প্রতি শুক্রবারের মতো গতকালও জুম্মার নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম মসজিদে। আমি মিরপুর ১১ নম্বরে বাসার পাশের মসজিদেই যাই। প্রতি জুম্মর মতো ইমাম সাহেব খুতবা দিচ্ছিলেন। এই ইমাম সাহেব প্রতি খুতবাতেই বিশেষ বিশেষ বিষয়ের অবতারণা করে থাকেন। যেমন নারী দিবস, ভালবাসা দিবস। স্বভাবতই প্রতি বিষয়েই তার বক্তব্য থাকে নেতিবাচক। গতকাল তার বক্তব্য ছিল পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক। তার বক্তব্যের সারকথা ছিল এমনঃ
- মানুষ পরিবার পরিকল্পনা করে আল্লাহর সাথে পাল্লা দিতে চেষ্টা করছে। জন্ম-মৃত্যুর মতো বিষয়গুলো যেখানে আল্লাহ নিজের হাতে রেখেছেন সেই বিষয়গুলোর নিয়ন্ত্রণ মানুষ নিজের হাতে নেবার চেষ্টা করছে। সুতরাং পরিবার পরিকল্পনা করা মানে খোদার সাথে নাফরমানি করা।
- আগে একটা গরু ৫ সের দুধ দিত আর এখন দেয় ২০ কেজি। আগে এক বিঘা জমিতে ফসল যা হতো তার চেয়ে এখন চারগুণ হয়। সুতরাং আল্লাহ তার নিয়ামত বাড়িয়েই চলেছেন বেশি সংখ্যক মানুষের জন্যে। আমরাই জন্মকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে খোদার নিয়ামত নিজের মতো করে ভোগ করছি।
- পবিত্র কোরাণ শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেছেন যে, আল্লাহ তার প্রত্যেক বান্দার রিজিকের ব্যবস্থা করে রেখেছেন। আমরা কেন তার উপর বিশ্বাস রাখতে পারছি না। তার করা ব্যবস্থার উপর বিশ্বাস না রেখে নিজেরাই নিজেদের খোদা হতে চাইছি।
শুধু এই বিষয়টা না- তিনি পহেলা বৈশাখের সময় প্রচন্ড আক্রমণাত্মক বক্তব্য রাখেন- যারা ওই উৎসবে অংশগ্রহণ করে তাদের জন্ম নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। আমার প্রশ্ন হলো তার এই সব কথাগুলো দেশদ্রোহীতার পর্যায়ে পড়ে কিনা। কারণ দেশে যেখানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর রয়েছে এবং সেই অধিদপ্তরের মাধ্যমে দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে- সেই স্বীকৃত কার্যক্রমের বিষয়ে প্রশ্ন তোলা বা বিরুদ্ধাচারণ করা কি তাহলে দেশের প্রচলিত আইন বা ব্যবস্থার বিরুদ্ধাচারণ করা হচ্ছেনা? যদি তা না হয় তাহলে এইসব ইমাম সাহেবদেরকে কেন কোরাণ-হাদীস ব্যাখ্যার বাইরে এইসব বিষয়ের উপরে (যেসব বিষয়ে তাদের পুঁথিগত জ্ঞানও নাই) মন্তব্য করা থেকে বিরত রাখার উপায় কি?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



