somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিকি
ছোটো প্রাণ,ছোটো ব্যথা >ছোটো ছোটো দুঃখকথা >নিতান্তই সহজ সরল >সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি>তারি দু-চারিটি অশ্রুজল>নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা> নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ> অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে>শেষ হয়ে হইল না শেষ

The Perfect Circle 1997(Savrseni Krug)—বলকান দেশ বসনিয়া হার্জেগোভিনার যে সিনেমাটি মন ছুঁয়ে যাওয়া মানব সম্পর্কের এক নিখুঁত বৃত্তের গল্প বলে :( :( :( :( :( :( :( :(

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



“Man is the only creature that refuses to be what he is. Man's goodness is a flame that can be hidden but never extinguished. ”


ছোটবেলায় ভাবসম্প্রসারণ হিসেবে প্রায় আমরা সবাই পড়েছি “প্রাণ থাকলে প্রাণী হয়, কিন্তু মন না থাকলে মানুষ হয় না”...মানবিকতা বা মনুষ্যত্ববোধ মানুষের এমন কিছু গুণাবলীর মধ্যে পড়ে যা জন্মগত ভাবে পেলেও এটি প্রস্ফুটিত হয় নিজের ইচ্ছা, বিবেক, আর উদারকেন্দ্রিক মনোভাবের ভিত্তিতে। মানুষের কিছু বৈশিষ্ট্য countable noun হয়, আর কিছু uncountable… এর কারণ কি হতে পারে? When quantity overrules quality it’s countable, but when quality reverse its position it becomes uncountable one…isn’t it?? পৃথিবীতে যেমন কিছু নির্দয়, স্বার্থান্বেষী মানুষের গোষ্ঠী রয়েছে, তেমন স্বার্থবিহীন লোকও রয়েছে... মানুষের মনুষ্যত্ব-টাকা, ক্ষমতা, সামর্থ্য, প্রতিপত্তি, ঐশ্বর্য এগুলোর সাথে সংশ্লিষ্ট নয় বরং তার বিবেকের এবং একে অপরের প্রতি সামাজিক দায়বদ্ধতার উপর নির্ভরশীল... If anyone fall, others may hold him/her by hand (strength) not by power (money/goodwill)… isn’t it??? Love, hope, fear, faith--these make humanity. এতগুলো কথা প্রথমে বললাম , কারণ আজকের পোস্ট এমনই একটি মুভি নিয়ে যেখানে মানুষের এরকম দুই গোষ্ঠীর পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে- এক গোষ্ঠী, উদ্বাস্তু, নিম্ন অবস্থানে থেকেও উচ্চ মানবিকতা সম্পন্ন এবং অপর গোষ্ঠী ক্ষমতা লোভী, বিবেকহীন !!! আজকের সিনেমা বসনিয়ার যুদ্ধের ফলস্বরূপ সাধারণ মানুষ গুলোর ভাগ্যে কি ঘটেছিল তার উপরে। বলে রাখা শ্রেয়, বসনিয়ার যুদ্ধ ১৯৯২-১৯৯৪ সাল পর্যন্ত চলেছিল এবং এই দুই বছরে প্রায় ১০০০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল “যুদ্ধের অংশ” হিসেবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সব থেকে বেশি ক্ষয় ক্ষতি সম্বলিত যুদ্ধ এটিই ছিল... এবং এই যুদ্ধের ফলে অনেক মানুষ তাদের দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। পোস্ট শুরু করব জীবনানন্দ দাশের কবিতা “অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ পৃথিবীতে আজ” দিয়ে—


“অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ,
যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই - প্রীতি নেই - করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব'লে মনে হয়
মহত্‍‌ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শেয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়। ”




