান করে দিতে আসলাম।

ঠিক কাজ করেছো ইরা। আমরা অবশ্য যাবো ওখানে। তবে অনেক সাবধান থাকবো আমরা।

উঠে দাড়ালো ইরা। হালকা মাথা ঝুকিয়ে চলে গেল। আবার বিশাল গ্লাস উইন্ডোর সামনে দাড়ালো লিও। আর কি কি দেখাবো তুমি পুরোনো স্পেসস্টেশন? মনে মনে ভাবে সে।

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৬ রাত ১১:১৫
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×