somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

আন্দালুসিয়ার হৃদয়

১৮ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যার নাম শুনেছি কিন্তু পড়ার সৌভাগ্য হয়নি তখনও তার জীবনি নিয়ে প্রথম একটা ছবি দেখলাম। লোকটিকে দেখে আমি চমকে গেলাম এত্ত সুন্দর মানুষ! সুন্দর মানুষ সবার পছন্দ। ছবির মানুষটি আসল মানুষ নয় তবে তাঁর আদলে তারই চেহারা তৈরী করা হয়েছে। পরে যখন তার ছবি দেখলাম কোন অমিল খুঁজে পেলাম না।
মাঝরাতে ছবিটি শেষ হলে ঘুমাতে পারলাম না সারারাত। চোখের কোল বেয়ে অশ্রু শুকিয়ে আছে কপোলের পরে কত আগে হারিয়ে যাওয়া একটি মানুষের জন্য আমার বুকের গহীনে এক দুঃখ নদী বইছে। এমন সুন্দর মানুষটির প্রতি মায়া হলো না ওরা কেমন মানুষ আমি ভাবতে পারি না। ওদের মানুষ বলা যায় না ওরা অমানুষ। সে শুধু দেখতে সুন্দর নয় তার মনটা প্রকৃতির মতন স্বচ্ছ, সুন্দর আর আধুনিক।
সে শুধু একা নয় আরো মানুষকে এমন নির্মম ভাবে প্রাণ দিতে হয়েছে এই পৃথিবীর বর্বর বিবেকহীন মানুষের কাছে। অথচ এই মানুষগুলো কারো ক্ষতি করেনি বরঞ্চ পৃথিবীকে এগিয়ে নেয়ার জন্য তাদের মাঝে কিছু ঐশ্বরিক চিন্তা চেতনা বোধ জেগে উঠেছিল। যা সময়ের আগে অন্ধ দেয়ালে আটকে থাকা মানুষ বুঝেনি বরঞ্চ মৃত্যুর মাঝে উল্লাস করেছে।




