somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

৪র্থ পর্ব : বাংলার শব্দভাণ্ডার

১১ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওহি।
এই জিনিসটি আপনার কিংবা আপনার সন্তানের টেবিলে রয়েছে। আমি নিশ্চিত করেই বলতে পারি।

ওহি শব্দটা শুনে আপনি একজন অমুসলিম হলে বলে উঠবেন, না না আপনার কথা ঠিক হয় নি, আমার বা আমার সন্তানের টেবিলে কুরআন বা কুরআন জাতীয় কোন কিছুই নেই। কিন্তু তারপরও আমি বলছি, অবশ্যই আছে।

ব্যাপারটায় অবাক হলেও ঘটনাটা সত্য। নিখাঁদ আরবি শব্দ ওহি থেকেই বই শব্দের উৎপত্তি। কিভাবে? দেখুন তাহলে- বই শব্দটির পূর্বরূপ হলো বহি। এখনো সাধু ভাষায় এটা প্রচলিত। ওহি থেকে বহি শব্দের উৎপত্তি। আরবি ওয়াও বর্ণটি ‘ব’-এর মত উচ্চারিত হয়। সুতরাং বই > বহি > ওহি। বাংলায় এসে ওহি শব্দটির মূল অর্থ 'প্রত্যাদেশ'ও পরিবর্তন হয়ে যায়। এমনই ঘটে থাকে। এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় শব্দ এসে অনেক সময় কিঞ্চিত বা সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে যায় এর অর্থ বা শব্দের রূপ কিংবা দুটোই। বই শব্দটির প্রতিশব্দ পুস্তক। এটিও বিদেশি ফারসি শব্দ। অপর প্রতিশব্দ ‘গ্রন্থ’ সংস্কৃত শব্দ।

এভাবে বিভিন্ন ভাষা থেকে, নানা উৎসমূল থেকে শব্দ এসে আমাদের ভাষা হয়েছে সমৃদ্ধ। আমরা এখন প্রায় দেড় লক্ষ শব্দের মালিক।

পৃথিবীর কোনো ভাষাই মৌলিক নয়। বাংলা ভাষাও এর ব্যতিক্রম নয়। বাঙালির মাতৃভাষা বাংলার শব্দসম্ভার দেশি, বিদেশি, সংস্কৃত, প্রাকৃত— যে ভাষা থেকেই আসুক না কেন, এখন তা বাংলা ভাষার নিজস্ব সম্পদ। বাংলা ভাষা কারও কাছ থেকে ধার করা ভাষা নয় বরং সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা।

বাংলা বানানের ব্যাপারে বুৎপত্তি অর্জন করতে হলে প্রথমে শব্দ সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকা দরকার। কারণ শুধুমাত্র সংস্কৃত শব্দ ছাড়া দেশি, বিদেশি, তদ্ভব সকল শব্দের বানান ভীষণ সহজ। এসব শব্দে 'ী'-কার, 'ূ'-কার, ণ-ত্ব, ষ-ত্ব-এর বিধান নেই। আর এসব ক্ষেত্রেই বানানে বেশি ভুল হয়।

এবার দেখা যাক বাংলা ভাষার কিভাবে উৎপত্তি হলো, বাংলা শব্দগুলোই বা কিভাবে আসলো? নিচে লক্ষ্যণীয়:


ভাষার ক্রমবিকাশ

গবেষকদের মতে বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় সাত হাজার ভাষা প্রচলিত আছে। অবশ্য সব ভাষার লিপি নেই। আবার লিপি আছে, কিন্তু কিছু ভাষাকে মাতৃভাষা হিসেবে ব্যবহারের মানুষ নেই। যেমন, লাতিন ও সংস্কৃত ভাষা। আর পৃথিবীতে প্রচলিত প্রধান ভাষাগুলোর একটি সম্পর্ক লক্ষ্য করে ভাষাবিজ্ঞানীরা এদের পরিবারভুক্ত করেছেন। এই ধারায় আমাদের বাংলাসহ গ্রিক, ল্যাটিন, ইংরেজি, হিন্দি, ফারসি, ফরাসি, ডাচ, নেপালি ইত্যাদি ভাষা হচ্ছে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের অন্তর্ভুক্ত। (সৌরভ সিকদার : মানব ভাষার গল্প)

ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশ বলতে মূল ভাষাগোষ্ঠীকে বোঝায়। ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে খ্রিস্টপূর্ব আনুমানিক পাঁচ হাজার বছর পূর্বে এই মূল ভাষার অস্তিত্ব ছিল। ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশে আছে অনেকগুলো ভাষা-শাখা, যার একটি হচ্ছে ভারতীয় আর্যভাষা।

বাংলা ভাষার উৎপত্তি
বৈদিক ভাষা থেকে বাংলা ভাষা পর্যন্ত বিবর্তনের প্রধান তিনটি ধারা :
ক. প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা—বৈদিক ও সংস্কৃত
খ. মধ্য ভারতীয় আর্যভাষা—প্রাকৃত ভাষা (অপভ্রংশ)
গ. নব্য ভারতীয় আর্যভাষা—বাংলা, হিন্দি, গুজরাটি, প্রভৃতি।

ভারতীয় আর্যভাষার প্রাচীন ভাষাগুলোকে বলা হয় প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা। প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষার স্তর তিনটি—
ক. বৈদিক ভাষার স্তর
খ. সংস্কৃত ভাষার স্তর
গ. বৌদ্ধ ভাষার স্তর

বৈদিক ভাষা যখন সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য হয়ে ওঠে তখন ব্যাকরণবিদগণ নানা নিয়ম বিধিবদ্ধ করে একটি মানসম্পন্ন ভাষা সৃষ্টি করেন, যার নাম সংস্কৃত যা খ্রিষ্টপূর্ব ৪০০ অব্দের দিকে চূড়ান্তভাবে বিধিবদ্ধ হয় ব্যাকরণবিদ পাণিনির হাতে। এর পাশাপাশি প্রচলিত ছিল প্রাকৃত ভাষা। এ প্রাকৃত ভাষাগুলোর শেষ স্তরের নাম অপভ্রংশ। বিভিন্ন অপভ্রংশ থেকেই উৎপন্ন হয়েছে নানান আধুনিক ভারতীয় আর্যভাষা—বাংলা, হিন্দি, গুজরাটি, মারাঠি, পাঞ্জাবি প্রভৃতি ভাষা। তাই এগুলো ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাবংশের সদস্য।

প্রাকৃত শব্দের ভাষাগত অর্থ প্রকৃতি বা জনসাধারণের ভাষা। প্রাকৃত ভাষা মুখ্যত কথ্য ভাষা হলেও তার সুনির্দিষ্ট ব্যাকরণ ছিল এবং তাতে কাব্য, নাটক ইত্যাদি রচিত হয়েছিল। অঞ্চল ভেদে প্রাকৃত ভাষা কয়েকটি শ্রেণীতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে শৌরসেনী প্রাকৃত, মহারাষ্ট্রী প্রাকৃত, মাগধী প্রাকৃত, পেশাচী প্রাকৃতের নাম উল্লেখযোগ্য। বর্তমান ভারতবর্ষের পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত বিহার রাজ্যের প্রাচীন নাম ছিল মগধ রাজ্য। এখানে যে প্রাকৃত ভাষা প্রচলিত ছিল তার নাম মাগধী প্রাকৃত।

এই সকল প্রাকৃত ভাষা জনসাধারণ কর্তৃক নিত্য ব্যবহারের ফলে ক্রমেই উচ্চারণে শৈথিল্য ঘটতে থাকে। ফলে নানারূপ অপভ্রংশের উদ্ভব হয়। মাগধী প্রাকৃত কালক্রমে বিকৃত হয়ে যে রূপ ধারণ করে তাই মাগধী অপভ্রংশ। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে, পূর্ব ভারতে প্রচলিত মাগধী অপভ্রংশ থেকেই খ্রিষ্টীয় দশম শতকের কাছাকাছি সময়ে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে। তবে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতে সপ্তম শতকে অর্থাৎ ৬০১-৭০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বাংলা ভাষার উদ্ভব হয়েছে।

এ বিষয়ে সর্বপ্রথম জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন স্পষ্ট মত প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, মাগধী প্রাকৃতের পূর্বাঞ্চলীয় রূপ থেকেই জন্ম নিয়েছে বাংলা ভাষা।

ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসনের মতামতকে আরও বিশ্লেষণাকারে প্রকাশ করেন। তিনি উল্লেখ করেছেন মাগধী অপভ্রংশের তিনটি শাখা। পূর্ব-মাগধী অপভ্রংশ, মধ্য-মাগধী অপভ্রংশ এবং পশ্চিম-মাগধী অপভ্রংশ। তাঁর মতে, এই পূর্ব-মাগধী অপভ্রংশ থেকেই জন্ম নিয়েছে বাংলা, আসামি ও উড়িয়া ভাষা। তাই আসামি ও উড়িয়ার সাথে বাংলার সম্পর্ক খুবই ঘনিষ্ঠ।

