somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাখাওয়াত হোসেন  বাবন
ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে "আমার কবিতা নামে" আমি ব্লগিং করি মূলত নিজের ভেতরে জেগে উঠা ব্যর্থতা গুলোকে ঢেকে রাখার জন্য । দুনীতিবাজ, হারামখোর ও ধর্ম ব্যবসায়িদের অপছন্দ করি ।

অভিজিতের হত্যাকাণ্ডের জন্য অভিজিত নিজেই দায়ী

০২ রা মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অভিজিৎ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি খবর আমি যখন পাই তখন সবে মাত্র অফিস শেষে বাসায় ফিরেছি । প্রথমে বুঝতে চেষ্টা করলাম কোন অভিজিৎ ? ব্লগ লিখছি আজ প্রায় বছর ছয়, সাত হলো । কম বেশি অনেককেই চিনি । আমি ব্যক্তিগত ভাবে একটু অলস হওয়ায় বিভিন্ন ব্লগে ছুটে বেড়াই না । ঘুরে ফিরে তিনটি ব্লগেই লিখে চলেছি । তার মধ্যে প্রথম দুটো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বাকি আছে এই ব্লগটি । তাও আবার মডারেটরের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় এই ব্লগটিও ছেড়ে দেবের হুমকি দেওয়ার একদিন পর মডারেটর তার লাল রং এর সংকেত বদলে নীল রং করে দিয়েছে ।

মডারেটরেরই বা কি দোষ আমি জন্ম থেকে ঠোট কাটা হওয়ায় কারো সঙ্গেই বেশি দিন বনিবনা হয় না । আপোষ করতে শিখিনী তাই । তারপর উপর বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয়ে সবাই কমবেশি অতন্কে আছে ।

অভিজিৎ কে চিনতে পারলাম না । কিন্তু খবরটি শুনার পর থেকে অস্থির হয়ে পরলাম । অভিজিতের আহত স্ত্রীর রক্ত মাখা পোষাকে সাহায্যের জন্য বাড়িয়ে রাখা হাত দেখে আমার বুক হাহাকার করে উঠল । সারারাত ঘুমাতে পারলাম । শুক্রবারটিও ক্যামন যেন কাটল । কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলাম না । পরিস্থিতিটা ঠিক লিখে বোঝাতে পারবো না । অভিজিৎ সম্পর্কে ধীরে ধীরে জানতে পারলাম । কিছুটা মিডিয়া, কিছুটা ব্লগ আর বাকিটা ফেসবুকের কল্যাণে । সব জানার পর আমার অভিজিতের উপর রাগ চাপল । আর অভিজিতের পরিবারের জন্য হলো দু:খ ।

অভিজিতের এই পরিণতির জন্য আমি প্রথমেই অভিজিতকে দায়ী করবো । রাজীব বা থাবা বাবার মৃত্যুর পর আমি লিখেছিলাম, আর যাই করুণ না কেন মানুষের বিশ্বাস নিয়ে খেলা করা ঠিক নয় । ধর্ম হচ্ছে যার যার বিশ্বাস । এবং একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার এখানে আঘাত করা ঠিক নয় । সবাই মুহাম্মদ নন যে সব কিছু হাসি মুখে মেনে নেবে । বাংলাদেশেও শিব সেনাদের মতো হাজার হাজার মানুষ বাস করে যারা সব কিছু সহজে নেয় না । যার যার কৃতকর্মের ফল তাকে ভোগ করতে হবে ।

অভিজিৎ তার কর্মের ফল ভোগ করেছে । নিরীশ্বরবাদ, নাস্তিকতাবাদ নিয়ে আমার একটি লেখা এই ব্লগেই রয়েছে । সেখানে আমি লিখেছি - "নাস্তিকরা কোন বিশেষ মতাদর্শের অনুসারী নয় এবং তারা সকলে বিশেষ কোন আচার অনুষ্ঠানও পালন করে না। অর্থাৎ ব্যক্তিগত ভাবে যে কেউ, যে কোন মতাদর্শে সমর্থক হতে পারে,নাস্তিকদের মিল শুধুমাত্র এক জায়গাতেই, আর তা হল ঈশ্বরের অস্তিত্ব কে অবিশ্বাস করা । একবিংশ শতাব্দীতে কয়েকজন নাস্তিক গবেষক ও সাংবাদিকের প্রচেষ্টায় নাস্তিক্যবাদের একটি নতুন ধারা বেড়ে উঠেছে যাকে "নব-নাস্তিক্যবাদ" বা "New Atheism" নামে ডাকা হয়। এরাই এখন নাস্তিকবাদ নিয়ে ফেসবুক,টুইটার আর ব্লগে নাড়াচাড়া করছে ।

নাস্তিকবাদের ভিত্তি হচ্ছে ঈশ্বর বা স্রষ্টার অস্তিত্বকে অবিশ্বাস করা । কিন্তু নাস্তিকবাদের কোথাও নেই যে, এক জন নাস্তিক কোন আস্তিককে গালাগালি করবে । কিংবা ঈশ্বর বা স্রষ্টার ব্যাঙাত্তক উক্তি বা হাসি তামাশা করবে । কিন্তু বাস্তবে তাই হচ্ছে যে, ক'জন নামধারী নাস্তিক ফেসবুক বা টুইটারে কিংবা ব্লগে রয়েছে তাদের প্রধান কাজ হচ্ছে । অন্যের ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করা । বিশেষ করে মুসলমানদের এরা বিশেষ কোন কারণে টার্গেট করে নিয়েছে ।"

