somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রিয় বই- নির্বাসন- হুমায়ুন আহমেদ ( প্রিয় লেখকের জন্মদিনে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



"নির্বাসন" শব্দটির মাঝেই যেন জড়িয়ে আছে একরাশ বিষন্নতা বা অভিমান। শুনেছি আগেকার দিনে দুর্ধর্ষ অপরাধীকে নির্বাসন দেওয়া হত যেখানে মানুষকে নির্বাসনে যেতে হত সম্পূর্ণ তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে। অনিচ্ছা সত্বেও পাঠানো হত নির্বাসনে বা কালাপানি দীপান্তরে। তবে সে যুগ আমার দেখা নেই, শুধুই শুনেছি তেমন নির্বাসনের কথা। আমার কাছে নির্বাসন মানে অনেক অভিমানে নিজেকে নিজেই নির্বাসন দেওয়া বা দূরে সরিয়ে নেওয়া। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদের লেখা 'নির্বাসন" উপন্যাসের জরী তাকে নিজেই নির্বাসন দিয়েছিলো নাকি নির্বাসিত হতে বাধ্য হয়েছিলো তা পুরোটা বুঝে উঠতে পারিনা আমি "নির্বাসন" বইটি পড়ে।। মাঝে মাঝে মনে হয় আমাদের সমাজের মুখ বুজে চলা নারীদেরকে কখনও কখনও সমাজ ও পরিবারের চাপে বিয়ে দেওয়াটা এক প্রকার নির্বাসনের সামিল। ইচ্ছা বা অনিচ্ছাতেই আমাদের সমাজের অনেক মেয়েকেই নির্বাসনেই যেতে হয় প্রায়শই। জরীও ছিলো তেমনই এক পরিস্থিতির শিকার। আর আনিস ! তার জন্য বুক ভেঙ্গে যায়। এক বাড়ি মানুষের মাঝে থেকে, কোটি জনতার একটি শহর কিংবা দেশে সেও কি নির্বাসিত হয়নি?

‘নির্বাসন’ উপন্যাসের নায়িকা বা মনে দাঁগ কেটে যাওয়া একটি নাম জরী। যে দিনের ঘটনা নিয়ে এ উপন্যাস রচিত হয়েছে সে দিনটি জরীর বিয়ের দিন। সেদিন জরীর বিয়ে হচ্ছিলো একটি অচেনা মানুষের সাথে। সারাবাড়ি হৈ চৈ, আনন্দের বন্যা। অথচ যাকে নিয়ে এত আয়োজন সে নির্বাসনে যাচ্ছিলো। এক বুক ব্যাথা নিয়ে। অব্যাক্ত ব্যাথা। সচরাচর আমাদের দেশে এ্যারঞ্জড ম্যারাজে এমনি হয়, এমনি হবার কথা। কিন্তু জরীর ক্ষেত্রে এমন হওয়ার কথা ছিল না। জরীর বিয়ে হবার কথা ছিলো তার চাচাতো ভাই আনিসের সাথে। বাড়ির সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে আনিসের সাথে গড়ে উঠেছিলো জরীর সখ্যতা আর সে সখ্যতা থেকে প্রেম। বাঙ্গালী পরিবারগুলোতে সচরাচর যা হয় বা সেই সময়কার পরিস্থিতি বিবেচনা করলে দেখা যায় এ ধরনের প্রেমগুলোতে পারিবারিক বাঁধা এসে দাঁড়াতো। জরী আনিসের প্রেমের ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছিলো। তবুও সকল বাঁধা বিপত্তি পেরিয়ে জরী আনিসের প্রেম সফলতার মুখ দেখতে তেমন কোনো বাঁধা হয়ে দাঁড়াতো না। কারণ আনিস ছিলো সফল একজন আর্মি অফিসার। তার যোগ্যতায় সে জরীকে বিয়ের প্রস্তাব করতে কোনো দিকেই বিফল হবার কথা ছিলোনা। কিন্তু এরই মাঝেই এল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ । আর তাতে একটি দুর্ঘটনা কেড়ে নিলো তাদের সুখের স্বপ্নটিকে। আনিস মারাত্বক আহত হলো। বাড়ীর কোনার একটি ঘরেই কাটে তার নির্বাসিত জীবন। যে জীবনে আশা নেই, ভবিষ্যৎ নেই, প্রিয়তমাকে চাইবার দাবীর কোনো ভাষা নেই। আনিসের কষ্ট কিংবা জরীর কষ্ট আঘাত হয়ে এসে লাগে আমাদের বুকে।