অবশ্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি একটি প্রাকৃতের নাম দিয়েছেন গৌড়ী প্রাকৃত। তাঁর মতে, গৌড়ী প্রাকৃতের পরিণত রূপ গৌড় অপভ্রংশ থেকে উৎপত্তি ঘটে বাংলা ভাষার।

বাংলা ভাষার ইতিহাসকে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা হয় :

১. প্রাচীন বাংলা (৯০০/১০০০ খ্রিস্টাব্দ – ১৪০০ খ্রিস্টাব্দ) — লিখিত নিদর্শনের মধ্যে আছে চর্যাপদ, ভক্তিমূলক গান; আমি, তুমি, ইত্যাদি সর্বনামের আবির্ভাব; ক্রিয়াবিভক্তি -ইলা, -ইবা, ইত্যাদি। ওড়িয়া ও অসমীয়া এই পর্বে বাংলা থেকে আলাদা হয়ে যায়।

২. মধ্য বাংলা (১৪০০–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ) — এ সময়কার গুরুত্বপূর্ণ লিখিত নিদর্শন চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তন; শব্দের শেষে “অ” ধ্বনির বিলোপ; যৌগিক ক্রিয়ার প্রচলন; ফার্সি প্রভাব। কোন কোন ভাষাবিদ এই যুগকে আদি ও অন্ত্য এই দুই ভাগে ভাগ করেন।

৩. আধুনিক বাংলা (১৮০০ খ্রিস্টাব্দ থেকে) — ক্রিয়া ও সর্বনামের সংক্ষেপন (যেমন তাহার → তার; করিয়াছিল → করেছিল)।

বাংলা ভাষা ঐতিহাসিকভাবে পালির সাথে বেশি সম্পর্কিত হলেও মধ্য বাংলায় (চৈতন্য যুগে) ও বাংলা সাহিত্যের আধুনিক রনেসঁসের সময় বাংলার ওপর সংস্কৃত ভাষার প্রভাব বৃদ্ধি পায়। দক্ষিণ এশিয়ার আধুনিক ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগুলোর মধ্যে বাংলা ও মারাঠির শব্দভাণ্ডারে প্রচুর সংস্কৃত শব্দ রয়েছে; অন্যদিকে হিন্দি ও অন্যান্য ভাষাগুলো আরবি ও ফার্সি দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে।

বাংলার ভাণ্ডারে কত শব্দ
সাধারণভাবে প্রচলিত যে, বাংলা ভাষায় প্রায় দেড় লাখ শব্দ রয়েছে। এ শব্দগুলোর সবই অভিধানভুক্ত নয়। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলা শব্দের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে যাবে। আবার অনেকে মনে করেন, সংখ্যাটি চার লাখের কম হবে না। তবে বাংলার সব শব্দ সংকলনের ব্যাপকভিত্তিক কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয় নি।

একশত বছর আগে ১৯১৭ সালে প্রকাশিত হয় বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় অভিধান জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাসের ‘বাংলা ভাষার অভিধান’। তাতে প্রায় ৭৫ হাজার বাংলা শব্দ সংকলিত হয়। তারপর ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত দ্বিতীয় সংস্করণে শব্দসংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার। ১৯৬১ সালে পূর্ব বাংলায় অভিধান প্রণয়নের কাজ শুরু করে বাংলা একাডেমি। এ জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি করে দেয়া হয়। এ কমিটিতে ছিলেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মুনীর চৌধুরী, অজিত কুমার গুহ ও আহমদ শরীফের মতো পণ্ডিতরা। সমসাময়িক অন্যান্য বিশেষজ্ঞও নানাভাবে যুক্ত হন এ প্রক্রিয়ায়। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ১৯৭৪ সালে ড. মুহম্মদ এনামুল হকের সম্পাদনায় স্বরবর্ণ অংশ, ১৯৮৪ সালে অধ্যাপক শিবপ্রসন্ন লাহিড়ীর সম্পাদনায় ব্যঞ্জনবর্ণ অংশ এবং ১৯৯২ সালে অখণ্ড পূর্ণাঙ্গ সংস্করণ ‘বাংলা একাডেমী ব্যবহারিক বাংলা অভিধান’ নামে প্রকাশিত হয়। ২০০০ সালে প্রকাশিত হয় পরিমার্জিত সংস্করণ। এতে ভুক্তি ও উপভুক্তি মিলে মোট ৭৩ হাজার ২৭৯টি শব্দের অভিধা পাওয়া যায়। এ অভিধানের আরেকটি সংস্করণ আগামী জুনে প্রকাশিত হওয়ার কথা। এ নতুন সংস্করণে নতুন দুই হাজার শব্দ সংযুক্ত হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ অভিধানের হিসাব মতে বাংলা শব্দের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে সাকল্যে ৭৫ হাজার।

