somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সত্যি জনতা-তোদের ভাগ্যে কেবল বিষের ফোঁড়া ...

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


চিটিং সার্ভিস(সিটিং সার্ভিস )নিয়ে বেশ কয়দিন ধরেই চরম লেখালেখি হচ্ছে ।এতে বাস মালিকের বা সরকারের কিছু যাচ্ছে আসছে কিনা তা ঠিক বোঝা যাচ্ছে না।তাই কন্ট্যাক্টার যখন হাত বাড়িয়ে দিল ভাড়ার জন্য তখন গুনে গুনে ত্রিশ টাকাই দিয়ে দিলাম।এতে আমি আমতলায় নামি নাকি জামতলায় -এটা কোন বিষয় না।এটা চিটিং সার্ভিস ,এখানে হাফ ভাড়া হয়না।যারা সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে তারাও পুরো ভাড়া দিয়েই যাচ্ছে।যেতেতো আমাদের হবেই।কিন্তু পাশে বসা অত্যন্ত সুঠাম দেহের অধিকারী তরুন যখন বলে দিল-আমি পুলিশের লোক ,তখন অনেকটা লেজ গুটিয়েই কন্ট্যাক্টর পেছনের দিকে হাঁটা দিল।আমার চোখ ততোক্ষনে তাল গাছ ছাড়িয়ে আকাশে উঠে গেছে,ভয়ংকর একটা ঝাঁকি খেলাম যেন-ভাই,আপনে কোন থানায় আছেন?
-তেজগাঁও থানার কন্সট্যাবল।
-তাহলে মিরপুরের বাসে ভাড়া দিচ্ছেন না কেন?
-আমাদের জন্যে পুরো শহরেই বাস ফ্রী,এমনকি প্লেনো ফ্রী।
তার কন্ঠে গৌরবের সুর,আমার কন্ঠে কেবলি বিস্বয়।আমি আবার জানতে চাইলাম-আপনি আপনার বৌ বাচ্চা নিয়ে বাসে উঠলে ওদের ভাড়াও কি ফ্রী?
-না,ওদেরটা আমি দিয়ে দেব।
-কি বলেন ,আমি রোজ অফিস যাবার পথে দেখি আপনারা বাস আটকিয়ে ড্রাইভারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন,একদিনতো আমার রিক্সা থামিয়ে একজন কন্সট্যাবল পাঁচ টাকা জোর করে নিল।আর এমন ফ্রী যাবার সুযোগ আপনাদের আছে তাও আপনারা নেবেন না,এটা বিশ্বাস করি কিভাবে?
-আসলে অসাধু লোক তো আছেই।যারা অসাধু তারা এমন করে।
-কে অসাধু তা সরকার বুঝবে কিভাবে?
-ইনভেস্টিগেশন করবে।
-কে করবে?আপনাদের উপরে যারা আছে তারাইতো করবে,তাহলে তাদের আবার ইনভেস্টিগেশন কে করবে?
ওপাশে কিছুক্ষন নীরবতা।আবার আগ্রহের সাথে জানান দিল ভাড়ি কন্ঠ-পুলিশরাইতো জনগনের জন্যে জীবন দেয়,সারারাত জেগে আপনাদের পাহাড়া দেয়।তাদের সুযোগ সুবিধা থাকবেনা?
আকাশ থেকে আমি লাফ দিয়ে পড়লাম।আমার জানা মতে একজন পুলিশ পাইনি যে কেবল মাত্র মানুষ বাঁচাতে গিয়ে জীবন দিয়েছে।বরং বলা যায় দেশে কোন জটিল সমস্যা দেখা দিলে সেনাবাহিনী নামানো হয়।রানা প্লাজার ঘটনা এটার একটা জ্বলজ্বলে প্রমান।আমি তাকে সরাসরি আক্রমন করলাম এবার-ফায়ার সার্ভিসে যারা কাজ করে তারা মানুষকে বাঁচাতে নিজের জীবন বিপন্ন করে,যারা সারা রাত বাঁশি ফুঁ দিয়ে আমাদের পাহাড়া দেয় তারা কি ফ্রী সার্ভিস পায়?
এর কোন সঠিক উত্তর তার জানা আছে কিনা বোঝা গেল না।সে এবার পাল্টা প্রশ্ন করলো-আপনি কি করেন?
