"জীবনে যারে কভু দাও নি মালা
মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল"
নিজেদের অযোগ্যতাকে ঢাকতে গিয়ে আমরা একেরপর এক অপকর্ম করেই চলেছি। সন্ধার সূর্যাস্তের সত্যের ন্যায় গত ১৮ অক্টোবর বাংলাদেশী গায়ক, গিটারবাদক, গীতিকার, সুরকার, ও চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু মারা গেলেন। সম্প্রতি শুনা যাচ্ছে, সিটি মেয়র নাসির উদ্দিন নাকি চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী 'মুসলিম হল'-এর নাম আইয়ুব বাচ্চু'র নামে পরিবর্তন করার জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ করেছেন। আইয়ুব বাচ্চুর নামে চট্টগ্রামে একটি সড়কের নামকরণ করা হবে সেটা ভাল কথা, যদিও কবি বলে গেছেন, "জীবনে যারে কভু দাও নি মালা/ মরণে কেন তারে দিতে এলে ফুল"।
কথা এখানে না! কথা হচ্ছে, নাম পরিবর্তন করে মৃতদেরকে পুরস্কৃত করার নামে আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেমন একেকটা চেতনাকে দাফন করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় এবার চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী 'মুসলিম হল'এর নাম পরিবর্তন করার দিকে এগুচ্ছে চট্টগ্রামের সিটি মেয়র। যদিও বিভিন্ন পত্রিকাওয়ালারা বলছে হলের এক শাখায় আইয়ুব বাচ্চুর নাম এড করে দেয়া হবে কিন্তু বাস্তবে পরিবর্তন করার সময় ঠিকই এর নাম পরিবর্তন করে আরেকটি চেতনার দাফন দেয়া হবে (বাঙালি রাজনীতিবিদদের দুমুখো কার্যকলাপের প্রমাণ ভুরিভুরি)। এভাবে আমরা বারবার নিজেদের অযোগ্যতাকে ঢাকতে গিয়ে আমাদের পূর্বপুরুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্যকে হত্যা করছি। কিন্তু এমনটা করছি কেন? সেটা বিবেককে জিজ্ঞেস করি না!
জনগণ মৃত্যুকে ভয় পায়, তারা বাঁচতে চায়, তারা জীবন চায়, সেটা গোলামির জিন্দেগি হলেও চলবে। তাই তো আজকাল ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর ন্যায় জনগণকে অন্যায়ের প্রতিবাদে খুবই কম দেখা যায়। প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্বার্থের জন্য রাজপথগুলোকে দুর্গন্ধময় করছে। ইসলামি দলগুলো সেজন্য কম নয়, আর রাজনৈতিক দলগুলোর থেকে তো এমনটা অকাম্য।
আমাদের অতীত ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রেখেও কিন্তু আমরা নতুন করে আমাদের গর্বিত মানুষদের জন্য আলাদাভাবে কিছু করতে পারি, সেটা না করে এই নাম পরিবর্তনের নামে চেতনা হত্যার দ্বারা কি আমাদের আযোগ্যতার প্রমাণ মিলে না?
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:৩০