তবে সর্বশেষ ফেব্রুয়ারি ২০১৪-তে বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত হয়েছে ‘বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধান’- এটিই এযাবৎকালের বাংলা ভাষার সবচেয়ে বড় অভিধান। এতে প্রায় দেড় লাখ শব্দ যুক্ত হয়েছে। এ হিসাবে গত ১০০ বছরে বাংলার শব্দ সংকলনে যুক্ত হয়েছে ৩৫ হাজার শব্দ।

জাতীয় জ্ঞানকোষ ‘বাংলাপিডিয়া’র প্রধান সম্পাদক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের বলেন, বাংলা একাডেমির অভিধানে সংকলিত শব্দসংখ্যা দিয়ে বাংলা শব্দভাণ্ডারের শব্দসংখ্যা নির্ধারণ করা যাবে না। কারণ বাংলা একাডেমি যে অভিধানগুলো করেছে, তা সাহিত্যভিত্তিক। বিবর্তনমূলক বাংলা অভিধানে যুক্ত হয়েছে সেসব শব্দ, যা বাংলা সাহিত্যে ঢুকেছে। এর বাইরে তো অগণিত শব্দ রয়ে গেছে। অধ্যাপক সিরাজুল ইসলামের মতে, আমাদের ভূখণ্ডের সব যুগের, সব শ্রেণীর, সব ধর্মের, সব সংস্কৃতির শব্দকে সংকলিত করলে বাংলা শব্দের সংখ্যা দুই লাখের কম হবে না। কিন্তু এ রকম শব্দ সংকলনের কোনো উদ্যোগ এখনো গ্রহণ করা হয় নি। এশিয়াটিক সোসাইটি ২০০৯ সালের দিকে এ রকম একটি উদ্যোগ নিলেও তা নানা কারণে সফল হয় নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক সৌমিত্র শেখরের মতে, বাংলা শব্দভাণ্ডারে শব্দসংখ্যা চার লাখের কম হবে না। এ ব্যাপারে ব্যাপকভিত্তিক কোনো গবেষণা না হওয়ার কারণে প্রকৃত সংখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি জানান। (কালের কণ্ঠ, ২১.০২.২০১৪)

যদি চার লাখ বাংলা শব্দ থেকে থাকে, তাহলে ঘটনা কত বড়, ভাবা যায়? মাত্র দেড় লাখ শব্দ অভিধানভুক্ত করা গেছে, আর সাহিত্যে আছে তার অর্ধেক- পঁচাত্তর হাজার। বেশির ভাগ শব্দই কথায় আছে লেখায় নেই। সেই আড়াই লাখ শব্দ দিয়ে তো নতুন আরেকটা ভাষাই বানানো যায়। সত্যি বিরাট ব্যাপার, অবাক করা ঘটনা!

বাংলার প্রধান শব্দভাণ্ডার
বাংলা ভাষার শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগ শব্দই হলো তদ্ভব ও তৎসম শব্দ। অর্থাৎ শতকরা ৬০ ভাগ সংস্কৃত বা প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা থেকে তৈরি দেশি তদ্ভব শব্দ, শতকরা ২৫ ভাগ সংস্কৃত শব্দ। আর মাত্র অল্প কিছু শব্দ আছে স্থানীয় দেশি শব্দ।

যেসব শব্দ সংস্কৃত ভাষা থেকে সোজাসুজি বাংলায় এসেছে এবং যাদের রূপ অপরিবর্তিত রয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তৎসম শব্দ। তৎসম একটি পারিভাষিক শব্দ। এর অর্থ {তৎ (তার)+সম (সমান)}=তার সমান অর্থাৎ সংস্কৃত। উদাহরণ : চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, ভবন, ধর্ম, পাত্র, মনুষ্য, কৃষ্টি, তুষ্ট ইত্যাদি। বাংলা ভাষার প্রায় এক-চতুর্থাংশ শব্দ এই শ্রেণীর।

