somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পিপিপি ও সেবাখাতঃ জনগণের পকেট কাটার নতুন কৌশল

০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এবারের বাজেটের সবচেয়ে আলোচিত অংশ হল কালো টাকা সাদা করার অনুমতি বহাল রাখার প্রসঙ্গ। তার পরেই আছে তথাকথিত পিপিপি বা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্ব। অর্থমন্ত্রী অবশ্য বাজেট বক্তৃতায় ইংরেজি শব্দগুলোই ব্যবহার করেছেন। বাংলা ভাষার প্রতি দরদী বলে দাবিদার সরকারের মন্ত্রী হলেও কেন যেন তিনি বাংলাটা এড়িয়ে গেছেন। এতে অবশ্য তার বেশ লাভ হয়েছে।

ইংরেজিটার মাঝে একটু ভারিক্বি ভাব আছে। আম-জনতা মনে করছেন নিশ্চয় এ এক অভিনব বিষয়। শুধু আম-জনতা কেন, অনেক অর্থনীতিবিদও বিনিয়োগের ড়্গেত্রে একটা নতুন বিষয় আনার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। কিন' যদি বাংলাটা ব্যবহার করা হতো? অর্থনীতি সম্পর্কে একেবারে অজ্ঞ একটা লোক হয়তো তখন বলতেন, ও এতো নতুন মোড়কে পুরনো মাল। গত এক যুগ ধরে আমরা এটা দেখছি, এর কারণে সৃষ্ট
দুর্ভোগও পোহাচ্ছি। তখন আমাদেরকেও হয়ত এ নিয়ে আলোচনা করার তেমন কোনো প্রয়োজন হতো না।

যাহোক, অর্থমন্ত্রী যেহেতু পিপিপি কথাটা ব্যবহার করেছেন, মিডিয়ার কল্যাণে এটা বেশ চালুও হয়ে গেছে, আমরাও তা ব্যবহার করব। আর এ সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার জন্য সরকারি উৎসই কাজে লাগাব। সরকারি উৎস বলতে আমরা অর্থমন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটকে বুঝাচ্ছি।

অর্থমন্ত্রণালয় পিপিপি সম্পর্কে একটা ধারণাপত্র, অর্থমন্ত্রীর ভাষায় পজিশন পেপার তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, সাধারণত সরকারি কোন নির্মাণ কাজ বা সরবরাহ ‘টেন্ডার বা প্রতিযোগিতামূলক নিলামের মাধ্যমে ঠিকাদার সরবরাহকারীর কাছ থেকে কিনে নেওয়া হয়। এ কেনাকাটা একটা এককালীন বিষয়, নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেলে বা সরবরাহ করা হয়ে গেলে ওই বিষয়ে সংশিস্নষ্ট ঠিকাদার বা সরবরাহকারীর কোন দায়-দায়িত্ব থাকে না। কিন্তু পিপিপির মাধ্যমে সরকার বা জনগণ একটা চুক্তিনামার আওতায় বেসরকারি সেক্টরের কোন প্রতিষ্ঠান বা অবকাঠামো থেকে নির্দিষ্ট ফি বা দাম দিয়ে সেবা কিনে নেয়। ওই অবকাঠামোর ‘অর্থ যোগানো, নির্মাণ কাজ ব্যবস্থাপনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সবই করে সংশিস্নষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, অবশ্য সরকারের অনুমোদন ও সহযোগিতা নিয়ে। ওয়েবসাইটে পিপিপির কয়েকটি মডেল আছে যার কোন কোনটা বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই কার্যকর আছে। যেমন, বিওও (বিল্ড ওউন অপারেট); সহজ কথায় এর অর্থ হল অবকাঠামো নির্মাণ, মালিকানা ও পরিচালনা সবই করবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। বর্তমানে বিদ্যুৎ খাতে বেসরকারি উদ্যোগের নামে এ মডেলটি কার্যকর আছে। দ্বিতীয় মডেলটি হল, বিওটি (বিল্ড অপারেট ট্রান্সফার) অর্থাৎ অবকাঠামোটি বেসরকারি উদ্যোগে নির্মাণ করার পর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যনত্ম তা পরিচালনা করবে সংশিস্নষ্ট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। ওই সময় শেষ হয়ে গেলে তার ব্যবস্থাপনা সরকারের হাতে চলে আসবে। এ মডেলটি কার্যকর আছে গ্যাস খাতে বিভিনড়ব পিএসসি চুক্তির আওতায়। তৃতীয় মডেলটি হল, বিওওটি (বিল্ড অপারেট ওউন ট্রান্সফার) অর্থাৎ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অবকাঠামোটি নির্মাণের পর নির্দিষ্ট সময় পর্যনত্ম তা পরিচালনা করবে। তারপর তার মালিকানা ও ব্যবস্থাপনা
সরকারের হাতে দিয়ে দেবে।

