somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশ লুটের কল্পকাহিনী ও কিছু আলোচনা !

২৪ শে আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাস্তবতাঃ ১

আপনাদের কি মনে আছে, ২০১০ সালের শেয়ার মার্কেট লুটের তদন্ত কমিটির প্রধান জনাব ইব্রাহিম খালেদ স্যারের কথা? তদন্ত করে তিনি লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের আর্থিকভাবে পঙ্গুকারী তথা শেয়ার বাজার লুটেরাদের প্রাথমিকভাবে চিহ্নিত করে সেটা জনসম্মুখে প্রকাশ করেছিল। সেই কারণে, সেইসব লুটেরার দল একজোট হয়ে জনাব খালেদের এমন অবস্থা করেছিল, যেন সবদোষ তার। এমনকি ওইসব দুষ্টের দল স্যারকে নিয়ে অনেক আজে বাজে রিপোর্ট পত্র পত্রিকায় ছাপিয়ে স্যারের জিনা হারাম করে দিয়েছিল।

এর মাধ্যমে ওরা দুটো উদ্দেশ্য হাসিল করেছিলোঃ
১) শেয়ার মার্কেট লুটের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ধামাচাপা দেওয়া, যাতে করে কেউ তাদের বিচার করতে বা চাইতে না পারে।
২) ভবিষ্যতে আর কোন ভাল মানুষ যেন অপরাধের তদন্ত করতে না পারে বা না চায়, তার ভয় ধরানো।

দুটো ক্ষেত্রেই তারা দারুণ সফল!

বাস্তবতাঃ ২
এবার আসা যাক হলমার্ক দ্বারা সোনালী ব্যাংকের ৩,৫০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া প্রসঙ্গেঃ
আমরা সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করছি যে সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নিজস্ব তত্বাবধানে তদন্ত কমিটি গঠন এবং তাদের মাধ্যমে সঠিকভাবে তদন্ত করে সত্যিকার দোষীদের বের করতে পেরেছে! এখন আমরা চাই দোষীদের কঠিন সাজা দেওয়া হোক এবং লুটকৃত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা সোনালী ব্যাংকের ভল্টে ফিরে আসুক! কোন ধরনের আইনের মারপ্যাঁচে ফেলে যেন লুটকৃত টাকা ফেরত আসা বন্ধ করা না হয়!

আমাদের আশঙ্কাঃ
ঘর পোড়া গরু যেমন সিঁদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়, আমরাও তেমনি ভয় পাচ্ছি। আমাদের আশঙ্কা একটা পর্যায়ে ব্যাংকের কিছু নিম্ন ও মধ্য পদস্থ কিছু কর্মচারীকে চাকরীচ্যুত করা হবে যারা হয়ত উচ্চ পদস্থ কারো দ্বারা আদিষ্ট হয়ে বা বাধ্য হয়ে ডকুমেন্ট-এ স্বাক্ষর করেছে মাত্র বা কিছু বকশিস পেয়েছে ! যদিও সেগুলিও অপরাধ! তার জন্য তারা শাস্তি পাক কোন আপত্তি নাই কিন্তু এত বড় একটা ঋণ কেলেঙ্কারি যার সাথে এক-দুই কোটি টাকা না, ৩,৫০০ কোটি টাকা জড়িত তা কোনক্রমেই এদের দ্বারা সম্ভব না। এর সাথে অবশ্যই ব্যাংকের উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে বাইরের প্রভাবশালীরাও (লুটেরা) জড়িত বলে আমরা মনে করি।

এবার আসুন উপরোক্ত ঘটনা দুটির প্রেক্ষিতে আমরা কিছু আলোচনা আর কিছু কল্পনা করি, কেউ নিজের সাথে মিলিয়ে ফেললে বা “কল্পনা” “ঘটনায়” পরিনত হলে বা কোন ঘটনার সাথে মিলে গেলে তার জন্য আমি বা আমরা দায়ী না!

আসুন, দেখি বাংলাদেশের কোথায় কোথায় নগদ টাকা ছিল, এখনো আছে এবং তা কিভাবে তা লুট বা শূন্য করা হয়েছিলো বা ভবিষ্যতে হবে!

