শ্লোক : এক
...এবং সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা হিমাদ্রি পর্বতমালার হৃদয়মথিত নির্যাস আর হিম সরবর সমন্বয়ে কতগুলো নহর সৃষ্টি করেন। এই নহর সমূহ প্রবাহিত হয় আর বহন করে পললের অনু। হাজার হাজার বছরের সঞ্চিত পাললিক গড়ে তোলে এক সিক্ত বেলাভূমি। অতপর সৃষ্টিকর্তা তাঁর অঙ্গ হতে এক মায়াবী পরমাত্মা পৃথক করলেন আর তাঁকে দিলেন এই বেলাভূমির দেবাত্মার মর্যাদা। তাঁকে মুক করা হলো, আর করা হলো শ্রেষ্ঠ জীবাত্মার মিলনে উম্মূখ। নাম হলো বঙ।
বঙ, এক অদৃষ্ট দেবতা। তাঁর দুই মাথা, এক মাথার নাম সুদেব অন্যটির নাম অপদেব।...
শ্লোক : দুই
...অতপর, বঙ স্বর্গ থেকে নেমে এলেন। এই বেলাভূমি এক আপন দেশ। এই ভূমির সপ্রকাশ হল, বিস্তৃতি বাড়লো। পরিব্যাপ্ত জলরাশি এবং সহজ পলিমাটি দ্বারা উৎকৃষ্ট কৃষিভূমি তৈরী হলো। এই তৃণভূমি, সবজি, ঔষধি এবং ফল উৎপাদক বৃক্ষ রোপিত হলো বঙের অপার মমতায়। পশু, সরীসৃপ, বিভিন্ন প্রাণীকুল ও মনোহর পাখির আবাস প্রস্তুত হলো। সৃষ্টিকর্তা এই ভূমিতে জীবাত্মা পাঠালেন। সেই থেকে প্রজাকুল বহুবংশ হলো, কিন্তু পুঁজো না পাওয়ায় তাদের প্রতি অপদেব রুষ্ঠ হলেন।...
১
মর্ত্যলোক; স্বপ্নের গ্রন্থি থেকে অনেক নিকটের গ্রাম। দৃশ্যের অবতারনা সেখান থেকেই। ইস্কুল। সবুজ ধানক্ষেত। কবরখানা আর স্তম্ভের গায়ে আঁকা বিবর্ণ লাল সূর্য। একদিন লাল সূর্য এঁকেছিল যারা, হৃদয়ে তাদের ছিল স্বপ্নের ব-দ্বীপ। প্রতিদিন সেখানে ঝড়ে যায় পাতা। আর আছে মৃত্তিকা; আমাদের মা। অদ্ভুত সুরে সে এই পৃথিবীর বিস্তৃতি মন্থন করে। শরীরে তার যতো গ্রহনের কাল। তবু কি অবহেলায় আমাদের মৃত্তিকা চেয়ে দেখে স্বর্গের দিকে। সেই স্বর্গদ্যানে; প্রতিদিন প্রধান নির্বাহী তাঁর কক্ষ থেকে বেড়িয়ে বারান্দার কিনারায় দাঁড়ান। সেখান থেকে আমাদের অবলোকন করেন। আমাদের মানে মর্ত্যলোক অবলোকন; অথবা না; হয়তো শুধুই মৃত্তিকাকে...।
একদিন আমরাও দক্ষ হয়ে উঠেছিলাম হালচাষে; কারুকাজ, জলযান আর সুক্ষ্ণসুতিবস্ত্র আমাদের পূর্বপুরুষের ঘরে এনেছিল সচ্ছলতা। পুরুষানুক্রমে সে দক্ষতার পুঁজি পরহস্তে আজ। বিষ্মরণ, কালপরিসরে সব সমারূঢ়। পুরুষেরা বিনিময় করে। ধান-চাল-সবজি। তারা বিনিময় করে জমি এবং সম্পদ, সেই সাথে নারী। মা-বোন-মেয়ে। এ বাড়ি, ও বাড়ি। শ্বশুর বাড়ি-বাবার বাড়ি। এভাবেই তারা বাড়িয়ে তোলে সংখ্যা। আর্তচিৎকারে নিজ অধিকার জানায় তারা; তবুও অধিকারহীন; হাজার বছরের শোষণ-নিপীড়ন মরিচা ফেলেছে সমস্ত চেতনায়। আজও জানা থাকে না তাদের কোন কিছুই। উন্নয়ণ বাণিজ্য তার একটি। প্রথমে তারা এসেছিল সাহায্য নিয়ে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও আধুনিক জীবন নিয়ে আর কে ভেবেছিল বলো?
