somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘুরে এলাম কক্সবাজার, আপনি ও ঘুরে আসুন জেনে নিন টুকিটাকি .........."কক্সবাজার ভ্রমন"

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


গতবছর থেকেই ভাবছিলাম পুরো ফ্যামিলি নিয়ে কক্সবাজার ঘুরে আসবো । কিন্তু মেয়ে অসুস্থ হয়ে পরায় আর যাওয়া হয়নি । এ বছর তাই নভেম্বর মাস থেকে কক্সবাজার ঘুরে আসার পরিকল্পনা শুরু করলাম । মেয়ের জন্যই যাওয়া । বেশ ক'বার বায়না ধরেছে সমুদ্র দেখবে । টিভিতে সমুদ্র দেখে দেখে মেয়েটা অস্থির হয়ে পরেছে । সমুদ্র তার দেখতেই হবে । মাত্র সাত বছর বয়স । অথচ কি পাকনা পাকনা কথা আর কতো কি প্রশ্ন ।

নভেম্বরের শেষের দিকে ওদের পরীক্ষা শুরু হবার আগে আগে আনুষ্ঠানিক ঘোষুন দিলাম পরীক্ষা যদি ভাল ভাবে দাও তা হলে যে দিন পরীক্ষা শেষ হবে, তার পরদিনই আমরা কক্সবাজার যাবো । ছেলে মেয়ে খুশিতে বাক বাকুম করে উঠল । অফিস থেকে এক সপ্তাহের ছুটি কনফার্ম করার পর বাসায় ফিরে আয়েশি ভঙ্গিতে চা খেতে খেতে স্ত্রীকে বললাম, প্রস্তুতি নাও ১৪ তারিখ ছেলে মেয়ের পরীক্ষা হলে, আমরা ১৭ তারিখ কক্সবাজার যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ । আনুষ্ঠানিক ঘোষুনা হয়ে যাওয়ায় সবাই মধ্যে একটা খুশি খুশি ভাব চলে এলো । আমার ইচ্ছে সেন্টমাটিন ঘুরে আসার । কক্সবাজার অনেক বার যাওয়া হলেও সেন্টমাটিন যাওয়া হয়নি । এবার তাই ইচ্ছে ঘুরে আসবো । স্ত্রীকে তা বলায় উনি রাজি হয়ে গেলেন ।

প্রস্তুতি :

ফ্যামিলি নিয়ে কোথাও যেতে হলে খুব ভাল করে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত । প্রস্তুতি যতো ভাল হবে ট্যুর ততো নিরাপদ আর সুন্দর হবে । এ কথাটা, স্কাউট করার সময়ই শিখেছি । তাই মনে মনে প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করলাম । প্রথমেই নোট খাতায় টুকে নিলাম কি কি করতে হবে । যেহেতু অনেক আগে গিয়েছি, তাই সব ইনফরমেশন নেই । নতুন করে যোগার করতে হবে । যেমন কি ভাবে যাবো ? কি ভাবে ফিরবো ? কোন হোটেলে থাকবো ? কি কি খাবো ? কোথায় কোথায় ঘুরবো ইত্যাদি ইত্যাদি । খরচ কম করে কিভাবে ভাল ভাবে ট্যুর শেষ করা যায় সেই প্রস্তুতি আর কি । মধ্য বৃত্ত মানুষের সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে অর্থ । তাই সর্বত্র অর্থ বাঁচাবার আপ্রাণ চেষ্টা করে সেটা দিয়ে আরো ভাল কিছু পাওয়ার আশা করা ।

হোটেল বুকিং :

