somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম বিজ্ঞান ও মানবতা পর্ব ২

২০ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৮:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

। প্রথম পার্ট ধর্ম বিজ্ঞান ও মানবতা পর্ব ১ এর পর ২ পর্ব শুরু করলাম । শুরুতে বলে রাখি কার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়া আমার কোন উদ্দেশ্য নয় । নিজের মানবিক দিক যুক্তি তর্ক গুলো শুধু মাত্র সবার মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করছি । বিজ্ঞান ও ধর্মের সাফলতা ও ব্যার্থতা নিয়ে এই অধ্যায়ে আলোচনা করবো ।শুরুতে আসি পৃথিবী সৃষ্টির ইতিহাস নিয়ে । পৃথিবী কি ভাবে সৃষ্টি হইছে তার ব্যাখ্যা বিভিন্ন ধর্মে বিভিন্ন ভাবে দেওয়া হইছে । কিন্তু হিন্দুদের বেদ ও বিজ্ঞান একই কথা বলছে । বেদে বলা হইছে প্রথমে এই বিশ্ব একটা গোলাকার বস্তুতে ছিল যা পরবর্তীতে বিস্ফোরিত হয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাগে বিভক্ত হয়ে এক একটি গ্রহ ও উপগ্রহ সৃষ্টি হইছে বিজ্ঞান ও একই কথা বলেছে তার বিগ ব্যাং তত্তের সাহায্যে । কিন্তু পরবর্তীতে পুরাণে আমরা দেখেছি সম্পূর্ণ উল্টো ব্যাখ্যা । এখানে বলা হইছে পৃথিবীকে একটা শূকর দাত দিয়ে উচু করে রেখেছে এবং শূকরটা দাড়িয়ে আছে একটা কচ্ছপের উপর । যা রীতিমত হাস্যকর । যাই হোক এই বিষয়টা যদি আমরা বাদ দিয়ে আসি সৃষ্টির রহস্যে তবে ও ধর্ম ও বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার ব্যাপক পার্থক্য পাওয়া যায় । ধর্মের ব্যাখ্যা আগের পর্বে দেওয়া হইছে । তাই এখন শুধু বিজ্ঞান নিয়ে বলবো । বিজ্ঞানে বলা হইছে পৃথিবীতে সর্ব প্রথম দুটি প্রানের অস্তিত্ব পাওয়া যায় একটা অ্যামবিা ও অন্য একটা ক্লরেলা । অ্যামবিা থেকে সৃষ্টি হইছে প্রাণী আর ক্লরেলা থেকে গাছ পালার সৃষ্টি হইছে । এবং আর একটি তত্ত্ব দেওয়া হইছে বিবর্তনবাদের । এখানে বলা হইছে মানুষ বিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হইছে । মানুষের আগের প্রজাতি ছিল বানর । এইটা যদি মেনেনি তবে অবশ্যই এটাও মানতে হবে মানুষের এই প্রজন্ম শেষ নয় মানুষ বিবর্তন হয়ে অবশ্যই নতুন কোন পরবর্তী প্রাণী আসবে । কিন্তু এর ব্যাখ্যাও বিজ্ঞান দেইনি । কিন্তু তারপরও বিজ্ঞানের অবদানকে আমরা অস্বীকার করতে পারিনা । মানুষের জীবনকে সুন্দর করে তোলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন বিজ্ঞান তা নিরালস ভাবে করে যাচ্ছে ।


