একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন আজকাল আমরা সবাই ভাল ছাত্রছাত্রী। অন্তত পাসের হার তাই বলে। আজকাল ছেলেমেয়েরা পরীক্ষা দিয়ে ধরেই নেয়, হয় A+ নাহয় A হবে। আমাদের সময় কিন্তু এই রকম ছিল না। যেদিন থেকে শিক্ষার সাথে রাজনীতি সংশ্লিষ্ট হল সেদিন থেকে শুরু হল পাসের হার বৃদ্ধির অশুভ খেলা। প্রতিটি সরকার তার ক্ষমতাকালে শিক্ষার হার ভাল ছিল, এটা প্রমাণ করার জন্য পাসের হার বাড়িয়ে যাচ্ছে এবং আগামীতেও তা চলতে থাকবে। এতে কি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত হচ্ছে? নাকি ধ্বংস হচ্ছে?
আজকাল সৃজনশীল নামক পদ্ধতির নামে আসলে কি সৃজনশীল শিক্ষা হচ্ছে? নাকি পাসের হার বৃদ্ধি করার জন্য যাদুমন্ত্রের মতো ব্যবহ্নত হচ্ছে? আমি সৃজনশীল শিক্ষা পদ্ধতিকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করি। কিন্তু এইটিকে এখনই ব্যাপকভাবে প্রয়োগ করাটা সমর্থন করি না। কারণ বাংলাদেশের অনেক গ্রাম, এমন কি শহরের অনেক স্কুল ও কলেজগুলোতে সে রকম শিক্ষক/শিক্ষিকা এখনও দেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। তাই শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ আগের পদ্ধতি অনুসারেই পাঠ প্রদান করে যাচ্ছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে তা আগের চেয়ে নিম্নমান সম্পন্ন। কারণ তাঁরা এখনও পদ্ধতিটিকে আয়ত্ত করতে পারেনি। যার ধরুন তাঁরা সম্পূর্ণরূপে কিছু কিছু গাইড বইয়ের উপর নির্ভর হয়ে পাঠ প্রদান করেন। শুধু মাত্র ঐ সকল গাইড বইয়ের কিছু প্রশ্ন দাগ দিয়ে এবং পৃষ্ঠা নম্বর বলে সিলেবাস তথা পুরো বিষয়টি শেষ করে দেয় যা মুখোস্ত বিদ্যা ছাড়া আর কিছু নয়। অভিভাবকরাও বাধ্য হয়ে ছাত্রছাত্রীদের ঐ সকল গাইড বই কিনে দিয়ে থাকেন। আবার কোচিং সেন্টারসমূহ বিভিন্ন গাইড বা সিট প্রদান করেন তাও আগের শিক্ষা পদ্ধতি অনুসারে এবং ছাত্রছাত্রীদের বলা হয়ে থাকে, এইগুলো পড়লেই তারা পরীক্ষা হলে বানিয়ে উত্তর লিখতে পারবে। যদি সকল ক্ষেত্রে আগের কাঠামো অনুসারে পড়ানো হয়ে থাকে তাহলে কেন শুধুমাত্র পরীক্ষাটি নেওয়া হয় সৃজনশীল পদ্ধতিতে?