জরীর অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয় এবং তারা দুজনেই কেউই মুখফুটে কাউকেই জানাতে পারেনা তাদের ভালোবাসার গোপন বারতাটি। এ দুঃসাহসিক কথাটি বলবার সাহস হারিয়েছিলো তারা। জরীর যেমনি সাহস হয়না এ বিয়ে ভেঙ্গে দেবার বা আনিসকে বিয়ে করবার কথাটি পরিবারের কাউকে জানাবার। তেমনি আনিসও জানে তারমত অক্ষম অযোগ্য একজন পাত্রের মুখে এ দুঃসাহস মানায় না। অথচ সে ছিলো এক দুঃসাহসিক যোদ্ধা। দেশমাত্রিকার টানে ছুটে গিয়েছিলো যে একদিন জীবনের মায়া উপেক্ষা করে সেই সাহসী মানুষটিকে ভীতুর মত মুখ বুজে থাকতে হয়। নিয়তির করাল গ্রাসে এক সাহসী যোদ্ধার অনাকাঙ্ক্ষিত নির্বাসন হয়। এই উপন্যাসে বিয়ের দিনের ঘটনায় দেখা যায়, বিয়ে-বাড়ির হই-হুল্লোড়ের মাঝে কোনার একটা ঘরে আনিস অসহায়ের মত পড়ে থাকে।

জরী চলে যায়- আমারই বঁধুয়া আনবাড়ি যায় আমারই আঙ্গিনা দিয়া.......
জরীর জন্য অনেক কেঁদেছি আমি। আনিসের জন্যও। আমার মত আরও অনেকেই কাঁদিয়েছে জরী এবং আনিস। তবুও তাতে জরী বা আনিসের বেদনা এক বিন্দু কমেনি।

এমনি এক উপন্যাস "নির্বাসন"। হুমায়ুন আহমেদের সকল অমর রচনার একটি অনবদ্য অংশ।

এই উপন্যাসটি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কোন উপন্যাস নয় তেমনি কাহিনীর প্রেক্ষাপটও মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রিক নয়। তারপরও এই উপন্যাসের কাহিনীর একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ব্যাপারটি। শুধু একটা দিনের গল্প বর্ণিত হয়েছে 'নির্বাসন' উপন্যাসে। জরীর বিয়ের দিন। এই বিশেষ দিনটির একদম প্রথম প্রহর থেকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হওয়া পর্যন্ত এই উপন্যাসের সময়কাল। তবে বিয়ের দিনের বিভিন্ন ঘটনা ঘটতে থাকে, ফ্লাশব্যাকে ভাসে জরী আনিসের সুখের দিন বা দুঃখের ঘটনা প্রবাহ।

এই উপন্যাসে জরী আর আনিসের সম্পর্কের সাথে উপস্থাপিত হয়েছে জরীর সাথে তাদের বান্ধবীদের সম্পর্ক, আনিসের সাথে তার মায়ের সম্পর্ক, আনিসের সাথে তার মায়ের দ্বিতীয় স্বামীর সম্পর্ক, জরীর সাথে বড়চাচার সম্পর্ক, আনিসের সাথে বড়চাচার সম্পর্ক আর জরীর বড় বোন পরীর সাথে তার স্বামী হোসেন সাহেবের সম্পর্ক ইত্যাদী ইত্যাদী। তবুও সবকিছু ছাপিয়ে হৃদয়ে গেঁথে রয় জরী আনিসের ব্যার্থ প্রেম। বিয়ের নামে প্রেমাস্পদকে ছেড়ে নির্বাসনে পাঠানো জরীর বুকভাঙ্গা কষ্ট। একজন সাহসী যোদ্ধার ভালোবাসার পরাজয়। উপন্যাসের শেষ অংশে এসে সারা উপন্যাস জুড়ে বুকে চেপে থাকা কষ্টটা যেন বাঁধ ভাঙ্গে। চোখের জল ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।

জরী চলে যাচ্ছে। সানাই এর সূর বাঁজছে। সে বাড়িরই ছাঁদের কোনার ঘরে বসে আছে আনিস। তার চোখে কি জল? নাকি শুস্ক চোখে তাকিয়ে রয়েছে সে সীমাহীন কষ্টের দিকে? জানিনা...

