somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কসমিক সিম্ফোনি... (সায়েন্স-ফিকশান) পর্ব-২২

০১ লা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বিজ্ঞান একাডেমির সর্বময় কর্তা ভাইসরয় ভ্লাদিমির সিরোভের অবকাশ কক্ষে অপেক্ষা করছে জশোনি। গ্লাস ওইন্ডোর সারির পাশে ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে। অলিম্পাসের একবারে শেষের অংশে রয়েছে ভাইসরয়ের অফিশিয়াল এবং রেসিডেন্সিয়াল ভবন। বিশাল গম্বুজাকার গ্লাস উইন্ডোর সারি দিয়ে জুপিটারের বৃহৎ একটা অংশ দেখা যাচ্ছে।

কাউন্সিলম্যন জশোনি! পেছন থেকে বলে উঠলেন ভ্লাদিমির সিরোভ, দুঃখিত আপনাকে অনেকখন অপেক্ষা করানোর জন্যে। জরুরি কিছু আলোচনা করবেন বলেছিলেন আপনি।

একটা গৃহস্থলির কর্মি রোবট তাদের সামনে কিছু পানীয় আর শুকনো খাবার রেখে গেল।

আপনার স্কয়ারকে দেখছি না যে, একটু ঝুকে ভাইসরয়ের বিপরীতে বসে পরলো জশোনি। রিসিপশনে সে ই তো আপনার এপয়েন্টম্যন্ট দিত এতদিন। অবশ্য রোবট নিয়োগ করা সবসময় ভালো ব্যপার! মানুষের চেয়ে রোবটই বেশি আস্থাভাজন। তার বিখ্যাত ফেসফেসে হাসিটা হাসল সে।

সে ছুটি নিয়েছে কিছু দিনের জন্যে। তার বাড়ি হোম এ গিয়েছে কিছুদিন বেড়িয়ে আসবে বলে। ভারী কণ্ঠে বললেন ভাইসরয়। তার বলার ভঙ্গিতে কিছু একটা খুজে পেল চতুর জশোনি, তার বাড়ি যে হোম এ এই ইনফরমেশন ইচ্ছে করেই যেন তাকে দিলেন বলে মনে হলো তার।

তো চতুর্থ ধারার বিপদ নিয়ে কি কথা বলতে চান আপনি? তুষার শুভ্র দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে বললেন ভ্লাদিমির সিরোভ। হঠাৎ করে এমন কি ঘটলো যে কাউন্সিলের সাথে আলাপ না করেই আমার সাথে কথা বলতে চলে এলেন?

কাউন্সিলে আড়ি পাতা লোকের অভাব হয় না, এটা আমি আপনি সবাই ই জানি। এই ব্যপারটা অতি গোপনীয়, আপনি যদি কথা দেন এ ব্যপারে কারো কাছে প্রকাশ করবেন না, তবেই আমি ঘটনাটা বলতে পারি।

মাথা নেড়ে তাকে বলে যেতে ইঙ্গিত দিলেন ভাইসরয়। তো জশোনি সামনে ঝুকে এসে শুরু করল।

মহান ভাইসরয়, নিরিগিস স্টেশন ইনচার্জ কর্নেলিয়াস আহটামাসের কার্জক্রম আপনার কাছে কেমন মনে হচ্ছে?

মাথা নাড়লেন ভাইসরয়, সে যথেষ্ঠ সন্দেহজনক কাজকর্ম করে যাচ্ছে… কিন্তু আপনারাই তো তার পক্ষে রায় দিয়ে তাকে যথা পদে বহাল রেখেছেন! আপনাদের দৃষ্টিতে সে সঠিক কাজই করে যাচ্ছে।

ভাইসরয়, আমি নতুন অনেককিছু জানতে পেরেছি, আপনার সাথে আলোচনা করতে চাই। কর্নেলিয়াস আহটামাসের পরিকল্পণা অনেক সুদূর প্রশারিত, এবং তার অনেক শক্তিশালি বন্ধু বান্ধব তাকে সাহায্য করছে…

তা তো দেখতে পাচ্ছি, ব্যঙ্গাত্বক ভঙ্গিতে মুখ কুচকে গেল ভাইসরয়ের। আপনি কি বলতে চান বলুন।

