somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

রোকসানা লেইস
স্রোতের অজানা টানে সমুদ্র বালিয়াড়ি বেয়ে বোহেমিয়ান- গৃহকোন, জীবন যাপন ফেলে চলে যায়। তুমি দুহাত বাড়িয়ে আলিঙ্গনে বাঁধতে চাও জোছনা গলে হারিয়ে যায় সুখ । আছড়ে পরা ঘূর্ণিজল মনে বাজায় অচেনা সবুজ দিগন্ত ..

ফ্যাশন জগত এবং আমরা

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আপস এণ্ড ডাউন, টাইট এণ্ড লুজ। লং এণ্ড সর্টস এর মাঝেই ঘোরা ফেরা করছে ফ্যাশন জগত। এতদিন প্যান্ট নিচে নামতে নামতে এমন অবস্থা হয়ে ছিল পাছার অর্ধেকটা বের করে রাখাই ফ্যাশন।
কি ভাবে এই ঝুলে পরা প্যাণ্ট পরে থাকে তা ভেবে অস্বস্তি হতো আমার। ভীড়ের মাঝে লাল নীল কালো সাদা নানা রঙের আন্ডারওয়ার চোখে পরত। তবে একদিন লাল আন্ডারওয়ার প্রায় এ্যাক্সিডেন্টের হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছিল।
অনেক দূর থেকে বেশ রাতে বাড়ি ফিরছি। শুনশান নিরব রাস্তায় লেফট টার্ন করার অপেক্ষায় আছি। সবুজ বাতি জ্বলে উঠতে লেফট টার্ন নেওয়ার জন্য গাড়ি টান দিতেই হঠাৎ চোখে পরল অন্ধকারে লাল একটা রেখা ভেসে যাচ্ছে। কালো মানুষের কালো প্যান্ট কালো জুতা কালো কোট মিলেমিশে একাকার কেমোফ্লেজ হয়ে ছিল রাতের গভীরে শুধু মধ্যিখানে একটা লাল লাইন আমার দৃষ্টিতে পারল। তাড়াতাড়ি ব্রেক করে তাকে পার হওয়ার সুযোগ দিলাম। সব কিছু সব সময় মন্দ নয় উপলব্ধি করলাম।
এখন আবার উপরের দিকে উঠতে উঠতে বুকের উপর উঠে যাচ্ছে প্যাণ্ট। কিছুদিন আগে এটিএন টিভির মাহফুজ রহমানকে নিয়ে অনেক হাসাহাসি করছিল মানুষ তার বুকের উপর প্যান্ট পরা দেখে তবে গান তিনি যেমনই করেন ফ্যাশনের সাথে আছেন এটা মানুষ বুঝতে পারে নাই ।
প্যাণ্ট যেমন উপরে উঠছে তেমন কমছে জামার ঝুল কাচুলির সমান হয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। শাড়ি ছাড়া পেটিকোট ব্লাউজ পরে চলা ফেরা করা মানুষও দেখা যাচ্ছে প্রতি নিয়ত। যাকে টপ স্কার্ট বলে চালানো হয়। টপস গেঙ্জির সাথে পাজামা পরে হাঁটছে স্বেতাঙ্গ রমনী পাজামার ফিতা ঝুলে আছে হাঁটুর কাছে । দ্বিধাহীন চলন এটাই ফ্যাশন। অথচ আমাদের কালচারে পাজামার ন্যাড়া বের হয়ে গেলে কী লজ্জার বিষয়।
ছেলেরাও এখন ছোট ছোট বা আটো সাটো সার্ট জামা পরছে। নখে নেলপালিশ, কানে নাকে রিং চুলে নানান রঙের বাহার। আবার মেয়েদের পোষাকে চুলে কোন পার্থক্য নেই ছেলেদের থেকে। পেছন থেকে দেখে লিঙ্গ ধারনা করা মুশকিল।
একটা সময় ছিল কালো ছাড়া আর কোন রঙের ড্রেস পাওয়া কঠিন ছিল উত্তর আমেরিকা ইউরোপে। সাদা কালো আর গামবুট অথবা চিকন হাই হিল ছাড়া আর কোন ডিজাইন জুতা বা স্যান্ডেল পাওয়া কঠিন ছিল। বেশ কিছুদিন থেকে বলিউড স্টাইলে পুথির কাজ বেশ পপুলার হচ্ছিল পোষাকে।
হঠাৎ করে এ বছর রঙিন চকমকে ঝলমল সোনালি রূপালির ভীষণ রকম সমাহার দোকানে। ক্রিসমাস সিজন ঝলমল হয়ে এসেছে এবার। এখন আর কোন রঙের বাছ বিচার নেই ছেলে মেয়েদের মধ্যে। এক সময় গোলাপি কমলা লাল থেকে ছেলেরা দূরে থাকত। নীল ছেলেদের রঙ আর গোলাপি মেয়েদের রঙ বলেই মানা হতো।
সাথে নানা রঙের চুলের বাহার রঙধনুর মতন। সবুজ বা লাল চুল কখনো দেখব ভাবিনি তবে বেশ লাগছে দেখতে। সী ব্লু রঙের চুল করে ফেলতে ইচ্ছে করে মাঝে মধ্যে। কি অাছে জীবনে। এক রঙে থাকতে হবে কেন।

