somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহসী সন্তান
{♥ যদি কখনো নিজেকে একা ভাবো, তাহলে ঐ দূর আকাশের অসীম সীমান্তের দিকে তাকিয়ে থাকো! কখনো নিরাশ হয়ে যেও না! হয়তো বা একটা বাজপাখিও তোমার দিকে উড়ে আসতে পারে! ♥}

"বাংলাদেশ ক্রিকেটের গৌরবময় কাহিনী"

০৫ ই মে, ২০১৫ রাত ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১৯৮৬ সালের কথা। বাংলাদেশের বয়স মাত্র ১৫ বছর, আর এদেশের ক্রিকেটের বয়স তখন মাত্র ১ বছর। এশিয়া কাপ খেলতে যাবে, কিন্তু বিমানের টিকিট কেনার টাকা নেই। আইসিসি
টাকা দিতে চেয়েছিলো, বাংলাদেশ রাজি হলো না, বরং বাসে করেই গেলো। আমাদের তখন ব্যায়াম করার জিমন্যাশিয়াম নেই। ওরা ১১ জন বিদেশের জিমে ব্যায়াম করে ক্লান্ত হয়ে গেল। ঐ সময় স্যালাইন খাওয়া দরকার। কিন্তু বিদেশী স্যালাইন কেনার টাকাও যে নেই। তাই দেশীয় উপায়ে লবন দিয়ে স্যালাইন বানানো হলো। এ নিয়ে পাকিস্তানি মিডিয়ায় কত হাসাহাসি। পরদিন শক্তিশালী পাকিস্তানের সাথে খেলা। তাইতো রাতে ঘুম এলো না স্বপ্নচারী ঐ ১১ জনের চোখে । সকালে খুশি মনে ১১ জন আগেই মাঠে ঢুকে গেলো প্র্যাকটিসে। কিন্তু পাকিস্তানের কেউ আসলো না। টসের সময় পাক ক্যাপ্টেন "ইমরান খান"
মাঠের বাইরে থেকে ইশারায় ডাকলেন বাংলার ক্যাপ্টেন "নান্নু" কে। ইমরানের আপত্তি, তোমাদের সাথে টস করে কি লাভ? তোমরাই বলো কী চাও? ব্যাট নাকি বল?

নান্নু বললোঃ আমরা টস চাই!! ম্যাচ রেফারিও চাপ দিলো ইমরানকে। তখন ইমরান বললোঃ তাহলে এখানেই টস করেন। আমি কষ্ট করে মাঠের পিচ পর্যন্ত যাবো না। অবশেষে
টস হলো মাঠের বাইরে। বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামলো। ইমরান তার মূল বোলারদেরকে বাদ দিয়ে পার্টটাইম বোলারদের দিয়ে বল করাতে লাগলো, আর আমাদের ১টা করে উইকেট পড়তে
থাকলো।
ধারা ভাষ্যকার হাসতে হাসতে বলে উঠলোঃ
"আজ যদি পাকিস্তানীদের স্ত্রীরাও বল
করতেন, তাহলে তারাও নিশ্চয়ই উইকেট
পেতেন।"

২০১৫ সাল। পাকিস্তানে বহুদিন ধরে ক্রিকেট বন্ধ। স্পন্সররা চলে যাচ্ছে। তাদের একাডেমীগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
জিম,প্র্যাকটিসের জন্য তারা এখন দুবাইয়ের জিমন্যাসিয়াম ব্যবহার করে। বাংলাদেশে আসার আগে তাদের বিমানের টিকেট কেনার টাকা নেই। কে দিবে টিকেটের টাকা?
এগিয়ে আসলো বাংলাদেশ। যেই দেশটার সামান্য স্যালাইন কেনার টাকা ছিলো না বলে হাসাহাসি হয়েছিলো, সেই দেশটা তুলে দিলো আড়াই লক্ষ ডলার!! খেলার মাঠে অধিনায়ক মাশরাফি একই কাজ করলেন, যেটা পাকিস্তান করেছিলো আজ থেকে ২৯টি বছর আগে। মূল বোলারদের বল না দিয়ে বল
দিচ্ছিলো নাসির, সাব্বির, এবং রিয়াদদের। আর তাতেই পাকিস্তানের একেকটা করে উইকেট পড়ছিলো। ধারাভাষ্যে তখন বসে আছেন বাংলাদেশের আতাহার আর পাকিস্তানের আমীর সোহেল। ২৯ বছর আগের সেই দিনটাতেও এই ২ জন খেলেছিলেন, ২ জনেই ছিলেন ২ দেশের ওপেনার। কিন্তু ইতিহাস মিললো না!! আজ আতাহার কিন্তু সেভাবে হাসি-ঠাট্টা করলো
না, যেভাবে ২৯ বছর আগে হেসেছিলো পাকিস্তানী ভাষ্যকার!!

তবে খেলা শেষে চুপ থাকতে পারলো না পাশে বসে থাকা সেদিনের পাকিস্তানী খেলোয়াড় আমীর সোহেল। তিনি বললেনঃ " আমি বাংলাদেশের দর্শকদের চোখে আজ আনন্দের
রঙধনু দেখতে পাচ্ছি। আনন্দ, যা পাকিস্তানকে ছুয়ে গিয়েছিলো সুদূর অতীতে। সেই আনন্দ হাতবদল করে ইসলামাবাদ থেকে
ঢাকায় ফিরে এসেছে। আনন্দপ্রিয় এই দেশটি
দিন দিন এগিয়ে
যাচ্ছে তাদের ক্রিকেটে, তাদের
অবকাঠামোয়, তাদের অর্থনীতিতে"।
২৯ বছর আগের সেদিন ১জন পাকিস্তানি কথা
বলেছিলেন বাংলাদেশের পক্ষে, তিনি
"ওয়াসিম আকরাম"। তিনি পাকিস্তানি
মিডিয়াকে বলেছিলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে
বাজে কিছু না লিখতে। তিনি বলেছিলেন,
বাংলাদেশের সুদিন আসবে, সেদিন তো
আপনাদেরকেই লজ্জা পেতে হবে। আজ ২৯
বছর পর তামিম ইকবাল একই কাজ করলেন।
বাংলাদেশের মিডিয়াকে বললেনঃ
"ক্রিকেটে খারাপ সময় যায়। এক সময় আমরাও অনেক ম্যাচ
হেরেছি, হারতে হারতে শিখেছি। আমার শুভকামনা
রইলো, তারা খুব জলদি come back করবে"!!

ইংরেজীতে ১টা প্রবাদ বাক্য আছে, "History repeats itself"
"সেই কথাটা যে এমনভাবে সত্যি হবে, ইতিহাসের দেনাগুলো যে এভাবে শোধ হবে তা কখনো ভাবিনি।"

তথ্য সূত্রঃ- "ইন্টারনেট অবলম্বনে"
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৩২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×