somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তর্ক করতে আসিনি ,প্রিয় প্রকাশক ; জানতে এসেছি ..

০২ রা মার্চ, ২০১১ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার এ শহরে ফাগুন এসেছে বেশ জমজমাট আয়োজনে। এখানে এই মেলাতো ওখানে আর এক মেলা,যেন মেলার ঢাকা। আমার কাছে সব চেয়ে আকর্ষন ছিল বই মেলার ;প্রতি বছর একে ঘিরে থাকে পরিকল্পনা। সব চেয়ে আনন্দের বিষয় ছিল গত বছর ভাষাচিত্র প্রকাশনীর বদৌলতে আমার কাচা -পাকা লেখাগুলোর কবিতার বই হিসেবে আত্মপ্রকাশ ,তার অনেকটাই মাহবুব মোর্শেদ এবং সালাহউদ্দিন শুভ্রর সহায়তায়। এক বছর পর অন্তত এ কথা হলফ করে বলতে পারি এর অনেক কবিতাই ছাপার অযোগ্য ছিল।তারপরও প্রকাশক কেন যে তা বই আকারে আনলেন ভাবতে অবাক লাগে। হয়তো নবাগতা তরুনী লেখিকাকে নিরাশ করতে চাননি অথবা এও হতে পারে ত্রিশ হাজার টাকার বিনিময়ে অপরিপক্ক লেখার জায়গা দেওয়াও সম্ভব। বই ভরা বানান ভুলের কথাতো বাদই দিলাম।যাই হোক ,ফাগুন ঝরা রোদ্দুরের প্রচ্ছদ দেখেই অনেকে মানি ব্যাগ বের করেছেন। আর ব্লগে রোদেলা নীলার পরিচয়ে যেটুকুন বিক্রী হয়েছে ততোটুকুনই।এর বেশী চাইবার কোন উপায় আমার ছিল না। সৌজন্য কপি নিয়েছিলাম প্রায় পঞ্চাশটি ,বাকীগুলোর খবর আমার জানা নেই। নতুন লেখিকা হিসেবে লাভের হিসেব কষতে যাইনি। আমি লিখতে এসেছি, বাণিজ্য করতেতো আসিনি। সমস্যা হচ্ছে -আমাদের মতো নগন্য মানুষদের স্বপ্ন বিলি করতেও পয়সা লাগে।