শুরু করলাম নেট ঘেঁটে । নেটে সব থাকে । তাই নেটই ভরসা । ঢু মারতে লাগলাম নেটে । গুগোল মামাকে জ্বালিয়ে ফেললাম । কিন্তু লাভের লাভ কিচ্ছু হলো না । হোটেলের নাম আর ফোন নম্বর ছাড়া কিছুই পেলাম না । তবু্‌ও যোগাযোগ শুরু করলাম,কথা বলতে শুরু লাগলাম । ডিসেম্বর মাস । তাই টুরিস্টদের ভিড় বেশি । এটাই নাকি ব্যবসার সময় । একেক হোটেলে একেক রকম ভাড়া । শুনে মাথা খারাপ অবস্থা । আমার দুটো রুম লাগবে । প্রতিদিন আট হাজার এর নিচে রুম ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না । তিন হাজার টাকার রুম চাচ্ছে পাঁচ হাজার টাকা । যে যেমন পারছে ভাড়া নিচ্ছে কোন নিয়ম নেই । বছরে একবার ঘুরতে যাবো । কিপটামি করা চলে না । তাই এই টাকাটা হিসাবে রেখেই প্রস্তুতি নিলাম । নামি দামি হোটেল গুলোর পাশাপাশি অনেক রিসোর্ট গড়ে উঠেছে । এগুলোর ভাড়া অনেক কম । তবে নিরাপত্তা কতোটুকু বলতে পারবো না । এ ব্যাপারে স্থানীয় কারো সঙ্গে করা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে । খোজ খবর নিলে ভাড়া অনেক কমে আসবে । প্রমাণ হলো ও তাই । সবাইকে বলবো । হোটেল ঠিক করে আসার দরকার নেই । কক্সবাজার পৌছে হোটেল বুকিং করুণ । অনেক কমে পাবেন ।



কিভাবে যাবো :

হোটেলের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে যাওয়ায় । যাতায়াতের ব্যাপারটা চলে এলো । ঠিক করেছি বাসে যাবো । ঢাকা থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন এসি,নন এসি বাস ছাড়ে । যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ঢাকা থেকে বাস সরাসরি কক্সবাজার চলে যায় ।

বাস / বাস ভাড়া :

এসি - ১৪৫০ থেকে ২০০০ টাকা (২৮ সিট - ৩৪ সিটের বাস )। নন এসি ৮০০- থেকে ১২০০ টাকা । চারজন মানুষের যাতায়াতেই লাগবে ষোল হাজার টাকা । অনেক টাকা । কিন্তু এসি বাসের টিকেট কাটতে হবে দশ থেকে পনেরো দিন পূর্বে । তা না হলে টিকেট পাওয়া যাবে না । আমরা যেহেতু চারজন একসঙ্গে টিকেট চাই । তা হলে সবার দিকে নজর রাখা যায় । খেয়াল করা যায় ।

কোথায় বাসেট টিকেট পাবেন :

আমি শুরুতেই একটা ভুল করলাম । যাওয়ার ছয় দিন পূর্বে বাসের খোজ নিতে গিয়ে দেখি কোথাও এসি বাসের টিকেট নাই । ফকিরা পুল, আরামবাগের,কলাবাগান বাস কাউন্টারগুলো চোষে ফেলেও টিকেট পেলাম না । পেলেও পেছনের দিকে । এতো দীঘ পথ এভাবে যাওয়ার কোন মানে হয় না ।

ট্রেনই ভরসা :

তাই ছুটলাম ট্রেনের খোজ নিতে । কমলাপুর রেলস্টেশনে পৌঁছে জানতে পারলাম, ট্রেনের অগ্রিম টিকেট দেওয়া হয় ৫ দিন পূর্বে । ভাড়ার খোজ নিয়ে চমকে উঠলাম । ফাস্ট ক্লাসেও ভাড়া অনেক অনেক কম । চারজনের চিটাগাং যেতে খরচ হবে মাত্র ২০০০ টাকার কম । চিটাগাং থেকে কক্সবাজার বাসে ভাড়া ২৪০ টাকা করে । যেহেতু পাঁচদিন পূর্বে টিকেট দেওয়া হয় - সেহেতু আমি পরের দিন খুব ভোরে এসে লাইনে দাঁড়ালাম এবং দু-ঘণ্টা লাইনে থাকার পর টিকেট পেলাম । মেয়ে আগেই বলেছিল, ট্রেনে যাবে । তাই ট্রেনের টিকেট নিয়ে বাসায় ফেরায় ওর চোখে মুখে খুশি ঝিলিক দিয়ে উঠল । এখানে বলে রাখি । ট্রেনের টিকেট পাওয়া সহজ নয় । একটু দেরি করলেই টিকেট পাওয়া যায় না । দশ বারোটা টিকেট দেওয়ার পরই ভেতর থেকে বলা হয় টিকেট শেষ । আবার সেই টিকিট ই ব্ল্যাকে কয়েকগুণ বেশি দামে কমলাপুরের আশে পাশ পাওয়া যায় । কিচ্ছু করার নেই । কাউকে বলেও কোন লাভ নেই ।

অনলাইনে ট্রেনের টিকেট :