যেসব শব্দ প্রাচীন ভারতীয় আর্যভাষা (যার অন্যতম লিখিত রূপ সংস্কৃত ভাষা) থেকে বিভিন্ন স্তরের মাধ্যমে ক্রমপরিবর্তিত হয়ে বাংলায় রূপান্তরিত হয়েছে, সেসব শব্দকে বলা হয় তদ্ভব শব্দ। এসব শব্দের মূল সংস্কৃত ভাষায় পাওয়া যায়, কিন্তু ভাষার স্বাভাবিক বিবর্তন ধারায় প্রাকৃতের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয়ে আধুনিক বাংলা ভাষায় স্থান করে নিয়েছে। তদ্ভব একটি পারিভাষিক শব্দ। এর অর্থ, 'তৎ' (তার) থেকে 'ভব' (উৎপন্ন)। যেমন সংস্কৃত—হস্ত, প্রাকৃত—হত্থ, তদ্ভব—হাত। সংস্কৃত—চর্মকার, প্রাকৃত—চম্মকার, তদ্ভব—চামার ইত্যাদি। এই তদ্ভব শব্দগুলোকে খাঁটি বাংলা শব্দও বলা হয়। বাংলা ভাষার শতকরা প্রায় ৬০টি শব্দই তদ্ভব।

বাংলাদেশের আদি অধিবাসীদের ভাষা থেকে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করেছে তাদের দেশি শব্দ (বা অজ্ঞাতমূল ভারতীয় শব্দ) বলে। যেমন : একটা, কয়লা, কাকা, কামড়, কুলা, কুড়ি, খড়, খবর, খাতা, খাঁচা, খুকি, খোকা, খোঁপা, খোঁড়া, খোঁচা, গণ্ডা, গলা, গয়লা, চঙ্গ, চাঙ্গা, চাউল, ছাল, ছাই, ঝাউ, ঝাল, ঝিঙা, ঝোল, টোপর, ঠাটা, ডাগর, ডাহা, ডাঁসা, ডিঙি, ঢিল, ঢুড়া, ঢেউ, ঢেঁকি, ঢোল, ধিঙি, ধুচুনি, ধুতি, নেকা, নেড়া, পয়লা, পেট, পেটরা, মই, মাচা, মেকি, যাঁতা, লাঠি, বাদুড়, বোরা, বাখারি, বোবা ইত্যাদি।

নানা ভাষার নানা শব্দ
বিভিন্ন কালে বিভিন্ন বিদেশি জাতির সংস্পর্শে আসার ফলে তাদের ভাষা থেকে যেসব শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করে পরবর্তী সময় সেসব শব্দ বাংলা ভাষারূপে প্রচলিত হয়েছে। এভাবে বাংলা ভাষায় প্রায় হাজার দশেক আরবি-ফারসি শব্দ এসেছে। ফারসির মধ্য দিয়ে অনেক আরবি এবং কিছু তুর্কি শব্দ এবং অত্যল্প পোষতু শব্দ বাংলায় প্রবেশ করেছে। বাংলা ভাষায় অসংখ্য ইংরেজি শব্দ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। ইউরোপ, এশিয়া, আফ্রিকা, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ার নানা ভাষার শব্দ প্রথমে ইংরেজিতে গৃহীত হয়ে পরে ইংরেজি শব্দরূপেই বাংলায় আসছে। যেমন- জেব্রা (সাউথ আফ্রিকা), ক্যাঙ্গারু (অস্ট্রেলিয়া), কুইনাইন (পেরু), রিক্সা (জাপানি), লামা (তিব্বত), বলশেভিক (রুশ), লিচু (চীন দেশীয়), সাগু (মালয়) ইত্যাদি।

প্রথমে যে বিদেশি জাতির সঙ্গে বাংলা ভাষার যোগাযোগ ঘটে তারা হলো—আরবি, ইরানি ও তুর্কি মুসলমান। এ সুযোগে তাদের ভাষা আরবি, ফারসি ও তুর্কি হতে বহু শব্দ গ্রহণ করে বাংলা ভাষা সমৃদ্ধ হয়েছে।

