যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরিটি এক দিনে হয়নি । বেশ সময় নিয়ে চোরের দল এই চুরির প্রস্তুতি নিয়েছে । এমন ও হতে পারে তারা বেশ কয়েকবার বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করেছে । এর ওর একাউন্ট দিয়ে সার্ভারে লগ ইন করেছে । চোরেরা বেশ আট ঘাট বেঁধেই নেমেছিল । চুরি করা সহজ না । অনেক কঠিন কাজ । অনেক বুদ্ধি লাগে অনেক মাথা খাটাতে হয় । তবে সব দেখে শুনে এটুকুই মনে হচ্ছে, চোরের সহযোগী ঘরেই রয়েছে । ঘরের দরজাটা তারাই ভেতর থেকে খুলে দিয়েছে । চুরি করেছে বাহিরে বসে ।
এখানেও একটি কথা আছে, রিজার্ভ ব্যাংকে যে আইপি এড্রেস থেকে রিকোয়েষ্টগুলো গেছে - সেটি আমাদের দেশের কোন আইএসপির আইপি এড্রেস হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি । এটি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে । কেননা রিজার্ভ ব্যাংকের ফায়ারওয়ালে আইপি এড্রেসের ট্রাক রাখার কথা । পরিচিত আইপি এড্রেস ব্যবহার করা হয়েছে বলেই চুরি করা সহজ হয়েছে ।
চাকরীর কারণে আমাকে একটি সার্ভার মেন্টেন করতে হয় । আমি কিছুটা হলেও বুঝতে পারছি, চুরিটি কতো নিখুত ভাবে করা হয়েছে । তবে বাংলাদেশ থেকে চোরের দল শুধু তর্থ্য নিয়েছে । যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়কে শতভাগ নিশ্চিত কোড দিয়ে অর্থ সরিয়ে নিয়েছে । সার্ভার হ্যাক বা হ্যাকিংয়ের যে কথা বলা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সেগুলো ভূয়া কথা বলেই আমার মনে প্রথম থেকে হয়েছে । কেননা সেটি সহজে সম্ভব নয় । সেটি ই যদি হতো তা হলে লাখ লাখ ডলার "সার্ভার সিকিউটিটি ফায়ারওয়াল" ব্যবহারের জন্য খরচ করতো না আমেরিকার ব্যাংকটি ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভেতরের লোক এবং ভারতীয় আইটি এক্সপার্টদের হাত রয়েছে । বিশেষ করে যে প্রতিষ্ঠান থেকে সার্ভার ও সফটওয়ার নেওয়া হয়েছে তারা । আমি আরো অবাক হয়ে দেখছি, দেশের সব কটি ব্যাংক যে, সফটওয়ার ব্যবহার করছে তা ভারতের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নেওয়া । সুতরাং কোন কোড এবং লিংক যদি লিকেজ হয় তা হলে,সেটা ভারতের সেই প্রতিষ্টান থেকেই হওয়ার সম্ভাবণা সব চাইতে বেশি ।
যাই হোক চুরি তো হয়ে গেছে এখন তো অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের কিছু করার নাই । তাদের জন্য আমার কিছু ফ্রি উপদেশ রয়েছে ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এখন যা করা উচিত :
এক, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেছে বেছে আলাদা করে জিজ্ঞাসাবাদ করা । সবার মোবাইল নম্বর নিয়ে কে কোথায় কোথায় কবে কার সাথে কথা বলেছে সেগুলো বের করা । মোবাইল সেটের ইএমই নম্বর পরীক্ষা করা । যেসব সিম ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলো পরীক্ষা করা ।
ই-মেইল পরীক্ষা করে কোন ফায়দা হবে না । কেন না না যারা কাজটা করেছে তারা কোন প্রমাণ রাখেনি ইতিমধ্যে সব মুছে ফেলার চেষ্টা করেছে । তবুও সেগুলো পরীক্ষা করা । যে আইপি থেকে আমেরিকার রির্জাব ব্যাংকে রিকোয়েষ্টগুলো পাঠানো হয়েছিল সেগুলো পরীক্ষা করা ।
দুই. ব্যাংকের সার্ভারের আইডি পাসওয়ার্ড যাদের কাছে থাকে বা যারা এসবের কাছাকাছি আসতে পারে তাদের সঙ্গে কোন ভারতীর সম্পর্ক রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা ।
পরিশেষ আমাকে নিয়োগ দেওয়া হলে আমি বের করে ফেলবো কে বা কার কামডা করেছে
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০২১ দুপুর ১২:৪৮