প্রথমেই বলেছি, সিনেমার প্রেক্ষাপট বসনিয়ার যুদ্ধ...বসনিয়ার একটি ছোট্ট গ্রামে বাস করে দুই অনাথ ভাই... Adis এবং Kerim… একদিন তাদের ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের আশ্রয়স্থলে চেচনিকদের ছোঁড়া shell এসে পড়ে... দুই ভাই কোন রকমে সেই বারের মত প্রাণে রক্ষা পায়... এবং তারা প্রাণ বাঁচাত দিকভ্রান্ত হয়ে দৌড়ায়। অপরদিকে, Sarajevo শহরে এক কবি তার স্ত্রী এবং মেয়ে নিয়ে বসবাসরত... এর মধ্যে শহর খালি করার প্রক্রিয়া চলছে... কবির নাম Hamja… তার সমস্যা সে কিছুটা গা-ছাড়া স্বভাবের, মদ্যপ এবং অতিরিক্ত পরিমাণে ধূমপায়ী। তার স্ত্রী Gospoda নিজ উদ্যোগে মেয়ে Miranda সহ শহরের এই অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে এবং প্রাণে বাঁচতে Croatia র পথে যাত্রা করে এবং Hamja তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় সেও কিছুদিনের মধ্যে তাদের দুইজনের কাছে চলে আসবে।Gospoda দেশ ত্যাগের পূর্বে স্বামীর জন্য কয়েকদিনের খাদ্য সামগ্রী, মোমবাতি প্রভৃতি গুছিয়ে রেখে যায়। সেই সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার পর Hamja দেখে তার বাড়ির কিছু খাওয়ার উন্মুক্ত অবস্থায় রয়েছে... অর্থাৎ বাড়িতে কারও অনুপ্রবেশ ঘটেছে... ঘরগুলো খুঁজে দেখলে সে অনাথ দুই ভাই Adis এবং Kerim কে পায়... তারা বলে যে তারা বাড়িটিতে আশ্রয় নিয়েছিল সেখানে কেউ নাই এবং বাড়ি ছেড়ে একেবারে চলে গেছে মনে করে... Hamja তাদের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে--তারা কোথায় থেকে এসেছে, তাদের আত্মীয় কেউ বেঁচে আছে কিনা, কোথায় যাবে এরপর তারা... Adis জানায় তাদের বাবা মা নেই, একমাত্র আত্মীয় বলতে বেঁচে আছে একমাত্র aunt Aicha যে এই Sarajevo র কাছাকাছি জায়গা Bistrik এ থাকে বলে জানে তারা... এই কারণে তারা Sarajevo তে চলে আসে। Adis এর কাছে এও শুনে Hamja, তার ভাই Kerim কানে কিছুটা শুনতে পেলেও কথা বলতে পারে না। Hamja সেই বিপদসঙ্কুল পরিবেশে ছেলে দুইটিকে তার বাড়িতে আশ্রয় দেয় এবং বলে সে aunt Aicha কে খুঁজে পেতে তাদের সাহায্য করবে। পরের দিন তারা Bistrik এর পথে রওয়ানা হয়, সেখানে ভগ্নাবশেষ বাড়িগুলোর মধ্যে তারা Aicha র বাসা খুঁজে পায় এবং জানতে পারে... কিছুদিন আগে একটা shell এসে তার বাসায় আঘাত করলে সে আহত হয় এবং তার সন্ধান একমাত্র হাসপাতাল কতৃপক্ষ বলতে পারবে... এরপর তারা তিনজন হাসপাতালে যায় এবং সেখানে তারা জানতে পারে Aicha সেখানে কিছুদিন আগে ভর্তি ছিল কিন্তু অবস্থার অনুন্নতির জন্য তাকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে পাঠানো হয়েছে উন্নত চিকিৎসার জন্য। অনাথ দুই ছেলে Adis আর Kerim এর অস্থায়ী অভিভাবক হয়ে পড়ে Hamja. Hamja অপরদিকে চেষ্টা করতে থাকে দেশের এরকম সংকটময় পরিস্থিতিতে ছেলে দুইটিকে জার্মানিতে