আপনি জানেন সে কেন তৃতীয় মাত্রার বীকনের সৃষ্টি করেছিলেন? কারণ তৃতীয় মাত্রার বীকন বিজ্ঞান একাডেমির ফায়ারওয়ালের নিচে সীমাবদ্ধ নয়। এটির ব্যবহার নেই বললেই চলে বলে একে নতুন নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় ফেলা হয় নি! আর সেই জন্যেই এই মিশনকে বেছে নিয়েছেন নিরিগিস স্টেশনের সুপ্রিম কমান্ডার।

ভ্রু কুচকে উঠল ভাইসরয়ের। আপনি এসব কিভাবে জানলেন…

আমি কর্নেলিয়াসের আস্থাভাজন হতে চেয়েছি, সত্যটা বের করে আনার জন্যে। সেটা এই মূহুর্তে দরকারি নয়, তিনি দশম প্রজাতির রোবট সংগ্রহ করেছিলেন সেই মিশনের জন্যে, যার কোডনেম ছিল কিরু২। আপনি নিশ্চয় জানেন বিজ্ঞান একাডেমির এক্সপ্লোরিং মিশনে দশম প্রজাতির রোবট ব্যবহার করা হয় না… তারা খুব দামি এবং দুস্প্রাপ্য… এরকম একটি রোবট সরাসরি নেওয়া সম্ভব নয়, যদি না আপনি ফ্যক্টরি থেকে সরাসরি নিয়ে যান রোবটটিকে, নেক্সট-জেন কোম্পানি এই ধারার রোবট তৈরি করে থাকে, তাই ধরে নিচ্ছি সেই কোম্পানীর মালিক ভাইস চ্যন্সেলর ওরিওনও কোনভাবে এসবের সাথে সম্পর্কযুক্ত। তবে তিনি এখান থেকে যথেষ্ঠ দূরে বিরাজ করায় তার কার্জকলাপ আপাতত ধরা যাচ্ছে না।

এটা আমিও চিন্তা করেছি, ভাইস চ্যন্সেলরের অলিম্পাসে অত্যাধিক রোবটের প্রেরণ আমাকে সন্দেহ করতে বাধ্য করে। সে কিছু চায় অলিম্পাসে, এই রোবট নিয়োগ তাই প্রমাণ করে।

জ্বলন্ত স্বর্গের চীফ ডিনগানও বলেছিলেন কর্নেলিয়াস একা নন এই প্রজেক্টে… আনমনে বলল জশোনি।

আপনি জ্বলন্ত স্বর্গেও গিয়েছিলেন নাকি! ভ্রু কুচকালেন ভাইসরয়। সেখানে আবার কি হয়েছে?

সেখানেই সবচেয়ে দরকারি খবরগুলো পেয়েছি মহান ভাইসরয়, কর্নেকিয়াস কেন অভিযাত্রীদের পেছনে ছুটেন তা সেখানেই বের করতে পেরেছি…

উত্তেজনায় চোখ বড় হয়ে গেল ভাইসরয়ের। কেন করেছে সে এ কাজ!

কারণ সে সিন্ড্রা গ্রহে আবার ভাইরাস এক্সপেরিমেন্ট করতে চায়… বোমা ফাটালো জেন জশোনি। হতবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলেন ভ্লাদিমির সিরোভ, যার এত প্রতাপ প্রতিপত্তি, যার ক্ষমতায় আউটার ওয়ার্ল্ডের লোকেরা পর্যন্ত উঠাবসা করে, তার চোখের নিচে দিয়ে এতকিছু ঘটে যাচ্ছে তিনি আন্তাজো করতে পারেননি। নিজেকে আবারো অসহায় লাগলো তার। ফ্লেনকেও পাঠিয়ে দিয়েছেন শত আলোকবর্ষ দূরে, এখানে গুপ্তচরদের মাঝে কত অসহায় তিনি!

উঠে দাড়ালেন ভাইসরয়, হলোগ্রাফিক স্ক্রীনে কমান্ড দিতেই আশেপাশের রূমগুলো থেকে এই রূমটা এয়ারটাইট হয়ে গেল। কেউ চাইলেও তাদের কথা কেউ শুনতে পারবে না।

কি হয়েছে আমাকে পুরোপুরি খুলে বলুন!

জ্বলন্ত স্বর্গে যা কিছু শুনেছে সব খুলে বলল জশোনি। কিভাবে tx-9 ভাইরাস আবার উৎপাদন শুরু হয়েছে, যার প্রথম ব্যাচ কর্নেলিয়াস কিনে নিয়েছেন, তিনি লিও আর জিমকে তাদের প্রথম মিশন হিসেবে সিন্ড্রাতে পাঠান এই ভাইরাস টেস্ট করার জন্যে, বিজ্ঞান একাডেমির রুটিন চেকের জন্যে না।

সে জানতো, ফেসফেসে হাসি হাসলো জশোনি, যে লিও আর জিমের স্মৃতি ঠিক নেই, কারণ তার মিশন অনুযায়ী যা হবার কথা ছিল, তা ওই মিশনে হয় নি!

