somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অল্প একটু ভুয়া গণতন্ত্রের ছোঁয়া

২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গণতন্ত্রের সংজ্ঞা নিয়ে অনেক ধরনের বিতর্ক আছে। সব বিতর্ক ছাপিয়ে যে বিষয়টা আমাদের চোখে ধরা পড়ে সেটা হলো- গণতন্ত্র মানে প্রকৃতপক্ষে জনগণের শাসন। অর্থাৎ জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালিত হবে। অর্থাৎ সত্যিই যদি গণতন্ত্র একটা দেশে থাকে তাহলে সেখানে সমাজতন্ত্রের প্রশ্ন অর্থহীন। কারণ সমাজতন্ত্রও এরকম চায়- জনগণের শাসন। আরেকটু পরিষ্কার করে বললে-- দেশের সংখ্যাগরিষ্ট শ্রেণী শ্রমিক শ্রেণীর শাসন। সুতরাং গণতন্ত্র সমাজতন্ত্রেরই একটি পরিপক্ক রূপ ছাড়া আর কিছুই নয়। যদিও স্রেফ ভোট দেয়ার অধিকারকে অনেকে গণতন্ত্র বলে চালিয়ে নিচ্ছেন আর সেটার সাথে সমাজতন্ত্রের তুলনা করে সমাজতন্ত্রকে ধুয়ে একেবারে শেষ করে দিচ্ছেন। সুতরাং বর্তমানে আমরা যে গণতন্ত্রের বুলি শুনি তা একরাশ গোঁজামিল ছাড়া আর কিছুই নয়। জনগণের সাথে স্রেফ প্রতারণা। হোক সেটা আমেরিকায় কিংবা বাংলাদেশে।
যাক। সে বিষয়ে বলতে গেলে অনেক বলতে হয়। আমি যদি ধরেই নিই গণতন্ত্রের যে সংজ্ঞা বর্তমানে অনেকে শুধু মন খুলে দু একটা কথা বলা কিংবা বছর পাঁচেক পর পর একটা ভোট দেয়াকে নিয়ে দাঁড় করিয়েছেন সেটাকে ধরেই দু একটা অভিজ্ঞতার কথা বলতে চাই।
যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই- বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক পরিবেশ বড্ড বেশি আতঙ্কিত করে তোলে। এখানে রাজনীতি আর সন্ত্রাস একে অপরের সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িত। যখন ছোট্ট একটা সংগঠন করা শুরু করলাম দেখলাম এই ছোট্ট সংংগঠনটির জনগণের স্বার্থে দাবিগুলোকে কেমনটি করে টুটিঁ চেপে ধরে ক্ষমতাসীন সংগঠন। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছোট্ট সংগঠনটি সম্পর্কে যত প্রকার বাজে এবং ভীতিকর কথা বলে হুমকি ধামকির মাধ্যমে দূরে রাখা যায় সেই চেষ্টা চলে প্রতিনিয়ত। এরকম সংকট সমস্যা ফেইস করেও সংগঠনটি আজো টিকে আছে। হয়তো তারা ছাত্রদের দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন কিন্তু নিজেরা যে সরে গিয়েছেন আরো দূরে সে হিসেব রাখেন কি?
গত কিছুদিন আগে ভাবলাম যেহেতু গণতন্ত্র এতটাই বিপন্ন তাহলে বসে থেকে লাভ কি? একটু ভিন্ন ভাবে কাজ করি। বিশ্ববিবদ্যালয়ের আশেপাশের একটা কলেজে বসে থাকতাম ছুটির পর। বেশি না, মাত্র সাত দিন বসে ছিলাম। তাতেই অনেকগুলো ছেলে সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়ে গেলো। এই পরিমাণ ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে যুক্ত করতে হলে আমাকে আদু ভাইয়ের মত বসে থাকতে হত অনেকটি বছর।
যে কারণে উদাহরনটি টানলাম সে জায়গায় আসি। হুমম, গণতন্ত্রের বর্তমান ভুয়া সংজ্ঞায়ই ফিরে যাচ্ছি। অর্থাৎ মনের সুখ দুঃখ, প্রতিবাদের কথা বলার স্বাধীনতা এবং বছর পাঁচেক পর একটা ভোট দেয়া। অন্তত এটুকুই যদি থাকতো এই বাংলাদেশ অনেক পরিবর্তন হয়ে যেতো। এখন আমরা এমন এক জায়গায় চলে গেছি যেখানে এই গণতন্ত্র নামক জিনিসটির ভুয়া সংজ্ঞার প্রতিফলনও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখানে ছোট্ট একটা সংগঠনকেও নিয়ন্ত্রণ করা হয় কঠোর ভাবে। মাঝখানে একটা সাহিত্য পত্রিকা বের করেছিলাম ক্যাম্পাসের কিছু সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে। সেটার উপরও ১৪৪ ধারা জারি করা হলো। এটা নাকি পড়া যাবে না। সাহিত্য পড়লে ছেলেরা যদি আবার একটু ভালো হয়ে যায়! কি সমস্যা তাহলে!
মাঝে মাঝে আমার ছোট সংগঠনের পক্ষ থেকে বড় সংগঠনকে একটু চ্যালেঞ্জ জানাতে ইচ্ছে করে, আসুন আমরা খানিকটা গণতন্ত্রের চর্চা করি। আপনারা আপনাদের মত, আমরা আমাদের মত অ্যাপ্রোচ করবো শিক্ষার্থীদের। তারপর দেখি কি হয়? জানি সেটা সম্ভব নয়। ভুয়া গণতন্ত্রও আজ সোনার হরিণ! তারপরেও রাতে ঘুমুতে গেলে এরকম স্বপ্ন (নাকি দুঃস্বপ্ন) মাথায় চাগার দিয়ে উঠে।

সৌরভ দাস
সাধারণ সম্পাদক
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাকৃবি শাখা।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ১০:১১
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×