আমাদের গ্রামে যখন তারা এলো আমরা লজ্জা পেলাম। বলতে কি, লজ্জা কাকে বলে তার আগে আমাদের জানা ছিল না। তারপরও অর্ধনগ্ন আমরা নগ্ন পায়ে তাঁদের কাছে গেলাম। তাঁদের একজন আমাদের বলেছিল, 'আহা! কি কষ্ট তোমাদের।'
তখনই আমরা কষ্টকে অনুভব করলাম।
'কত দুঃখ!?' বলেছিল অন্যজন।
সেই প্রথম দুঃখকে খুব নিকট থেকে দেখলাম।
তাঁরা সবাই বলেছিল, 'তোমাদের দুশ্চিন্তার সময় শেষ। এইতো আমরা এসে গেছি।'
তারা আমাদের একটি বড় ছবি দেখালো। বললো 'এই দেখ, কি পরিস্কার ঝকঝকে দৃশ্য; কি সুন্দর মায়াবী সাজসজ্জ্বা! একেই বলে আধুনিক জীবন।'
আমাদের মুখ হা হয়ে গেল, চোখগুলো কপালে গিয়ে ঠেকলো।
তারা বললো, 'তোমরা এভাবে নগ্ন পায়ে কেন? এতে তোমাদের পেটে কৃমি হবে।'
আমরা তো অবাক।
ওরা আমাদের এমনই এক জাদুরদেশ দেখাতে লালগো। আমরা আরো অবাক হয়ে তেমনই জীবনের স্বপ্ন দেখতে লাগলাম। সেই সাথে ভুলে গেলাম স্বনির্ভরতা। নিজের মেধা ও শ্রমের প্রতি হারিয়ে গেল আস্থা। আরও কত সহজে আমরা আনন্দপূর্ণ জীবনকে বেছেনিতে পারি তার মুলা ঝুলতে লাগলো আমাদের নাকের ডগায়।
'কিন্তু কিভাবে আমরা এমন সুখী হতে পারি?' আমরা সুধাই।
এরপর তারা আমাদের অর্ধনগ্ন শরীর ঢাকার জন্যে বস্ত্র দিলো, পায়ের জন্য চপ্পল দিলো। আমরা তা পরিধান করে সভ্য হতে থাকলাম। পাঠশালা গুলো ইস্কুল হতে থাকলো আর আমাদের পড়–য়ারা পাঠ নিতে শিখলো আধো আধো বোলে।
ছোট ছোট পড়ুয়ারা শেখে নতুন শব্দমালা। প্রথম পাঠে শিখে রাখে এনজিও এবং দাতাসংস্থা। আমরাও পাঠ শিখি আর রিলিফের আশায় থাকি। রঙিন কাপড়ে মুড়ে সভ্য এবং আধুনিক হয়ে উঠতে থাকি। নগ্ন শরীর দেখে লজ্জা লাগে; হায়! কি লজ্জাই না শিখিয়ে দিয়েছে আমাদের তাঁরা। চপ্পল ছাড়া থাকতে পারি না। থাকি কি করে বলো? আমার সন্তান এখন ইস্কুলে পড়ে।
আমাদের উন্নয়ণ সহোযোগীরা আবার এলেন। তাঁরা জানালেন, তাঁদের প্রকল্প শেষ। ফ্রি ফ্রি আর চলছে না। আমরা যেন তড়িতাহত হলাম; 'তাহলে? আমরা লজ্জা ঢাকবো কি করে! হাঁটবো কি করে?'
তবে তাঁরা আমাদের আশ্বাস দিলেন। বললেন, 'এখন তোমাদের নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে?'
'কি করে আমরা নিজের পায়ে দাঁড়াবো?'
'আমাদের তো এখন পা-ই নাই'। বলল একজন।
আমাদের বলা হলো, 'মাথা খাটাও'। কিন্তু সেটাতো এতোদিনে ভোতা হয়ে গেছে।
তাঁরা জানালো, আমাদেরকে এখন কিনে নিতে হবে সব কিছু।
'কিন্তু টাকা?'
