somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

শামছুল ইসলাম
নিঃসীম নীল আকাশে পাখী যেমন মনের আনন্দে উড়ে বেড়ায়, কল্পনার ডানায় চড়ে আমিও ভেসে চলেছি মনের আনন্দে--রূঢ় পৃথিবীটাকে পিছনে ফেলে।

ভ্রমণ স্মৃতি-মালয়েশিয়া

১৬ ই মে, ২০১৫ সকাল ১১:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভ্রমণ স্মৃতি নামটা দিয়েছি বটে,তবে নিজের কাছেই নামের সার্থকতা খুঁজে পাচ্ছি না! কারণ অফিসিয়াল এই ট্রেনিংটা ছিল ৬ দিনের (২৭/৪ থেকে ২/৫),সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা, প্লেনে আসা-যাওয়ায় ১ দিন,হোটেল সংক্রান্ত ঝামেলায় ১ দিন;ভ্রমণের ৯ দিনের ৮ দিন এভাবেই কেটেছৈ।আসার দিন (৪/৫ ফ্লাইট সন্ধ্যা ৬:২০) সকালে গিয়েছিলাম বার্ডস পার্কে,ভ্রমণের একটু আমেজ আছে।

বাবার হাত ধরে প্রথম যেদিন স্কুলে যাই,সেদিনের সেই যাত্রার সাথে এই যাত্রার কোথায় যেন একটা মিল আছে! জ্ঞান আহরণের জন্য সেদিনই প্রথম আমার ছোট্ট জগতের (বাবা,ভাই-বোন,খেলার সাথী) গন্ডি পেরিয়ে, কলোনীর সীমানা পেরিয়ে, অন্য এলাকায় (কলাবাগান), নতুন স্কুলের পরিবেশে প্রবেশ। ২৫শে এপ্রিল,২০১৫ রাত ৮:৩০ এ বাসা থেকে এই প্রথম নিজের মত করে দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে যাচ্ছি,আনন্দ-বেদনার সেই ভাব প্রকাশের পর্যাপ্ত ভাষার ভান্ডার আমার নেই!

পুরো মালয়েশিয়া ভ্রমণটাকে আমি কয়েকটা খন্ডে ভাগ করেছি: যাত্রা হলো শুরু,বাংলাদেশী ভাইদের সাহচার্য,লেকে এক বিকেলে,মালয়েশীয়দের যেমন দেখেছি,টুইন টাওয়ার ও পানি নৃত্য,বার্ডস পার্ক ও অর্কিড গার্ডেন,ঘরে ফেরা।

যাত্রা হলো শুরু
আমি,রুমি ভাই ও খালেকী ভাই- এই ৩ জনের মালয়েশিয়ান এয়ার লাইনসের বিমানে ২৬শে এপ্রিল,২০১৫ ০১:২০ এ.এম. রওনা হওয়ার কথা,একই ফ্লাইটে বিভাও(আমার ভাগ্নী) যাচ্ছে মালয়েশিয়া হয়ে অষ্ট্রেলিয়া। ওখানে মুকুল(ভাগ্নী জামাই) থাকে।তাই খালু হিসাবে একটু দায়িত্ব এসে পড়ল ওর সিটটা আমাদের সাথে করার।রুমি ভাই, খালেকী ভাইকে জানালাম; অন-লাইনে কাছাকাছি ৪ জনের সিট বুকিং হয়ে গেল।যথারীতি অফিস থেকে দু'টা গাড়ির ব্যবস্থা করা হলে, একটায় আমি ও রুমি ভাই,অন্যটায় খালেকী ভাই।জিগাতলা থেকে মিরপুর হয়ে এয়ারপোর্ট। ৯টায় পৌছে গেলাম মিরপুর,রুমি ভাইয়ের বাসায়,১১টায় রিপোর্টিং-হাতে প্রচুর সময়!
ড্রইং রুমে বসে খালুর সাথে আলাপ করছি, এর মধ্যে ভাবী এসে কুশল বিনিময় করে মিষ্টি দিয়ে গেছে,খেতে খেতে আলাপ চলছে-পশ্চিম -পাকিস্তান(তদানীন্তন) রেডিওতে কর্মজীবনের শুরুর সেই দিন গুলো এখনও ভাস্বর খালুর স্মৃতিতে! উনার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে উনার উর্ধ্বতন কর্মকর্তা উনাকে একটা প্লট বরাদ্দ দেন।কিন্তু অজানা একটা শঙ্কা সারাক্ষণ কুঁড়ে কুঁড়ে খায়,পূর্ব-পাকিস্তানের(তদানীন্তন) উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ে কারো সাথে আলাপ করতে ভরসা পান না।দেশে ফিরে যেতে মন টানে।বাবা বৃদ্ধ,রাজশাহীতে জমি-জমা দেখা-শোনা করতে হবে- এই সব কারণ দেখিয়ে পূর্ব-পাকিস্তান বেতারে বদলি চাইলেন।৬৯-এ দেশে ফেরা,তারপর স্বাধীনতা,বেতার,টেলিভিশন-এ গৌরবময় কর্মজীবন শেষে অবসর। রুমির ছোট মিষ্টি মেয়েটা এসে দাদুর সাথে খুনসুটিতে মেতে উঠল-কিছুক্ষণ পর ছেলেও আসলো।দাদু-নাতী-নাতনী-বউমা-ছেলে---কি চমৎকার,সুখী-এই ছোট্ট সংসার। রুমি ভাই ব্যাগ নিয়ে ঢুকলো,এবার বিদায়ের পালা।

যাবার আগে একটু দোয়া করে দেই-বলে খালু দাঁড়িয়ে দু'হাত তুললেন,রুমির ভাইয়ের দেখাদেখি আমিও তুললাম।মনে পড়ে গেল, বাবাও চট্টগ্রাম যাওয়ার সময় গায়ে হাত দিয়ে দোয়া করতেন-বোধ করি জীবনের অনেক ঘটনাই একটার সাথে আর একটার খুব নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ।উনি আরবী উচ্চারণের পাশা-পাশি বাংলায় দোয়া করছিলেন---সৎ,হাজী,পিতৃতুল্য একজন মানুষের কথায়, আমার অন্তর আপ্লুত হয়ে গেল,ভ্রমণের অনিশ্চিত ভয় গুলো কোথায় যেন উবে গেল, উনার আন্তরিকতা আমার মন ছুঁয়ে গেল। দোয়া শেষে আমি উনার সাথে কোলাকুলি করলাম,কিন্তু কিছু বলতে পারলাম না,বলার মত অবস্থা ছিল না।আমি দ্রুত ব্যাগটা কাঁধে ঝুলিয়ে হাঁটা দিলাম---ছোট ছোট কথা-মালার রাত্রিটা আলো ছড়ালো পুরো ভ্রমণ জুড়ে!!!!!
চলবে...................
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১৬
১১টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×