somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রিকি
ছোটো প্রাণ,ছোটো ব্যথা >ছোটো ছোটো দুঃখকথা >নিতান্তই সহজ সরল >সহস্র বিস্মৃতিরাশি প্রত্যহ যেতেছে ভাসি>তারি দু-চারিটি অশ্রুজল>নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা> নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ> অন্তরে অতৃপ্তি রবে সাঙ্গ করি মনে হবে>শেষ হয়ে হইল না শেষ

গল্প হলেও সত্যি---জিওয়েট সিটি ভ্যাম্পায়ার B:-/

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



“There's always room for a story that can transport people to another place.”

গল্প হলেও সত্যি...নামটা কেমন যেন শোনালো না! হ্যাঁ...গল্পের আধার কিন্তু বাস্তব ঘটনায় হয়ে থাকে। বাস্তবতা থেকে খোরাক নিয়ে কল্পনার সুতোতে বুনিয়ে গল্পের পরিসর তৈরি হয়। পৃথিবীতে এমন কিছু ঘটনা ছিল, আছে, ঘটেছে, ঘটছে...যা রহস্যমন্ডিত এবং কিছুটা ব্যাখ্যাতীতও। আর এরকমই কিছু রহস্যমন্ডিত ঘটনা নিয়ে এই নতুন সিরিজ তৈরি করার চিন্তা করেছি। কাউন্ট ড্রাকুলাকে মনে আছে?? ব্রাম স্টোকারের অমর সৃষ্টি এই ড্রাকুলা তিনি প্রিন্সের ভ্লাদের অনুকরণে লিখেছিলেন। এখান থেকেই আরও এক শব্দ তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল... ‘ভ্যাম্পায়ার’। যদি বলি আজকে এরকম একটা ভ্যাম্পায়ারের জায়গার গল্প শোনাব?? যদি বলি ড্রাকুলা এবং ভ্যান হেলসিং এর লোককাহিনী বাস্তবে রয়েছে তো? আজকের ব্লগ এমনই এক কথিত ভ্যাম্পায়ারের জায়গার গল্প নিয়ে...যা কিছুটা রহস্যমন্ডিত এবং উদ্ভটও।




