somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাইয়িদ রফিকুল হক
আমি মানুষ। আমি ত্বরীকতপন্থী-মুসলমান। আমি মানুষ বলে আমার ভুলত্রুটি হতেই পারে। বইপড়তে আমার ভালো লাগে। সাহিত্য ভালোবাসি। লেখালেখি আমার খুব শখের বিষয়। বাংলাদেশরাষ্ট্র ও গণমানুষের জন্য আমি লেখনিশক্তিধারণ করেছি।

বাংলাদেশে আসলে মুসলমান শতকরা ২৫-৩০ ভাগ। বাকী সবই মুসলমান-নামধারী ভণ্ড (প্রথম পর্ব)

১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশে আসলে মুসলমান শতকরা ২৫-৩০ ভাগ। বাকী সবই মুসলমান-নামধারী ভণ্ড (প্রথম পর্ব)
সাইয়িদ রফিকুল হক

বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশে ও আরব-রাষ্ট্রগুলোতে এখন শুধু গায়ের জোরে মুসলমানিত্বপ্রকাশ করা হচ্ছে। আর পৈতৃকসূত্রেপ্রাপ্ত একটি আরবি-নামের জোরে সবাই এখন মুসলমান! জোর করে নিজের একটা আরবি-নাম রাখতে পারলেই সে এখন মুসলমান। আর যে-কেউই এখন শুধু একটিমাত্র আরবি-নামের জোরে নিজেকে মুসলমান হিসাবে জাহির করছে। এছাড়া, এদের মধ্যে আর-কিছু নাই।
এরা এখন নামটি শুধু আরবি শব্দ দিয়ে আব্দুল অমুক, আব্দুল তমুক, আর মোহাম্মদ অমুক-তমুক রাখতে পারলেই বিরাটবড় এক মুসলমান হয়ে গেল! আর সে কিন্তু তার আগে-পরে অকাম-কুকাম একটিও ছাড়েনি। সে লোকদেখানো পাঁচওয়াক্ত বা মাঝে-মাঝে নামাজ আদায় করছে! কিন্তু সঙ্গে রেখেছে যাবতীয় অকাম—কুকামসহ বিবিধ শয়তানী! আর সে নিয়মিত ব্যভিচার করছে, মদ্যপান করছে, ঘুষ খাচ্ছে, সুদ খাচ্ছে, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়িয়ে কালোটাকা গড়ছে, সুযোগ পেলে কিংবা সুযোগসৃষ্টি করে নিয়মিত ব্যভিচারের পাশাপাশি নারীধর্ষণ-অপকর্মও চালিয়ে যাচ্ছে, রাজনীতির নামে সংখ্যালঘু হিন্দুসম্প্রদায়সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ঘরবাড়িসহ জায়গাজমি রাতারাতি কিংবা দিনে-দুপুরে দখল করে নিচ্ছে। তবুও সে মুসলমান!

এরা মনে করে: শুধু একটিমাত্র আরবি-নাম রেখে আর জীবনে একবার কালেমা তৈয়্যেবাপাঠ করেই মুসলমান হওয়া যায়! এই আহাম্মকের দল মুসলমান কাকে বলে তা-ই তো জানে না! এরা মুসলমান হবে কীভাবে? শুধু একটি আরবি-নামকে পুঁজি করে রাতারাতি মুসলমান-সেজে এরা সমাজে-রাষ্ট্রে বুক-ফুলিয়ে হাঁটছে! এরা জঙ্গী হবে নাতো হবে কে?