তবে আশার কথা হচ্ছে যে, অনলাইনে টিকেট কেনা যায় - এই লিঙ্কে ঢুকে টিকেট কাটুন - Click This Link

ট্রেনের সময় সূচী :

মহানগর গোধূলি, মহানগর প্রভাতি আর তুন্দ্রা নিশি । সকাল সাড়ে সাতটা থেকে ট্রেন ছাড়ে তুন্দ্রা নিশি ছাড়ে রাত্রি সাড়ে ১১টায় । আমরা নিশির পিঠে চড়ে যাত্রা শুরু করলাম ।

চিটাগাং পৌঁছে কি করবেন :

চিটাগাং পৌঁছে কক্সবাজারের বাসের জন্য আপনাকে যেতে হবে "নতুন ব্রিজ" নামক স্থানে । সিনজিতে ভাড়া ১০০ টাকা । রিকশায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা । "নতুন ব্রিজ" থেকেই কক্সবাজারে উদ্দেশ্যে সব বাস ছাড়ে । ট্রেনের র্জানি বেশ মজার আর আরামের হওয়ায় আমরা চিটাগাং পৌঁছে ফিরতি পথের টিকেট কিনে নিলাম । সেখান থেকে "নতুন ব্রিজ" নামক স্থানে পৌঁছে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে বাসে চড়ে বসলাম । ভাড়া জনপ্রতি ২৪০ টাকা । প্রতি ২০ মিনিট অন্তর অন্তর বাস ছাড়ে । রাস্তা এতো ভাল যে মুগ্ধ না হয়ে পারলাম না । এমন সুন্দর রাস্তা মনে হয় বাংলাদেশের আর কোথাও নেই । সবাইকে বলবো । ঢাকা থেকে বাসে যাওয়ার চিন্তা বাদ দিন ট্রেনে ভ্রমণ করুন । এর চেয় আরামের জার্নি আর হয় না ।



কোথায় উঠেছি :

আমাদের একটু জানাশুনা এবং আত্মীয়ের বন্ধন থাকায় আমরা একটি সরকারী বাংলোতে উঠলাম । ড্রইংসহ দুটো রুমের একটি বিশাল ফ্লাট । এসি থেকে শুরু করে গরম পানি আরাম আয়েশের সকল উপকরণ এখানে বিদ্যমান । সব দেখে তো মহাখুশি সেই সংগে গাড়ি এবং গাইড এর ব্যবস্থাও পাওয়া গেল কপাল গুনে । কিন্তু ইচ্ছে থাকার পরও তাদের নাম উল্লেখ করতে পারছি না । বলে কষ্টে লাগছে । দেখুন কপাল কাকে বলে, বেড়াতে এসে এক দুপুরে একজন দাওয়াত করেও খায়ালো তার বাসায় ।



কি কি করবেন :

কক্সবাজারে গিয়ে সোজা নেমে পড়ুন সাগরে । তবে সাবধান নামার আগে চারিদিকটায় তাকিয়ে দেখুন । দেখবেন দুটো বড় বড় বাঁশের মাথায় পতাকা টানানো রয়েছে । এই পতাকার মাঝ খানে আপনি গোসলে নামলে নিজেকে মোটামুটি নিরাপদ ভাবতে পারেন । তবে বেশি ভাব নেওয়ার জন্য সমুদ্রের বেশি গভীরে যাবেন না । সাতার না জানলে আরো বেশি সর্তক থাকুন । কেননা অনেক হিরো ও এখানে এসে জিরো হয়ে যায় । তাই সাবধান । বিচে ছাতার নিচে শুয়ে বসে সমুদ্র দেখার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া ঘণ্টা ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা । তবে এখানেও সাবধান, আপনি হয়তো শুয়ে শুয়ে স্বপ্ন দেখছেন ওদিকে আপানার সাধের মোবাইল নিয়ে কেউ হাওয়া হয়ে গেল । চারপাচ জন ফেরিওয়ালা ঘিরে ধরলেই বুঝবেন বিপদ । তাই ফেরিওয়ালাদের কাছে ডাকার দরকার নেই । টিউব নিয়ে সাতার কাটেতে পারেন ভাড়া ঘণ্টা ৩০ থেকে ৫০ টাকা । চাইবে কিন্তু ৮০ থেকে ১০০ টাকা । বাচ্চারা ঘোড়ায় চড়তে পারে । এক রাউন্ড ৫০ টাকা দুই রাউন্ড ১০০ টাকা । বীচে যাওয়ার সময় স্যান্ডেল পরে যান । সঙ্গে ভিজা কাপড় বহন করার জন্য ব্যাগ নিন । মেয়েরা সমুদ্র তীরে ঝিনুক কুড়াতে পারেন । ভাগ্য ভাল হলে মুক্তাও পেয়ে যেতে পারেন ।