তারমানে, উত্তেজনায় হাপাতে থাকলেন ভাইসরয়, কর্নেলিয়াস লিও আর জিমকে পাঠিয়েছিল tx-9 এর এক্সপেরিমেন্ট করার জন্যে, তার জানা দরকার ছিল এই এক্সপেরিমেন্টের রেজাল্ট, আর তাদের মেমোরি সরিয়ে আর্টিফিশিয়াল একটা মেমোরি তাদের মাথায় ইমপ্লেন্ট করা দরকার ছিল, কারণ তারা যদি কাউকে বলে দেয় তারা কি করেছে সিন্ড্রাতে গিয়ে… তাহলে সবাই জেনে যাবে কর্নেলিয়াসের প্ল্যানটা…

আর তাই… যখন কর্নেলিয়াসা আসল মেমোরিটা চেক করতে গেল তখন দেখতে পেল তারা যা করেছে তা মোটেও কর্নেলিয়াসের tx-9 ভাইরাসের এক্সপেরিমেন্ট না। ক্রুর ভঙ্গিতে হাসল জশোনি।

তারা কি করেছিল সিন্ড্রাতে যেয়ে? লিও আর জিম…কেন তারা ভাইরাসটার এক্সপেরিমেন্ট করতে দিল না?

সেটা এখন একমাত্র কর্নেলিয়াসই জানে… কাধ ঝাকালো জশোনি। লিও জিম এরা কেউই বলতে পারবে না কারণ তাদের মাথায় আসল মেমোরিটা বসানো নেই। হয়তো তারা বুঝতে পেরেছিল এই ভাইরাস এক্সপেরিমেন্টের ঝুকি, হয়তো সেখানে বুদ্ধিমান জীবনের বিকাশ ঘটেছে আবারো… তারা এই জীবদের ধ্বংস করে দিতে চায় নি… তারা কেন কর্নেলিয়াসের কাজটা করল না সেটা জানা যাবে না… কিন্তু তারা এমন কিছু করেছিল যার জন্যে কর্নেলিয়াস তাদের মারার প্ল্যান করে… যা আমি আপনি, বিজ্ঞান একাডেমি, কেউ জানি না।
ইরা আর জেনাও হয়তো তার গোপন কোন কাজে হাত দিয়েছিল, অথবা তাদের বন্ধুদের কোন গোপন বিষয় জেনে ফেলে… তাই তাদের চারজনকে এক করে মেরে ফেলার একটা গ্র্যান্ড ডিজাইন করে কর্নেলিয়াস।

আমি ইরা আর জেনার বিষয়ে কিছু জানি না, কিন্তু আসল কথা হল, দম ফেলল জশোনি। কর্নেলিয়াসের কাছে মারাত্বক একটা মারণাস্ত্র আছে। সে এটা অলিম্পাসে ব্যবহার করবে না তার নিশ্চয়তা কি? হয়তো পৃথিবীতেও ভাইরাসটা ছেড়ে দিতে পারে। এটা দিয়ে সে কি করবে তা আমাদের ঘারণারও বাইরে। আমাদের তার কাছ থেকে এই ভাইরাসের পুরো ব্যাচ উদ্ধার করতে হবে…

তার আগে… ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালেন ভাইসরয়, রাগে তার গাল কাপছে… তাকে গ্রেপ্তার করে অলিম্পাসে আনতে হবে!


****


কর্নেলিয়াস আহটামাস ল্যাবের ফেসিলিটিটা ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলেন। প্রকান্ড একটা কক্ষ, হাজার খানেক বাতির আলোতে উজ্জ্বলভাবে জ্বলছে। রুমটির মাঝে অসংখ্য প্ল্যান্ট বসানো, প্রত্যেকটা প্লান্টের মাঝে ঘন তরল ভর্তি, তার মাঝে মানুষ ডুবে আছে। কৃত্রিমভাবে তাদের শ্বাসপ্রক্রিয়া চলছে। কয়েকশ ল্যাব-মনিটর এদিকে ওদিকে ছুটছে এই অতিকায় ট্যাংকের সাবজেক্টগুলোকে দেখাশোনার জন্যে। প্রত্যেক ট্যাংকের সামনেই হলোগ্রাফিক স্ক্রীনে তাদের শরীরবৃত্তিয় ইনফরমেশন প্রকাশ করছে।