তাদের প্রকৃত অভিভাবকের কাছে পাঠানো যায় কিনা। একদিকে বসনিয়ার ভয়াবহতম পরিবেশ, অপরদিকে নিস্পাপ, অনাথ ছেলে দুইটির জীবনের নিরাপত্তা? কি করে Hamja? তাদের জীবনে কি পরিণতি নেমে আসে? প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্ত মৃত্যুর সাথে জীবনের লড়াই করে তারা কি ভাল কোন জীবনের, সংঘাতহীন কোন পরিবেশের সম্মুখীন হতে পারে? সিনেমাটা যখন দেখা শুরু করলাম... আর দশটা যুদ্ধের সিনেমার সাথে কোন পার্থক্য ছিল না... সেই হাহাকার, সেই নির্বিচারে মানুষ হত্যা, সেই নিজের দেশে উদ্বাস্তু মার্কা জীবন সব কিছু একই...কিন্তু ভিন্ন, ঐ যে বিষয় নিয়ে শুরু করেছিলাম প্রথমে... বিপদের মাঝে মনুষ্যত্ব!!! ব্যাপারটা অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মে এরকম হতে পারত “এই খারাপ সময়ে আমিই বাঁচি না, অন্যদের বাঁচাবো কি”... কিন্তু পক্ষান্তরে হয়ে গেছে “যায় হোক তাই হোক, আমি যদি একবেলা বাঁচি আরও দুইজনকে সঙ্গী করে বাঁচতে চাই, হোক না আমার অবস্থা খারাপ ”!!! কোথাও যেন যুদ্ধের impact টা হেরে গেছে... Hamja, Adis আর Kerim এর কাছে। মুভিটা অনেক সাধারণ... দেখতে দেখতে ইরানের সিনেমার মত লাগছিল। ইরানের সিনেমা বলছি কেন... ইরানের সিনেমা আমি যে কয়টা দেখেছি কোন চাকচিক্য দেখিনি, কোন আলগা টাকার গরম দেখিনি, কোন ফাজলামো বিষয়ও পায়নি... তারা কঠিন বাস্তবকে, বা মানুষের জীবনকে... নিখুঁত, কঠোর, এবং সাবলীল গল্পের মাধ্যমে উপস্থাপন করে... এবং মন ছুঁয়ে যাওয়ার technique তারা খুব ভালভাবে জানে। সেরকম এই বসনিয়ার সিনেমাটা... চারিদিকে একটাও অক্ষত বাড়ি দেখা যায় কিনা সিনেমাতে সন্দেহ আছে এবং intact কোন গাড়ি নেই...গাড়িগুলো দেখে ঋত্বিক ঘটকের অযান্ত্রিক এর piece মনে হলেও মনে হতে পারে...... চারিদিক ঝাঁঝরা...গুলি, বোমা আর বাতাসে লাশের গন্ধের সেই বর্ণনা...কিন্তু কি নিখুঁত এর প্রেক্ষাপট...এত কিছুর পড়েও ৩ টা মানুষকে ঘিরে যে সিনেমাটা পরিচালক মহাশয় বানিয়েছে এক বাক্যে তা অবর্ণনীয় ...... সবশেষে মন ভারী হয়ে যাবেই যাবে। মনুষ্যত্ব বড় না জীবনের নির্মম দশা... তার উত্তর কিছুটা হলেও আছে সিনেমাটিতে। সাথে রয়েছে বসনিয়ান কবি Abdulah Sidran এর কিছু মন ছুঁয়ে যাওয়া কবিতা। নিখুঁত বৃত্ত সেই সূত্র মেনে চলেছে... one particular center, an extramundane radius and content focus…Three elements make “The Perfect Circle”…which is an extraordinary one. :((




The Perfect Circle 1997 (Original Title: Savrseni krug )

IMDB rating: 8.2/10
Genre: Drama/War
Cast: Mustafa Nadarevic, Almedin Leleta, Almir Podgorica
Country of Origin: Bosnia and Herzegovina
You tube link: https://www.youtube.com/watch?v=lJ3UjsLu0sU



আশা করি পোস্টটি ভাল লাগবে :)
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×