বাংলাদেশে বর্তমানে এ তিনটির বাইরে আকেটি মডেল কার্যকর আছে, তা হল, সরকার অবকাঠামো নির্মাণের পর তার ব্যবস্থাপনা, ক্ষেত্রবিশেষে মালিকানা, বেসরকারি খাতে দিয়ে দেয় এবং নির্দিষ্ট ফি বা দাম দিয়ে তার কাছ থেকে সেবা কিনে নেয়। এ মডেলের আওতায়ই জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রসহ বেশ কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র বিদেশি কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিআরটিসির বহু বাস এ নিয়মে চলছে। কয়েকটি ট্রেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ছেড়ে দেওয়ার পর রেল খাতেও তা কার্যকর আছে। ধারণাপত্রটিতে এ মডেলগুলোর ফলে সরকার, সংশিস্নষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং জনগণ বা ভোক্তারা কী কী সুবিধা পেয়ে থাকে তা-ও বেশ বিস্তারিত বলা আছে। আমরা এখানে শুধু ভোক্তা বা জনগণের দিকটাই আলোচনা করব। কারণ, গণপ্রজাতন্ত্র হিসেবে এ দেশের মালিক জনগণ, আর চূড়ানত্ম বিচারে সব সম্পদেরই যোগানদাতা হল সাধারণ জনগণ, তাদের সুবিধা-অসুবিধাই যেকোন বিনিয়োগের সাফল্য-ব্যর্থতা বিবেচনার ক্ষেত্রে ভিত্তি হওয়ার কথা। ধারণাপত্রে বলা হয়েছে, টাকা দিয়ে সেবা কেনা হবে বলে সংশিস্নষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরকার ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। তদারককারী হিসেবে সরকার অধিকতর দায়িত্বশীল হবে এবং দুর্ঘটনা বা ড়্গয়-ড়্গতিজনিত খরচ কমাতে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তার জন্য টেকসই ও ভাল মালমশলা বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবে। অবশ্য, ধারণাপত্রে এ সবের পাশাপাশি কিছু ঝুঁকির কথাও বলা হয়েছে। ঝুঁকিগুলো হল, সম্পত্তির ওপর জনগণের মালিকানা হারানো, প্রকল্প ব্যয় ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো, সেবার দাম নির্ধারণের সময় জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়া ইত্যাদি। বাস্তবে কোনটা সত্য হতে পারে?

আমাদের বিবেচনায় সুবিধার চেয়ে ঝুঁকির কথাগুলোই বাসত্মব হয়ে ওঠতে পারে। ইতোপূর্বের অভিজ্ঞতাও তা-ই বলে। সবার জানা আছে যে পিএসসি বা উৎপাদন বন্টন চুক্তির মাধ্যমে আমাদের গ্যাসড়্গেত্রগুলো বিভিনড়ব সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা আছে উৎপাদন খরচ না ওঠা পর্যন্ত বিদেশি কোম্পানি গ্যাসের শতকরা ৭৯ ভাগ পাবে, আমরা পাব ২১ ভাগ। উৎপাদন খরচ ওঠার পর আমাদের গ্যাসের হিস্যা বাড়বে। কিন্তু দেখা গেছে, কোম্পানির কর্মকর্তাদের বেতনবাড়ি-গাড়ি ভাড়া, এমনকি কথিত বিনোদন খরচকেও যুক্ত করে উৎপাদন খরচ এতটাই বাড়িয়ে ধরা হয়েছে যে, গ্যাস শেষ হয়ে যাওয়ার পরও ওই খরচ নাকি তোলা যায়নি। ব্রিটিশ কোম্পানি কেয়ার্ন পরিচালিত বঙ্গোপসাগরের সাঙ্গু গ্যাসড়্গেত্র তার সাড়্গী। পিএসসিতে আরও বলা হয়েছে, ওদের ভাগের গ্যাস আমাদেরকে কিনতে হবে বিদেশি মুদ্রায় এবং দাম নির্ধারিত হবে আনত্মর্জাতিক বাজারে তেলের দামকে ভিত্তি করে। এর ফল হয়েছে, বর্তমানে আমাদেরকে ওদের কাছ থেকে পেট্রোবাংলার চেয়ে ১০ গুণ বেশি দামে গ্যাস কিনতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ওরা মাঝে মাঝেই গ্যাসের দাম বাড়ানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করছে এবং বেশি মুনাফার লোভে তৃতীয় পড়্গের কাছে গ্যাস বিক্রয়ের অনুমতির জন্য চাপ দিচ্ছে।

