somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার শামসুল আল। শোক জ্ঞাপন, নাকি গুলশান ভ্রমণ?

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শহীদ রাষ্ট্রপতির জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠ পুত্র আরাফাত রহমানের অকাল মৃত্যুর পরে পুত্রশোকে যখন অচেতন বেগম খালেদা জিয়া, ঠিক সেই মুহূর্তে দেশের বর্তমান ম্যান্ডেটহীন প্রধানমন্ত্রী গেলেন গুলশানে। উদ্দেশ্য, শোকাহত খালেদা জিয়াকে সান্ত¡না জানানো।

পরের ঘটনা হলো, গুলশানের ৮৬ নম্বর রোডের আলোচ্য বাড়িটিতে প্রধানমন্ত্রী না ঢুকেই ফেরত আসেন।এরপর থেকে দেশের বিশিষ্টজনেরা টকশোসহ নানা মাধ্যমে বিএনপি ও খালেদা জিয়ার সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন। শেখ হাসিনাকে বাড়িতে ঢুকতে না দিয়ে খালেদা জিয়া নাকি অন্যায় করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির তরফ থেকে বলা হয়েছে শনিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে যোগাযোগ করলে জানানো হয়, শোকাহত বেগম খালেদা জিয়াকে ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে।

এসব অবহিত হওয়ার পরও রাত সাড়ে ৮ টার দিকে প্রধানমন্ত্রী গুলশানের ৮৬ নম্বর রোডে গিয়ে ফেরত আসেন। তিন সপ্তাহ আগে যে বাড়ির গেটে খালেদা জিয়ার দিকে ছোড়া হয় পিপার স্প্রে, সেই গেট থেকে আজ ফিরে গেছেন বর্তমান সরকারপ্রধান। এখানে উল্লেখ্য, আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী কোনো শোকবার্তা দেননি।

আমি সিভিল সার্ভেন্ট মানুষ। যাহা বুঝি, সরলভাবেই বলি। ১৬ বছর ভিভিআইপি ডিউটি করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাজারো প্রোগ্রাম করতে হয়েছে। প্রটোকল অফিসার হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করেছি ৫ বছর, আর শেষের ৫ বছর প্রোগ্রাম ম্যানেজার হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিকে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ও প্রোগ্রাম দিতে হয়েছে। এ নিয়ে প্রতি কর্মদিবসেই এসএসএফের সাথে নিরাপত্তা মিটিং করতে হতো। একটা প্রোগ্রাম ঠিক হলে সেটা জানার জন্য এসএসএফের সিনিয়র অফিসাররা সর্বদা ব্যতিব্যস্ত করে রাখত। উদ্দেশ্য একটাই-প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আয়োজনকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা।

প্রধানমন্ত্রী কোথায় যাবেন সেটা অফিস হোক, বাড়ি হোক, জনসভাস্থল, বিমান বা যাই হোক না কেনো, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব এসএসএফের। বাইরের নিরাপত্তার আয়োজন আরো ব্যাপক হলেও প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বাহিনী এসএসএফ কমপক্ষে ৪ ঘন্টা আগে ভেন্যুর গেট থেকে শুরু করে সকল রুমের চাবি গ্রহণ করে পুরো এলাকার নিরাপত্তা পরীক্ষা করে ক্লিয়ারেন্স দেয়ার পরেই প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে আনা হয়। এটাই ঝঙচ. এসএসএফ নিরাপত্তা বই রেডবুক অনুযায়ী নিরাপত্তা ক্লিয়ারেন্স নিশ্চিত না হলে তারা প্রধানমন্ত্রী অথবা প্রেসিডেন্টকে কোথাও যেতে বাধা দেয়ার ক্ষমতাবান।

তো, এখন প্রশ্ন হলো, সত্যি সত্যিই কি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে সান্ত¡না দিতে গুলশানে গিয়েছিলেন? এ প্রশ্নের জবাব যদি ‘হ্যা’ হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বাহিনী এসএসএফ অবশ্যই গুলশানে আগে গিয়ে খালেদা জিয়ার বাড়ির গেইটের চাবি ও ভেতরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছেন। নিরাপদ করা হয়নি এমন কোনো জায়গায় নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রীকে এসএসএফ নিয়ে যায়নি। সেক্ষেত্রে ৮৬ নম্বর রোডের ওই বাড়ির গেট খোলা বা বাড়িতে ঢোকার সকল দায়িত্ব ছিল এসএসএফের। কোনো অবস্থাতেই বিএনপির লোকজন প্রধানমন্ত্রীকে ওই বাড়িতে প্রবেশ করা থেকে বিরত করতে পারেন না।

আর প্রশ্নের উত্তর যদি ‘না’ হয়, অর্থাৎ প্রধানমন্ত্রী কোনো শোক জানাতে যাননি, কেবল ঘুরে আসার জন্য গিয়েছেন, তাহলে তো আর কোনো কথাই থাকে না। কোনো বাড়ির চাবি এসএসএফ এর কাছে নাই, নিরাপত্তা ক্লিয়ার না করে প্রধানমন্ত্রীকে সেখানে নিয়ে যাবে এসএসএফ, তাও বিপক্ষ দলের প্রধান অফিসে, এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কোনো কারণ আছে কি? এমন কল্পনা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।

শেখ হাসিনার গুলশানে যাওয়াটা লোক দেখানো কিনা সেটা জনগণ অনুধাবন করতে পারবেন। সত্যি সত্যি তিনি যদি শোক জানাতে যেতে চাইতেন, তবে যোগাযোগ করে দু’দিকের সুবিধাজনক সময়ে যেতে পারতেন। শোক জানানো আর নাটকের মধ্যে ব্যবধানটা পরিষ্কার। - See more at: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯
১২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেসবুক বিপ্লবে সেভেন সিস্টার্স দখল—গুগল ম্যাপ আপডেট বাকি

লিখেছেন মহিউদ্দিন হায়দার, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৩০




কিছু তথাকথিত “বাংলাদেশি বিপ্লবী” নাকি ঘোষণা দিয়েছে—ভারতের সেভেন সিস্টার্স বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে! সহযোগী হিসেবে থাকবে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী আর পাকিস্তানি স্বপ্ন।শুনে মনে হয়—ট্যাংক আসবে ইনবক্সে। ড্রোন নামবে লাইভ কমেন্টে। আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

Grameen Phone স্পষ্ট ভাবেই ভারত প্রেমী হয়ে উঠেছে

লিখেছেন অপলক , ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪৯



গত কয়েক মাসে GP বহু বাংলাদেশী অভিজ্ঞ কর্মীদের ছাটায় করেছে। GP র মেইন ব্রাঞ্চে প্রায় ১১৮০জন কর্মচারী আছেন যার ভেতরে ৭১৯ জন ভারতীয়। বলা যায়, GP এখন পুরোদস্তুর ভারতীয়।

কারনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×