ফুয়েন্তে ভ্যাকুয়েরস স্পেনের দক্ষিণে জিনীল নদীর পারে ছোট্টো গ্রাম। গ্রানাডা থেকে দশ মাইল দূরে আর মদ্রিদ থেকে ত্রিশ মাইল দূরে ১৮৯৮-এর ৫ই জুন, গ্রীষ্মের মধ্যরাতে এক শিশুর জন্ম হলো। গ্রামের বিত্তশালী ভূস্বামী ফেদেরিকো গার্সিয়া রোড্রিগুয়েজ আর স্কুল শিক্ষক স্ত্রী ভিসেন্টা লোরকা রোমেরোর প্রথম ছেলে সন্তানটির নাম রাখা হলো ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকা।
বিত্তবান কৃষক বাবা আর শিক্ষক মায়ের শিল্প মনা পরিবারে বেড়ে উঠতে থাকে শিশুটি এক অপার কৌতুহল আর জীবনের হাজারো প্রশ্ন নিয়ে। রাতের বেলায় বাবা গিটার বাজাতে বসলে মা গলা মিলাতেন মাটির গন্ধময় লোক সঙ্গীত গেয়ে। অপার আনন্দ বয়ে আনত যেন শিশুটির মনে সুরের জগত। আন্দালুসিয়ার মাটি থেকে উঠে আসা পাহাড়ের প্রতিধ্বনী ছড়িয়ে পড়ে তার প্রতিটি রোম কোপে পরিবারের সংস্কৃতি থেকে। ছোট বয়সেই অদ্ভুত সব কথায় অবাক করে তুলত আসে পাশের মানুষদের গর্সিয়া লোরকা ।
লোরকার এগার বছর বয়সে পরিবার চলে যায় জিনীল নদীর পাড় থেকে ফুয়েন্তে ভ্যাকুয়েরস ছেড়ে বড় শহর গ্রানাডায়। পড়ালেখা নতুনকে জানার সুযোগ বাড়ে বড় শহরে সাথে চলে পিয়ানোবাদন। চেতনায় দাগ কাটা অথৈই শব্দ লিখে পাতায় পাতায়। মাঝে মাঝেই সে সব উচ্চারণে ছোট ভাই ফ্রেন্সিসকো ও বোন মারিয়াকে অবাক করে দিত। ওদের মনে হতো ভাইটি যেন অন্য কেউ অচেনা জগতের।
গর্সিয়া লোরকা গ্রানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শণ ও আইন পড়ায় বিরতী দিয়ে ১৯১৯ সালে রোমান সভ্যতার পীঠস্থান মদ্রিদ, যে শহর শিল্প, সংস্কৃতির ততকালীন শত বৎসরের ঐতিহ্য বহন করছে, পাশাপাশি মুসলিম,বাইজানটান, গ্রীক,আইবেরিয়ান জাতীর ইতিহাস, সভ্যতা ও সংস্কৃতির মিশ্রন। সে সময়ের লেখক, কবি, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীদের বাস সেখানে রেসিডেন্সিয়া ডি এস্টুডিয়েন্ট’ বিশ্ববিদ্যালয়ে সঙ্গীত শিক্ষার জন্য চলে যান।
সেখানে জীবনের পনেরটি বছর পৃথিবীর বুকে এক আধুনিক যুগের ছাপ রাখতেই যেন ছুটে যান জলপাই ঘ্রাণ সমৃদ্ধ মদ্রিদে। আপন স্বত্তায় বিকাশ লাভের জন্য মনোনিবেশ করেন। ফুয়েন্তে ভ্যাকুয়েরস শান্ত খামার পরিবেশ ছাড়িয়ে, গ্রানাডার শহুরে জীবনের চেয়ে আরো বেশী ব্যাপ্তিময় মদ্রিদ। শিল্প মায়ার জাল বিছিয়ে যাকে ডাকছে সে কেমন করে আটকে থাকে আইনের বেড়া জালে। জীবনের অনেক কিছু পাওয়ার ছিল, দেওয়ার ছিল হিসাব নিকাশ ছিল এই ঐতিহ্যময় শহরে।