আরবি শব্দ : বাংলায় ব্যবহৃত আরবি শব্দগুলোকে তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যায়।
ক. ধর্মসংক্রান্ত শব্দ : আল্লাহ, ইসলাম, ঈমান, ওজু, কুরবানি, কুরআন, কিয়ামত, গোসল, জান্নাত, জাহান্নাম, তওবা, তসবিহ, জাকাত, হজ, হাদীস, হারাম, হালাল ইত্যাদি।
খ. প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক শব্দ : আলেম, ইনসান, ঈদ, গায়েব, নগদ, বাকি, মহকুমা, আইন, কানুন, আদালত, মোকদ্দমা, উকিল, মোক্তার, নাজির, মুন্সেফ, রায়, ওজর, এজলাস, খারিজ ইত্যাদি।
গ. শিক্ষা সংক্রান্ত শব্দ : কলম, কিতাব, দোয়াত, এলেম, নকল, তরজমা, হরফ, মক্তব, মাদ্রাসা, আলেম, আদব, কায়দা, কেচ্ছা ইত্যাদি।

ফারসি শব্দ : বাংলা ভাষায় আগত ফারসি শব্দগুলোকে আমরা ছয় ভাগে ভাগ করতে পারি।
ক. ধর্মসংক্রান্ত শব্দ : খোদা, গুনাহ, দোজখ, নামাজ, পয়গম্বর, ফেরেশতা, বেহেশত, রোজা ইত্যাদি।
খ. প্রশাসনিক ও সাংস্কৃতিক শব্দ : কারখানা, চশমা, জবানবন্দি, তারিখ, তোশক, দপ্তর, দরবার, দোকান, দস্তখত, দৌলত, নালিশ, বাদশাহ, বান্দা, বেগম, রসদ ইত্যাদি।
গ. আইন-আদালত সংক্রান্ত শব্দ : নালিশ, তামাদি, মেয়াদ, দারোগা, পাইক-পেয়াদা, সালিস, জরিমানা, জেরা, কয়েদ, জবানবন্দি, আসামি, ফরিয়াদি, ফয়সলা ইত্যাদি।
ঘ. শিক্ষা সংক্রান্ত শব্দ : কাগজ, খাতা, গজল ইত্যাদি।
ঙ. জাতি ও ব্যবসায়বাচক শব্দ : হিন্দু, ইহুদি, ফিরিঙ্গি, দরজি, দোকানদার, কারিগর, কলাইগার, যাদুকর, ভিস্তি, মেথর, কসাই, বাজিকর, চাকর, নফর, খেদমতগার, সহিস, খানসামা ইত্যাদি।
চ. বিবিধ শব্দ : আম, আমদানি, জানোয়ার, জিন্দা, নমুনা, বদমাস, রপ্তানি, হাঙ্গামা, আওয়াজ, হাওয়া, ওজন, কমবেশি, খবর, কোমর, বগল, গরম, জাহাজ, দরকার, নরম, পেশা, পছন্দ, বাহবা, আফসোস, মজবুত, হুশিয়ার, হজম, সাদা, লাল, সবুজ ইত্যাদি।

এ ছাড়া ফারসি বিভক্তি ও প্রত্যয়ের মাধ্যমেও বাংলা ভাষায় অনেক শব্দ তৈরি হয়েছে। তদ্ধিত প্রত্যয়ে ঈ (যথা- বিলাতী, দেশী, জাপানী...) দান, দানী, (যথা- ফুলদান, পিকদান, আতরদানী, সুরমাদানী...), দার, দারী (যথা- দোকানদার, পোদ্দার, তহসিলদার...), খোর ( যথা- গুলিখোর, তামাকখোর...), বাজ (যথা- মকদ্দমাবাজ, ফন্দিবাজ...), গিরি (ফারসি গরী, যথা- কেরানীগিরি, বাবুগিরি...) ইত্যাদি বিভক্তিগুলো ফারসি হতে গৃহীত।

মুসলিম যুগের শেষ দিকে পর্তুগিজ, ফরাসি, দিনেমার, ওলন্দাজ ও ইংরেজ জাতি এদেশে আসে। তাদের সঙ্গে মেলামেশার ফলে পাশ্চাত্য ভাষার অনেক শব্দ গ্রহণ করে বাংলা ভাষা শ্রী ও মাধুর্য বৃদ্ধি করেছে। এসব শব্দ বিদেশি ভাষা থেকে গ্রহণ করা হলেও বর্তমানে সেগুলো বাংলা ভাষার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে। বাংলা ভাষায় আসন গ্রহণকালে এদের মূল চেহারা, উচ্চারণ বৈশিষ্ট্য, অর্থ ও তাৎপর্য অনেক ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়ে গেছে; কিন্তু ব্যুৎপত্তির বিচারে তাদের বিদেশি শব্দ বলেই আখ্যায়িত করা হয়।