আমি মনে মনে হাসলাম ।যদি বলি আমি লেখক,তাহলে সে ধরেই নেবে আমি তসলিমা নাসরিনের উত্তরসূরি।বাংলাদেশ প্রতিদিন যে হারে তসলিমার স্ট্যাটাস ছাপাচ্ছে তাতে আমাদের মতোন লেখকদের আর বই বিক্রী করে খেতে হবে না।এ দেশে যে বড় বড় নারী লেখক আছেন তাদের নাম সাধারন মানুষদের মুখে কোন কালেও শুনিনি ,আর আমিতো কোন ছাড়।
আমি হেসে উত্তর দিলাম-আমি কছু করিনা,খালি পথে পথে ঘুরি।বাংলাদেশে জন্ম নিয়েও নিজের পরিচয়পত্র নিজের টাকায় করি আর সরকারকে ঠিক মতোন ট্যাক্স দেই।
সে খুব অবাক হয়ে আমার মোবাইল নম্বর চাইলো।আমি তাকে মজার একটা গল্প বললাম-কিছুদিন আগে আমার ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই হয়ে গিয়েছিল।সেখানে আমার মোবাইল আর পাসপোর্ট ছিল। ছিনতাইকারী আমার ফোন থেকে আমার মাকে ফোন দিয়ে বলে দিল-আপনি টেনশন করবেন না,আপনার টাকা আমি নেব কিন্তু পাসপোর্ট পেয়ে যাবেন।
আমি একটুও দেরী করিনি,সাথে সাথেই পুলিশকে ইনফর্ম করেছি।দু’মিনিটের মাথায় বাইক নিয়ে তাড়া করেও ছিন্তাইকারীর এক্স করলা ধরতে পারেনি পুলিশ যদিও রাস্তায় অনেক ট্র্যাফিক জ্যাম ছিল।করেছি।পরদিন আগারগাঁও র‍্যাব অফিসে গিয়ে বিশাল দরখাস্থ দিয়ে এসেছি।সেখানে আমার ফোন নম্ভর,ছিনতাইকারী কয়টায় মার নম্বরে ফোন দিয়েছিল তার বিস্তারিত আছে।গ্রামীন ফোন থেকে এই ছ্যাচকা চোরের ঠিকানা বের করা খুব কঠিন বলে আমার মনে হয় না।কিন্তু মশা মাড়তে কেন কামান লাগাবে বলুন,যেখানে আস্ত মানুষই গায়েব হয়ে যায়।মজার বিষয় হচ্ছে সেই ছিনতাইকারী আমার পাসপোর্ট ডাকবক্সে ফেলেছিল আর ডাকঘরের লোক অফিস বয়ে সেটা দিয়ে যায়।তাহলেই বোঝেন মানুষের জন্য জীবন দেওয়া কতো ধরনের হয়।যে আমাকে পাসপোর্ট দিয়ে গেল সে কিন্তু তার জীবনের মায়া করেনি এক বিন্দুও।
কন্সটেবলের মাথায় কি ঢুকছে কে জানে ।সে অনবরত আমার মোবাইল নম্বর পেতে চাইছে।আমার আইডি চাইছে, লেখকের আবার আই ডি কি।ভাগ্য ভালো আমার ব্যাগে আমার গল্পগুচ্ছ ”রোদ্দুরের গল্প”ছিল।আমি ওটাই তার হাতে ধরিয়ে দিয়ে রাস্তায় নেমে গেলাম।যাবার সময় কেবল বললাম-ভাই,এটাই আমার আই ডি।আমি মানুষের জন্যে জীবন দিতে পারি না।কেবল মানুষের হয়ে লিখতে পারি।
তার চোখে জগতের বিস্ব্য়-আপনি সাহিত্যিক?
আমি আর কথা বাড়ালাম না,সোজা বাড়ির পথ ধরলাম।আর একটু রাত হলেই এই শহরের চেনা গলি হয়ে যাবে এক ভয়াবহ অরন্য।আমাদের মতোন মানুষদেরতো আর কন্সট্যাবলদের মতোন একটা করে দেহরক্ষী নেই।কে আমাদের বাঁচাতে আসবে?কেউ না...।।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৩৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×