প্রিয় হুমায়ুন আহমেদের "নির্বাসন" নিয়ে লিখতে গিয়ে আরও এক ভক্তের একটি লেখার কথা মনে পড়লো। অনেক আগে তার মৃত্যুর পর এক পত্রিকায় পড়েছিলাম। সেটা খুঁজে বের করলাম আর এখানে তুলে দিলাম-

লিখেছেন আন্দালিব রাশদী
আমার বয়স তখনও কুড়ি ছোঁয়নি। বিচিত্রার এমনি একটি বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত হল হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস নির্বাসন।
উপন্যাস পড়ে কষ্ট পাওয়ার অভিজ্ঞতা তখন আমার হয়েছে। কিন্তু উপন্যাস পড়ে হু হু করে কাঁদার অভিজ্ঞতাও যে হতে পারে নির্বাসন আমাকে দিয়ে তা-ই করালো। ভাবলাম ব্যাপারটা ‘মেয়েলি ধরনের’ হয়ে গেল। সুতরাং মাস ছয়েক পর নিজের পুরুষালি ধরনটাকে সচেতনভাবে জাগিয়ে বিচিত্রার পাতা উল্টে আবার নির্বাসন পড়তে শুরু করলাম। জরী বধূবেশে চলে যাচ্ছে। আনিস উপর থেকে দেখছে। এ পর্যন্ত আসার পর আমার প্রতিরক্ষা ব্যূহ খান খান করে ভেঙে গেল। আমি আবার সেই আগের মতোই কেঁদে ফেললাম। তারপর ছ’মাস এক বছর পরপর নির্বাসন পড়া আমার নেশায় পরিণত হল আমার যখন কাঁদতে ইচ্ছে করে আমি নির্বাসন নিয়ে বসি। আমি বইটি কিনিনি, কেবল বিচিত্রার পাতা উল্টে বারবার পড়েছি।
এই ব্যাপারটি ঘটল এমন এক সময় যখন আমি এ গর্বে বলে বেড়াচ্ছি আমার প্রিয় লেখকের নাম বুদ্ধদেব বসু। একশত ষাটেরও বেশি বুদ্ধদেবগ্রন্থ থেকে এক এক করে এক শতাধিক গ্রন্থ মুগ্ধ বিস্ময়ে পাঠ করেছি। আমার তখন যতটুকু সাধ্য সেই সাধ্যমতো বুদ্ধদেবের মৌলিনাথ, রাত ভরে বৃষ্টি মেঘদূত তপস্বী ও তরঙ্গিণী এবং চরম চিকিৎসা নিয়ে প্রবন্ধ লিখছি।
কান্না নিয়ে কি আর প্রবন্ধ লেখা যায়? বুদ্ধিজীবী ধরনের লেখকরা ‘ইমম্যাচুরুড’ ভাবতে পারেন সেই আতংক থেকেই নির্বাসন যে কাঁদিয়েছে সে কথা আর লেখা হয়ে উঠেনি।
তারপর তেত্রিশ নয়, ছত্রিশ বছর কেটে গেল। হুমায়ূন আহমেদ তাড়াহুড়ো করে চলে গেলেন। বলে গেলেন কিংবা বলেননি : মৃত্যু এমনই, এভাবেই আসে।
সে রাতে টেলিভিশনের স্ক্রিন থেকে চোখ সরেনি। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হুমায়ূন আহমেদ। এক সময় সন্ধিক্ষণ অপসৃত হল। নতুন করে লিখা হল : হুমায়ূন আহমেদ আর নেই।
বাকি রাতটা কেটে গেল ঘোরের মধ্যে। তাহলে আমাকে আর কাঁদাবেন কে?
একটি দিন কাটল কোন কিছু না পড়েই। না, একটা কিছু করেছি। এতসব বিখ্যাত বইয়ের মাঝখানে নির্বাসন খুঁজে বেড়ালাম। এত বছর পর আরও একবার পড়ব। যদি আবার চোখ অশ্র“ ভারাকান্ত হয়ে উঠে, যদি দুফোঁটা অশ্র“বিন্দু নেমে আসে। হুমায়ূন আহমেদের জন্য এটাই হবে আমার শ্রেষ্ঠ নৈবেদ্য।
কিন্তু নির্বাসন পেলাম না। দৈবচয়ন পদ্ধতিতে তারই অন্য একটি বই হাতে তুলে নিলাম। সেই বইটির নাম এপিটাফ। এটিও নিশ্চয়ই কোন না কোন ঈদসংখ্যায় পড়েছি।
নাতাশা কিংবা টিয়া নামের তের বছরের মেয়েটি ক্যান্সারে ভুগছে। তার রোগটির নাম মেনিনজিওমা। ডাক্তার বলেছেন, মাঝে মাঝে মেনিনজিওমার গ্রোথ ইউলিউসিভ হয়। ধরা দিতে চায় না।
নাতাশা কিংবা টিয়া নামের মেয়েটিকে বিদেশ নিতেই হচ্ছে মাথায় মটরদানার মতো যে টিউবমারটি বেড়ে উঠছে তা অপারেশন করে ছেঁটে ফেলতে হবে।
