somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মন্ত্রী হিসেবে শাহজাহান খানের মন্ত্রীসভায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই, থাকতে পারে না।

০২ রা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সৈয়দ আবুল হোসেন যখন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন তখন আমরা মন্ত্রী শাহজাহান খানের কর্মকাণ্ড দেখেছি। কখনো কখনো মনে এমন প্রশ্নও জেগেছে যে, আসলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী কি আবুল হোসেন নাকি শাহজাহান খান। ওবায়দুল কাদের এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই শাহজাহান খানের কর্তৃত্ব খর্ব হয়।
গাড়ী চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া নিয়ে তার অবস্থান এবং মতামত তখনকার খবরের কাগজে ফলাও করে ছাপা হয়েছে। কেবল সাইন চিনতে পারলেই একজন চালক ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে পারেন এই ছিল তার মত!

মন্ত্রী শাহজাহান খান কি কখনো জনগণের মন্ত্রী হয়ে উঠতে পেরেছেন? পারেন নি। দৃশ্যত তিনি শ্রমিক নেতার মতই কেবল শ্রমিকের মন্ত্রী হয়েছিলেন কিন্তু একটু লক্ষ করলেই এটা স্পষ্ট হয়ে যায় যে, আসলে তিনি শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষার্থেও কোন চেষ্টা করেন নি। মূলত তিনি মালিক পক্ষের হয়েই কাজ করেছেন। কেননা সরকার যদি এমন কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে যে নুন্যতম এস এস সি পাস করে এবং যথাযথ প্রশিক্ষিত হয়েই কেবল একজন মানুষ গাড়ী চালানোর অনুমতি লাভ করবেন তাহলে একজন চালক নিয়োগ দিতে একজন মালিকের অনেক বেশী অর্থ খরচ করতে হবে। একই সাথে সরকার যদি একজন চালককে প্রতিদিন আট ঘণ্টা ডিউটি নির্ধারণ করে দেয় সে ক্ষেত্রেও একটি গাড়ী চালাতে একজন মালিককে দুই জন চালক নিয়োগ দিতে হবে। অতএব অর্থনৈতিক ভাবে মালিকের চূড়ান্ত স্বার্থ সংরক্ষণ করাই হচ্ছে মন্ত্রী মহোদয়ের মূল উদ্দেশ্য। এখানে শ্রমিকের স্বার্থের কথা বলে প্রকৃত সত্যকে আড়াল করা হচ্ছে মাত্র।

সড়ক পরিবহনে যত বেশী অব্যবস্থা জিইয়ে রাখা যাবে মালিক পক্ষের তত বেশী সুবিধা। আর এই অব্যবস্থা জিইয়ে রাখতে হলে অশিক্ষিত, সহজ-সরল একই সাথে উগ্র শ্রমিকের বিকল্প নেই। কাজেই এই শ্রমিকদের অন্যায় এবং অন্যায্য দাবীর সাথে মন্ত্রী মহোদয় এবং মালিক পক্ষ কণ্ঠ মেলাবেন এটাই স্বাভাবিক। এই দুই দিনে পরিবহণ শ্রমিকেরা প্রমাণ করেছে। তারা কতটা অমানবিক, কতটা হিংস্র এবং উশৃঙ্খল। ভাবতেই শিউরে উঠতে হয়, এই লোক গুলোর হাতেই থাকে কোটি কোটি চলমান প্রাণ! এই কোটি প্রাণের রক্ষার্থেই সরকারকে পুনরায় সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

প্রশ্ন হল আওয়ামী সরকার কেন এত কিছুর পরও শাহজাহান খানের মত মন্ত্রীর ভার বয়ে চলেছে। আমরা এর আগে দেখেছি প্রয়াত সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের মত নেতাকেও কেবল সন্দেহের বসে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে হয়েছে। আমরা দেখেছি কোন অপরাধ না করেও মন্ত্রী আবুল হোসেনকে মিথ্যে অপবাদ মাথায় নিয়ে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে। যার পেছনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনিচ্ছাকৃত সমর্থন ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তখন তাদের পদত্যাগে সম্মতি দিয়েছিলেন কেবলমাত্র দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে। যদিও তাতে তার দলের ক্ষতি হবে, সেটা জেনেও।
আজ যখন ক্ষমতায় সেই একই আওয়ামীলীগ। আজো যখন এ দেশের মানুষের একমাত্র অবলম্বন শেখ হাসিনা ক্ষমতার শীর্ষে তখন আমরা কেন আশা করব না শাহজাহান খানের মত জন বিরোধী একজন মানুষের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা। কেন আমরা আশা করব না মন্ত্রী পরিষদ থেকে মশিউর রহমান রাঙ্গা এবং শাহজাহান খানের অপসারণ? আওয়ামী লিগের যত অর্জন এই সব দু একজন ব্যক্তি স্বার্থ গৃধ্নু মানুষের জন্য কেন ম্লান হয়ে যাবে?

পত্র পত্রিকার খবর থেকে এটা স্পষ্ট যে, সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও ধৃষ্টতামূলক ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত এসেছে খোদ নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর বাসার বৈঠক থেকে! সংবিধান রক্ষার শপথ নেয়ার পড়েও তিনি এমন একটি প্রক্রিয়ায় জড়িয়েছেন। যার ফলশ্রুতিতে রাজধানীসহ সারাদেশে ধর্মঘটের নামে শ্রমিকরা চরম নৈরাজ্য প্রদর্শনের সাহস পেয়েছে।
দেশের সকল মানুষ যখন এই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে তখনও মন্ত্রী শাহজাহান খান নৈরাজ্যের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন। তিনি কি তাহলে পেশি শক্তিকে রাষ্ট্র এবং বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে চাইলেন? এটা কি একজন মন্ত্রীর কাজ হতে পারে?
এত কিছুর পরেও মন্ত্রী হিসেবে তার মন্ত্রীসভায় থাকার নৈতিক অধিকার থাকার কথা নয়, থাকতে পারে না। তবে তার মত লোক স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন এটা ভাবারও কোন কারণ নেই কাজেই আমরা আরেকবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকেই তাকিয়ে থাকলাম।

[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৭ দুপুর ১২:২২
৭টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×