somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুক্তিযুদ্ধের সেই কিংবদন্তী গুলো : ইয়াহিয়া খানের সেক্স অর্গি , বোরকা পরা গেরিলা আর রাজাকারদের দ্বিচরিত্র

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১১:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




মুক্তিযুদ্ধ এক সামগ্রীকতা।
১৪৪০০০ বর্গ কিলোমিটারের অভ্যুদয়গাথা।
তথ্য- প্রামান্য আর কিংবদন্তীতে ভরপুর এর জানা অজানার বিশালত্ব এত প্রসারিত যে তার তুলনায় এই ব্লগটি নিতান্তই একছেঁড়া পাতা।

মুক্তিযুদ্ধের সময়কার অনেক রোমান্চ্ঞকর কিংবদন্তী শোনা যায়।
পত্রিকার পাতায় উঠে আসে সেগুলো।
টিভির পর্দায় শোনা যায় সেইসব দিনের কথা।

ধর্মযু্দ্ধের মোড়কে বাংলা উপনিবেশকে নিজেদের গোলামীতে বশ রাখার জন্য পাকিস্তানী ওয়ারলর্ডরা যেইসব কলংকের অমোচনীয় দাগ রেখে গেছে মুক্তিযু্দ্ধের পরতে পরতে সেগুলোর অধিকাংশই কেবল মুখে মুখেই শোনা গেছে।

মরন কামড় থেকে বাঁচার যুদ্ধে এই বাংলাদেশ ভূখন্ডের যেইসব নারীরা
অবিশ্বাস্য সাহস দেখিয়েছেন সেগুলোও মাত্রই বছর কয়েক গনমাধ্যমের নজরে পড়েছে।

আর নিজদেশের মানুষের সাথে বেঈমানী করা , নিজ দেশের স্বাধীনতার শত্রু নিকৃষ্টতম শ্রেনীর বুদ্ধিসম্পন্ন প্রানী রাজাকারদের চরিত্র বর্ননায় অপ্রয়োজনীয়।

তবুও এদের চরিত্রের বেহায়াপনা কতটুকু হতে পারে সেটাও বোধহয় পুরোপুরি জানা নেই অনেকের।

ইতিহাসের পাতা থেকে এমনই কিছু প্রামান্যের ৩ টি টুকরো নিয়ে এই ব্লগ।

ইয়াহিয়া খানের যৌন প্রমোদ :

বাংলাদেশে এমন অসংখ্য ধর্মভীরু প্রবীন রয়েছেন যারা ৪৭ দেখেছেন কৈশোরে , ৭১ দেখেছেন পরিনত বয়সে।

ধর্মভীরু এই সব মানুষরা দেখেছেন সাম্প্রদায়িক বন্চ্ঞনার ক্লেদ কেমন হতে পারে , দেখেছেন হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার রক্তহোলি।
দেখেছেন পিতার প্রাচীন ভূমি ছেড়ে নতুন শিকড়ের সন্ধানে ভাসমান হতে অগনিত হিন্দু মুসলমানকে।

আর তাই সেইসব ধর্মকাতর প্রবীনরা ৭১ এ নতুন স্বপ্ন -সম্ভাবনার স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়ে যেমন উদ্বেলিত হয়েছেন , তেমনি সোহরাওয়ার্দী-শেরেবাংলার লেগ্যাসী , ব্রিটিশ খেদাও- ভারত ছাড় -স্বদেশী আন্দোলন আর ইতিহাসের টালী খাতায় গাঢ় দাগ ৪৭ 'র ভারত-পাকিস্তানের জন্মের প্রতি স্মৃতিকাতর হয়েছেন।

সেই সব ধর্মভীরু প্রবীনদের ৪৭-৭১ 'র প্রতি স্মৃতিকাতরতায় কতটুকু সারশূন্যতা ছিলো , কতটুকু মরীচিকা ছিলো তা হয়তো তাদের অনেকেরই জানা হয়নি কোনদিন।

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী নিজামী-মুজাহিদ-গোলাম আযমদের আমিরুল মুমীনিন ইয়াহিয়া খানের চরিত্রের এই কদর্য লাম্পট্যের প্রমান টুকু হয়তো সেইসব প্রবীনদের মনোপটে নতুন চিন্তার দাগ কাটবে।