কোথায় ঘুরবেন :

কক্সবাজার খুবই ছোট শহর । দু'দিন দেখলেই শেষ হয়ে যায় । তবুও যা দেখবেন - তা হলে হিমছড়ির উদ্ভিদ উদ্যান, ইনানী বিচ এর পাথর আর সূর্যস্তা যাওয়া । আরো দেখতে পারেন রামু বৌদ্ধ মন্দির । তবে রামুতে রাতের বেলায় যাবেন না ডাকাত মামারা হামলে পরতে পারে ।



হিমছড়ির উদ্ভিদ উদ্যান, ইনানী বীচ,রামু যেতে ভাড়া :

আমরা গাড়িতে গেলেও ভাড়ার খোজ খবর নিয়েছি । এখানে ব্যাটারি চালিত একটি অটো রিকশা চলে স্থানীয় ভাষায় একে "টমটম" বলে । সর্বত্র এই টমটম পাওয়া যায় । টুরিস্ট বুঝলে ভাড়া চায় চারগুণ । যাই ভাড়া চাক না কেন, আপনি ভাড়া বলবেন ঠিক অর্ধেক বা তার চেয়ে দশ, বিশ টাকা কম । দেখবেন রাজি হয়ে যাবে । কক্সবাজার থেকে হিমছড়ি ইনানী বিচের ভাড়া ৩০০ টাকার বেশি নয় সেটা রিজার্ভ গেলে । এমনিতে শেয়ার করে যাওয়ার ও ব্যবস্থা রয়েছে - সে ক্ষেত্রে ভাড়া পরে জনপতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা (আপ- ডাউন ) দেশে বিদেশে আলোচিত রামু মন্দির দেখে আসতে পারেন । তবে এখানে মূর্তি ছাড়া দেখার কিছুই নাই । ভাড়া ৩০০ টাকা সিঙ্গেল গেলে আপডাউন ১০০ টাকার বেশি নয় ।



কি খাবেন কোথায় খাবেন :

এই ডিসেম্বর মাসে কক্সবাজারে যেন আগুন লেগে যায় । খাবারের দোকানগুলোতে সবসময় উপচে পরা ভিড় লেগে থাকে । অবশ্য খাবারের দাম ঠিক করা আছে । আপনি শুধু মেনু দেখে অর্ডার করবেন । তা না হলে, খবর হয়ে যাবে । যেমন, রূপচাঁদা মাছের ফ্রাই এক একটি ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ৩৫০টাকা পর্যন্ত । সাইজ অনুযায়ী দাম । এছাড়া গরুর মাংস পাবেন ১২০ টাকা বাটি, শুটকি মাছের ভর্তা পাবেন ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, কোরাল মাছের ভুনা পাবেন ১২০ টাকায় । চিংড়ি পাবেন দুই পিচ ১২০ টাকা । গরুর তিহারী পাবেন ১৭০ টাকায় খাসির ২৭০ টাকায় । মুরগি ফার্মের ১২০ টাকা । সব রেস্তরার মূল্যই কিন্তু এক । ভাত পাবেন ১২০টাকা ভাল চালের । নরমাল ৬০ টাকা থেকে ৮০ টাকা । ডাল ফ্রি না ২০ থেকে ৩০ টাকা ।

কি কিনবেন ? কোথায় কিনবেন :

পুরো কক্সবাজারই যেন একটি মার্কেট । এখানে সেখানে সব পাওয়া যায় । তবে আপনাকে সাবধান থাকতে হবে । ভাল জিনিসটি ভাল জায়গা থেকে কিনতে হবে । তা না হলে ধরা খাবেন । নকল জিনিসের ছড়াছড়ি সর্বত্র । ঢাকার চক বাজার থেকেও অনেক জিনিস এখানে এনে বার্মিজ বলে বিক্রি করা হয় । তাই সাবধান ।

