না,গল্পটি কোন হিন্দি সিনেমা কিংবা সোপ অপেরাতে পাবেন না।এমনকি এই সমাজেও বিরল এমন এক কাহিনী শুনতে চাইলে পুরোটা মন দিয়ে পড়ুন।হয়তবা আপনার ভাবনায় পরিবর্তন আসতে পারে।
দোয়া করি,আল্লাহ আমাদের সবাইকে এমন উত্তম উপহার দান করুন। আমিন।
ঘটনাটা বহু বছর আগের।এক গরীব যুবক জীবিকার সন্ধানে মিশরে পাড়ি জমাল।৪ বছর পর সে আর্থিকভাবে অনেকটা স্বচ্ছল হয়ে গেল।তার বাবা ছিলেন স্থানীয় এক মসজিদের ঈমাম।দেশে ফিরে যুবকটি বিয়ের জন্য তার বাবাকে পাত্রী দেখার কথা বলল।যুবকটি ছিল অনেক ধার্মিক।সে জানত একজন নারীকে ৪কারনে বিয়ে করা যায়।এর মাঝে ধার্মিকা নারী বিয়ে করাই হচ্ছে সর্বোত্তম।সে তার বাবাকে বলল,বাবা,মেয়ে দেখার ভার আপনার উপর ছেড়ে দিলাম।এমনকি বিয়ের আগ পর্যন্ত আমি তাকে দেখতে চাই না।আপনার পছন্দের উপর আমার আস্থা আছে।
অবশেষে যুবকটির বিয়ে হয়ে গেল।
বিয়ের রাতে,সে তার স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করল।সদ্য বিয়ে করা স্ত্রীর ঘোমটা সরিয়ে,সে চমকে গেল।কালো হয়ে গেল তার মুখ।একি দেখছে সে!তার সামনে স্ত্রীরূপে বসে আছে এক কুৎসিত নারী!নিজের বাবার উপর তার ঘৃণা জন্মাতে থাকল।এই মেয়েকে বাবা তার স্ত্রী হিসেবে ঠিক করলেন?কিভাবে পারলেন এটা করতে?ভাবতে ভাবতে সে ঘুমিয়ে গেল।
তার সদ্যবিবাহিত বধু স্বামীর এই হাল দেখে বিমর্ষ হয়ে ঘুমিয়ে গেল।
রাতের শেষ-তৃতীয়াংশ এ মেয়েটি তাহাজ্জুদ পড়ার জন্য ঘুম থেকে উঠল।সে তার স্বামীকেও ঘুম থেকে উঠার জন্য ডাকল।কিন্তু যুবক উঠল না।শেষে মেয়েটি তার মুখে পানি ছিটিয়ে দিল।যুবক ঘুম হতে জাগল।মেয়েটা বলল:"আমি জানি,আমি দেখতে সুন্দর না।আমি বুঝেছি,আপনি আমাকে দেখে কতটা হতাশ হয়েছেন।ছল ছল চোখ মেয়েটি বলে চলল,"জানেন, আমি ভাবতাম আমার মত কুৎসিত মেয়েকে কেউ কখনো বিয়ে করবে না।
জানেন,একটা হাদিস পড়ে আমি ভাবতাম,ঈশ!আমার সাথেও যদি এমন হত!"
নবীজি মুহাম্মাদ (সঃ) বলেছেন,আল্লাহর দয়া বর্ষন হোক ঐ ব্যক্তির প্রতি, যে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য জাগ্রত হয়।সাথে তার স্ত্রীকেও জাগায়।যদি তার স্ত্রী ঘুম হতে উঠতে না চায়,তবে তার মুখে পানি ছিটিয়ে দেয়।
আল্লাহর দয়া বর্ষিত হোক ঐ নারীর প্রতি,যে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ার জন্য জাগ্রত হয়।সাথে তার স্বামীকেও জাগায়।যদি তার স্বামী ঘুম থেকে উঠতে না চায়,তবে তার মুখে পানি ছিটিয়ে তাকে জাগায়।"
অবশেষে মেয়েটা বলল,"ওয়াল্লাহি!আমি আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞ। তিনি আমাকে আপনার মত একজন স্বামী দিয়েছেন।করুন স্বরে বলল, আমি কি আপনাকে একটা অনুরোধ করতে পারি?আজ কি আমরা একসাথে তাহাজ্জুদ টা আদায় করতে পারি?"
অবশেষে যুবকটি তার স্ত্রীর সাথে তাহাজ্জুদের সালাত আদায় করল।
বাকিটুকু যুবকের মুখেই শুনুন:
"ভাই ও বোনেরা,আমি আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি,নামায শেষে আমি যখন আমার স্ত্রীর দিকে তাকালাম তখন আমার মনে হচ্ছিল,এ হচ্ছে দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠ সুন্দরী আর লাবন্যময়ী নারী,যা আমি মনে মনে আকাংখা করতাম।"
এ যুবক আর তার ধার্মিকা নারীর হাত ধরে আমাদের উম্মাহ পেয়েছে ইসলামের বিখ্যাত অনেক স্কলার ও আলেম যারা দ্বীনের খেদমতে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন।
পরিশেষে বলতে চাই আপনার দরকার এমন এক জীবনসঙ্গী যার মাঝে রয়েছে ২টি গুন-ধার্মিকতা ও ভক্তি।এতে আপনি দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যান লাভ করতে পারবেন ইনশা~আল্লাহ।