somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঝলমলে জাফলং আর পাহাড় ছোঁয়ার আক্ষেপ...! (সিলেট ভ্রমন-৩)

১০ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দূরে দাড়িয়ে থাকা সুন্দরী পাহাড় আর ঝর্ণা দেখতে দেখতেই রোদ একদম ঝলমল করে আলোর বিচ্ছুরণ করে রাঙিয়ে দিল চারপাশের সব সবকিছু মুহূর্তেই। আর মেঘ-কুয়াশারা যেন লজ্জায় মাথা নিচু করে ঘোমটার আড়ালে মুখ লুকালো! আর দেখাই গেলনা মেঘ বা কুয়াশার এতটুকু কোথাও! সব পালিয়েছে দূর দেশে, দৃষ্টি সীমার অন্তরালে।

স্বচ্ছ আর টলটলে নদীর কোল ঘেঁসে মাচার মত তৈরি দোকানে সকালের নাস্তা খেতে বসলাম। মুখে খাবার কিন্তু চোখে-মনে-প্রানে ওই হাত ছোঁয়া দুরত্তের প্রথম প্রেমের অনুভব পাহাড়-শীতল আর স্বচ্ছ জলের চলাচল-রঙ বেরঙের পাথরের সমাহার আর বালুকাবেলার আহ্বান। কোন মতে নাকে-মুখে নাস্তার পর্ব শেষ করেই দে ছুট ওই প্রেমের আহবানে আর আলিঙ্গনের নেশাতুর আকর্ষণে।

নদীর তীরে নেমেই অবাক, বিস্ময়ে আর অভিভূত পানির এতো বেশী স্বচ্ছতা দেখে, একদম নিচে পরে থেকে ছোট্ট নুড়িটির রঙ পর্যন্ত স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে! আর ছোট-ছোট মাছের পোনা গুলো, যেন আমাদের উপস্থিতি টের পেতেই ছোটাছুটি শুরু করে দিল জলজ হরিণের মত ছটফট-ছটফট, এদিক-সেদিক, সেদিক-এদিক যেন মাতাল হয়ে ঘুরচে চরকির মত! রঙ-বেরঙের ঝলমলে সব মাছ!

যেহেতু শীত ছিল সেহেতু বালু ততটা গরম বা অসহনীয় ছিলনা। তাই পায়ের জুতা স্যান্ডেল খুলে এক জায়গায় জড়ো করে রেখে শুরু হল ঠাণ্ডা জল আর হালকা গরম বালুর উষ্ণতার পরশ নিতে নিতে প্রকৃতিকে চোখ ভোরে দেখা, বুক ভোরে নিঃশ্বাস নেয়া, আর মন ভোরে তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করা। সেই সাথে এ ওর গাঁয়ে কখনো বালু কখনো পানি ছিটিয়ে দিয়ে ফাজলামি করা।

হাটতে-হাটতে আর হেলতে-দুলতে শিলং এর পাহাড়ের সম্মোহনে সাড়া দিতে না দিতেই পিছন থেকে ডাক পড়লো, অদিকে আর যাবেন না, গেলেই গুলি করবে! সেকি কেন? কারণ ওটা ভারতের ভূখণ্ডে, বিএসএফ ওত পেতে আছে। কাছাকাছি গেলে বা সীমানা অতিক্রম করতে গেলেই একেবারে উড়িয়ে দেবে! আর রক্ষে নেই! তাই থামতেই হল।

বিষণ্ণতায় ভর করে আর পাহাড় ছোঁয়ার আকুলতাকে বাড়িয়ে দিয়ে। ইস এতো-এতো একেবারে হাত ছোঁয়া দুরত্তে ওই মায়াবী পাহাড় কিন্তু কাছে যেতে বা ছুঁয়ে দেখতে পারবোনা? এ ক্যামন বাঁধা, এ ক্যামন পৃথিবী?

সেই যে পাহাড়ের প্রেমে পড়েছি আজও সেই প্রেমের এতোটুকু রেশ হয়নি শেষ বরং হয়েছি আরও নেশাতুর নেশায় আর ছোঁয়ার আকাঙ্ক্ষায় পাহাড়, পাহাড়কে, পাহাড়ের বিশালতাকে, গাম্ভীর্য আর পাহাড়ের উদারতাকে।

সেই থেকে আমি পাহাড় প্রেমী, পাহাড় আমার অনন্ত প্রেম, চিরদিনের লালসা আর জয় করেও অতৃপ্ত থেকে যাওয়া আক্ষেপ!

(স্যুট-টাই পরেই ট্রেকিং......!!!) পরের গল্প।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ সকাল ১০:০৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×