লোকগীতির সংগ্রহ, লোকাচার ভিত্তিক লেখা লোরকার জনপ্রিয় বিষয় বীজ বপন শুরু হয় সাহিত্য পথ চলার। যেন মাটি থেকে ফসল তোলা শুরু হয়। তার ক্রিয়াকাণ্ড ব্যাপ্তী লাভ করতে থাকে সংগঠন, নাট্যকর্ম, কবিতা পাঠ, সুর সাধনায় গিটার ও পিয়ানো বাজনার ঝংকারে, শিল্পী হিসাবে জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। তাঁর ভিতরের সুপ্ত আগ্নিগীরির লাভা উদগিরন হয় ঝলক লাগে, স্পর্শ পেয়ে থমকে উঠে পরিবেশ।
একই সাথে সঙ্গীত গবেষনা এবং পিয়ানো ও গিটার বাজনায় পরর্দশিতা লাভ করেন। ১৯২০ সালে নিজের লেখা সুর করেন পিয়ানোয়। আলোর রশ্মি যেন বয়ে যায় পিয়ানোর সুর তরঙ্গে। দূর্ভাগ্য! সে সময় আজকের মতন এমন হাতে হাতে সুলভ মুঠোফোন বা সচল ক্যামেরা ছিল না তাই ধারন করা নেই তার সেই ছন্দময় আঙ্গুলের সঞ্চালনে সুরের মায়াজালের অসাধারন অনিন্দ্য বাদ্যবাদন সুরতরঙ্গ, অথবা কবিতা কথন স্বকণ্ঠের সেই সময়ের অনুভবে।নোটেশন অনেকেই অনুসরন করেছে যদিও ।
স্পেনিশ সঙ্গীতের সুরের মায়াজাল অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর আবিষ্টকারক, অন্তত আমার কাছে। কথা না বুঝেও ঘন্টার পর ঘন্টা সেই মায়ায় ডুবে থাকি আমি। তাই আমার কাছে মনে হয় লোরকার বাজনা সরাসরি শুনতে পেলাম না অনেক কিছুই পাওয়া হলো না। আগে ভয় ছিল ইংরেজি না জানার আর এখন ইচ্ছে করে পৃথিবীর সব ভাষা জানার। অনুবাদ বা ভাষান্তরিত অনুবাদ যে লেখা পাই তার অর্ধেকও, আসলকে ধারন করতে পারে না।
ক্যাফেতে কবিতা পাঠের আসর বসে। লোরকা সেখানে ভীড়ে যান। আর শুধু ভীড়ে যাওয়াই নয় শব্দ গাঁথুনির মোহময় আবেশে আবিষ্ট করে ফেলেন বুদ্ধিজীবী, তুখোড় সংস্কৃতি সচেতন মানুষদের। জলপাই ঘ্রাণে ভেজা মাটির প্রাচীন মীথ ঐতিহাসিক ধূলা থেকে ত্যাজদীপ্ত প্রগাঢ় কবিতা নতুনের বার্তা ছড়াতে থাকে। হাতে হাতে বিলি হতে থাকে তার লেখা কবিতা গুলো বই বেরুনোর আগেই। আগ্রহ ভরে সংগ্রহ করে ভক্তরা তার কবিতা বারবার পাঠের জন্য। কবিতার বই প্রকাশের আগেই কবি খ্যাতি তার চেয়েও বেশী ভক্ত আর গুণগ্রাহীর পছন্দের শীর্ষ তালিকায় পৌঁছে যায় তাঁর নাম ফেদেরিকো গর্সিয়া লোরকা।




