বাংলাদেশ স্বাধীন সার্বভৌম একটি দেশ । বিশ্বের মানচিত্রে লাল সবুজের পতাকা নিয়ে যার জন্ম। পরাধীনতার বন্দীদশা থেকে এক মহাবিপ্লব ও ঐতিহাসিক মুক্তি যুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় ছিনিয়ে আনা যার অঙ্গীকার। অর্থ নৈতিক মুক্তি , ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা যার স্বপ্ন । বৃটিশের সাথে , পাকিস্তানের সাথে ,স্বদেশী স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে যে জাতি এত লড়াই সংগ্রাম করে ৪৩ টা বছর পেরিয়ে এল সেই কিনা শেষে পড়লো অপহরণ ভাইরসের কবলে । অপহরণ করে মুক্তিপন আদায় , কোন সরকার বা রাষ্ট্রের কাছ থেকে দলীয় বন্দীদের মুক্ত করতে অতীতে আমরা বিমান ছিনতাই বা অপহরণকারী সুইসাইড স্কোয়াডকে দেখেছি । যারা অপহরণের পরে স্বদম্ভে তাদের দাবী আদায়ের কথা বলেছে। সেখানে অপহরণকারীদের একটা বীরোচিত আস্ফালন দেখেছি । তাদেরউদ্দেশ্যটাও পরিস্কার হয়ে গেছে । আমাদের দেশে এখন অপহরণের নামে কি ঘটছে । প্রথম প্রথম লোকজন নিখোজ হলে রাজনৈতিক কারন বলে চালিয়ে দেয়া হোত। নিখোজের স্বজনরা তেমন ধারনা নিয়ে অপেক্ষা করতো হয়তোবা কোন একদিন নিখোজ মানুষটা ফিরবে । এখন আর তেমনটি হচ্ছে না। দিন দিন অপহরণের ঘটনা অদৃশ্য ভাইরাসের মত বেড়ে চলেছে । বেসরকারী সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুসারে গত চার মাসে ভালুকা , গাজীপুর , নারায়ণগঞ্জ, সাভার ,নোয়াখালী, উল্লাপাড়া চট্টগ্রাম, ধামরাইয়ে ৫৩ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন । একইভাবে বিগত ২০১০ থেকে ২০১৪ সালের মার্চ পর্যন্ত মোট ২৬৮ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে । এর মধ্যে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার ও ২৪ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে । পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে ১৪ জনকে । কিন্তু ১৮৭ জনের কোন সন্ধানই মেলেনি । নিখোজ ব্যাক্তিদের বিষয়ে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একটিমাত্র সাধারন ডায়েরী (জিডি) করা হয়েছে। অপহরণের কি ভয়াবহ চিত্র উক্ত পরিসংখ্যান টি দেখলে বোঝা যাবে। এইভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে সাধারন মানুষ কিভাবে নিরাপদে থাকবে সেই প্রশ্ন সবার কাছে । যদিও অনেকের কাছে এখনও বিষয়টা স্পষ্ট নয় । যেভাবে অপহরণের ঘটনা ঘটছে । ভাইরাস অসুখের মত এটা যে মহামারীর রুপ নেবেনা তার নিশ্চয়তা কোথায় । আমরা জাতি হিসেবে আতঙ্কিত । রাষ্ট্রের কাছে এখুনি সকলে যথাযথ নিরাপত্তা চায় । যারা এ বিষয়ে সহমত পোষন করেন মন্তব্য আশাকরি।
আজ ঐতিহাসিক মে দিবস , বিশ্ব শ্রমিক অধিকারের পাশাপাশি মানবাধিকার সুরক্ষার দাবী রাখি। বিশ্বজুড়ে মেহনতি মানুষের জয় হোক।