"সমাধিতে শিহরণ জাগে
এই ক্ষীয়মান কুঞ্চিত শরতে
চন্দ্রালোকিত রাতে
যদি অতীতের জমাট ধুলো আমরা করে নেই ভাগাভাগি
তবে রইবে না কোন শংকা ও সন্দেহ।।"
কি বলে সম্বোধন করব বুঝতে পারছি না। তোমাকে লেখার মত অধিকার এখন আর আমার নেই। তবু ক্ষণজন্মা ভাললাগার মোহাবিষ্ট অধিকারের প্রশ্ন তুলতে চাইছি। চলার পথে মানুষ কখন কাকে ভালবেসে ফেলে সে নিজেও জানে না। কোনদিন এভাবে লিখব কল্পনাও করিনি। কিছু মুহুর্ত হৃদয়ের গহীনে অম্লান হয়ে থাকে, যা সময়ে অসময়ে কথা বলে নিরবে নিভৃতে। তারই তাড়নায় হয়তো এতদিনের সঞ্চিত- প্রবঞ্চিত কথাগুলো বলার প্রয়াস পেলাম। স্থান-কাল-পাত্র-সীমা-পরিসীমা উপেক্ষা করে এর ফলাফল কি আমি জানি না। সকল প্রকার দ্বিধা, দ্বন্ধ, সংশয় কাটিয়ে উঠে সেদিনের অস্ফুট কলিটা অন্কুরে ম্রিয়মান হয়ে যাওয়ার পরিহাসটা আজ বড্ড নষ্টালজিয়ার আবহেবাতাবরন সৃষ্টি করছে।তাইতো লেখার অনুপ্রেরনাকে দুঃসাহস কিংবা ধৃষ্টতা ভাবতেও এতটুকু আড়ষ্টতা নেই। নিজের ভিতর পাথর চাপা দেয়া অনুভূতি গুলো মুক্তির কলরোলে বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিল। জীবনের অনেকগুলো প্রথম অনুভূতি সৃষ্টির অনবদ্য সাক্ষী হয়ে আছে কিছু মুহুর্ত। ভাব সৃষ্টির অনুভূতি, দীর্ঘক্ষন টেলিফোনে কথা বলার অনুভূতি, জন্মদিনের উইশ পাওয়ার অনুভূতি। সবই যেন স্মৃতির ক্যানভাসে ছবি হয়ে আছে। অনুভূতি গুলো যখন সর্মপিত হওয়ার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠল তখনি একটা ভালবাসার রুপ নিয়ে সামনে এসে দাড়াল। তারপর বিচিত্র চিন্তা, যুক্তি বিবেকের কাঠখড় পুড়িয়ে ক্ষন জন্মা ভাললাগাটার দাহোৎসব হল। সকল পুজা সাঙ্গ হলেও মনের অজান্তে পূজারী মানস দেবীর চরণে পুস্পার্ঘ দিতে দেব মন্দিরের পুরোহিত সাজিল। তথাপি অযাচিত ভাবনা, সময়ের কৃপনতা, বিশ্বাসের দ্বিধা বিভাজন, ভাগ্য দেবীর বৈষম্য মানস মন্দিরের প্রসাদ পাওয়া হইতে বঞ্চিত করিয়া রাখিলেও পূজারী আশা ছাড়িল না। ১৪ই সেপ্টেম্বর সংবৎসরে সমাগত। তাইতো মনে পড়ে প্রথম উইশ পাওয়ার স্মৃতি হাতরানো ভাললাগা।এই দিনটি যদি সূর্য মধ্য গগনে নিশ্চল থাকত, আমিও অটল হিমালয়স্পর্শী মেঘ হয়ে ভেসে যেতাম তোমার রাজটীকা ছুঁতে। তোমার সংঙ্গে প্রথম দেখা হবার পর দীর্ঘদিন পরের চকিত দেখাটা তোমার গচ্ছিত রাখা আমার লালিত অনুভুতি গুলো দুমড়ে মুচড়ে দিল টর্নেডো আক্রান্ত ধান ক্ষেতের মত। তবুও আমি হাওয়ায় উড়ে যেতে দেইনি, দেইনি বৃষ্টির তীর বিদ্ধ হতে। শিলুর সঙ্গে যতবার দেখা হয়েছে, ততবারই তোমার কথা জানতে চেয়েছি। তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা বেশী এগোয়নি। আমিই পারিনি, এ আমার অক্ষমতা, আমার ব্যর্থতা। তাইতো বারবার মার্জনা চেয়েছি। মাঝে মাঝে তার ঐকান্তিক চাওয়ার কাছে, নির্মোহ ভালবাসার কাছে আমি পরাস্ত হলেও দ্বন্ধ্র যুদ্ধে কেউ আমরা জয়ী হতে পারিনি। আজ পরবাসে পরিজনহীন পরিবেশে হাজার মাইল দূরে বসে তোমাকে ভাবছি। সত্যিই আজ আমি স্মৃতি তাড়িত।শতচেষ্টায়ও পারিনি ক্ষনজন্মা ভালবাসাটাকে সমাধিস্থ করতে। যে বীজ তুমি বুনেছিলে সেটা অন্কুরিত হয়ে এখন সুদূর প্রোথিত শিকড়সহ শাখা-প্রশাখায়, পত্র-পল্লবিত বিশাল মহীরুহ। যদি কোন কালে তোমার হৃদয়ের অন্ত;পুরে ক্ষনিকের তরে স্থান পেয়ে থাকি তবে সেটাই আমার ভালবাসার শ্রেষ্ঠ প্রতিদান।
"তুমি রাজ-রাজটীকা আমার অবিনাশী আত্মায়,
কিঞ্চিনী আফরোজ নৈঋতী হাওয়ায়।।
সিঁথিতে সিঁদুর পরাইব না তোমায় সখি
ললাটের জয়দীপ্ত রাজটীকায় আঁকিবোনা চুম্বন,
ক্ষনিকের তরে, ক্ষনিকের মোহে ভালবেসো শুধু
মরিলেও ভাসিব, তবে পাইব বৃন্দাবন।।"