ভালো থাকার রসদগুলো নাই হয়ে গেছে। মন ভীষণ রকম খারাপ। আর মন উসখুশ করলেই আমার জ্ঞান বিতরণের খায়েশ জাগে। তবে আজ ভালো জ্ঞান নয়। মন খারাপ, তাই আজকের প্রদেয় জ্ঞানটাও খারাপ।
আদিরসে যাদের অ্যালার্জি আছে তারা দয়া করে নিজ দায়িত্বে দূরত্ব বজায় রাখুন।
'মাইনকাচিপা' শব্দটি নিশ্চয়ই শুনেছেন। ক্ষেত্রবিশেষে হয়তো ব্যবহারও করেছেন। তবে শব্দটির উৎপত্তি নিয়ে কারো কোন ধারণা আছে কি?
না থাকলে একটি গল্প বলি। গল্পের স্থান পুরান ঢাকা। এই পুরান ঢাকায় বিশাল বাড়ির মালিক এক ব্যক্তি। ব্যাচেলর মানুষ। বাড়ি আর মন দুটোই খা খা করে। তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বিয়ে করবেন। এবং তিনি বিয়ে করে ফেললেন।
গল্পে বিয়েটা মুখ্য নয়। তাই বিয়ের কয়েকমাস পরে চলে যাই।
ভালোই চলছিল সংসার। হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই কোথ্থেকে এক মাংকি মানে বানর এসে বাসা বাঁধে সেই বাড়ির উঠোনের বিশাল এক গাছে। সেই বানরও ব্যাচেলর আই মিন একা।
বানরের অত্যাচারে স্বামী-স্ত্রী নাজেহাল। খাবার-দাবার আর গৃহস্থালি জিনিস চুরি তো আছেই সাথে বানরের ফটোগ্রাফিক অনুকরণ । সেই ব্যক্তি যা করে বানরটিও সাথে সাথে তাই করে।
দেখা গেল দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে সবে নতুন বউকে একটু আদর করবেন বলে ইতিউতি দেখছেন তখনই দৃশ্যপটে হাজির ফিচেল বাঁদর।
এদিকে গরমকাল। ঘরের জানালা বন্ধ করলে ঘেমে নেয়ে একাকার হতে হয়। কেলেংকারি দশা।
অনেক ভেবে চিন্তে সেই ব্যক্তি অবশেষে বুদ্ধি পেলেন। বুদ্ধি মোতাবেক যোগাড় করলেন একটি গাছের গুঁড়ি, যার ঠিক মাঝখানে একটা গোল গর্ত। গাছের গুঁড়িটি তিনি রেখে দিলেন বানরের বাসস্থান সেই গাছটির ঠিক নিচে।
এবার প্ল্যান মোতাবেক কাজ। দুপুরবেলা বাসার কাজের লোক চলে গেলে বাসা একদম ফাঁকা। খালি বাসায় তিনি বউকে আদর করার প্রস্তুতি নিলেন।
তবে বিছানায় নয়। বারান্দায়। যাতে বানরটি সব স্পষ্ট দেখতে পায়। লজ্জায় বউটি চোখ মেলে তাকাতে পারছেনা। তবে ব্যক্তিটির লজ্জা পেলে চলবে কেন? উনি বিশেষ ভঙ্গিমায় আদর করছেন আর আঁড়চোখে বানরের কর্মকাণ্ড দেখছেন।
বানর লোকটির উদ্দাম ক্রিয়া দেখে অনুকরণের চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু আশেপাশে সঙ্গিনী কই? শেষমেশ তার চোখে পড়ে সেই গাছের গুঁড়ি।
ব্যাস্, আর যায় কোথা। গাছ থেকে নেমে বানর বাবাজি সরাসরি সেই গুঁড়ির মাঝখানের গর্তে। মানে বানরের ইয়ে আর কি...
লোকটির মত সেও সেই গুঁড়ির গর্তে ইন অ্যান্ড আউটের চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু কিন্তু কিন্তু ততক্ষণে সর্বনাশ যা হবার হয়ে গেছে।
বানরটির দশা দেখে লোকটি ঢাকাইয়া ভাষায় সোল্লাসে চেঁচাতে থাকে - 'মাংকি চিপায় পড়ছে, মাংকি চিপায় পড়ছে'।
অবশ্য সে বানরকে বোঝাতে ইংরেজি মাংকি শব্দটি ব্যবহার করেছিল নাকি তা আজও রহস্য। তবে তার উত্তেজিত অবস্থার কারণে বাক্যটি শোনা যায় ঠিক এভাবে- 'মাইনকা চিপায় পড়ছে।'
এরপর বানরটির কি হয়েছিল তা জানা যায়নি। তবে সেই থেকে আমরাও 'মাইনকা চিপায়'।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ২:৩৫