এর প্রভাবে ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। সবচেয়ে বড়কথা, গ্যাসের জন্য আমরা ওদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছি। বিদ্যুৎ খাতেও একই অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। দেশি-বিদেশি কোম্পানিগুলোর সাথে অসম আইপিপি (ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার) চুক্তির কারণে প্রতিবছর বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, পিডিবির পস্ন্যান্ট বন্ধ রেখে ওদেরকে সস্তা দরে গ্যাস সরবরাহ করতে হচ্ছে। এ কারণে পিডিবির ড়্গতি এতটাই বেড়ে গেছে যে, তা দিয়ে বছরে অনত্মত ২০০ মেগাওয়াটের একটি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন করা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা বলেন।

ধারণাপত্রে এ সব ড়্গতি মোকাবেলায় উপযুক্ত আইন ও বিধি প্রণয়ন, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ এবং এগুলোর তত্ত্বাবধান ও নজরদারির জন্য পর্যাপ্ত বেতন দিয়ে দক্ষ বিশেষজ্ঞ ও জনবল নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন' এসব চুক্তি বা আইনবিধি করবে কে? বর্তমান সরকারই তো, ওপরে যে পিএসসি ও আইপিপির কথা বলা হয়েছে সেগুলো এরাই করেছিল এদের ড়্গমতার ১৯৯৬-২০০১ সালপর্বে। পরবর্তী বিএনপি-জামাত জোট সরকার তা বহাল রেখেছে এবং নতুন কিছু চুক্তি করেছে। ফলে কাঁঠাল গাছে আম আশা করাটা কোনমতেই সঙ্গত হতে পারে না।

একটা বিষয় লড়্গ্য করার মতো, পিপিপির আওতায় বিনিয়োগের জন্য যে খাতগুলোকে বেছে নেওয়া হয়েছে তার প্রায় সবকটিই সেবা খাতের অনত্মভুর্ক্ত , যেখানে সমসত্ম জনগণের মৌলিক প্রয়োজনগুলো জড়িত। যেমন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতো বটেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পানির মতো বিষয়গুলো জনস্বার্থের দিক থেকে অত্যনত্ম স্পর্শকাতর বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। এগুলোকেও পিপিপির আওতায় দেশি-বিদেশি মুনাফাশিকারিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফল খুব ভয়াবহ হতে বাধ্য। এখনই এক গস্নাস বিশুদ্ধ পানি ২ টাকা দিয়ে কিনে খেতে হয়। পিপিপির মাধ্যমে ওয়াসা ও বিভিনড়ব পৌরসভার পানি সরবরাহ ব্যবস্থা যদি মুনাফাশিকারীদের কবলে যায় তখন এর অবস্থাটা কী দাঁড়াতে পারে?

শিক্ষারক্ষেত্রে, বিশেষত উচ্চশিক্ষায় বাণিজ্যিকীকরণের দাপটে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণদের মাত্র শতকরা ৪ ভাগ সুযোগ পায়। এদের মধ্যে এখনও কম হলেও কিছু নিম্নবিত্ত জায়গা পায়। কিন্তু, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বা সরকারি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পিপিপির আওতায় গেলে তা কি সম্ভব হবে? ঠিক একই প্রশড়ব স্বাস্থ্য খাতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। নিম্নববিত্ত মানুষেরা এখন বহু হয়রানি সত্ত্বেও সরকারি হাসপাতালগুলিতে একটু-আধটু চিকিৎসা পায়। মুনাফাশিকারিরা সুযোগ পেলে যে এদেরকে এখান থেকে ছিটকে ফেলে দেবে এ কথা জোড় দিয়েই বলা যায়।