বাংলা ভাষায় প্রচলিত কতগুলো বিদেশি শব্দের উদাহরণ :

ইংরেজি শব্দ : ইংরেজ শাসনামলেও তাদের নিজস্ব সাহিত্য ও সংস্কৃতির বহু শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করে। ইংরেজি শব্দ দু প্রকারের পাওয়া যায়।

অনেকটা ইংরেজি উচ্চারণে : কলেজ, টিন, নভেল, নোট, ইউনিভার্সিটি, ইউনিয়ন, পাউডার, পেন্সিল, ব্যাগ, ফুটবল, মাস্টার, লাইব্রেরি, বিয়ারিং, কোচিং, নার্সিং, ড্রয়িং, মিটিং, রিপোর্টিং, বোলিং, ওয়েটিং, শুটিং, ট্রেনিং, বোর্ডিং, বাইন্ডিং, ব্যাংক, স্কুল, স্টল, স্টাইল, স্টিমার, স্টুডিও, স্টেশন, স্টোর ইত্যাদি।

পরিবর্তিত উচ্চারণে : অফিস (Office), আফিম (Opium), ইস্কুল (School), বোতল (Bottle), বাক্স (Box), হাসপাতাল (Hospital) ইত্যাদি।

ইংরেজি ছাড়া অন্যান্য ইউরোপীয় ভাষার শব্দ :
(১) পর্তুগিজ : বর্তমানে বাংলা ভাষায় এক শতাধিক পর্তুগিজ শব্দ আছে। দৈনন্দিন প্রচলিত অনেকগুলো শব্দ পর্তুগিজ ভাষা হতে বাংলা ভাষায় এসে মিশে গেছে। যেমন : আনারস (Ananas), আলকাৎরা (Alcatrao), আলপিন (Alfinet), ইস্পাত (Espada), কপি (Cauve), কামরা (Camera), গামলা (Gamella), গুদাম (Godown), গরাদে (Grade), চাবি (Chave), জানালা (Janella), টোকা (Touca), তোলো (Talha/তোলাহাঁড়ি), নিলাম (Leilao), নোনা (Annona), পাউ (Pao/পাউরুটি), পেরেক (Prego), ফিতা (Fita), বালতি (Balde), বেশালি (Vasilha/দুধ দোহনের পাত্র), মার্কা (Marca), মাস্তুল (Mastro), মিস্ত্রি (Mestre), সুতি (Sorte), জালা (Garra) ইত্যাদি শব্দগুলো পর্তুগিজ শব্দ হতে হুবহু অথবা রূপান্তরিত হয়ে বাংলা ভাষায় এসে মিশে গেছে।
(২) ফরাসি : কার্তুজ, কুপন, ডিপো, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি। ফরাসি হতে ওলন্দাজ (Hollandais), দিনেমার (Danemare), আলেমানে (Allemagne), ইংরেজ (Anglais) ইত্যাদি জাতিজ্ঞাপক শব্দগুলো এসেছে।
(৩) ওলন্দাজ : ইস্কাপন, তুরুপ, রুইতন, হরতন ইত্যাদি।
(৪) গ্রিক : বাংলা ভাষায় গ্রিক শব্দ খুবই কম, মাত্র ৮টি শব্দ। এর প্রায় সব শব্দ এসেছে সংস্কৃতের হাত ধরে। মহামতি আলেকজান্ডারের ভারত আক্রমনের পর এ শব্দগুলো সংস্কৃত ভাষায় ঢুকে, পরে বাংলায় আসে। তবে একটি শব্দ ফারসির মাধ্যমে আসে। যেমন, সুড়ঙ্গ, কেন্দ্র, হোরা, দাম, ময়দা, জামিত্র এবং যবনিকা। ( সুড়ঙ্গ- গ্রিকে σύριγξ (syringx, গুহা); কেন্দ্র-সংস্কৃতের केन्द्र, বৃত্তের কেন্দ্র, আর গ্রিকে κέντρον (kentron, বৃত্তের মাঝের বিন্দু); হোরা- সংস্কৃতে होरा (ঘণ্টা, সময়), এবং গ্রিকে ὡρα (hōra, দিনের চব্বিশ ভাগের একভাগ সময়); দাম-গ্রিক δραχμή (drakhmē, মুদ্রার নাম) থেকে আগত সংস্কৃত द्रम्य (দ্রম্য, দাম), দ্রাখ্‌মে > দ্রম্য > দম্ম > দাম; ময়দা-গ্রিক σεμίδαλις (semidalis, মিহি গমের আটা) থেকে সংস্কৃতে समीदा (সমীদা), সেখান থেকে প্রাকৃত মীদা এবং ফারসি ميده (ময়দা); জামিত্র- গ্রিক δίαμετρον (diametron, ব্যাসরেখা) সংস্কৃত जामित्र এবং যবনিকা-গ্রিক ইওনিয়া (Ἰόνια) > যবন (यवन) > যবনিকা, জবনিকা )
(৫) ইতালি : ম্যাজেন্টা।
(৬) রুশ : বলশেভিক।