১) শেয়ার বাজারঃ কমপক্ষে ২০ লক্ষ সাধারণ ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সারা জীবনের সঞ্চয় ও বিনিয়োগ। এটা লুট হয়েছে ২০১০ সালে। এটা ছিল তরল বা নগদ টাকার প্রধান ভাণ্ডার যা এখন শুন্য! – মানুষকে লোভ দেখিয়ে এটা লুট করা হয়েছিল।

২) সোনালী ব্যাংকঃ এটা সরকারের ব্যাংক যাতে জমা আছে লক্ষ লক্ষ স্বল্প ও মধ্য আয়ের মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয়, সরকারী চাকুরিজীবীদের পেনশন ফান্ড –এ জমাকৃত টাকা, এটা লুট হয়েছে ২০১২ সালে। এটা ছিল তরল বা নগদ টাকার মাঝারি ভাণ্ডার যা এখন শুন্য! এখন শুনছি জনতা ব্যাংক, অগ্রনী ব্যাংকও কিছুটা লুট হয়েছে। মারহাবা! মারহাবা!

- ডকুমেন্ট কারসাজি, মিথ্যা ঘোষণা, জামির জাল দলিল, সম্পত্তির বায়বীয় মূল্য, সরকারি/বেসরকারি প্রভাব ইত্যাদির মাধ্যমে এটা লুট করা হয়েছে।

৩) বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভঃ বর্তমানে এটা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় তরল বা নগদ টাকার ভাণ্ডার (শেয়ার বাজার লুট হওয়ার পরে)। এখানে জমা আছে সরকারের টাকা যা দ্বারা আমদানি ব্যয় মিটানো ও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হয় এবং সর্বোপরি সরকারের সকল আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনা করার পাশাপাশি, দেশের সমগ্র জনগনের তিন মাসের খাদ্য ক্রয়ের সমপরিমাণ অর্থ রাখা হয়। এটা কি অচিরেই শুন্য হবে? আমি লুট শব্দটা ব্যবহার করলাম না!

- বাতাসে কান পাতুন কিভাবে এটা শূন্য হবে জানতে পারবেন! দেশীয় অর্থে পদ্মা সেতু, নতুন বিমান বন্দর, গভীর সুমুদ্র বন্দর শব্দগুলিকে আপাতদৃষ্টিতে ভাল বা নিষ্পাপ মনে হছে কিন্তু পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখে আমাদের কিন্তু ভীষণ ভয় করছে! কারন “খলের কিন্তু ছলের অভাব হয় না”!

১) ভবিষ্যৎ-এর কোন এক রাতে, বাংলাদেশীদের কয়েকটা পারসোনাল বোয়িং প্লেন শাহজালাল এয়ারপোর্টে অবস্থান করেছে যাতে আহরণ করছে বাংলেদেশের নাম করা লুটেরাগন । কিছুক্ষণ আগেই ওরা দেশের শেষ অর্থ ভাণ্ডার “ডাক বিভাগ” শূন্য (!) করে এসেছে। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে বিদেশে চলে যাছে স্থায়ীভাবে বসবাস করার জন্য। আর ওরা ওদের প্রিয় ড্রাইভারদের হাতে একটা করে খাম ধরিয়ে দিচ্ছে পত্রিকা অফিসে দেওয়ার জন্য যাতে আছে এক লাইনের একটা “প্রেস রিলিজ”, আর তাতে লেখা আছে – “এ দেশটা বসবাসের একেবারেই অযোগ্য”!

তারপরে-

চারিদিকে আগুন জ্বলছে । সকল মানুষ রাস্তায়। কোথাও একটুও খাবার পাওয়া যাচ্ছে না! আর আমাদের ভবিষ্যৎ একেবারেই ঝরঝরে!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১২:২৩
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৬

পানির অপচয় রোধ: ইসলামের চিরন্তন শিক্ষা এবং সমকালীন বিশ্বের গভীর সংকট



পানি জীবনের মূল উৎস। এটি ছাড়া কোনো প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভব নয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন:

وَجَعَلۡنَا... ...বাকিটুকু পড়ুন

মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৭

ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)

০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

×