সম্মানিত ধর্মীয় পণ্ডিতগণ,
আমি সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী,
সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনাকালে অন্তত একবার
অন্তত একবার এই নিঃস্ব কৃষকের কথা বইলেন,
বইলেন আমার সুশিক্ষিত বেকার ছেলেটার কথা
ঘরে বসে থাকা আমার অনূঢ়া মেয়েটার কথা
গৃহের কোণে পড়েথাকা মায়েরে যেন দয়াল দ্রুত নিয়ে যায়
এই কথাটা তাঁরে বইলেন,
একটু বুঝাই বইলেন।
সম্মানিত ধর্মীয় পণ্ডিতগণ,
খোয়ারে বাঁধা গাভীটা শুকিয়ে আমার বউয়ের মত হয়ে গেছে,
বউটা নিজ আত্মবিশ্বাস ও শাড়ির পেঁচে দাঁড়িয়ে আছে,
গাভীর তো শাড়ি নেই, আছে কি ওর আত্মবিশ্বাস?
যদি না থাকে, তবে সে কেমনে দাঁড়িয়ে থাকে?
এমন অনেক প্রশ্ন আসে জীবনে,
কিন্তু করি না, বলি না,
এইসব নিয়ে বেশি ভাবিও না; দয়াল ভয় পাবে তাই,
দয়ালকে এতো ছাড় দেই,
তবু কেন তিনি আমার সুখ কেরে নিলেন?
আপনারা জিজ্ঞেস কইরেন না, নতুবা
তিনি আমার সর্বস্ব কেরে নেবেন!
আপনারা তাকে একটু বুঝাই বইলেন,
যেন তিনি আমার প্রতি একটু সদয় হন।
সম্মানিত ধর্মীয় পণ্ডিতগণ,
আজ তীর্থস্থানে আসার পর জানতে পারলাম
মহাজনের ছেলের জ্বর, সভাপতির পায়ে ব্যথা
আমাকেও সমস্বরে প্রার্থনা করিতে হইলো
হে পণ্ডিতগণ, আপনাদের বাধ্যথার চাপে।
অথচ এদিকে আমার ঔষধ সেবনহীন মায়ের কষ্ট,
মানব সৃষ্ট পানিতে ভেসে যাওয়া আমার রক্ত
যা জন্মেছিল আমার ধানের চারাগাছে,
সব গেলো আমার, সব গেলো
সরকার টাকা নিল চাল দিল, আজ
সুদের পাহাড় আমার ঘাড়ে ভূতে হয়ে আছে,
মাস না পেরুতেই আবারো আমার ঘুরতে হয় পথে পথে
সুদও আর মিলে না, ঋণ পাওয়া তো অনেক দূরে
হে ধর্মীয় পণ্ডিতগণ, প্রার্থনা করেন না!
আমাদের জন্য একটু করে।
সম্মানিত ধর্মীয় পণ্ডিতগণ,
আগামী তীর্থানুষ্ঠানে দয়ালরে একটু বুঝাই বইলেন
একটু বুঝাই বইলেন
যেন সে আমার দুঃখ লাগব করে।
(ছবি →গুগল)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ২:৪৫