কেনা কাটার জন্য যাবেন, বার্মিজ মার্কেট । এখানে গেলেই সব পাওয়া যাবে । তবে দাম চাইবে দুই থেকে তিনগুণ বেশি । আমাদের সঙ্গে যিনি ছিলেন তার নাম মুরাদ । তিনি বললেন, স্যার একটা মজা দেখেন । আপনি একটি জিনিসের দাম জিজ্ঞাসা করতে যেটার দাম চাওয়া হয়েছে, ৮০০ টাকা । কিন্তু আমি চিটাগাঙের ভাষায় সেটার দাম জিজ্ঞাসা করায় দাম নেমে এসেছে অর্ধেকেরও কমে । সুতরাং দাম যাই চাক না কেন আপনি তার দাম অর্ধেক বলুন । না হয় আর একটু বাড়ান পেয়ে যাবেন ।

শুটকি মাছ :

কক্সবাজার শত শত গুটকি মাছের দোকান রয়েছে । তার মধ্যে লটকা, ছোরি, কোরাল, চিংড়ি, পুঁটি,রূপচাদা নানান রকমের শুটকি পাওয়া যায় । দাম লোইকা ৩০০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজি । ছোরি ১২০ থেকে ১৫০ টাকা প্যাকেট । কোরাল ১৫০০থেকে ২২০০ টাকা কেজি । পুঁটি ৩০০ টাকা । চিংড়ি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা । রূপচাঁদা ৭০০ থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত । আকার আকৃতি অনুযায়ী দাম । তবে ভাল আড়ত থেকে কেনার চেষ্টা করুণ । তা হলে বিষমুক্ত শুটকি কিনতে পারবেন । আর বড় দোকান বা আড়ত নাম শুনে ভয় পাবেন এখানে আধা কেজি থেকে বিক্রি শুরু হয় ।

আচার কিনবেন :

কক্সবাজারের সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে আচার । এখানে বার্মিজ টক,ঝাল,মিষ্টি নানান রকমের আচার পাওয়া যায় । আবারও বলছি, চারিদিকে নকলের ছড়াছড়ি, ভাল দোকান থেকে দেখে শুনে কিনতে হবে । কেননা সবই নিন্নমানের পরিবেশে কক্সবাজার বা তার আশে পাশে বানিয়ে বার্মিজ বলে চালানো হচ্ছে । প্যাকেটের রং, রূপ দেখে প্রতারিত হবেন না । দাম বেশি না,প্যাকেট ২০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০ টাকা পর্যন্ত । চাইবে কিন্তু অনেক বেশি । তবে ভাল জিনিষ বোঝার উপায় হচ্ছে, সেগুলো এক দামে বিক্রি হয় ।

সেন্টমার্টিন কিভাবে যাবেন :

আপনি যদি কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন যেতে চান তা হলে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটরদের অনেকগুলো প্যাকেজ পাওয়ায় একটি বেছে নিন । এটাই সুবিধা । একা একা যাবার জন্য মাস্তানি করবেন না । তাহলে জান কাহিল হয়ে যাবে । ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে গেলে তারা আপনাকে হোটেল থেকে নিয়ে যাবে । খাবার দেবে । সাইট দেখাবে । আবার হোটেলে তুলে দিয়ে যায় । তবে রওনা হতে হবে খুব ভোরে ৬টার পূবে । কক্সবাজার থেকে টেকনাফে যেতে হয় সেখানে থেকে ইস্টিমারে সেন্টমার্টিন । খরচ হবে - ১৪০০ থেকে ২৪০০ টাকা ।



মহা সতর্কতা :

ট্যুরের শুরুতেই জ্বর্দি জ্বর এর জন্য ন্যাপা,এইচ আর স্যালাইন সঙ্গে নিয়ে যাবেন । কেননা কক্সবাজারে ঔষধদের দোকান খুঁজে পাওয়া বেশ মুশকিল । শীতের কাপড় নিন । বাচ্চাদের চোখে চোখে রাখুন । অপরিচিত কারো সঙ্গে মামা,কাকা,খালু,ভাই পাতাবার কোন দরকার নেই ।

পরিশেষ : প্রতিবছর সকলের একটি করে ট্যুর দেওয়া উচিত । এতে করে মন ও শরীর ভাল থাকে । পারিবারিক বন্ধন শক্ত হয় । অনেক লিখেছি । যা যা জেনেছি তা সবার জন্য শেয়ার করলাম । আশা করি পোষ্টটা পড়ে অনেকের কিছুটা হলেও উপকার হবে ।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:৪১
৮টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×