১০ ই জানুয়ারী , ১৯৭২ , ডেইলী টেলিগ্রাফ , এম এফ এইচ বেগ :



অনুবাদ :

রাওয়ালপিন্ডিতে জেনারেল ইয়াহিয়া খান কে তার সাবেক চীফ অফ স্টাফ জেনারেল আব্দুল হামিদ খান সহ গৃহবন্দী ঘোষনা করা হয়েছে।

সাধারন মানুষের বিচারের দাবীর প্রেক্ষিতে এই সাবেক প্রেসিডেন্টকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ জাতীয় স্বার্থে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পশ্চিম পাকিস্তানের প্রায় সর্বত্রই "ইয়াহিয়ার ফাঁসি চাই" শ্লোগান শোনা যাচ্ছে আর গনমাধ্যম নানা বিধি নিষেধের খড়গ মুক্ত হয়েছে , বাক স্বাধীনতার স্বচ্ছন্দতাও ফিরে এসেছে ;

ইয়াহিয়ার বিপক্ষে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তাতে কেবল এটাই বলা হচ্ছেনা যে তার শাসনামল দুর্নীতি পূর্ন ছিলো ,

অভিযোগ করা হচ্ছে তার শাসনকালীন জীবন ছিলো প্রাচীন রোমের মতই লাম্পট্যে একাকার।

ইয়াহিয়ার যৌন প্রমোদ সঙ্গীনি ১২ জন বা এই রকম সংখ্যক নারীর ভাগ্য কি হবে তা এখনো অজানা , তবে বলা হয়েছে ক্ষমতাবান এবং বুর্জোয়া স্বামীর স্ত্রী --- ইয়াহিয়ার প্রমোদবালা এই সব নারীরা সবাই সুচিহ্নিত।


" প্রমোদনারীর অংগুলী হেলন"


একজন সামান্য পুলিশ অফিসারের স্ত্রী , যিনি সবার কাছে "আন্টি" নামে পরিচিত , তাকে অস্বাভাবিক ক্ষমতাশালী ধরে নেয়া হয়।
শোনা যায় তার আদেশে অনেক মাথা কুর্নিশ করে।

উদ্দাম যৌন উন্মত্ততার খবর বাতাসে ভাসছে , তারমধ্যে রয়েছে এক জেনারেলের ছেলের বিয়েতে পুরো ৩ দিন ধরে আমোদ প্রমোদ যখন সেনাবাহিনী পাকিস্তানকে ভেঙে যাওয়া থেকে রক্ষার জন্য লড়ছিলো।

এক রিয়ার অ্যাডমিরালের বাসায় আয়োজিত ডিনার পার্টিতে প্রসিডেন্ট ইয়াহিয়া মদে চুর হয়ে "মেলোডী কুইন" খ্যাত এক গায়িকাকে জাপটে ধরেন , তাকে নিয়ে সেইবাড়ীরই এক বেডরূমে ঢুকে পড়েন ;
পরের ৫ ঘন্টা প্রেসিডেন্টের আর দেখা মেলেনি।





বোরকা পড়া সেইসব বীরাঙ্গনা গেরিলারা :



সম্প্রতি দৈনিক কালের কন্ঠের পাতায় ৭১'র বিজয়ীনি শিরোনামে বীরাঙ্গনাদের উপর একটি সিরিজ করা হচ্ছে।

উঠে আসছে সেইসব অকুতোভয় নারীদের যুদ্ধদিনের গল্প।
এই যেমন ডিসেম্বর ১ , ২০১০ তারিখে ছায়ারুনের গল্পই ধরুন ।
বোরখা পরে পাক বাহিনীকে ফাঁকি দেয়া , "অবলা" নারী হাতে রাইফেল চালানো ......