এটাই হলো প্রজেক্ট’১২ এর ল্যাব। এটাই হচ্ছে বায়োবট বানানোর কারখানা। প্রত্যেকটা ট্যাংক ঘুরে ঘুরে দেখছেন কর্নেলিয়াস। তার পেছনে অনুচরের মত হাটছে ইউডি। তার ধাতব পায়ের আওয়াজে প্রতিধ্বনি উঠছে দূরের কোন দেয়ালে।

মাস্টার, আপনার পছন্দ হয়েছে? ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলল একজন।

পেছনে ফিরে তাকালেন কর্নেলিয়াস। কদাকার চেহাড়ার একজন লোক তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। তার ভোতা মুখ, বড়বড় দুটি চোখ আর জট পাকানো কাধ পর্যন্ত নামা চুল দেখলে যে কেউই ভরকে যাবে। তাকে কখনোই একজন ডক্টর মনে হয় না বরং সাইকোপাথ বলেই মনে হয়।

রড্রিক্স! সহাস্যে বলে উঠলেন কর্নেলিয়াস। প্রোজেক্ট কি শেষের পথে? আমি আর বেশি অপেক্ষা করতে পারব না…

জ্বী মাস্টার, মাথা নুইয়ে বাউ করল রড্রিক্স। প্রায় শেষ হয়ে গেছে… আপনাকে কি বলে যে ধন্যবাদ দিব, এমন একটা প্রজেক্টের জন্যে অর্থায়ন করার জন্যে! নাকি সুরে চেচালো সে।

হয়েছে! স্পষ্টতই বিরক্ত হলেন সুপ্রিম কমান্ডার। অনেকেই জেনে ফেলছে এই প্রজেক্টটার কথা। এখনি শেষ করতে না পারলে কখনোই আর পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুনো যাবে না। সবাইই সুযোগ খুজছে…

অবশ্যই মাস্টার, আবার বাউ করলো রড্রিক্স।

ওরিয়ন তোমাকে কি বলেছে? এবার ইউডির দিকে তাকালেন তিনি। পৃথিবী থেকে সাহায্য আসছে?

মাস্টার, হাটু গেড়ে তার সামনে বসে পরল ইউডি। ভাইস চ্যান্সেলর আপনার সাথে কথা না বলে পরিকল্পনা মত কোন কাজই আগাবেন না বলেছে। সে আপনার উপর বিশ্বাস ধরে রাখতে পারছে না।

হুম… তাকে আমার বিশ্বাসযোগ্য কখনোই মনে হয় নি। তবে তার উচ্য বিলাসিতা তাতে মোটেও কমে নি… হয়তো সে নিজে অলিম্পাস আক্রমণ করে বসবে… দশম প্রজাতির রোবট বানানো সে বৃদ্ধি করে দিয়েছে।

মাস্টার, পৃথিবীতে গুজব ভাসে ভাইস চ্যান্সেলর দ্বাদশ প্রজাতির এক রোবট বানাচ্ছেন, যেটি মানুষের চেয়েও বেশি বুদ্ধিমান হবে, রোবট আইনে তারা বাধ্য নাও থাকতে পারে… ভারী স্বরে বলল ইউডি। তিনি দশম প্রজাতির রোবট ট্রাটোকে নিয়োগ দিয়েছেন অলিম্পাসে ভাইসরয় ভ্লাদিমির সিরোভের চারপাশে আড়িপাতার জন্যে।

চুপচাপ শুনে গেল কর্নেলিয়াস, মুখে কিছুই বলল না। রড্রিক্স, তোমার প্রজেক্টটা ২১ সোলের (SOL-solar day) মাঝেই শেষ করতে হবে। আর সময় নেই। ওরিওন সাথে না থাকলে আমাদের নিজেদের লোকবলের বেশি দরকার হবে… সর্বশেষ আপডেট দাও আমাকে।

মাস্টার, ক্রুগার শ্রেণির বায়োবট প্রায় শেষের পথে, তাদের গভীর ঘুম (deep sleep) থেকে উঠিয়ে এখন তাদের প্রোগ্রাম আপ করা হচ্ছে, এদের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে তারা প্রচন্ড শক্তিশালি ও বেপরোয়া। ক্রুগারদের সব হাড়-জয়েন্ট ফেলে দিয়ে সংকর ঘাতুর কাঠামো প্রদান করা হয়েছে, তাই এদের সাথে কোন ব্যেটল ড্রয়েড কখনোই পেরে উঠবে না। বিদঘুটে ভাবে হাসল রড্রিক্স।

আর বাকি গুলোর?