ফ্যাশনে কোন রঙের কমতি নেইএখন। আহারে এক সময় শাড়ির সাথে স্যান্ডেল মিলায়ে পরার জন্য দেশ থেকে স্যান্ডেল আনার চেষ্টা করতাম। এখন দেশীয় স্যান্ডেল কাপড় সবই পাওয়া যাচ্ছে। সাথে বিভিন্ন দেশের নানা ডিজাইনের চোখ ধাঁধাঁনো সব জুতা স্যাণ্ডেল, পোষাক পাওয়া যাচ্ছে। তবে এদেশের উপযোগি তৈরি স্যান্ডেল পরেই আরাম পাই। স্যান্ডেলের চেয়ে জুতাতে স্বাচ্ছন্দ বেশী হয়ে গেছে। অথচ কিশোরি বয়সের পর জুতা পরেছি বলে মনে নেই। শাড়ির সাথে বুট পরে দিব্যি চলে যাচ্ছি বরফ মাখা দিন গুলিতে এদিক সেদিক। অথচ আমাদের সংস্কৃতিতে শাড়ীর সাথে জুতা কখনোই চলবে না। এতটা হাঁটাও কখনো ছিল না।
সময় তার প্রয়োজন মতন বদলে নিচ্ছে আমাদেরও।
ক্রিসমাস উপলক্ষে দোকানগুলোতে নতুন পোষাক থেকে জুতা জুয়েলারী, আসবাব নিত্য ব্যবহার্য্য জিনিসের নতুন রূপে সমারোহ হয়েছে বাজার জুড়ে। প্রতি বছরই নতুন হয়ে যায় ফ্যাশন। একশ হাজার থেকে পঞ্চাশ হাজার ডলার, ইউরোর পোষাক থেকে এক দুই, দশ বিশ মূল্যের পোষাক থেকে সব সামগ্রী জীবনের প্রয়োজনে সাধ্য মতন সবাই ক্রয় করতে ঝাঁপিয়ে পরেছিল উৎসবের অাগে। আমি কদিন ঘুরে ঘুরে মানুষ দেখেছি, দেখেছি তাদের কেনা কাটা। কেউ অল্প মূল্যের জিনিস কিনে খুশি কেউ অনেক মূল্যের জিনিস কিনেও অখুশি। কেউ নাচছে ব্রাণ্ডের সাথে কেউ খুঁজছে সুন্দর অল্প দামে। আবার কারো কেনারও সাধ্য নাই। পথের পাশে বসে আছে।
জরি চুমকি সোনালি রূপালি ঝকঝকে চকচকের সাথে এবার খুব এমব্রডারি ফুল পাতা ছাপার সাথে ভেলবেটের জোয়ার বইছে। ভেলভেট দেখে মনে পরে যাচ্ছে ছোটবেলায় শীতের সময় ভেলভেটের কাপড় দিয়ে জামা বানিয়ে দিতেন অভিভাবক একই রঙ ছাপা এবং ডিজাইনের জামা পরে ঘুরে বেড়াতাম সব বোন এক সাথে। অনেক দিন ভেলবেট কাপড় পরা হয়নি এবার আবার শুরু করলাম ছোটবেলার মতন।

সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ ভোর ৫:৫৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×