স্বাধীনতার ৪০ বছর পর বিস্মৃতির তলানী থেকে ভেসে ওঠা এইসব সত্য কাহিনী গুলো শুনতে কতটুকু পানসে কিংবা তাজা শোনাচ্ছে জানিনা ,

তবে যু্দ্ধদিনের সেইসময়কার প্রামান্যটুকু হয়তো অনেক বেশী আবেদন পূর্ন হতে পারে :

ডেইলী টেলীগ্রাফ , ১৯৭১ , লন্ডন , ক্লেয়ার হোলিংওয়ার্থ :



অনুবাদ :

সারাদেহ বোরকায় আবৃত মহিলারা গোপনে অস্ত্র সরবরাহ করে পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিফৌজের সশস্ত্র বিপ্লবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছে।

বিশেষ করে শহর এলাকায় , যেখানে মাইন , গ্রেনেড অথবা বোমা খুব গোপনে , কিন্তু যেভাবেই হোক পাচার করতেই হবে - এ ধরনের অপারেশন গুলোতে এই বোরকা আবৃত নারী গেরিলারাই আসল ভূমিকা পালন করছে।

বোরকা পরা এইসব নারী মুক্তিযোদ্ধারা সম্পূর্ন নিরাপদ , কেননা অস্ত্র বহনের সময় কোন সৈন্য বা পুলিশ সদস্য তাদের শারীরিকভাবে স্পর্শ করার কথা চিন্তাই করতে পারবেনা।

এমনকি মহিলা পরিদর্শকরাও বাসে - ট্রেনে তাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছিলো যেখানে ইউরোপীয়ান মহিলাদের বেলায় রীতিমত পোশাকের ভেতরে আপাদমস্তক হাতড়ে বেড়ানো হচ্ছিলো।

অনেক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মহিলারা , যারা বোরকা পরেন পারিবারিক রক্ষনশীলতার কারনে , তাদের ক্ষেত্রে মনে হচ্ছিলো তারা অত্যন্ত মোটা বা স্থুল দেহের এবং ঘরের বাইরে কাজ করেননা।

সব ঢেকে ফেলা কালো রঙ এর গাউন , হিজাব আর নেকাব - এই তিন মিলে বোরকায় আবৃত মহিলাদের দেখাতো (যারা মূলত গেরিলাদের সহায়তাকারী) ধীরে চলতে থাকা বিশাল এক ভারী বোঝার মত ।


" হাট থেকে হাটে "


ক্ষীপ্র আর সাহসী তরুনরাও নিরাপদেই অস্ত্র পাচার করতো ,
পায়ের সাথে বুলেটের ফিতা জড়িয়ে আর ঝুড়ির ভেতরে মাইন ভরে নিয়ে এমনভাবেই তারা চলাফেরা করতো যাতে কেউ তাদের মুখ , এমনকি হাঁটুও দেখতে পেতোনা।

সাধারনত যুদ্ধক্ষেত্রের ভেতর দিয়েই তারা অস্ত্র গুলো নিয়ে যেতো ধারেকাছের কোন গ্রাম্য হাঁটে যেখানে অস্ত্রগুলো বোরকা পরা মেয়ে কিংবা মহিলাদের কাছে চালান করে দিতো।


__________________________




স্বাধীন বাংলাদেশে বুকভরা নিঃশ্বাস নেয়ার সুযোগ দেয়ায় আজীবন কৃতজ্ঞতা থাকবে এইসব বিজয়িনী নারীদের প্রতি।

রাজাকারদের দ্বিচরিত্র :

রাজাকারদের চরিত্র আমার কাছে অনেকটা দ্য মমির বেনি গাবারের মতোই মনে হয় আমার।



বেঁচে থাকার জন্য এরা গলায় হাজারটা খোদার তাবিজ পড়ে থাকে।
কোন খোদাতেই এদের বিশ্বাস নেই আসলে।
এদের মুনাফিক চরিত্র এখনো বদলায় নি।

ধর্মের নাম ভাঙিয়ে তেলে ভাজা কই মাছের মত ফুলে ফেপে ওঠা এইসব রাজাকারদের অনেকেই যুদ্ধকালীন লুটপাটের সম্পদে প্রচুর বিত্ত-বৈভবের মালিক আজ।

সামাজিক জীবনে এদেরকে কেউ কখনো দেখেনি সমাজের দুঃস্থ-অসহায়-হাঁ-ভাতে বেঁচে থাকা মানুষদের প্রতি দয়াপরবশ হতে।
কিন্তু এরাই মহানবী (সাঃ) হাদীসের বুলি কপচায় দিনরাত অহর্নিশ।

এদের অমানুষ হৃদয়ের নিষ্ঠুরতা প্রকাশের জন্য বোধহয় কাজী নজরুল ইসলামের সেই কবিতাটিই সবচেয়ে বেশী মানায় :

"মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি
বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি!
এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্
বলে ‘বাবা, আমি ভুকা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন!’
তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা – “ভ্যালা হ’ল দেখি লেঠা,
ভুখা আছ মর গো-ভাগাড়ে গিয়ে! নামাজ পড়িস বেটা?”
ভুখারী কহিল, ‘না বাবা!’ মোল্লা হাঁকিল – তা’ হলে শালা
সোজা পথ দেখ!’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা!
"

কিন্তু এরাই আবার নির্বাচনের ভরা মৌসুমে টাকার বোচকা নিয়ে মাঠে নেমে পড়ে।
টাকা দিয়েই তারা সমাজপতি - রাজনীতিশ্বরদের সাথে "ইনভিসিবল দোস্তি" তৈরী করে।

এদেশের অগনিত মসজিদের কোটি কোটি সাধারন মুসল্লীরা আজও এইসব দাঁত খিলানো রাজাকার নামের পশুদের পাশে দাড়িয়ে নামাজে কিয়াম করতে অস্বস্তিবোধ করে।

এই জীবানুর মতই কিলবিলে চরিত্রের রাজাকার শ্রেনীর বেহায়াপনার চালচিত্র ১৯৭১ এ কেমন ছিলো সেটা জানা যাক :


নভেম্বর ২১ , ১৯৭১ , দ্য নিউইয়র্ক টাইমস , কলকাতা থেকে বরুন রায় :





অনুবাদ :

রাজাকাররা যতোটা তোপের মুখে থাকার কথা তার চেয়ে কিছুটা ভালো অবস্থায় আছে তারা।

তারা একটা নতুন ধান্ধা খুঁজে পেয়েছে যাতে করে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতাকামী গেরিলাদের কাছে কিছুটা হলেও দয়া ভিক্ষা করতে পারে।

তাদের এই নতুন ধান্ধাটা হচ্ছে দু পক্ষের হয়েই চর বৃত্তি করা।

রাজাকাররা , যাদের কে পশ্চিম পাকিস্তান সেনাবাহিনী নিযুক্ত করেছিলো স্বাধীন বাংলাদেশ আন্দোলনের বিদ্রোহীদের উপর নজরদারী করে খবরাখবর জানাতে, তারা এখন উল্লেখযোগ্যভাবে গেরিলাদেরকেই উল্টো পশ্চিম পাকিস্তানীদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ন তথ্য পাচার করছে।
রাজাকার শব্দটির অর্থ রাজার অনুগত।

হিন্দু ভারতের সাথে একীভূতীকরন ঠেকানোর জন্য হায়দারাবাদ রাজ্যের সশস্ত্র মুসলিমরা ১৯৪০ এ এই শব্দে নিজেদেরকে পরিচিত করে।

" গত শরৎকালে এরা গঠিত হয় "

গত মে মাসে রাজাকার শব্দটির আবার আবির্ভাব ঘটে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দ্বারা একটি ডানপন্থী ফোর্সের " রাজাকার " নামকরনের মাধ্যমে।

রাজাকাররা একটি জগাখিচুড়ী বাহিনী - মূলত পশ্চিম পাকিস্তানী পুলিশ বাহিনী , মুসলীম লীগের সদস্য , জামাতে ইসলামী এবং আরো কিছু বাহিনী থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে নিয়োগ করে এই বাহিনীটি তৈরী করা হয়েছে।

সংখ্যায় এরা ৬০০০-৭০০০।

মুসলিম -হিন্দু সবাই একবাক্যেই অভিযোগ করেছেন রাজাকাররা তাদের উপর গোপনে নজর রাখছে , নির্যাতন করছে এবং তাদের স্বজনদেরকে খুন করেছে।

ধরেই নেয়া হয় যে এদের কাজটাই হচ্ছে প্রত্যন্ত্ গ্রামান্চ্ঞল / ছোট শহর , যেখানে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পৌছাতে পারবেনা সেখানকার মানুষের উপর খবরদারী-জবরদস্তি করা।

এছাড়া নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের পলাতক কর্মী দের ব্যাপারে খবরাখবর জানানো এবং লীগের প্রচার প্রচারনার বিপক্ষে প্রচারনা চালানোও এদের কাজ।

