somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেক্ষিত: শাহাবাগ স্কয়ারে তারুণ্যের সমুদ্র গর্জন এবং বিশেষ বিভ্রান্তির হুশিয়ারি

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাকার শাহবাগে প্রজন্মের ডাকে যে গণসমাবেশ আমরা প্রত্যক্ষ করছি তা সত্যিই অভাবনীয়। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সর্বত্র আজ একটি শাহবাগ স্কোয়ার। আমি বিশ্বাস করি গণ মানুষের জয় হবেই।

অনেকেই আছেন যারা আমাদের আন্দোলনকে (আন্দোলনকারী তরুণ, জনমানুষ, পেশাজীবীদের) "তাহরির স্কয়ারের" বা আরব বসন্তের সাথে তুলনা করছেন।
ব্লগার এন্ড অনলাইন এক্টিভিস্ট নেটওয়ার্ক’ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে যে আন্দোলনের সূচনা করেছিল, তাতে সংহতি প্রকাশ করে বাম দল ও তাদের ছাত্র সংগঠনগুলো, বাসদ, সিপিবি, উদীচীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং পরে যোগ দেয় ছাত্রলীগও। সব শ্রেণী পেশার মানুষও সংহতি প্রকাশ এ কর্মসূচীকে পরিণত করছে গণ-অবরোধে।

আমার আশংকা যে এই উদযোগকে যারা রুপদান করেছেন, এই আন্দোলনের চরিত্র, প্রকৃতি ও উদ্দেশ্য যে "তাহরির স্কয়ারের" বা আরব বসন্তের চেয়ে ভিন্ন –সেটা আমার চেয়ে তারা ভালো বোঝেন। কিন্তু বিষাক্ত পতঙ্গের অনুপ্রবেশ যে এখানেও ঘটবে না তার নিশ্চয়তা কোথায়? রাজনৈতিক দলগুলোর অনুপ্রবেশ, আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন এর ভেতরে যে কোন নীল নকশা নেই, সে ব্যাপারে আমরা কতটুকু সন্দিহান? আমাদের এই জনদাবী, প্রতিবাদ "সরকার সমর্থিত হরতালের" মত যে নয় সে ব্যাপারেও কি আমরা নিশ্চিত? মনে রাখা ভাল, সমর্থিত হরতালে আদর সোহাগ পেলেও, সরকারবিরোধী ইস্যুতে আন্দোলনের ফলে যে চোখে লঙ্কা বেটে দেয়া এবং পশ্চাদ্দেশে লাঠির বাড়ি ছাড়া আর কিছু জোটে না, সেকথা সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা স্মরণ করলেই হবে। এটা মনে রাখা আরও ভাল যে, তাহরীর স্কয়ারের বিক্ষোভ কিন্তু "সরকার সমর্থিত আন্দোলন" ছিল না...ছিল শক্ত খুটি গেড়ে বসা...প্রবল ক্ষমতাশীল স্বৈরশাসন যন্ত্রর উৎখাতের বিরুদ্ধে। আমাদের এই আন্দোলন কে সংগ্রামের মর্যাদা দান করার জন্য এখনও যে অনেকটা পথ বাকী আছে, সেই বিচক্ষণতা এখন আমাদের কাম্য।

নিজের কাছেই তবু প্রশ্ন থেকে যায়, যে এই বিক্ষোভের কারণে পরবর্তী রায় কি প্রভাবিত হবে? এই জমায়েত যদি শুক্রবার মহাসমাবেশ করে গণজাগরণের ইতি টানতে চায়, তারপর সরকার কি করবে? আবার রাজনৈতিক বিভাজন, মতানৈক্য যদি প্রকট হয় তাহলে তো আন্দোলনের ধার কমে যাবে। এটা নিয়ে কি বিভক্ত হয়ে যাবে বিক্ষোভ? নাকি সপ্তাহ শেষে সৌখিন আন্দোলনকারীরা যার যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবে, অবশিষ্ট থেকে যাবে মুষ্ঠিমেয় কয়েকজন, যারা দুর্বল হলেও, সবসময়ই রাজপথ দাপিয়ে বেড়ায় দেশের স্বার্থরক্ষায়?

এটা সত্যি যে আন্দোলনকারীদের উচিত এখনি রাশ টেনে ধরা, কারণ এই আন্দোলনের ভেতরে বিভিন্নমুখী প্রবণতার ক্রমশ দৃশমান হচ্ছে। গণমানুষের এই আন্দোলনকে পুঁজি করার চেষ্টা অ:স্পষ্ট হলেও যে ধীরে ধীরে হচ্ছে তা জানানোর জন্য ভেতর থেকে একটা তাগিদ অনূভব করেই কথাগুলো বলা। (Click This Link)। আমাদের প্রতিবাদের অগ্নি শিখা শাসকের কাছে, আর রাজাকারদের কাছে যেন "অগ্নি উপাসনা" হিসেবে যেন পরিগণিত না হয়, সে দ্বায়িত্ব কার আপনারাই বলুন।

জন দাবীর চেয়ে ক্ষমতাশীল কোন অস্ত্র এ পৃথিবীতে নেই...এ যেমন সত্য....তেমনি সরকার যে কালকেই মোল্লা সহ সব রাজাকার এর শাস্তি বিধান করতে পারবে এটাও অনিশ্চিত...কারণ এটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার...কিন্তু সুস্পষ্ট নেতৃত্ববিহীন আশার আলো কতদিন জিইয়ে থাকবে..এটা নিয়ে আমাদের এখনই ভাবা উচিত। "যুদ্ধপরাধীদের বিচার" কি কারও সোনার ডিম পাড়া হাঁস হয়ে থাকবে না আমাদের ধমনীতে বয়ে চলা লাখো শহীদের রক্তের সমুদ্র গর্জন হবে সেটা ঠিক করতে হবে
আমাদেরকেই...

বেঁচে থাক তারুণ্য.. নিপাত যাক যত রাজাকার তারুণ্যের রোষানলে !
আমাদের বিপ্লব হোক চিরজীবি !!
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:১৪
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×