লিব্রো ডি পোয়েমাস’ (বুক অব পোয়েমস) ১৯২১-এ প্রকাশিত হয় লোরকার প্রথম কবিতার বই। যে কবিতা আগেই জয় করেছে মানুষের মন। উন্মাতাল এক ঝড়ের ডাক যেন শব্দমালায়। আন্দালুসিয়ার নতুন কবি লোরকা এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার নিয়ে মানুষের হৃদয়ের দ্বার খুলতে থাকেন।
বিষয়শ্রেণী রূপান্তর অনুযায়ী তাঁর কাজ বিভিন্ন শৈলীর। সাহিত্যিক আন্দোলন স্বতন্ত্র স্পেনিশ, লোক কাহিনীর লৌকিক প্রভাব, রোমান্টিকতা, নান্দনিক ভাষার সাথে কবিতায় ছবির সংযোগ ঘটিয়ে অধিবাস্তবাদ, আমূল পরিবর্তন আনেন, উন্নয়নের একটি স্তর রচনা করে গেছেন, বিংশ শতাব্দীর নতুন মাইল ফলক স্থাপন করে গর্সিয়া লোরকা।

তার প্রথম দিকের কবিতা স্পেনিশ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। অতিমাত্রায় উত্তেজিত, অতি নাটকীয়তা, রোমান্টিকতা সেই সাথে শিল্পী দালির ঘনিষ্টতার প্রভাব বিস্তার করে পরবর্তিতে। পরে ’ওয়াল্ট হুইটম্যানে’ আমেরিকা ভ্রমনের প্রভাবও তার লেখার শৈলী পরিবর্তন হয়।’এ পয়েট ইন নিউ ইয়র্ক’ ধাপে ধাপে এগিয়ে যায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। যেমনই হোক শেষ পর্যন্ত গর্সিয়া লোরকার কাজ বিষয়,কাজের মাধ্যম সব কিছুই ভিন্নমাত্রার প্রভাব রাখে। কল্পনাকে বাস্তবে স্থাপন করার অধিবাস্তবধারা তিনিই শুরু করেন।
স্পেনিশ সাহিত্যিক লুইস দে গানগারার ৩০০ বৎসর মৃত্যু বার্ষিকীকে উপলক্ষ করে ১৯২৩ এ মদ্রিদের কবি লেখক চিত্রশিল্পীর প্রগতিশীল প্রভাবশালী গোষ্টি জেনারেশন-২৭ গঠিত হয় সিভেল্লা নামক স্থানে সেই কবির জন্মস্থানে। পরবর্তিতে সংগঠনটি কবিতা, চিত্রে তাদের অভিজ্ঞতা, কাজ বিনিময়ের মাধ্যমে মিলনমেলায় পরিণত হয়। এখানে আসতেন সম্ভাবনাময় চিত্র শিল্পী সালভাদর দালি। চলচ্চিত্রকর লুইস বুনুয়েল এবং অরো অনেকে। তবে দিনে দিনে এই ত্রিরত্ন জুটি এক অন্তপ্রাণ হয়ে উঠেন। তার মাঝে আরো অন্তরঙ্গতা বাড়ে দালি ও লোরকার। সালভাদর দালির আকর্ষন লোরকার এক ভিন্ন জগতের সন্ধান দেয় খুঁজে পান সৌন্দর্য, ভালোলাগা।
প্রকৃতির আবেগময় সৌন্দর্যের অনুরাগী লোরকা বাঁধনহীন ঘোড়ার মতন আপন খেয়ালের বসে পাগলপারা। সমাজের অবক্ষয়, বৈষম্য, অসংগতি বড় বেশী চোখে পড়ে তার। ভালোলাগার স্বাধীনতায় সৃষ্টির জোয়ার বয় তার কলমে। রচনা করে চলেন একের পর এক কবিতা, নাটক। তুলে আনেন চোখে না পড়া অনাদী কালের বয়ে যাওয়া কালো ক্ষতগুলো যত্নে অনবদ্য শব্দ গাঁথায়।
সমাজে নারীর ভূমিকা অবস্থান, বানিজ্য, প্রেম, সমকামি সম্পর্ক, শ্রেণী বৈষম্য প্রথা বিরোধী অনেক উপাদান ঢেলে দিলেন, সমাজে ছড়িয়ে পড়ল উত্তেজনা যার পক্ষে বিপক্ষে দুইধারার সমর্থক তৈরী হয়। সমালোচনার তুবড়ি ছোটে ভালোও বাসে অনেকে।
স্যুরিয়ালিজম ধারায় ছবি আঁকায় পারর্দশি দালি লোরকার কবিতা নাটকের ভক্ত অনুরাগী অন্য দিকে লোরকা দালির ছবি আঁকার ভক্ত। বন্ধুত্ব, অন্তরঙ্গ, প্রেম, ভালোবাসা, ভিন্নধর্মি আধুনিক শিল্পের ধারায় পারর্দশি জুটি যেন একে অপরের প্রেরণা। প্রেমের অনুভব হয় এক প্রেমিক পুরুষের জন্য লোরকার। সে সময়ের প্রেক্ষাপটে তার এই সমকামি বন্ধুত্ব সমাজ, ধর্ম, রাষ্ট্রতন্ত্রের মুখে এক বিশাল চাপেটাঘাত। আড়ালে আবডালে ভালোবাসার সাথে বিতশ্রদ্ধাও বাড়ে।
