somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

তামান্না তাবাসসুম
আমি খুব পজেটিভ মানুষ। যা আমাকে পোড়ায় তা নিয়ে মাঝে-সাঝে লিখি। তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি, বাংলাদেশ শিশু একাডেমীতে একটা উপস্থিত কবিতা লেখা প্রতিযোগীতায় পুরস্কৃত হওয়ার মধ্য দিয়ে কলম ধরার যাত্রা শুরু

"মা' শব্দটার সাথে সবসময় দুঃখি দুঃখি ট্যাগ কেন?

০৮ ই মে, ২০১৬ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গর্ভিধারিনী মা জমম দুখিনী মা, মায়ের কান্দন যাবৎজীবন, আম্মাজান মুভি, মাকে নিয়ে কবিতা,গান সবখানেই মাকে দুঃখী দেখানো হয় কেন বা আমাকদের মায়েরা সবসময় দুঃখীই বা হন কেন? তার কারন কি আমরা কেউ খুঁজে দেখি? নাকি এটাকে টেইকেন ফর গ্রান্টেড করে নেই? ভাবি এটাই স্বাভাবিক?




ইসলাম ধর্ম মতে, সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় যদি মায়ের মৃত্যু হয় তা শহীদি মৃত্যু,সে বিনা বিচারে জান্নাত পায় ।
কিন্তু মা’টা ভাবে আমি মরলে বাবুটার কি হবে? বাবুটার কথা ভাবলে তার কাছে স্বর্গ ও তুচ্ছ মনে হয় !

সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য মাকে সেই ১৩ বছর বয়স থেকেই সহ্য করতে হয় প্রচুর শারিরিক কষ্ট।

অনেক শিশুই দুর্বল স্বাস্থ্য , সল্প মেধা, দৃষ্ট শক্তিতে সমস্যা ইত্যাদিতে ভোগে গর্ভাবস্থায় মায়ের মানুষিক অশান্তির কারনে, প্রতিবন্ধী হওয়ার কথা নাহয় বাদই দিলাম।বর্তমানে মায়ের শারিরিক ব্যপারে খেয়াল রাখা হলেও মানুষিক স্বাস্থ্যর ব্যপারে আমারা এখনো উদাসীন।

সরকারী ভাবে মায়েরা মাতৃত্বকালীন ছুটি ও সুযোগ সুবিধা পেলেও বেসরকারি চাকরীতে তার অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত মায়েরা।

কর্মজীবী মায়েদের এত দুর্দশা থাকতো না, যদি না কর্পোরেট প্রভূরা তাদের প্রতিষ্ঠানের মায়েদের শিশুদের জন্য ছোট্ট করে ডে-কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থা রাখতো।

প্রথম অবস্থায় প্রেগনেন্ট নারীকে দেখলেও বোঝা যায় না, আর সে তখন রিস্কএও থাকে বেশি । অফিস যাওয়া আসায় বেশির ভাগের বাসেই চড়তে হয়। সে সব বিশেষ অবস্থার কথা বিবেচনায় আনলে আমি নারীর জন্য সংরক্ষিত আসনের বিরোধিতা করতে পারি না।

প্রেগন্যান্সির সময় প্রয়োজনয়ীয় হরমোন ১০০ - ১০০০ গুন (100- 10000 fold decrease) কমে যাওয়া এবং MAO - A হরমোনের হঠাত বেড়ে যাওয়া যা ব্রেইন সেলে বিষন্নতা উতপন্নকারী হরমোন বাড়িয়ে দেয় ।'প্রসব পরব্ররতীকালীন বিষন্নতা' বাচ্চা জন্মের দুই বছর পর্যন্তও স্থায়ী হতে পারে।
কারণ ছাড়ামন খারাপ হয় , কারণ ছাড়াই বিরক্তি লাগে , মেজাজ খিটখিটে থাকে , বাচ্চা ও বাচ্চার যত্ন নিয়ে অতিরিক্ত টেনশন হয়, নিজের উপরে নিজের অসন্তোস , নিজের ক্যারিয়ার + নিজের রূপ সবকিছু নিয়ে হিনমন্যতায় ভোগা, নিজের জীবনের প্রতি মায়া চলে যাওয়া এসব সমস্যা হয়।
এর প্রতিকারে বাচ্চার বাবারা সদ্য মায়ের প্রতি রাখতে হবে বিশেষ খেয়াল। শুধু মিস্টি ব্যাবহার , সহানুভূতীপূর্ণ কথা ও ব্যাবহার, কাছে কথাও ঘুরে আসা, রোমান্টিকতা এসবই যথেষ্ট এটা কাটিয়ে উঠতে।
নেপোলিয়ন বলেছেন," একজন বাবার সন্ততানকে দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে তার মাকে ভালবাসা।"