তাঁরা তখন বললেন, 'কোন সমস্যা নেই আমরা তো আছি। তোমাদের আমরা টাকা ধার দিতে পারি।'
আমরা কৃতার্থ হলাম।
এরপর আসে দ্বিতীয় পাঠ। বিশ্বব্যাংক। আইএমএফ। ইইউ। আমাদের যোগাযোগের উন্নয়ণ ঘটে। জলে ও স্থালে বাঁধ তৈরী হয়। সেই সাথে ভেঙ্গে যায় নির্বাহীদের অর্থের বাঁধ; বাঁধে বাঁধে গড়ে ওঠে সেতু বন্ধন। নতুন রাস্তাঘাট। গাড়ির চাকা ঘুরতে থাকে। পাজেরো। পেট্রোল। প্রাডো। এমনই চক্রযান আসে আমাদের গ্রামে। সেখান থেকে বেড়িয়ে আসেন নির্বাহী; দেবী সিং-এর মতোই অভিজাত আর বিবেক প্রতিবন্ধি।
তৃতীয় পর্বে শেষ হয় পাঠ। এই পাঠে তারা শিখে নেয় শব্দের ঠাসবুনোনি। অক্সিডেন্টাল। নাইকো। এশিয়া এনার্জি। শব্দের আড়ালে থাকে ইতিহাস আর বিজয়ীদের বীরত্বগাঁথা; এবং আমাদের খনি যুগ। উদ্বাস্তু আর পরাজিতের ইতিকথা মুছে যায়, যখন তারা দক্ষিণ আমেরিকা আর আফ্রিকা জয় করে এসেছে। চাপা পড়ে যায় চক্রান্ত, বলপ্রয়োগ ও মিথ্যাচার। পরাজিতের আত্মপ্রসাদ বোধকরে চিড়িয়াখানার বাঘগুলি।
২
লেফট-রাইট-লেফট। তাঁর হাটবার ধরনটা মিলিটারীর মতো, জেনারেলের অনুকরণ। হায়! সেই সময়ের কথা মনে পড়ে প্রধান নির্বাহীর, কল্পনায় এক সুখবোধ হয়; কি মধুর স্মৃতিচারণা। সে সময়টা কতই না ভাল ছিল? মিলিটারী বড়ভাই ছিল দেশের মাননীয় পর্যায়ের। তখন ছোটলোকের দলগুলো সরকারি গাড়ি দেখলে, সম্ভ্রমে রাস্তা ছেড়ে দেবার বোধবুদ্ধি ছিল। আর এখন, ইশ্! এইতো সেদিন, একজনতো রীতিমতো 'পাবলিক সার্ভেন্ট' বলে গালি দিয়েছে। কথাটা মনে পড়লে প্রধান নির্বাহী মনের মধ্যে একটা খচখচানি হয়।
তবুও তিনিই প্রধান নির্বাহী। তিনিই সত্য এবং স্থিতধী। সিংহাসন তাঁকে অধিকার করে আছে। কাগজপত্র-ফাইল-দলিল সবই সত্যকে প্রত্যয়ন করে। তিনি যা লেখেন সাক্ষ্য দেয় সত্যকে। আর তাঁর কাছেই থাকে আমাদের চরিত্রগত সনদ।
বাবা তাঁকে একদিন পরীক্ষায় প্রথম হতে বলেছিলেন, সেই থেকে প্রতিবারই তিনি প্রথম হতেন। মা তাঁকে সবার অলক্ষ্যে টিফিন করতে বলেছিলেন, তিনি প্রতিসময় তাই-ই করতেন। স্কুলের পথে নোংরা ছেলেদের সাথে খেলতেন না। বাবা তাঁকে অফিসার্স ক্লাবে নিয়ে গিয়ে বিলিয়ার্ড এবং টেনিস খেলা শিখিয়ে ছিলেন। এ সবই তিনি করেছিলেন যাতে সন্তান মানসিকভাবে অভিজাত শ্রেণীর হয়। বাবার স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি।
আজ তুমি এই স্বর্গের দিকে তাকাও, মূঢ়তা এখানে নেই। ক্রাইসিসের সমাধান সব সময় নির্বাহীরাই করে থাকে। তাঁদের মতো শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানকারী আর কে হতে পারে? অপরদিকে ইতিহাসের বীরত্বপূর্ণ ঘটনার পুনরাবৃত্তির স্বপ্ন লালন করে মূর্খরা। তাইতো সহসাই তারা গ্রীবায় অহংকার জমায় এবং বেয়াদবী করে। নিরাপত্তাহীনতার ইতিহাস এখানে হাজার বছরের; ক্লান্ত জনতা আত্মকেন্দ্রিক, লক্ষহীন। অদৃষ্টকে মেনে নেওয়ার মতো ধৈর্য্য অথবা কোন জাদুকরের অপেক্ষা তাদের পথকে বেঁধে দিয়েছে। ভাগ্যকে তাই তো ধৈর্য্য দিয়ে গুণ করে দিয়েছে সবাই। এদের কথাই আবার প্রধান নির্বাহীকেই ভাবতে হয়। তাদের জন্য কে আর আছে?
