কফি হাউসের সেই আড্ডাটা
আমি ব্লগিং করি তার প্রায় ১ বছর ১ মাস হয়ে গেল। সময়ের অভাবে খুব কম ব্লগারের বাড়িতেই ঘোরবার সুযোগ হয়েছে। ব্লগে যাদের সব সময় এখনও খুঁজি, তারা হলেন, তাজিন, সুলতানা শিরিন সাজি, নুশেরা, আইরিন সুলতানা, লাল দরোজা, ফাহমিদুল হক, রাতমজুর, বিষাক্ত মানুষ, রন্টি চৌধুরী, মাহবুব মোর্শেদ চৌধুরী, অধ্যাপক গুলাবী, নিবিড়, উশৃঙ্খল ঝড়কন্যা, সাঁঝবাতির রূপকথা, চান্কু, রাশেদ ভাই, বিবেক সত্যি ব্লগিং এর শুরুতেই শফিক ভাই নামের একজনকে পেয়েছিলাম-স্বপরিবারে। পারভেজ ভাই, ফারহান, ছন্নছাড়ার পেন্সিল, নাজনীন আপা এবং
এরা ছাড়াও ইদানীং পড়তাম স্বপ্নজয়ের লেখা। পড়তাম তনুজাকে। এরা সকলেই এখন বড় অনিয়মিত। জানি হয়তো সবাই ব্যাস্ত। তাই বলে কি সবাইকে এক যোগে ব্যাস্ত হতে হবে?
এরা এই যে এত ভালো লিখেন, এই যে সবাইকে এত মাতিয়ে রাখেন--- তারা কি একটুও অনুভব করেন না যে, অনেক পাঠক তাদের লেখার জন্য রীতিমত অপেক্ষা করে থাকে।
লেখার মাধ্যমে তারা যে ভালোবাসা তৈরী করেছিলেন--- তাতে তো তাদের মধ্যে একটা সামাজিক দায়বদ্ধতা তৈরী হবার কথা।
জানি শিল্পী মাত্রই সাধারণের চেয়ে তারা অনেক সচেতন, আবেগ প্রবণ, অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে আপসহীন। এটা তো শিল্পীদের কাছে কাম্যই। কিন্তু কোন শিল্পী যদি শুধু নিজেদের দিকটাই দেখেন, তাহলে তো তাদেরকে ভীষন স্বার্থপর বলতে হয়।
পাঠককে বঞ্চিত করার অধিকার আসলে তাদের কে দিয়েছে? আমার ভীষন জানতে ইচ্ছে করে।
আর একজন ব্লগারকে আমার অতি পছন্দের তিনি হলেন, অপ্সরা।
ওকে যদি এভাবে বলি--"অপ + সরা" তাহলে দাঁড়ায় তিনি সকল অপদের সরিয়ে অসুর মানুষ গুলোকে সুরে নিয়ে আসেন।
তিনি আপাদমস্তক একজন শিল্পি। শিল্পের এমন কোন কলা নেই যেখানে তার অবাধ বিচরণ নেই।
মেয়েটি তার ছোট ছোট সুখ দুঃখ, আহ্লাদ আর খুঁনসুটি দিয়ে জয় করে রেখছেন সবাইকে।
নিজের জগতে ব্যাস্ত থাকেন, তবুও তার রূপ রং রস থেকে আমাদের বঞ্চিত করেন না। অসাধারণ গুণী একটা মেয়ে।
তিনিও আজকাল মাঝে মাঝেই অনিয়মিত হয়ে যান।
আমাদের যাদের তেমন কিছু করার নেই, কোথাও যাবার নেই--- তাদের জন্য কি এসব বুনন শিল্পীদের একটুও কষ্ট হয় না?
আগে ভুলভাল লিখলে অপেক্ষা করতাম, কে কখন এসে ঠিক করে দেবে, কঠিন সমালোচনা করবে-- আজকাল যত্রতত্র লিখি, কেউ মান নিয়ে কথা তোলেন না।
কেমন করে লেখা থেকে দূরে থাকেন আপনারা? নাকি অন্য কোথাও অন্যখানে---- আছেন খুব নিয়মিত হয়ে।
যদি তাই হয়, তাহলে আমরা যারা এখানে রয়ে গেলাম, তাদের কি হবে?
আরে সিস্টেম যদি ভাঙ্গতেই হয়, তাহলে সেটা একটা সিস্টেমে থেকে ভাঙ্গাই ভালো। আর এতগুলো শুভবোধের মানুষ, কিছু তুচ্ছ নিয়ম কানুনের কাছে পিছু হটে যাবে? এটা ভাবতে কষ্ট হয়। এতটা দুর্বল তারা নিশ্চই নন।
তবে যারা সত্যিকারের ব্যাস্ত, তাদের বলি-- যত ব্যস্ততাই থাক, কিছুতেই একজন শিল্পী হিসেবে আপনাদের নৈতিক দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না।
(কেন আপনাদের বারবার শিল্পী বলছি? কারণ আপনারা সকলেই শিল্পের কাছে ঋণী। আপনারা লিখতে পারেন তাই--- নাইবা হলেন নক্ষত্ররাজি) একজন রবীন্দ্রনাথ বা নজরুল।
একটা গান আপনাদের উৎসর্গ করলাম, যদিও আমার লিংক জানা নেই।
আহা ভাব করে কি সুখ পাওয়া যায়, ভাবুক না পেলে--
(ব্লগে ঢুকলে কেমন যেন লাগে--সুখ নাইরে পাগলা)
কুয়োতে ডুব দিলে কি আর গঙ্গা স্নানের ফল মেলে?
(কুয়োর ব্যাঙ কুয়োতেই থেকে গেলাম)
নয়ন ভরে না দেখলে, চাঁদের মত মুখ
(কত দিন চাঁদ+নিক গুলো দেখি না)
জোৎস্না দিয়ে যায় কি ধোওয়া আঁধার ভরা বুক
(সবাইকে না দেখে বুকটা খালি খালি লাগে)
পলাশ ডালে ফুল ধরে কি, কোকিল পাখি না এলে?
(সুয়া চান পাখি, তোমাদের কত ডাকি---তোমরা ঘুমায়েছ নাকি?)
মাটির প্রদীপ, সোনার বাতির মূল্যে তফাৎ হোক--
(ভাইরে তোমরা সব জেগে ওঠো, আগুন জ্বালাও
আমি বড় শীতার্ত।)
আগুন বিনা কোন বাতি দেয় না তো আলোক।
মনের ফাঁদে কেউ পড়ে কি,
(সবাই অনিয়মিত হয়ে এমন ফাঁদে ফেলেছ যে, খুব মিস করি।)
মনের কাছে না এলে?
তেমন লিখিয়ে হলে, জোরে একটা হাঁক দিতাম---------
"জাগো বাহে কুন্ঠে সবাই"------------------------------
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুন, ২০০৯ রাত ৯:৫০