ক্যাডাকুয়েসে দালির সমুদ্র তীরবর্তি গ্রীষ্মকালিন বাড়িতে তাদের সময়গুলো ছিল আনন্দময়, সুখের স্মৃতি জড়ানো। দালির বোন আনার সাথে ভালো বন্ধুত্ব হয় লোরকার। সৃষ্টি পাগল দুই প্রকৃতি প্রেমিক আনন্দে আর আবেগে, সমাজ বদলে ফেলার অঙ্গিকারের রঙ তুলি আর কলমের আঁচড়ে পরিকল্পনায় সমুদ্র বাতাসের মতন সাবলীল বয়ে যান। পরস্পর পরস্পরের পরিপুরক যেন স্যুরিয়ালিজম ধারার শিল্পী কবির। সুখের সময়গুলো বড় অল্প সময় থাকে।
১৯২৭রোম্যানসিরো জিতানো’ (জিপসি ব্যালেডস্) সাত বছর পর দ্বিতীয় কবিতার বই প্রকাশ হয় । স্পেন পায় এক জনপ্রিয় কবি ফেদরিকো গার্সিয়া লোরকা। অন্যধারার অসাধারণ এক কবি সমাজ সচেতনতার মূল শেকড় নাড়নো কবি। জনপ্রিয়তা তুঙ্গে সবার মুখে মুখে কবির নাম। কিন্তু লোরকার কি হয়েছে উদাস মন। দালির সাথে সম্পর্কের ভাঙ্গন তার সুখ চূর্ণবিচুর্ণ করে দিচ্ছে । স্বাভাবিক সব মানুষের স্বভাব বিরুদ্ধ এক উচাটন অন্য আকর্ষন তার মাঝে। প্রেম জাগে পুরুষের জন্য। দালি প্রিয় বন্ধু তাকে প্রত্যাখ্যান করে দূরে সরে যায়।
শিল্পী সালভাদর দালিও চলচ্চিত্রকর লুইস বুনুয়েল এর তৈরী ’’এন আন্দালুসিয়ান ডগ” ছবিটি লোরকা তার প্রতি বক্র ইঙ্গীত, আক্রমন করা হয়েছে এমন অনুমানে ম্রিয়মান হয়ে পরেন। আবেগ প্রবণ লোরকা ভেঙ্গে পরছেন ভিতরে ভিতরে। মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে জড়িয়ে পরছেন নানা রকম সম্পর্কে। লোরকাকে মদ্রিদ থেকে দূরে পাঠিয়ে দেয়া হয় এ সময় পবিরার থেকে ব্যবস্থা করে।
সৃষ্টিশীল মানুষ মাত্রই আবেগ প্রবন, অভিমানী আর স্পর্শকাতর। লোরকার মধ্যে এসব কিছুই প্রবলভাবে বিদ্যমান। মর্ম যাতনার ভারে নূয়ে পড়া লোরকা সব যন্ত্রনার অবসান খুঁজেন সৃষ্টির মাঝে। যন্ত্রনার কবন্ধ খুলে দেন যেন খাপখোলা তলোয়ার আরো বেশী খোলামেলা আরো টানটান উত্ত্জেনাময় সাবলীল তার লেখা। বড় বেশী বেয়ারা বহেমিয়ান ছন্নছাড়া খাপছাড়া প্রথাবিরোধী কবি। অবাধ্যতা ও প্রবল ক্রুদ্ধতা মৃত্যুর প্রতিবিম্ব, নিয়ে লিখলেন অসংখ্য কবিতা। স্যুরিয়ালিস্টিক সময় ও নিজেকে প্রকাশ করলেন কবি গার্সিয়া লোরকা কাব্যময় যন্ত্রনায়।
১৯২৯ ঘুরে আসেন নিউ ইয়র্ক, নয় মাসের সফরে কলম্বিয়া বিশ্ব বিদ্যালয়ে ইংরেজি ভাষার উপর পড়ালেখা করেন ফিরতি পথে তিন মাস কাটান কিউবার হাভানায়। ’পয়েট ইন নিউইয়র্ক’ এ তার ভ্রমন অভিজ্ঞতার প্রতিফলন দেখা যায়।
ফিরে এসে লোরকা মনোনিবেশ করেন নাটকে। শেষের দিকে কবিতার চেয়ে বেশী নাটক লিখেছেন তার বক্তব্য ছিল। কবিতার চেয়ে বেশী প্রভাব বিস্তার করা যায় নাটকের মাধ্যমে। চোখের সামনে তুলে দেয়া যায় অবস্থা। ছড়িয়ে দিচ্ছেন ভাবনা, সচেতনতা সুসম সমাজ ব্যবস্থার সাম্যবাদের স্বপ্ন ।
নিয়মিত মঞ্চস্থ হচ্ছে নাটক। সাথে আছেন স্টুডেন্ট থিয়েটার কোম্পানি ’লা বাররাকা’র সেক্রেটারি রাফায়েল রড্রিগুয়েজ রাপুন প্রকৌশলের ছাত্র।
লা বাররাকা’ বা কুঁড়েঘর) ছিল দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র সরকার এর বিনামূল্যে আধুনিক ক্লাসিক স্পেনিশ থিয়েটার গ্রামঞ্চলের দর্শককে পরিচয় করানোর মাধ্যম। বহন যোগ্য সরঞ্জাম নিয়ে লোরকা ছোটে চলেছেন নাটকের দল নিয়ে গ্রাম গ্রামান্তর।
একের পর এক সে সময় রচিত হয়, মারিয়ানা পিনেডা ১৯২৭’ এমর ডা ডন পারলিমপ্লিন কন বেলিছা এ সু জারডান’’ ১৯৩১ বডাস ডা সানগ্রান’’ ১৯৩৩ লা কাসা ডা ব্রেনারডা আলবা’’ ১৯৩৬ দা জাপাটেরা পরডুগুউওসা’’ ১৯৩০ ইরেমা’’ ১৯৩৪ ।
এর আগে ১৯২০ সালেই প্রবল সমালোচনা হয় ’’এল মালিফিকোও ডা লে মারিপোসা’’ প্রজাপতির অশুভ অভিশাপ’’ প্রজাপতি আর তেলাপোকার প্রেম কাহিনীর নাটুকেপনা অসম্ভব ভালোবাসার এক অভূত ধারনা নিয়ে লেখা নাটক প্রচারের পর।