যেহেতু পাকিস্তান সেনাবাহিনী ছোট কোন শহর বা প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকায় অভিযান চালানোর আগে রাজাকারদের সাথে যোগাযোগ করে , তাই তারা আগে থেকেই জানে কখন আক্রমন চালানো হবে ।

একারনে তাদের হাতে প্রচুর সময় থাকে এলাকার বিদ্রোহী গেরিলাদের সতর্ক করার জন্য যাতে তারা পালিয়ে যায় কিংবা প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিতে পারে।

গতকাল গেরিলাদের একজন মুখপাত্র বললেন :

"আমরা এখন আর রাজাকারদেরকে মারছিনা। এরমানে এই নয় যে এদেকে মেরে ফেলায় কেউ আমাদেরকে আটকাচ্ছে। কিন্তু সেটা এই মূহুর্তে কাজে আসবেনা।
কারন এই মূহুর্তে ওদের কাছ থেকে যত তথ্য পাওয়া যায় পুরোটাই আমাদের প্রয়োজন।"

ঐ গেরিলা আরো জানালেন গত কিছুদিনের ঢাকার আশেপাশে মুক্তিবাহিনীর অনেকগুলো অপারেশনে সাফল্য আসার কারন রাজাকারদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গেরিলাদের সময়মতো ডেকে আনা ।

রাজাকাররা কেবল তথ্যই দিচ্ছেনা।
বিদ্রোহী গেরিলাদের কে তারা সুরক্ষাও দিচ্ছে।

রাজাকাররা যখন কোন এলাকায় থাকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী প্রধান সড়কে পাহারা বসিয়ে সেসব এলাকা ছেড়ে চলে যায়।

তবে এর মানে এই নয় যে সব রাজাকারের কাছ থেকে সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে , রাজাকারদের মধ্যে অনেকেই , যাদের পদবী উঁচু , এরা বাঙালীদেরকে তীব্রভাবে ঘৃণা করে।

রাজাকারদের ভেতরে বড় অংশটি যখন মুক্তিবাহিনীর আনুগত্য দেখানোর চেষ্টা করছে তখন বাকী অংশটি অনেকটা নিষ্ক্রিয় ভাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সাথেই পক্ষেই থাকছে।

দ্বৈত চরের কাজটা রাজাকারদেরকে ভালোই মানিয়েছে।

একদিককার চর হিসেবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে তারা মুক্তিবাহিনীর ব্যাপারে অতটুকুই তথ্য দিতো যতটুকুতে মুক্তিবাহিনী কোন বিপদে বা ঝামেলায় পড়ার আশংকা থাকতোনা।

মূলত দ্বৈত চরের কাজ করে রাজাকাররা নিজেদের চামড়া বাচাতে চেয়েছিলো।

মে মাসে পাকিস্তান সেনাবাহিনী রাজাকার বাহিনী তৈরী করার পর হাজার সংখ্যায় রাজাকাররা গেরিলাদের হাতে মারা পড়েছে।
রাজাকার বাহিনীতে যারা যোগ দিয়েছে - এরা মুক্তিবাহিনীর জিঘাংসার মুখে পড়েছে , কারন ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা ঘোষনার পর থেকে এরা খুন -লুট - অগ্নিসংযোগ করে বেড়িয়েছে।

মুক্তিবাহিনীর একজনের মতে রাজাকাররা এখন সম্পূর্নভাবে একটি পথচ্যুত একটি দল এবং এদের খুব কমই সক্রিয় দেখা যায়।

শতশত রাজাকার এরই মধ্যে আত্নসমর্পন করেছে মুক্তিবাহিনীর হাতে এবং অন্যান্য সেক্টরে এখনো আত্নসমর্পন করছে।
এই গেরিলার মতে রাজাকাররা গেরিলাদেরকে সহায়তা করার কারন তারা বুঝতে পেরেছে পাকিস্তান জিততে পারবেনা।

___________________________

স্বাধীন জন্মভূমির সকল শহীদ এবং জীবিত বীর মুক্তিসেনানীর প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা আর কৃতজ্ঞতা নিয়েই ব্লগটি শেষ করছি।

" তোমাদের এই ঋন কোনদিনও শোধ হবেনা "





অ্যাটাচমেন্ট :বাংলা ব্লগ দিবস প্রতিযোগীতা
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ২:০১
১৫২টি মন্তব্য ১৩৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×