রিকশায় মা আর মেয়ে। মা বলছে :
‘ডাক্তার অপারেশন করে ওই টিউমার সরিয়ে ফেলবেন। সেই অপারেশনও সহজ অপারেশন। আমাদের দেশে হচ্ছে না, তা বিদেশে হরদম হচ্ছে। তোর অপারেশন আমি বিদেশে করাব।’
‘এত টাকা কোথায়?’
‘সেটা নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না। যেভাবেই হোক আমি জোগাড় করব।’
‘কত টাকা লাগবে?’
‘তাও তোর জানার দরকার নেই। তুই শুধু মনে সাহস রাখবি। তোর মনে সাহস আছে তো?’
‘হুঁ আছে।’
‘সাহস খুব বড় একটা গুণ। এই গুণ পশুদের অনেক বেশি। মানুষের কম। কেন কম বল তো?
‘মানুষ বুদ্ধিমান, এ জন্যই মানুষের সাহস কম। বুদ্ধিমানরা সাহসী হয় না।’
হুমায়ূন আহমেদ নাতাশার আঙ্গুলে আমাদের চোখে খোঁচা দিয়ে বলে গেলেন, সাহসের অহঙ্কারটা বড্ড মিথ্যে’ আমাদের সংসারটা বড্ড ভয়ের। কষ্টের। কখনও আনন্দেরও।
যেভাবেই হোক চিকিৎসার জন্য নাতাশার বিদেশ যাওয়া হচ্ছে। যাওয়ার আগে চারটি চিঠি লিখেছে নাতাশা। চারটি চিঠির একটু একটু কথা উল্লেখ না করে পারছি না :
৭৮৬
১. প্রিয় ফুলির মা বুয়া,
তুমি যখন আমার এই চিঠি পড়বে আমি তখন বেঁচে থাকব না। মৃত্যুর পর সবাই মৃত মানুষকে দ্রুত ভুলে যেতে চেষ্টা করে। সেটাই স্বাভাবিক। যে নেই বার বার তার কথা মনে করে কষ্ট পাবার কোন কারণ নেই।
২. প্রিয় নানীজান,
আসসালামু আলাইকুম।
ঃ আমাদের বাংলা রচনা ক্লাসে একবার রচনা লিখতে দেওয়া হল তোমার জীবনের আদর্শ মানব। কেউ লিখল, মহাত্মা গান্ধী, কেউ লিখল, শেখ মুজিবুর রহমান। একজন লিখল, ফ্লোরেন্স নাইটংগেল, একজন লিখল, মাদার তেরেসা। শুধু আমি লিখলাম আমার নানীজান।
৩. প্রিয় বাবা,
বাবা, তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি সেটা কি তুমি জান? জান না, তাই না? আমিও জানি না। ভালোবাসা যদি তরল পানির মতো কোন বস্তু হতো তাহলে সেই ভালোবাসায় সমস্ত পৃথিবী তলিয়ে যেত। এমনকি হিমালয় পর্বতও।
বাবা, আমি যখন থাকব না তখন তুমি আমার কথা ভেবে কষ্ট পেও না। তুমি কষ্ট পেলে সেই কষ্ট কোন না কোনভাবে আমার কাছে পৌঁছবে। তখন আমার খুব খারাপ লাগবে।
৪. প্রিয় মা-মণি
ঃ আমি ঠিক করে রেখেছি, মৃত্যুর ঠিক আগে আমি আল্লাহকে বলব হে আল্লাহ, তুমি আমার মার মন থেকে আমার সমস্ত স্মৃতি সরিয়ে নিয়ে যেও। কোন দিন যেন আমার কথা ভেবে মা কষ্ট না পায়। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমার সেই প্রার্থনা শুনবেন।
চিঠি পড়তে পড়তে বহু বছর পর আবার আমার ভেতরটা খাখা করতে থাকে। আমার প্রতিরোধ ব্যূহ আবার ভাঙতে থাকে। আমার ভারাক্রান্ত চোখের সামনে নাতাশা হয়ে যায় আমারই মেয়ে। ঝাপসা চোখে আমি দেখতে পাই নাতাশা ইমিগ্রেশন পার হয়ে যাচ্ছে। দুই ফোঁটা অশ্র“ দুদিক থেকে নেমে আসে। হুমায়ূন আহমেদ, আপনার জন্য এটাই আমার নৈবেদ্য।
এ বছর আমি কার্লোস ফুয়োন্তস, মারিও বার্গাস য়োসা এবং ওরহান পামুক পড়েছি। কিছু কিছু লিখেছিও। কিন্তু আপনার নাতাশা যেভাবে কাঁদিয়ে গেল, এমন তো কেউ কাঁদাতে পারেননি। নাকি ছত্রিশ বছর পরও আমি ‘ইমম্যাচুরড’ই রয়ে গেছি?
বিকট গর্জন করে ডিসি ১০ আকাশে উঠে গেল। নাতাশা আমেরিকা যাচ্ছে। আপনি কিন্তু নাতাশাকে ফিরিয়ে আনেননি। তাহলে আপনি কেন ফিরে এলেন?