এই ঘুরে বেড়ানোর সময় বোডাস ডা সানগ্রান’’ রক্তের বিবাহ ” নামের গ্রামীণ ট্রিলজি তার শ্রেষ্ঠ নাটকটি তিনি রচনা করেন যদিও এটি অভিনীত হয়নি ১৯৩৩ এর আগে। সমস্ত নিয়মের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, সংরক্ষণশীল স্প্যানিশ সমাজ, নারীদের গৃহিত ভূমিকা চ্যালেঞ্জ এবং শ্রেণী প্রথার নিষিদ্ধ বিষয় অন্বেষণের মাধ্যমে মূল শিকড় নাড়িয়ে দেন।

তিনি বলেন নাট্যশালা হলো কান্না, হাসি, মানুষের জীবনের অংশ, পুরূষকে প্রশ্ন বিদ্ধ করার মুক্ত মঞ্চ। সেকেলে অথবা ভুল প্রশ্ন, জীবিত, শাশ্বত নিয়ম উঠে আসে তার রচনায়। ড্রয়িংরুম কমেডির মতন বাস্তব উপস্থাপনা ব্যাখ্যা করা যায় নাটকের মাধ্যামে মানবতার বিষয় হৃদয় ভিত্তিক করে।

প্রবলভাবে বিদ্যমান। মর্ম যাতনার ভারে নূয়ে পড়া লোরকা সব যন্ত্রনার অবসান খুঁজেন সৃষ্টির মাঝে। যন্ত্রনার কবন্ধ খুলে দেন যেন খাপখোলা তলোয়ার আরো বেশী খোলামেলা আরো টানটান উত্ত্জেনাময় সাবলীল তার লেখা। বড় বেশী বেয়ারা বহেমিয়ান ছন্নছাড়া খাপছাড়া প্রথাবিরোধী কবি। অবাধ্যতা ও প্রবল ক্রুদ্ধতা মৃত্যুর প্রতিবিম্ব, নিয়ে লিখলেন অসংখ্য কবিতা। স্যুরিয়ালিস্টিক সময় ও নিজেকে প্রকাশ করলেন কবি গার্সিয়া লোরকা কাব্যময় যন্ত্রনায়।
স্পেনের বিখ্যাত ষাঁড় মানুষের লড়াই এ প্রাণ হারায় লোরকার বন্ধু। বন্ধু হারানোর শোকে লিখিত হয় ’’ষাঁড় মানুষের লড়াই’’ কবিতা যা তার শ্রেষ্ঠ কবিতার একটি হিসাবে গণ্য হয়েছে।

১৯৩৩ সালে বুয়েনস আর্জেন্টিনায় রক্তের বিবাহ’’ নাটকের প্রথম অভিনয়ের উপর বক্তৃতায় বলেন, মৃত্যুর প্রাণবন্ত সচেতনতা একটি দেশের মাটির সাথে সংযোগ এবং বুদ্ধিদীপ্তির সীমাবদ্ধতার কথা, বিষয়ের ধারাকে শিল্পসম্মত অনুপ্রেরণায় সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করেছেন তত্ত্ব সমৃদ্ধ বিখ্যাত ভাষন। সেই সাথে শাস্ত্রীয় শিকড় থেকে সনাতন ধারা থেকে প্রমাণিত তাঁর শেষ কবিতার কাজ চতুর্দশপদী ১৯৩৬) ’অন্ধকার ভালোবাসা’। নতুন করে ২০১২ সালে আবিস্কৃত হয়, যা লোরকা সম্পর্কে নতুন ধারনা দেয়। চতুর্দশপদী লেখার অনুপ্রেরণা ছিলেন জুয়ান দে রামিরেজ লুকাস। ১৯ বছরের সেই ভালোবাসার ছেলেটিকে নিয়ে দেশান্তরী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বয়স অল্প হওয়ায় জুয়ান দে রামিরেজ লুকাস অভিবাবক ছাড়া দেশের বাইরে আসতে পারছিল না।
ম্যক্সিকোয় ভালোবাসার হাত ধরে জীবন যাপন করার সুযোগ পেলে হয়ত আরোও অনেক প্রানবন্ত আধুনিক কর্ম সৃষ্টি হতো।

