আগামীকাল ভ্যালেন্টানাইস ডে বিজাতীয় সংস্কৃতির(কারো কারো মতে) এই দিনটি আমাদের দেশে বিশ্ব ভালবাসা দিবস হিসেবেই বেশী পরিচিত। এটা পালনের পক্ষে এবং বিপক্ষে অনেক যুক্তি রযেছে কিন্তু আমি আজ তা বলতে আসিনি। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে আমি ধরেই নেবো যে বেশীর ভাগ মানুষই এদিনটি পালন করবে। আসলে সত্যি বলতে কি ওভাবে পালন না করলেও বন্ধুদের এ দিবসের শুভেচ্ছা আমি নিজেও যেমনি জানাই তেমনি আমার বন্ধুমহলে ছোট খাট চা নাস্তা হয়ে যায় এ দিবসকে ঘিরে।
যারা হয়তো আমার চাইতে আরো একটু এগিয়ে বা আরো একটু আমুদে আমার সেসব ভাইবোনরা এ দিবসে তাদের প্রিয়জন এবং বন্ধুদেরকে বিশাল ভালবাসার এসএমএস পাঠাবেন, যাদের প্রিয় মানুষটি দূরে তারা হয়তো সারাটি দিন ফোনেই কথা বলে কাটিয়ে দিবেন বলবেন প্রয়োজনীয় আর অপ্রয়োজনিয় মিলে মনের নানা কথা, আর যাদের মানুষটি রয়েছে নাগালের কাছেই বা যারা প্রিয় মুখটি দেখার জন্য অতিক্রম করবেন সব দূরত্ব তারা হয়ত সারাটি দিন অনেক ঘুরবেন মজা করবেন দুপুর বা বিকেলের সময়টায় হয়ত বসবেন নামিদামি কোন কফি শপে, প্রিয়জনকে শ্রেষ্ঠ কোন উপহার দিয়ে চাইবেন চমকে দিতে। ভালবাসার এই বিশেষ দিনটি আপনাদের সকলের জীবনে নিয়ে আসুক ভালবাসার নতুন মোড় নতুন বিস্ময় আপনাদের সবার জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।
কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে সামুতে ঢুকলেই স্টিকী করা স্বপ্নকথক ভাইয়ের পোষ্ট আজমেরী- তোমার কি বেঁচে ওঠা হবেনা বোন? যখন চোখে পড়ে তখন কেন জানি মনটা বিষিয়ে উঠে, আরো যখন দেখি এই পোষ্টগুলো
চার বছরের এ শিশুটির এখন দৌড় ঝাপ আর খল খল করে হাসবার কথা ছিল!
জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে ঝিনাইদহের যুগ্ম জজ জামিউল চিকিৎসার জন্য লাগবে ৫০ লাখ টাকা
আপনাদের সহযোগীতার অপেক্ষায় একটি জীবন
সাব্বির কি বাঁচবে??? উত্তর আপনাদেরই কাছে...
তখন মনেহয় যেন ভালবাসা দিবস আমাদের দিকে তাকিয়ে দানবের মত তাচ্ছিল্যের হাসি হাসছে....সে মুহূর্তে কি মনে হয় না আমার এই ভাইবোনদের সহ আরো অনেককে এ অবস্থায় রেখে এতটা ঘটা করে যেজন দিবসে মনে হরসে এ কোন প্রদীপ জ্বালছি আমরা?