মুসলমান হওয়া এতো সহজ? শুধু একটি আরবি-নাম রেখে নিজেকে দিনরাত মুসলমান হিসাবে জাহির কররেই হলো? কে তোমাকে মুসলমান বলে? আর কে তোমাকে মুসলমান বানিয়েছে? আর কে তোমাকে মুসলমান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে? আর কীসের জোরেই বা তুমি নিজেকে মুসলমান বলতে চাইছো? এইসব প্রশ্নের উত্তর এই নামধারী-মুসলমান নামক আহাম্মকগুলো কোনোদিনই দিতে পারবে না। আসলে, এই মুসলমান-নামধারী শয়তানগুলো নিজেদের সারাজীবনের পাপ ও তাদের যাবতীয় অকাম-কুকামকে বহাল তবিয়তে চালু রাখতেই নিজেকে সমাজে ও রাষ্ট্রে জোর করে মুসলমান হিসাবে পরিচয় দিচ্ছে। কিন্তু এরা কেউই মুসলমান নয়।

আসুন, আমরা জানি: মুসলমান কাকে বলে?

১. যে ব্যক্তি চিরদিন মহান আল্লাহ ও তাঁর পবিত্র রাসুল সা.-এর প্রতি বিশ্বাস, আস্থা ও আনুগত্য রাখে সে-ই মুসলমান। কথা সত্য। কিন্তু বিশ্বাস ও আস্থা বাস্তবজীবনে সবসময়—মানে, ২৪ ঘণ্টা একইভাবে ধরে রাখতে হবে।
২. একজন মুসলমানকে অবশ্যই ‘ঈমানে মুফাস্সালে’র প্রতি চিরদিন আস্থা রাখতে হবে।
৩. জীবনে-মরণে একজন মুসলমান কখনও মিথ্যাকথা বলবেন না।
৪. মুসলমান সবসময় যাবতীয় পাপকার্য থেকে নিজেকে বিরত রাখবে।
৫. একজন মুসলমান জীবনে কখনও একই পাপ দুইবার করবে না।

একজন মুসলমানকে আরও যা-যা করতে হবে:

মুসলমান কখনও মানুষহত্যা করবে না।
মুসলমান কখনও ঘুষ খাবে না।
মুসলমান কখনও সুদ খাবে না কিংবা সুদের কারবার করবে না।
একজন মুসলমানের হাত থেকে অপর মুসলমানসহ সর্বধর্মের মানুষ নিরাপদ থাকবে।
মুসলমান কখনও মদ্যপান করবে না।
মুসলমান কখনও ব্যভিচার করবে না।
মুসলমান কখনও কোনো রমণীকে ধর্ষণ করবে না।
মুসলমান কখনও ৪০ দিনের বেশি খাদ্য মওজুদ করে রাখবে না।
মুসলমান হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানের সহায়-সম্বল-সম্পত্তি দখল করার জন্য ওঁত পেতে থাকবে না।
মুসলমান কখনও হিন্দুনারীকে ধর্ষণ করার জন্য ওঁত পেতে থাকবে না।
মুসলামন কখনও পবিত্র রমজান-মাসে খাদ্যদ্রবের দাম বৃদ্ধি করবে না।
মুসলমান কখনও নিজের স্বার্থে কিংবা রাজনীতির নামে মানুষখুন করবে না।
মুসলমান কখনও বোমাবাজি করবে না।
মুসলমান কখনও ধর্মের নামে কোনোপ্রকার শয়তানী করবে না।

বাংলাদেশে খুন, ধর্ষণ, ব্যভিচার, বোমাবাজি, জঙ্গীবাদী অপকর্ম এসব কারা করছে? কারা এগুলোর পিছনে ইন্ধন জোগাচ্ছে? আর দেশের কত ভাগ মুসলমান-নামধারী ব্যক্তিবর্গ উপর্যুক্ত অপকর্মগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পেরেছে? হয়তো দেশে ৮-১০ ভাগ কিংবা খুব বেশি হলে ২৫-৩০ ভাগ মুসলমান রয়েছে! বাকী সবই তো মুসলমান-নামধারী আপাদমস্তক-ভণ্ড! আর এই ভণ্ডরা জঙ্গীপনা করবে নাতো কী করবে?

(চলবে)

সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
১৪/০৭/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৮:৫৬
৮টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×