স্কেচ আর রঙের মাঝেও খুঁজেছেন আশ্রয় যদিও তার লেখার মতন আঁকা ততটা প্রচার পায়নি। একটি মুখের অনেক প্রতিবিম্ব যেন তাড়িয়েছে তাকে, ছবির ভিতর ঘুরে ফিরে এসেছে সেই যন্ত্রনা। অস্থিরতা ভালোবাসার, শান্ত সুচারু মুখে প্রকৃতির অকৃপণ ভালোবাসা ছাপিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন।

রাফায়েল রড্রিগুয়েজ রাপুন শেষ পর্যন্ত কাছে থাকা বন্ধু তার সাথে কাটানো সময়কে এভাবেই বলেন, ’’যখন ফেদেরিকোর সাথে থাকা হয় তখন আবহাওয়া গরমও না ঠান্ডাও না আবহাওয়া তখন ফেদেরিকো।’’ তার আকর্ষন এড়িয়ে চলা দুঃসাধ্য সে ছিল শক্তিশালী উষ্ণ,কুশলী খুব সহজাত দক্ষতা সম্পন্ন। সে মজাদার,তার সাথে থাকা মানেই আনন্দময় সময়।
অথচ প্রকৃতি ভালোবাসা মানুষটি বারবার কুঁকড়ে উঠতে হয়েছে আঘাতে। আর--

যন্ত্রনার পথ পেরিয়ে স্বস্থির পাল উড়িয়ে শান্তিতে বসা হলো না।

দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্রের সরকারকে উচ্ছেদ করে সামরিক বহিনীর জেনারেল ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর একনায়কতন্ত্র স্বৈরশাসন লং লিভ রেভুলেশন উচ্ছেদ অভিযানে মেতে উঠেছে। জুলাই ১৯৩৬ স্পেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায় আর ঠিক তিনদিন আগে মদ্রিদ থেকে ফেদেরিকো গোর্সিয়া লোরকা গ্রানাডায় পরিবারের সাথে থাকার জন্য আসেন।
উত্তেজনাময় আতংকিত টানটান যুদ্ধ মেঘের হাওয়া ঢেকে যায় ভূমধ্যসাগরের উজ্জ্বল জলপাই ভূমি। ঘন কালো মেঘের ঘনঘটা দেশ জুড়ে।
স্পষ্টভাষী উদার দৃষ্টি ভঙ্গি সময়ের আগে চলা লোরকা তাদের রোষানল থেকে রেহাই পাবেন কেমন করে। সে অনেক বেশী অগ্রসমান তাকে রুখতে হবে।
সে কোন রাজনৈতিক দল না করলেও বড্ড সরাসরি কথা বলে। তাঁর লেখা কবিতা, অভিনীত নাটক সমকামি যৌনতার প্রতি সমর্থন থাকে। সমাজ ধর্ম ধ্বংস করার জন্য তাঁকে বামধারার বুদ্ধিজীবী হিসাবে চিহ্নিত করা হলো। জাত,ধর্ম রক্ষার জন্য তাকে শেষ করতেই হবে নয়তো স্বৈরতন্ত্রের অসুবিধা হবে। ওর বাড়াবাড়ি কথার জোড়ে হয়তো ভাসিয়ে নিয়ে যাবে ফ্রাঙ্কোর সেনাবাহিনী।
ক্ষমতা লিপ্সু- সময়কে আকড়ে থাকা শাসক গোষ্টি নিজেদের স্বার্থের প্রয়োজনে বৃহৎতর পরিবর্তন কখনও চায় না, তাদের বোঝারই ক্ষমতা নাই পৃথিবী ধ্বংসের নয় সৃষ্টির। লক্ষ কোটি মানুষের মাঝে যে দু দশ জন মানুষ পৃথিবীকে এগিয়ে নিতে আসে তাদের ভাবনা চিন্তা অন্যরকম হবে। তাদেরকে সহজে মেনে নেয়া ছাড়া সব সময়ই নির্যাতন বা হত্যার মাধ্যমে বুদ্ধিমত্তা নির্মূল করার চেষ্টা করা হয়।