প্রত্যেক জায়গারই নিজস্ব কিছু রহস্য আছে, কিন্তু কিছু জায়গার গুপ্ত রহস্য অন্যান্য জায়গার উদ্ভট ভাবকে হার মানায়। কানেকটিকাটের জিওয়েট সিটি ঠিক এমন...এখানে ৩৫০০ লোক এবং কিছু ভ্যাম্পায়ারের বাস! জিওয়েট সিটির ভ্যাম্পায়ারদের গল্পের সূচনা হয় সেই ১৮০০ সালের দিকে, যখন স্থানীয় একটি পরিবারের সব সদস্য টিউবারকুলোসিসে আক্রান্ত হয়। টিউবারকুলোসিসকে তৎকালীন আমলে ক্ষয়রোগ বলে চিহ্নিত করা হত! হেনরি রে এবং তার তিন ছেলে আস্তে আস্তে এই ক্ষয়রোগেই নিঃশেষ হয়ে যেতে থাকে, প্রত্যেকদিন আগের দিনের তুলনায় আরও বেশি দুর্বল, যেন কেউ একজন রাতে তাদের বাড়িতে এসে একটু একটু করে তাদের প্রাণ শুষে নিয়ে যাচ্ছিলো। ১৮৪৫ সালে লেমুয়েল রে যখন ২৪ বছর বয়সে মারা যায় ভয়ের সূচনাটা ঠিক তখন থেকেই হয়। তার কিছু পরেই, লেমুয়েলের বাবা হেনরি বি রে ১৮৫১ সালে মারা যায়। দুই বছর পরে লেমুয়েলের ২৬ বছর বয়সী ভাই এলিশা রে ১৮৫৩ সালে এবং এরপর এক বছরের মাথায় হেনরি রে মারা যায়। ১৮৫৩ সালের মে মাসে, পরিবারটিতে একটি মিটিং ডাকা হয়। রে পরিবার বিশ্বাস করে তাদের অঞ্চলে অশুভ কোন শক্তি এসে ভর করেছে যারা তাদের পরিবার পরিজনকে অপবিত্র কিছু প্রাণিতে পরিণত করছে এবং যারাও মৃত্যুর পর তাদের কবর থেকে উঠে এসে ঐ একই কাজ করছে। তাদের ভাই যাতে এভাবে ফিরে না আসে এই ভয়ে রে পরিবারের বাকি সদস্য কবরস্থানে গিয়ে তাদের দুই সদস্য লেমুয়েল এবং এলিশার মৃতদেহ তুলে এনে পুড়িয়ে ফেলেছিলো। বিশ্বাস করা হয় যে হেনরি এই কাজ থেকে বেঁচে গিয়েছিলো কারণ তার মৃত্যুর তারিখ সঠিকভাবে নিরূপণ করা যায়নি। এ বাদেও আরও একটি তত্ত্বে তারা তাদের মৃত পরিবার সদস্যদের ‘সত্যিকারের মৃত্যু’ নিশ্চিত করত— মৃত সদস্যের হৃদপিন্ড কেটে এনে পুড়িয়ে ফেলত তারা। তারা বিশ্বাস করত এভাবে তাদের পরিবারের বাকি সদস্য এবং অন্যান্যরা অশুভ শক্তির হাত থেকে মুক্তি পাবে! কয়েক বছর পরে, এলাকা থেকে সেই রহস্যজনক অসুখ বিদায় নিয়েছিলো এবং অঞ্চলটি তথাকথিত অশুভ শক্তির ভয় থেকে মুক্ত হয়েছিলো। কবর থেকে তুলে আনার এই ঘটনার দর্শক ছিলো অসংখ্য মানুষ। সেই সাথে এই খবর তাদের স্থানীয় সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয়েছিলো। জিওয়েট সিটি ভ্যাম্পায়ারের এই ঘটনা লোকমুখে প্রচলিত গল্প বৈ আর কিছু ছিল না। কিন্তু ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে এই ঘটনা আবারও নতুনভাবে লোকচক্ষুতে আসে যখন স্থানীয় কিছু বাচ্চা লোমহর্ষক কিছুর দেখা পায়। হোপভিলের দুটো ছেলে খেলা করার সময় খেয়াল করে তারা গোল ধরনের অদ্ভুত এক জিনিসকে পা দিয়ে বাড়ি দিয়েছে। অদ্ভুত সেই জিনিসগুলো পরবর্তীতে মাথার খুলি হিসেবে আবিষ্কৃত হয়। তারা তাদের বাবা-মাকে বিষয়টি অবগত করলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। কয়েকদিনের মধ্যেই সেখানে কিছু নৃতত্ত্ববিদ এসে জায়গাটিতে এক কবরস্থান আবিষ্কার করে যেখানে সর্বমোট ২৯ টি কবর পাওয়া গিয়েছিল। অদ্ভুতভাবে রে পরিবার ছাড়াও আরও একটি পরিবারের ‘ভ্যাম্পায়ার সন্দেহের’ নিদর্শন পাওয়া গিয়েছিল সেখানে। ওয়াল্টন পরিবারের কবরস্থান ছিল এটা যারা রে পরিবারের সময়কাল থেকে পঞ্চাশ বছর পূর্বে তাদের বাড়ি থেকে মাত্র দুই মাইল দূরেই থাকত। এর মধ্যে একটি কবর ভীষণ চমকপ্রদ ছিল। জেবি-৫৫ চিহ্নিত একটি কফিনে একটি লোকের হাড় পাওয়া গিয়েছিল যার দেহকে বিভক্ত করা হয়েছিলো বলে ধারণা করে তারা। তার খুলিকে কশেরুকার অংশ থেকে সরিয়ে বুকের গহ্বরের উপর স্থাপন করে ফিমার হাড়গুলোকে তার নিচেই ‘X’ আকৃতিতে ক্রস করে রাখা হয়েছিল। এই লোকটিও ক্ষয়রোগে মারা গিয়েছিল বলে নির্ণয় করে তারা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ওয়াল্টন পরিবারের আরও একজনের দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল যারও ক্ষয়রোগ হয়েছিল বলে বের করা হয়। এটাতে স্থানীয় সকল লেজেন্ডের মার্ক ছিল, দেহটি একজন ভ্যাম্পায়ারের সে প্রমাণ ছিল। স্থানীয় গবেষকরা বিশ্বাস করেছিল যে ১৭০০ সালের শেষ দিকে লোকটিকে দাফন করার পাঁচ বছর পরে আবারও তোলা হয়েছিল এবং তার হাড়গুলোকে ওভাবে সাজানো হয়েছিল যাতে সে আর নিজের কবরে অশুভ শক্তির আধার হিসেবে ফিরতে না পারে। কানেকটিকাট ভ্যাম্পায়ারের স্বপক্ষে এটাই প্রথম প্রমাণ ছিল বলে মনে করা হয়। রে পরিবারের ভাগ্যে যা ঘটেছিল, দেখা যায় ওয়াল্টন পরিবারের সাথেও একই ঘটনা কয়েক দশক আগে ঘটেছিল। ওয়াল্টনরা নিজেদেরকে রক্ষা করার জন্য যে ‘মৃতদের মেরে ফেলার’ প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছিল, রে পরিবার সেটার উত্তরসূরি ছিল শুধু। এই দুই পরিবারের আসল ঘটনা কী ছিল তা জানা না গেলেও, জিওয়েট সিটি ভ্যাম্পায়ারের গল্পের নামডাক কিন্তু আছে!!! ;) ;)

জিওয়েট সিটি সিমিট্রি:



হেনরি বি রে-র সমাধি:



এলিশার সমাধি:



রে পরিবারের কবর:



চলুন ভ্যাম্পায়ারের কবর দেখা আসা যাক:

ওয়াল্টন পরিবারের কবর

রে পরিবারের কবর

ভ্যাম্পায়ার অফ কানেকটিকাট

**** এই লেখা সম্পূর্ণ রূপে আমার… পূর্বের কোন লেখার সাথে মিলে গেলে তা একান্তই co-incidence….no resemblance. আশা করি পোস্টটি ভালো লাগবে !!!! =p~ =p~=p~=p~

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:২০
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×