প্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের জন্মদিনে তাকে জানাই শ্রদ্ধা ও অন্তরের অন্তস্থল হতে এক রাশ ভালোবাসা। কাল সারাদিন নানা ব্যাস্ততার মাঝে বুকের মধ্যে খুত খুত করছিলো। খুব মনে পড়ছিলো প্রিয় লেখক আর তার প্রিয় লেখাগুলির কথা। তাই সকল কর্মব্যাস্ততার পর যখন
প্রায় মাঝরাতে ব্লগের পাতায় চোখ বুলাচ্ছিলাম হঠাৎ চোখে পড়লো দুজন ব্লগার (রক্তিম দিগন্ত ও বনমহুয়ার) কথপোকথন। তারা আনিস ও জরীর এই বইটির নাম মনে করতে পারছিলেন না। আর তখনি মনে পড়ে গেলো আমার কিশোর বেলায় পড়া অনবদ্য এ বইটির কথা যা পড়ে কত রাত, কত দিন আমি চোখের জলে বুক ভাসিয়েছিলাম।


তেপান্তরের মাঠে বধু হে একা বসে থাকি, তুমি যে পথ দিয়ে গেছো চলে তারই ধুলা মাখি হে

ভালো থাকুন হুমায়ুন আহমেদ । আরও হাজার কোটি বছর কাঁদাক কিংবা হাসাক তার সৃষ্টিগুলো আমাদেরকে। আমাদের ভালোবাসায় তিনি বেঁচে রবেন চিরদিন।



"নির্বাসন" বইটির ডাউনলোড লিঙ্ক
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:০৭
৩০টি মন্তব্য ৩০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×