আরো যখন একের পর এক শুনতে থাকি স্বপ্নকথক ভাই দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছে আমাদেরই বোন আজমেরীর চিকিৎসার অর্থের জন্য ব্লগার হোসাইন১৯৫০ ভাই র্দূবৃত্তকারীদের হাতে পড়ে নিজের সব দিয়েছেন হয়েছেন মারাত্নক ভাবে জখম কিন্তু তাদের ছিনিয়ে নিতে দেননি তার কাছে থাকা আজমেরীর জন্য সঞ্চয় করা টাকা তখন মনে হয় প্রকৃত ভালবাসা কি তাদের হৃদয়েই আছে? তারা গুটিকয়েকজন ছাড়া কি আমাদের সবার ভালবাসা সংকির্ণ আর ব্রাকেট বন্দী? আমরাও কেন পারছিনা সকলের জন্য নিস্বার্থভাবে ভালবাসা বিলিয়ে দিতে? মনে হরসে জ্বালনো প্রদীপ নিভিয়ে আমরাও কি পারিনা তাদের মত সেই আলোর প্রদীপ জ্বালাতে যার দূত্যি হবে চিরস্থায়ী?
অনেকে হয়ত ইতোমধ্যে ভেবে বসেছেন আমি ভালবাসা দিবসের বিপক্ষে। আসলে মোটেও তা নয় আমি বরং আমি বলতে চাই আমাদের ভালবাসা আরো অনেক বিশাল পশ্চিমাদের মত তথা কথিত গার্লফ্রেন্ড বা বয়ফ্রেন্ডের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। আর তাই আমরাও পারি তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে স্বপ্নকথক ভাই এর মত।
এটা কি খুব কঠিন? না মোটেও নয় অন্তত আমার মতে। একটু চেষ্টা করুন না আমাদেরই অন্য ভাইবোনদের প্রতি কিছু দেবার জন্য ভালবাসার এসএমএসটি একটু ছোট করতে, দেখুন না সারাদিন ভালবাসার মানুষের সাথে যত কথা বলবেন সেখান থেকে দুএকটি এবার না হয় অব্যাক্তই রাখতে, ভালবাসার মানুষের জন্য যে ফুলের তোড়াটি নেবেন তাতে গোলাপ না হয় দুটি কমই থাকলো, উপহারটা না হয় এবার একটু সাদামাটাই হলো, দেখুন না তেষ্টা মেটাতে কোন সাধারন কফি শপে বসা যায় কিনা, না হয় মনের মানুষের সাথে এবারের মত একটা স্যান্ডউইচ কমই খেলেন এই অতি বিলাশীতার বদলে।
এতে কি আপনার প্রিয় মানুষটির প্রতি আপনার যে ভালবাসা তার কি খুব বেশী অবমাননা হয়ে যাবে? আমার তা মনে হয় না কিন্তু এই আপনার এই বিলাশীতায় একটু সংযম আজমেরী বা আফরার মুখে ফোটাতে পারে হাসি তাদেরকে সুযোগ করে দিতে পারে নতুন করে এ পৃথিবীর আলো দেখার।
ভালবাসার দিবস সবসময়ই আসবে কিন্তু যদি সত্যিই এটা পারেন তবে প্রতিটি ভালবাসা দিবসে আপনার প্রিয় মানুষের কাছে বুক ফুলিয়ে বলতে পারবেন
"জানো সেদিন তোমাকে যে দুটি গোলাপ কম দিয়েছিলাম তার বদৌলতে আজ হাসছে আমাদের বোন আজমেরি বা আফরা।"
সবার কাছে সব সময় বলতে পারবেন আমাদের ভালবাসা শুধু লোক দেখানো নয় আমরা আমাদের ভালাবাসা দিয়েই ফিরিয়ে দিয়েছি কারো প্রাণবায়ু , সত্যিকারের ভালবাসার মন আছে আমাদেরই তাই ভালবাসতে পারি আমারাই। তাহলে আসুন না আমরা চেষ্টা করি ভালবাসার নিদর্শন রেখেই ভালবাসা দিবসটি একটু অন্যভাবে পালন করার।
ভালবাসাকে মহান করে আর সত্যিকারের ভালবাসাকে প্রমান করে ভালবাসা দিবসের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন না? কি পারবেন?
উত্তর আপনাদের কাছেই।
আবারো সকলের জন্য রইলো ভালবাসা আর অনেক অনেক শুভকামনা।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