অন্যান্য ভাষার শব্দ :
(১) গুজরাটি : খদ্দর, হরতাল, জয়ন্তি ইত্যাদি।
(২) পাঞ্জাবি : চাহিদা, শিখ ইত্যাদি।
(৩) তুর্কি : চাকর, চাকু, তোপ, দারোগা ইত্যাদি।
(৪) বর্মি : লুঙ্গি, ফুঙ্গি ইত্যাদি।
(৫) হিন্দি : আচ্ছা, বাচ্চা, কুত্তা ইত্যাদি।
(৬) চিনা : লিচু, চা, চিনি ইত্যাদি।
(৭) মালয় : কাকাতুয়া, গুদা, কিরিচ, সাগু ইত্যাদি।

মিশ্র শব্দ : কোনো কোনো সময় দেশি ও বিদেশি শব্দের মিলনে শব্দদ্বৈত সৃষ্টি হয়ে থাকে। যেমন : রাজা-বাদশা (তৎসম + ফারসি), হাট-বাজার (বাংলা + ফারসি), হেড-মৌলভী (ইংরেজি + ফারসি), হেড-পণ্ডিত (ইংরেজি + তৎসম), খ্রিষ্টাব্দ (ইংরেজি + তৎসম), ডাক্তার-খানা (ইংরেজি + ফারসি), পকেট-মার (ইংরেজি + বাংলা), চৌ-হদ্দি (ফারসি + আরবি) ইত্যাদি।

পারিভাষিক শব্দ : বাংলা ভাষায় প্রচলিত বিদেশি শব্দের ভাবানুবাদমূলক প্রতিশব্দকে পারিভাষিক শব্দ বলে। এর বেশির ভাগই এ কালের প্রয়োগ। উদাহরণ : সচিব-Secretary, স্নাতক-Graduate, স্নাতকোত্তর-Post Graduate, সমাপ্তি-Final, সাময়িকী-Periodical, সমীকরণ- Equation ইত্যাদি।

বিভিন্ন ভাষা থেকে শব্দ এসে কালক্রমে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ ভাষায় রূপান্তর করেছে। বাংলা ভাষায় রয়েছে অনেক মনি-মুক্তা, বিবিধ রতন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে এসে মাইকেল মধুসূদন দত্তের এ উপলব্ধিই হয়েছিল--
''হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন;-
তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি,
পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।
..........................................
পালিলাম আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে
মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।"


(চলবে...)

১ম পর্ব - আমরা বাংলা বানান কতটুকু শুদ্ধ করে লেখি? View this link
২য় পর্ব - বাংলা বানান : আসুন এক ছাতার নিচে View this link
৩য় পর্ব- বাংলা বানানে যত বিভ্রান্তি View this link

তথ্যসূত্র :
[১] ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ; বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত (মাওলা ব্রাদার্স, ঢাকা, মার্চ ২০০৬)
[২] সৌরভ সিকদার; মানব ভাষার গল্প
[৩] অধ্যাপক মাহবুবুল হক; বাংলা বানানের নিয়ম
[৪] সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়, ভাষা-প্রকাশ বাঙ্গালা ব্যাকরণ (রূপা, বৈশাখ ১৩৯৬)
[৫] সুকুমার সেন, ভাষার ইতিবৃ্ত্ত (আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, নভেম্বর ১৯৯৪)
[৬] নাসীমুল বারী; আমার বাংলা ভাষা শিক্ষা
[৭] ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ; বাংলা সাহিত্যের কথা (মাওলা ব্রাদার্স)
[৮] অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম; ভাষাদূষণ নদীদূষণের মতোই বিধ্বংসী (প্রথম আলো, ১৫.০২.২০১২)

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:১৮
১৭টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×