১৮ অগাস্ট বিকালে গ্রানাডার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে লোরকাকে জেনারেল ফ্রাঙ্কোর সৈন্যরা। নিয়ে যাওয়া হয় সামরিক ক্যাম্পে ভিজনা শহরে। পরদিন ১৯ অগাস্ট লোরকা সাথে, বৃদ্ধ শিক্ষক ডিওসকোরো জেনিলদো গন্জেলিজ ও দুজন বুল-ফাইটার যারা ফ্রাঙ্কোর স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে লড়ছিল। সবাইকে এক সাথে নিয়ে যাওয়া হয় আন্দালুসিয়ার সিয়েরো নেভেদা পর্বত পাদদেশে।




মুখের ভাষা থামিয়ে দিতে বন্দুকের ভাষা ব্যবহার করে তারা শুইয়ে দেয় শরীর পাহাড়ের নীচে।
”মৃত্যুর ফ্যাকাশে গন্ধ তাদের আবৃত করে/ গ্রীক উপকথার অর্ধমানব ও অর্ধ ষণ্ড তাদের তাড়া করে/’’
শরীর মাটির নীচে চাপা দিয়ে ফ্রাঙ্কোর দল চলে যায় তাড়াতাড়ি।

আকাশে শুক্লপক্ষের চাঁদ, প্রকৃতি প্রিয় ফেদেরিকো র্গসিয়া লোরকা জলপাই ঘ্রানের সাথে জোছনার উজ্জ্বলতা অবলোকন করছেন, প্রিয় চাঁদ দেখছেন শুধু দেখছেন না বর্বদের কুৎসিত মুখ। তিনি উদ্বিগ্ন নন খানিক পরের মৃত্যু নিয়ে হয়ত বা শেষ কবিতাটি রচনা করছিলেন নির্বোধ বর্বর জন্তুসম দুপায়ী বন্ধুকধারী দাঁতাল শুয়োরদের নিয়ে। বুদ্ধিহীন যারা কলমকে কবজা করতে গুলি চালায়।
নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ি করার চিরায়তন প্রচেষ্ঠায় চলে নির্বিচারে বুদ্ধিজীবী নিধন।
অত্যাচার এবং গণতন্ত্র ও সংগ্রাম’’ বা ’’ ফ্যাসিবাদ ও স্বাধীনতা” অথবা ফ্রাঙ্কো ও কমিউনিজম বা সভ্যতা ও গতানুগতিক রক্ষনশীল এর মধ্যে যুদ্ধ হিসাবে দেখা হয়। সে যাই বলা হোক না কেন এর বলি হয় ৫০০,০০০ থেকে ১০,০০০,০০০ স্পেনবাসী বুদ্ধিজীবী, শিল্পী, লেখকসহ হারিয়ে যায় প্রগতিশীল লেখক আন্দালুসিয়ার সিয়েরো নাভাডা পর্বতের পাদদেশে।
গ্রানাডা থেকে খানিক দূরে তিনদিক ছেয়ে থাকা পাহাড় ক্ষনজন্মা প্রকৃতির সন্তানের শরীর ধারন করে রাখে স্বযত্নে বুকে কিন্তু ভূমধ্যসাগরের ঢেউয়ে ঢেউয়ে শব্দ ভাণ্ডার পৌঁছে দেয় পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষদের কাছে। ফ্রাঙ্কোর খবর কেউ জানে না কিন্তু আন্দালুসিয়ার হৃদয়কে ধরে রাখে আজও মানুষ হৃদয়ে পৃথিবীর কোনে কোনে। তার জলপাই ঘ্রানমাখা লৌকিক কথামালা আধুনিকতার মোড়ক খুলে ছড়িয়ে পরে আকাশে আকাশে।



সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:১৭
১২টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×