কিন্তু তারপরও কিছু অধৈর্য্য মানুষ অশান্তির সৃষ্টি করে। রাজ্য, রাষ্ট্র তাদের কাছে চায়ের দোকানের আড্ডা যেন। রাজদ- তারা নিজের হাতে নিতে চায়। শাসন মানে না, রাষ্ট্রের নির্বাহী এবং অভিজাতবর্গের সাথে যুগে যুগে এরা বসচা করে আসছে। এদের কঠোর হাতে দমন করতে হয়, নইলে রাষ্ট্রের গতি নির্বিঘ্ন হবে কিভাবে?
তিনি ভাবেন; 'হে মূর্খের দল। তোমরা কি ধর্মকে অস্বীকার করেছ? তবে কি জানো না ঈশ্বর নিজেই সবাইকে সমান করেননি! তোমাকে যা দিয়েছেন তাই নিয়ে সন্তুষ্ট থাকো।'
তাঁর এই প্রসাদোপমো অট্টালিকার বারান্দা থেকে প্রায় সর্বত্রই চোখ বুলানো যায়। তিনি ঘড়ি দেখলেন এবং চোখ থেকে চশমা খুললেন। সে বার সাতদিনের এক প্রশিক্ষণে গিয়ে লন্ডন থেকে এই চশমাটি কিনেছিলেন মাত্র দুশো পাউন্ডে। এখনো সুন্দর আর সবাইকে দেখানোর মতো।
অফিস কমপ্লেক্স এর উত্তর-পূর্বকোণে মাঠে ছেলেরা ফুটবল খেলছে। তিনি তাকিয়ে কিছুক্ষণ খেলা দেখলেন। খেলোয়াড়রা নেহাতই ছেলেমানুষ, সম্ভবত তাঁর অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তান। তাঁরও ফুটবল খেলতে ইচ্ছে করে। হঠাৎই মনটা চনমন করে ওঠে। একসময় তিনিও খেলতেন, আন্ত:স্কুল ফাইনালে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হয়েছিলেন একবার।
চশমা পড়লেন তিনি। অফিস ভবনের সামনে চোখ পড়লো তাঁর। দেখলেন বেশ কিছু অস্থির মানুষ। কোন কারণে তারা ক্ষুদ্ধ। অনেক দিনের অভিজ্ঞতায় বুঝলেন, এরা কোন ব্যপারে দল পাকিয়ে এসেছে, অবশ্য কোন রাজনৈতিক পরিচয় এদের নেই, থাকলে আগের দিনই তাঁকে জানানো হতো। কিন্তু আজকের এরা সেরকম নয়, এদের এড়িয়ে যাওয়াই নিয়ম; অন্তত যতোদুর এড়ানো যায়।
তিনি নিজের কক্ষে প্রবেশ করলেন। তাঁর কক্ষে বিশাল সেগুন কাঠের পলিশ করা টেবিল; সমনে গোটা দশেক চেয়ার। এই টেবিলের পেছনে তিনি বসেন। টেবিলের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বেশ বড়সড় চেয়ার, যদিও তাঁর সাথে তিনি মানানসই কি না সেটা বিচার্য নয়।
চেয়ারটি অধিকার করতেই তাঁর গোপন শাখার সচিব অবনত মুখে এসে দাড়ালেন; হাতে তার বেশকিছু কাগজপত্র। মাননীয় নির্বাহীর নজরে দেবার মতো কিছু চিঠিপত্র তাতে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, 'ঐ লোকগুলো কারা?'
'ধুমের কুঠির মৎসজীবী স্যার'
'কি চায়?'
'মাছ ধরার অধিকার'
'কে তাদের নিষেধ করেছে?'
'স্যার এই ধুমনদীই তো লিজ দেয়া হয়েছে। এর উপরে এস ডি সি'র প্রজেক্ট এসেছে।' সচিব একটি চিঠি এগিয়ে দিলেন মাননীয়'র বরাবরে, তাঁর পড়বার সুবিধা যাতে হয়।
'এই যে স্যার এটা দেখতেই আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধি আসছে।'
'এই প্রজেক্টের সাথে আবার বিশ্বব্যাংক কেন?'
'দাতাগোষ্ঠি সব একই স্যার'
'আচ্ছা' তিনি চুপচাপ কিছু ভাবলেন, তারপর বললেন, 'তাহলে এই লোকগুলো এসেছে এই প্রজেক্ট যাতে না হয়'
'জি স্যার'
[ চলবে....]
[ বি.দ্র: পাঠকবৃন্দ যারা আমার পূর্বের অসমাপ্ত গল্প পড়েছেন তারা একটু ধর্য্য ধরুন, কারণ আমার মনে হচ্ছে ঐগুলো সমাপ্ত করার আগে এই গল্পটি সমাপ্ত করা প্রয়োজন। ]
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০১১ রাত ২:১৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