জনম দুঃখিনী মা, কথাটা প্রচলিত থাকতো না যদিনা বাবারা মায়েদের প্রতি আরো একটু সহানুভূতিশীল হতেন।

মায়েরা সবসময় নিজে না খেয়ে সন্তানকে খাওয়ান।মায়ের প্রিয় খাবার কি এটা কয়জন জানি? এদিকে চল্লিশের পরেই মায়েদের ক্যলশিয়ামের ঘারতি জনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। যেমন - হাড্ডি ক্ষয়।
ত্রিশের পর থেকে প্রতিটি মা যেন প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খান তা নিশ্চিত করলে তা প্রতিকার সম্ভব। মায়াদের কাছেতো আমরা অনেক আবদারই করি, অনেক জেদ করি। তার সুস্থতার জন্য তাকে প্রতিদিন স্বাস্থসম্মত খারাব খাওয়ানোর জেদটা আমরা করতেই পারি।

আমরা মাকে শুধু ত্যগের মূর্ত প্রতিক হিসেবেই দেখি, আমাদেরও যে মায়ের জন্য কিছু করার আছে তা ভাবি না।
ছেলেরা মায়ের প্রতি দায়িত্ব বলতে বউকে মায়ের কথা শুনে চলতে বলা পর্যন্ত বোঝে। অথচ নিজে যে সারাজীবন মাকে কত জালাইল তার হিসাব নাই।আর মেয়েরা নিজে মা হওয়ার পর বুঝে মা কি জিনিস, তার আগে না।

মা দিবসের কথা উঠলে আমাদের মাথায় শুধু বয়স্ক ইমেজ আসে কেন আর ওল্ড হোমের কথাই আসে কেন?
ছোট বাচ্চারা সবচেয়ে বেশি রাফ বিহেভ করে মায়ের সাথে, পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে তেমন সাহস পায় না। কেন জানেন, কারন সে ঘরের অন্যদের (বাবা, দাদা-দাদী, চাচা-ফুফি) তাকে তেমন গুরুত্ত দিতে দেখে না, সে দ্যেখে মা তাদের জন্য শুধু করেই যায় আর পান থেকে চুন খসলেই তাদের মুখ গোমড়া।তাই সেও এটাকে নরমাল মনে করে।

ছোটদের বইয়ে মাকে ভালবাসা সম্পর্কিত রচনা গুলিতে শুধু মা কে নিয়ে ভারী ভারী কথাই লেখা থাকে। লেখা থাকে আমাদের অসুখ করলে মায়ের রাত জাগার কথা, আমাদের মায়ের জন্য কি করা উচিত তা তেমন একটা লেখা থাকে না।লেখা থাকে না পরিবারে মায়ের প্রতি অন্যায় হলে প্রতিবাদের কথা।মাকে ভালোবেসে মায়ের কাজে সাহায্য করার কথা লেখা থাকে না।মায়ের যাতে কস্ট না হয় এর জন্য নিজের কাজ নিজে করার কথা লেখা থাকে না। এক কথায় লেখা থাকে মাকে যেন কষ্ট না দেয়, এদিকে মেয়েদের কষ্টের রঙ গুলো কেমন তা খোজার চেষ্টা করার সময় কই আমাদের?

এভাবেই ভাল থাকে না মায়েরা। গানে, কবিতায় তাদের কষ্টের করুণ ৈশল্পিক বর্ণণা করি আমরা। তাদের ভাল রাখার উপায় খুঁজি কজন?

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২০
২২টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×