সুতরাং, অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় যতই বলুন, পিপিপি প্রবৃদ্ধি বাড়িয়ে ‘মানুষকে দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে মুক্ত করবে, আম-জনতা তাতে আশ্বস্ত হতে পারে না। তাদের কাছে পিপিপি রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকের হাতে তুলে দেওয়ারই পন'া বিশেষ। আরেকটু খোলাসা করে বললে, সাধারণ জনগণ এতদিন যেসব সেবা অপ্রতুল হলেও তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে অল্প ফি দিয়ে ভোগ করত, পিপিপি এগুলোকে বাজারি পণ্যে পরিণত করবে। পরিণামে মুনাফাশিকারিদের জন্য জনগণের পকেট কাটার একটা বৈধ সুযোগ তৈরি হবে।

পকেট কাটার বিষয়টা নিয়ে কারও সংশয় থাকলে আশুলিয়া সড়কের কথাটা উল্লেখ করা যায়। সম্প্রতি খবর বেরিয়েছে, ওই সড়কটি ৫ বছরের জন্য ৫ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইজারাদার একবছরেই তুলে নিয়েছে ৩ কোটি টাকা, ৫ বছরে তোলা যাবে কম করে হলেও ১৫ কোটি টাকা। যে সড়কে বিনা পয়সায় চলাচলের কথা ছিল সে সড়কে চলতে গিয়ে ১৫ কোটি টাকা গচ্চা! কে দিল আর কে পেল?

আরও মজার ব্যাপার হল, অর্থমন্ত্রী বিদ্যুৎকেন্দ্র, হাসপাতাল, স্কুল ও রাসত্মাঘাট নির্মাণকে বাণিজ্যিকভাবে অলাভজনক (!) বলে এসব খাতে বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে বাজেটে ৩০০ কোটি টাকা ভর্তুকির ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া ওদেরকে মূলধন যোগানোর জন্য বাজেটে আরও ২১০০ কোটি টাকা অবকাঠামো বিনিয়োগ তহবিল হিসেবে রেখেছেন। বলা হয়েছে “এ তহবিল থেকে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিনড়ব আর্থিক প্রণোদনা প্রদান করা হবে।” ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ১৫ কোটি টাকা আয় হওয়ার পরও ভর্তুকি বা আর্থিক প্রণোদনা দিতে হবে? এটাকে হরিলুট বললে কি খুব একটা বেশি বলা হবে?

আসলে অর্থমন্ত্রী বাজেট বক্তৃতায় কিছু কল্যাণমূলক বুলি আওড়ালেও এবং কথিত সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সামান্য বরাদ্দ বৃদ্ধি, কোনো কোনো আমদানি পণ্যে কর বৃদ্ধি দেখে কেউ কেউ অর্থনীতি কল্যাণমূলক খাতে বাঁক নিয়েছে বলে প্রবোধ পেলেও বাসত্মবে তারা তথাকথিত মুক্তবাজার নীতিতেই অটল আছেন। মুক্তবাজার নীতির পোশাকি নাম নয়া-উদারবাদী নীতি যার মূলকথা হল, সবকিছুকেই বাজারের পণ্যে পরিণত করতে হবে, কোন কিছুই মুনাফাশিকারিদের আওতার বাইরে রাখা যাবে না। অভাবের কারণে মানুষ কোন শিল্প বা কৃষিপণ্য না কিনতে পারে, জরম্নরি সেবা কেনা তো আর বাদ দিতে পারবে না। তাই মুনাফার চাকা সচল রেখে পুঁজিবাদকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে শিল্প-কৃষির পাশাপাশি শিক্ষা-স্বাস্থ্য-পানি সরবরাহের মতো জরুরি সেবাগুলোকেও পুঁজিপতিদের মুনাফা শিকারের জন্য খুলে দিতে হবে।

এখন এর পরিণতি কী দাঁড়াবে? কাগজে-কলমে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হয়ত ঘটবে, কিন' মৌলিক সেবাপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য আরও প্রকট হবে। টাকাওয়ালারা এখনকার মতোই উন্নতমানের সেবাগুলো ভোগ করবে, কিন্তু টাকাহীনেরা এখন যতটুকু পাচ্ছে তা থেকেও বঞ্চিত হবে। হ্যাঁ, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় কিছু হয়তো তাদের ভাগে পড়বে, তবে তা যে ভিজিডি-ভিজিএফ ও টেস্ট রিলিফের চাল ও গমের মানেরই সমতূল্য হবে নির্দ্বিধায় তা বলা যায়।

ভ্যানগার্ড প্রতিবেদন
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×