অভিজিত জন্মসূত্রে হিন্দু তার পাসপোর্টেও খুব সম্ভব ধর্মের যায়গায় সনাতন লেখা । অথচ তিনি নিজেকে নাস্তিক দাবী করেছেন । অন্য সব গো মূর্খ নাস্তিকদের মতো ইসলাম নিয়ে কটূক্তি করেছেন । গালাগালি করেছেন । রাজীবের মতো ফেক আইডি খুলে সেখানে কোরআন কে বলেছেন, নাটকের পাণ্ডুলিপি । মুহাম্মদের জীবন ও তার স্ত্রীদের নিয়ে ও নানা কটূক্তি করছে । যা কিনা এইথিজম’(Atheism) বা নাস্তিকবাদের কোন সংজ্ঞায় পরে না ।

কেউ ঈশ্বর বা স্রষ্টায় বিশ্বাস না করতেই পারে তাই বলে যারা বিশ্বাসী তাদের বিশ্বাস নিয়ে গালাগালি করার অধিকার রাষ্ট্র কাউকে দেয়নি । বাংলাদেশের গুটি কয়েক নাস্তিকের বিশ্বাসই জন্মে গেছে যে, নাস্তিক মানেই হচ্ছে ইসলাম ও মুসলমানদের গালিগালাজ করা । শিক্ষার অভাব হলে যা হয় আর কি ? কি আশ্চর্যজনক ব্যাপার দেখুন , এরা নাস্তিক অথচ জন্মসূত্রে পাওয়া নাম উপাধি এফিডেফিট করে পরিবর্তন করে না । এর মানে হচ্ছে , সময় সুযোগ হলে আবার ধর্মের ঘাটে ভিড়ে যাবো । মুখে নাস্তিক অথচ নির্লজ্জের মতো ধর্মের লেবাস না সারা জীবন বয়ে চলে । করুণা হয় এদের জন্য । কোন কাজই ঠিক মতো করতে পারে না । কেউ নাস্তিক হবে নাকি আস্তিক হবে এটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার । কিন্তু অন্য-মানুষের বিশ্বাসে আঘাত করলে বিষয়টা আর ব্যক্তিগত থাকে না । হয়ে যায় সামাজিক সমস্যা । আর এ সমস্যা যদি রাষ্ট্র দক্ষ হাতে সমাধান করতে না পারে তা হলে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটতেই থাকবে ।


এতক্ষণ যা লিখলাম, তাতে আস্তিক ভাইয়েরা আমাকে হয়তো বাহবা দিচ্ছেন , থামুন পুরোটা পড়ুন তারপর বাহবা দিন । আপনাদের প্রতি প্রশ্ন , ধর্মের মালিক কে ? কে ধর্ম নাজিল করেছেন ? কে ধর্ম টিকিয়ে রেখেছেন ? উত্তর তো একটাই স্রস্টা বা আল্লাহ্‌ । তিনিই সব কিছু নির্ধারণ করেন । ভাল, মন্দ , উন্নতি অবনতি কিছুই তার ইশারা ছাড়া হয় না । তবে কেন আপনারা নাস্তিকদের ব্যাপারটা স্রস্টা বা আল্লাহর উপর ছেড়ে দেন না ? নাকি স্রস্টা বা আল্লাহর উপড় আস্তা কম ? তার উপর আস্তা রাখা তো হচ্ছে আস্তিকদের জীবনের সবচাইতে বড় পরীক্ষা । কেউ যদি স্রস্টা বা আল্লাহকে গালাগালি করে তা হলে তার ও তো লাগার কথা । তারও তো ব্যথিত বা ক্ষুব্ধ হবার কথা । কৈ তিনি তো নাস্তিকদের খাবার দাবার উন্নতি কিছুই বন্ধ করে দেননি । পৃথিবীর মাত্র ওয়ান থার্ড হচ্ছে মুসলিম বাকিরা তো সবাই বিধর্মী । মুসলমানদের তুলনায় তো তারাই বেশি শক্তিশালী । এর কারণ কি ? খুঁজুন ভাল করে খুঁজুন উত্তরটা নিজেই পেয়ে যাবেন । উত্তরটা হচ্ছে এরা ধর্ম নিয়ে এতোটা বাড়াবারই করে না । যতোটা না মুসলমানরা করে । দেশে তো আইন আদালত রয়েছে - কৈই দেখলাম না তো কেউ রাজীব বা অভিজিতের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়ে মামলা করেছেন । যদি প্রমাণসহ মামলা করতেন তা হলে তো আর এসব হত্যাকাণ্ডের বোঝা কাঁধে নিতে হতো না । ইসলাম সব চাইতে বড় অপরাধ হচ্ছে, নর হত্যা । আর সেই কাজটিই কিনা আস্তিকদের দিয়ে ইবলিস মিয়া দিব্যি করিয়ে নিচ্ছে । এ দেশের কম জানা আস্তিকদের জন্য ও করুণা হয় ।

যে কোন হত্যাকাণ্ডই জঘন্য অপরাধ । আমি একজন ব্লগার হিসাবে চাই অভিজিতের হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত রহস্য বের করা হোক । কেননা এই পর্যন্ত যাই মিডিয়াতে প্রচার হচ্ছে তার সবাই অনুমান ভিত্তিক । কেউ ই সঠিক ভাবে বলতে পারেনি অভিজিতকে প্রকৃত পক্ষে কারা হত্যা করেছে । যারা মৌলবাদীদের দোষ দিচ্ছে তারা অনুমানের উপর ই দিচ্ছে । যেহেতু অভিজিত ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে লিখত তাই তাকে মৌলবাদীরাই হত্যা করছে । এটা অনুমান ভিত্তিক ধারণা । আশা করবো আইন শৃঙ্খলা বাহিনী । খুনিদের ধরতে সক্ষম হবে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:০২
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×