এক বছর পেরিয়ে গেছে ,কবিতার পাশাপাশি গল্প ও গান লিখেছি । আর পুনরায় স্বপ্ন দেখেছি -গল্পের বই বের করার।এবার অভয় দিলেন খন্দকার সোহেল -"আপনি একটা উপন্যাস লিখেন ,টাকা লাগবে না ;ছাপিয়ে দেব।" আমারতো আনন্দ আর ধরে না -"যে কোন ধরনের লেখা হলেই চলবে ?"প্রকাশকের গর্বিত হাসি -"আমি নতুনদের এভাবেই উৎসাহ দিয়ে থাকি।"কোন দ্বিধা ছিল না মনে ;লিখতে শুরু করলাম ,কিছু অংশ ব্লগেও দিলাম-http://www.somewhereinblog.net/blog/Rodela77/29173442
Click This Link
এখানেই শেষ নয়;মিতার পরিনতি হয়েছিল একটি অন্ধকার প্রকোষ্ঠে। নভেম্বরের মাঝামঝি
কম্পোজ করতে পাঠালাম ভাষাচিত্রে। এরমধ্যে প্রকাশকের সাথে নিয়মিত কথা হচ্ছে ,বাকী
অংশ পাঠালাম ডিসেম্বরের মাঝামাঝি। প্রকাশক নিশ্চিত করলেন কম্পোজ হচ্ছে,দোকানে লোক কম তাই সময় লাগছে। সবাই জানে ফেব্রুয়ারী এলেই সবাই কেমন হুমড়ি খেয়ে পড়ে ,প্রকাশকের এতো কথা শোনার সময় থাকে না।ওদিকে বইমেলা আরম্ভ হয়ে গেল ,একটা সময় ঠিক করে চলে গেলাম আজিজ সুপার মার্কেটে।প্রকাশকের চেহারা কি এতো সহজেই দেখা যায় ! দুই ঘন্টা অপেক্ষায় থাকার পর তার সাথে একটা ছোট্ট দোকানে ঢুকলাম ; দেখলাম একটা ২১/২২ বছরের ছেলে আমার লেখার দ্বিতীয় অংশ কম্পোজ করছে । এবার প্রুফ দেখা শুরু করলাম ,সোহেল ভাই বললেন -"এটা কি লিখছেন আপু ,এতো ছোট উপন্যাসতো হয় না।" আমিতো অবাক -"ওটাতো দুমাস আগেই পাঠিয়ে জিঞ্জেস করেছিলাম কয় ফর্মা হয় দেখতে। শেষ করা লেখা আবার শুরু করি কেমনে !!"উনি বললেন-" আচ্ছা দেখি কি করা যায়।" দুই দিনের মধ্যে প্রুফ দেখে দিলাম ,কথা হলো লেখাটা যেহেতু ছোট সেহেতু পাতার উপরের অংশ ও নিচের অংশ বাদ দিয়ে চার ফর্মায় এনে ১৫ তারিখেই প্রকাশ করা সম্ভব। আমাকে কেবল ইমেইলে প্রচ্ছদ দেখে নিতে বললেন।
এরপর কেবল ইমেইল খুলে বসে থাকি -কোন খবর নেই ,ফোন করি ,এস এম এস করি -ওপাশ থেকে প্রকাশক নীরব । তার অফিসে গিয়ে দেখি তালা ,স্টলে গিয়ে জানলাম -উনি বিরাট ব্যস্ত ,কারো ফোন রিসিভ করেন না।সত্যি অবাক লাগে গত বছর আমাকে এভাবে অপদস্হ হতে হয়নি ,তখন কি তিনি ব্যস্ত ছিলেন না?আমি ১৫ তারিখ একটা চিরকুট লিখলাম-বই প্রকাশ সম্ভব কিনা জানাতে ।(তখনো সময় ছিল অন্য প্রকাশনীতে যোগাযোগ করার।)এর মধ্যে তৌহিন ভাইয়ের সাথে কথা হলো প্রচ্ছদের ব্যাপারে ,মোটামোটি আকাশ থেকে পড়লেন -"কই ,সোহেলতো আমাকে প্রচ্ছদ করতে বলেনি।বুঝলাম -এতোদিন যা হয়েছে পুরোই ভুয়া,আমার বইয়ের কোন ইনারই হয়নি।চাচ্ছিলাম প্রকাশক নিজের মুখে সে কথা বলুক।উনি কেবল আমাকে অফিসে যেতে বললেন ,আমি বললাম আপনি ইমেইলে প্রচ্ছদ পাঠান আমি দেখে নিচ্ছি।সেই ইমেইল আজো আসেনি ,কিজানি আমার টাকার থলেটা আজ বড্ড খালি বলে হয়তো।
এরমধ্যে কালের কন্ঠে খন্দকার সোহেলের সাক্ষাৎকার ছেপেছে -"মুক্তমনের লেখা চাই ,আমরা নতুনদের সুযোগ দেব।"এমন আরো অনেক কথা।
সত্যি আধুনিকতার নামে আমরা বোধগুলোকে কোথায় হারিয়ে ফেলছি ।বয়সের ব্যবধানের যে সৌজন্যতা তাও আমরা ব্যবহার করিনা। দেশীয় নাচ গানের জায়গা কিনে নিয়েছে ভারতের উদ্দাম নৃত্য।প্রতিদিন হাজার হাজার বইয়ে ছেয়ে যায় মেলা ,তার কয়টা মান সম্মত লেখা কে বা বলতে পারে ! বইমেলার গেইটে নাকের ডগায় দাঁড়িয়ে বিক্রী হচ্ছে -জে এম বির বই।
আমরা বিরাট সহনশীল জাতি ,তাই অভদ্র সব উগ্র আচরনও হজম করে নেই।তবু মানুষতো ;মনে প্রশ্ন জাগে ঠিক কি কারনে বইটা প্রকাশ সম্ভব হয়নি লেখিকা হিসেবে এটুকু জানবার অধিকার নিশ্চই আমার আছে।এওতো হতে পারে লেখাটা একেবারেই মান সম্মত ছিল না ,পরবর্তী লেখার জন্যে ওটা জানার প্রয়োজনতো আমার আছে !

১৭টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×