হিন্দু ধর্মের সবচেয়ে বড় অন্ধবিশ্বাস এনেছে পুরাণ । হিন্দুদের প্রধান ধর্ম গ্রন্ত বেদ এ বলা হইছে ঈশ্বর নিরাকার । এবং মানুষ যদি ঈশ্বরকে ভক্তি করে এবং তার উপলব্ধি অনুভাব করে তবে এই সব ধর্মীয় নীতি পূজা অর্চনা আযান এর কোন দরকার হয়না । মানুষ এ গুলো ছাড়া ও আস্তিক হতে পারে তার বড় প্রমাণ জৈন ধর্ম । এখানে তারা এতো পূজা অর্চনার ধার ধারে না তারা শুধু ঈশ্বরকেই বিশ্বাস করে । আমি যদি আমার বাবা মার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকি তাদের দেওয়া সমস্ত উপদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করি তবে তাদের পা ধুয়ে দিয়ে বা তেল দিয়ে আশীর্বাদ বা দোয়া নেওয়া লাগে না তারা এমনি করেন । তাই সারাদিন ঈশ্বর ঈশ্বর করলাম আর পাপ করে বেড়ালাম এতে কোন লাভ হয় না । হিন্দু ধর্মে মূর্তি পুজার প্রচালন এনেছে পুরাণ । এখানে অনেক কুসঙ্কার আছে । হিন্দুদের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা জাতিবেদ প্রথা । আগে মানুষের কর্ম অনুযায়ী ভাগ হতো তা কবে যে জন্ম সুত্রে হয়ে গেছে কেউ জানে না । এক বর্ণের লোকদের সাথে অন্য বর্ণের লোকদের বিয়ে হবে না তাই সে যতই যোগ্য হোক । অনেক বাড়ি আছে যেখানে নিম্ন বর্ণের কেউ গেলে তাদের বাড়ি পানি দিয়ে ধোয়া হয় । এইটা কেন এতে আমরা নিজেদের কেই ছোট করছি । মুসলমানদের ভিতরে শিয়া সুন্নি নিয়ে তো রীতিমতো যুদ্ধ লেগে আছে । একদল তো শিয়াদের মুসলিমই মনে করে না । কিভাবে কবে কখন এই ভেদাভেদ শুরু হল তা কেবল আল্লাহই ভালো জানেন । এই ভেদাভেদ দিয়ে আমরা মানব সভ্যতাকে ক্ষুদ্র থেকে আরও ক্ষুদ্র করে তুলছি । আর সাথে ছোট করছি আমাদের বিবেক বুদ্ধি মনুষ্যত্বকে । হিন্দু ধর্মে অনেক কুসঙ্কার থাকলেও এদের ভিতর মানবতা বোধ ভালবাসা অনেক । হিন্দু ধর্মের মূল কথা জীব সেবা ঈশ্বর সেবা । জীবে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিসে ঈশ্বর । কোথাও বলা হইনি হিন্দুতে প্রেম করে যেই জন সেই জন সেবিছে ঈশ্বর । বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি ও অনেক তা এই রকম । ওরা বলে জীব হত্যা মহাপাপ আর পূজা শেষে এই বলে প্রার্থনা করে যেন পৃথিবীর সকল প্রাণী সুখী হোক । কোথাও বলেনা শুধু বৌদ্ধরা সুখী হোক । এই দিক দিয়ে কোরানের শুরু একটা সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়ে যে মুসলিম মুসলিম ভাই ভাই কেন এইটা না বলে যদি বলা হতো মানুষ মানুষ ভাই ভাই তবে পৃথিবীটা কি আরও সুন্দর করা সম্ভাব হতনা ।হিন্দু ধর্মকে মানুষ ইচ্ছা মত বিকৃতি করছে যা বেদ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা । নিজেদের গুরুকে তারা করে দেয় ভগবান যার জন্য দেব দেবতার কোন অভাব নেই । এক দল মনে করে হরিচাদ ঠাকুর ভগবান । সৎ সঙ্গের লোকেরা মনে করে অনুকুল ঠাকুর আসল ভগবান ।অনুকুল ঠাকুর এদের মানুষ জীবন দশায় দেখেছে এরা কিভাবে ভগবান হয় ? ইসলামেও আছে এখনো বেঁচে ফার্মগেট এর দেওয়ানবাগী যে নিজেকে নবী মনে করে। আর ফাতেমাকে তার স্ত্রী । এদের জন্য ধর্মের বদনাম হচ্ছে। ইসলামকে সবচেয়ে দুর্বল করছে জঙ্গি আই এস । যতই আমরা অস্বীকার করি যে ইসলামের সাথে এদের কোন সম্পর্ক নেই কিন্তু একথা তো সত্য এরা ইসলামের নাম দিয়েই মানুষ হত্যা করছে । আমরা যতই অস্বীকার করি যতই নিজেদের ধর্মের গুন গান করি কোন লাভ নেই যতক্ষণ ভিন্ন ধর্মের লোক আমাদের ভালো না বলবে । আজ ইসলাম এর লোক গুলকে অন্য ধর্মের লোকেরা ভিন্ন চোখে দেখছে । আমিরিকা ইউরোপসহ উন্নত দেশ গুলো ভিসা দিতে চায় না এর জন্য কারা দায়ী ???
এখনো আমাদের দেশের অনেক লোক এই জঙ্গি আই এসদের সমার্থন করে । তাদের উৎসাহিত করে । এখনো আমাদের দেশের অর্ধেক লোক পাকিস্থানকে সমার্থন করে । কেন মুসলিম দেশ বলে । অথচ যারা তারা যে লক্ষ লক্ষ মানুষ মেরেছে ধর্ষণ করেছে । এই পাপের শাস্তি কে নিবে । পাকিদের নিয়ে কিছু আর বলতে চাই না আগেই লিখেছি বাংলাদেশের পাকি প্রেমীরা ।।


এই যুগে এসে মানুষ যখন চাঁদে লোক পাঠাচ্ছে মঙ্গলে বাসস্থান খুজতেছে আর আমরা পরে আছি ধর্মীয় ভেদাভেদ নিয়ে । মুক্ত পবন কি সব ধর্মের লোকদের বাতাস দিচ্ছে না ? না চন্দ্র সূর্য ধর্ম বর্ন ভেদে আলাদা ভাবে আলো দিচ্ছে । মানব জীবন খুবই ছোট । এই ছোট জীবনে আমরা ধর্মীয় হানাহানি করে আনন্দ তাকে মাটি করে চাইনা । এমন একটা পৃথিবী চাই যেখানে হিন্দু মুসলিম থাকবে একই ছাদের নিচে । ধর্মীয় ভেদাভেদ থাকবেনা থাকবেনা জাতিভেদ । একে অন্যের মধ্যে আবদ্ধ হবে বিবাহ বন্ধনে । বিলুপ্ত হবে সমস্ত সাম্প্রদায়িকতা। পরবর্তী পর্বে আবার দেখা হবে ........................।। জয় হোক মনুষ্যতের জয় হোক মানবতার পৃথিবী এগিয়ে যাক সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে ।।




পর্ব ১
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মে, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২৮
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×