স্প্রিন্ট সিরিজের বায়োবটগুলো আর কয়েক সোলের মাঝেই উঠানো হবে। তাদের ব্যুট আপ করে ফিল্ডে নামাতে আরো কিছু সোল সময় লাগবে। আর সাবজেক্ট ৩, ডার্ক বায়োবটগুলো এখনো পরীক্ষাধিন আছে, এদের মাঠে নামানোর মত তৈরি করতে কিছুটা সময় লাগবে।
আর সাবজেক্ট ৪ সিরিজ? এ সিরিজের কিছু বানাও নি? হেসে খোচা দিলেন কর্নেলিয়াস।

মুখটা কালো হয়ে গেল রড্রিক্সের। সাবজেক্ট ফোরের ব্লুপ্রিন্টে এখনো সমস্যা আছে। জেমস নামের নরকের কীটই একমাত্র সাবজেক্ট ৪ হিসেবে এখনো টিকে আছে। তাকে একবার পেলে… হিসহিস করে উঠল। তার মাঝেই আমার সবচেয়ে সুন্দর কাজটা দিয়েছিলাম, সবচেয়ে আধুনিক যন্ত্র আর মানুষের কম্বিনেশন! হিস্ট্রিয়াগ্রস্থদের মত কাপল রড্রিক্স, তার মত যন্ত্র আর একটাও তৈরি হয় নি এখানে…

আর ইউডি, সে কোন সাবজেক্টের মাঝে পরে?

ইউডি ডার্ক সিরিজের বায়োবট, সে প্রথম দিকের এক্সপেরিমেন্টের ফসল। তাকে ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজড করানোর জন্যে বানানো হয় নি। সাবজেক্ট ৩, অবশ্যই ভালো মানের বায়োবট, তারা সকল আদেশ যথাযথভাবে মেনে চলে, কিন্তু সাবজেক্ট ৪ আরো উন্নত সংস্করণ।

কিছুক্ষণ ভাবলেন কর্নেলিয়াস। তোমাকে তোমার সময় দেওয়া হল। যখনই আমি চাইব তখনি যেন ব্যাচ পুরোটা পাই।

বাউ করল রড্রিক্স, ঘুরে ফিরতি পথ ধরলেন কর্নেলিয়াস।

ওরিয়ন এত সহজে পথভ্রষ্ট হবে আমার বোঝা উচিৎ ছিল, আনমনে বিড়বিড় করছেন কর্নেলিয়াস। অবশ্য তার হাতে আমার বিরুদ্ধে কোন প্রমাণ নেই। তার রোবট কিরু২ ধ্বংস হয়েছে, বিজ্ঞান একাডেমির মিশনের সবাইও একই সাথে শেষ…

এটা ভুল সংবাদ মাস্টার, ইউডি তাকে বলল। ওরিয়ন খবর পেয়েছেন যে ঐ মিশনের অভিযাত্রিরা কোনভাবে এখনো বেচে আছে। এই খবরটা সে তার স্কয়ার ট্রাটোর মাধ্যমে পেয়েছিল…

প্রচন্ড ক্ষোভে আছড়ে পড়লেন সুপ্রিম কমান্ডার। ক্রোধে তিনি কাপতে থাকলেন। ইউডি! তুমি এখুনি ঐ অভিযাত্রিদের খুজে বের করবে, এটাই হবে তোমার সামনের মিশন। যেখানে আছে তারা খুজে বের কর আর কিরু২ এর মিশন শেষ কর… মামুলি কীট এইসব রোবট… দশম প্রজাতি, তো কি হয়েছে! তারও মিশনের বিফলতা সমান… এদের দিয়ে হবে না, বায়োবটই লাগবে…

তুমি সোলারেক্সের আশেপাশে কোন ট্রান্সপোর্টশীপ ছিল খুজে বের কর, তারা সারা জীবন লুকিয়ে থাকতে পারবে না!

হাটুগেড়ে তার সামনে বসল ইউডি, তার মুখ পাথরের মত শক্ত। আপনার আদেশই আমার জন্যে শিরোধার্য মাস্টার।

আগের পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০১৭ রাত ১০:১৯
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×